banglarchokhtv24.com

banglarchokhtv24.com যে চোখ সর্বদাই সজাগ

On 17.07.25, one complainant of Kol-17 lodged complaint that he came in contact with one unknown male person who introdu...
30/07/2025

On 17.07.25, one complainant of Kol-17 lodged complaint that he came in contact with one unknown male person who introduced himself as “Ashish” through GRINDR App, which is basically used by the LGBTQ community. As suggested by that person he met him in front of K. B. Motors on Gurusaday Road. After that said person accompanied the complainant to an used hutment situated at 5, Ballygunge Circular Road, P. S. Ballygunge, Kol-19. Inside of which said person along with his other associates, put the complainant in fear of injury to his reputation and thereby compelled him to make several online transactions total amounting to Rs. 96,888/- to different bank accounts, as per their requirement. This refers Ballygunge P. S. Case No. 101 dt. 17/07/25 U/s 308(2)/3(5) BNS.

During investigation, acting on credible source information one *Bijay Stephen Singh (31) S/O- Suresh Francis Singh of 5, Ballygunge Circular Road, PS- Ballygunge, Kol-19* was arrested on 29.07.25 at about 01:15 hrs. from 129/19, S.N Roy Road, P. S. New Alipore, Kol-38. Then on the statement of the said arrested persons and also on source information other two accused persons, namely
*Irfan Ahmad (28) S/o Late Sagir Ahmad of 3, Karim Hussain Lane, P. S. Beniapukur, Kol-17* and *Md. Wazed (26) S/o Md. Sajid of 7, Meher Ali Road, PS- Beniapukur, Kol-17* was arrested from Beniapukur P. S. area. They has been sent to Ld. Court with P. S. prayer.

ARREST AND SEIZURE INTIMATION Arrest ReportCase Ref: Cyber PS Kolkata Case No. 36/25 dated 21/06/2025 U/S-66C/66D/43 IT ...
29/07/2025

ARREST AND SEIZURE INTIMATION

Arrest Report
Case Ref: Cyber PS Kolkata Case No. 36/25 dated 21/06/2025 U/S-66C/66D/43 IT ACT 2000 and Sec. 61(2)/319(2)/318(4)/336(2)/336(3)/338/340(2) BNS 2023 AND 42(3) Telecommunication Act 2023.

In connection with the investigation into the above referred case, related to POS matter, yesterday a raid was conducted by the officers and men of OCCS in the different places of Kolkata under order. During raid two persons were arrested for having their direct complicity into the case from different places of Kolkata after observing all the legal formalities and good amount of articles seized from their possession.

A) Arrested accused person:- Suvendu Gayen ( 31y),S/O-Swapan Gayen, 143 Picnic Garden Road, Kolkata-700039, PS- Tiljala.

Place:-
Inside the shop named as Ankita Communication, ground floor, 35/1 Bediadanga Masjid Bari Lane, Kolkata-700039, PS-Tiljala.
Particulars of the Articles/documents seized: -
1. 02(two) Black and Silver colour fingerprint scanner, make and model not mentioned.
2. 12(twelve) bundles of VI Prepaid, 5G ready SIM, company sealed and packed, each bundle having 50(fifty) SIM Cards, In total 600(six hundred) SIM Cards.
3. 02(two) bundles of JIO DIGITAL LIFE, 5G ready SIM, company sealed and packed, each bundle having 10(TEN) SIM Cards, In total 20(twenty) SIM Cards.
4. 55(fifty five) VI SIM Cards, without company seal and pack, without the SIM slots.
5. One Silver Colour Redmi Note 10T 5G mobile having IMEI: 864581059072219/78, 864581059072227/78.

B)
Arrested accused person:- Niraj Kumar Sahani (25),S/O- Umesh Sahani Of 150 Lelin Sarani, PS- Bowbazar,Kolkata-700072
Place:-
Near Wellington Crossing Infront of Axis Bank, 150 Lenin Sarani, PS - Bowbazar, Kol - 72

Particulars of the Articles/documents seized: -
1. One Airtel Postpaid SIM card.
2. One redmi mobile phone.
3. One Paytm soundbox.
Both the arrested accused persons have been produced before the Ld. Court of CJM, Kolkata today.

🛑  “শিশু মৃত্যুর” শোক নয়, এবার জবাব দাও!🛑  রাষ্ট্রীয় ঘুমে শিশুর কফিন: আকাশ ভাঙল, শিশু মরল রাষ্ট্র কোথায়?                ...
29/07/2025

🛑 “শিশু মৃত্যুর” শোক নয়, এবার জবাব দাও!
🛑 রাষ্ট্রীয় ঘুমে শিশুর কফিন: আকাশ ভাঙল, শিশু মরল রাষ্ট্র কোথায়?


মীর আব্দুল আলীম

শৈশব গিয়েছিল স্কুলে, ফিরল কফিনে। আকাশ থেকে আগুন নেমে এলো রাজধানীর মিরপুরে। শিশুদের ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ল এক যুদ্ধ বিমান। যুদ্ধ হয়নি। ছিল না কোনো শত্রু, ছিল না কোনো ঘোষণা। শুধু এক পুরনো চীনা যুদ্ধবিমান, আর রাষ্ট্রীয় উদাসীনতার ছোবল। মাইলস্টোন স্কুলের প্রাঙ্গণে যে আগুন লেগেছিল, তা শুধু ভবন নয়-ভস্ম করে দিয়েছে একটি জাতির বিবেক। পুড়ে যাওয়া বইয়ের পাতা, রক্তমাখা টিফিনবক্স আর জ্বলে যাওয়া খেলার মাঠ-এসবই এখন আমাদের শোকের চিহ্ন। কিন্তু এই শোক কেবল শোক নয়, এই শোক এক আর্তনাদ-এক জাতিগত জবাবদিহির ডাক। শিশুদের মৃত্যু হঠাৎ হয়নি। এটা এসেছে সিস্টেম নামের এক কুৎসিত দৈত্যের জিহ্বা থেকে। এখনো যদি আমরা চুপ থাকি, প্রশ্ন না তুলি-তবে পরের কফিনটা আমাদের সন্তানের জন্য তৈরি হচ্ছে। আমরা প্রস্তুত আছিতো?
এই লেখা তাঁদের জন্য, যারা বই হাতে এসেছিল ভবিষ্যৎ গড়তে, আর ফিরল কফিনে। এই কলাম সেই মায়েদের জন্য, যারা শেষবার ছেলের টিফিন বক্সে আদর রেখেছিলেন-জানতেন না সেটা হবে শেষ প্রার্থনা। এই মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, এ এক রাষ্ট্রীয় বিশ্বাসঘাতকতা। চুপ করে থাকলে কেবল ইতিহাসের পাতায় রক্তের ছাপ পড়ে, কিন্তু প্রতিবাদে গড়ে ওঠে বিবেকের ফাটল। প্রশ্ন তাই রেখেই শুরু করি-শিশুর রক্তে ভেজা স্কুলঘরে কে দেবে জবাব? যে রাষ্ট্র তার শিশুদের স্কুলে নিরাপত্তা দিতে পারে না, যে রাষ্ট্র শিশুর চোখের জল পর্যন্ত দেখতে পায় না-সে রাষ্ট্রকে আর কতদিন সহ্য করব আমরা? প্রতিটি শিশু রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ, কিন্তু যখন সেই ভবিষ্যৎ ভস্ম হয়ে যায়, তখন শুধু চোখের জল নয়, দরকার হয়ে পড়ে এক সামাজিক জাগরণ। শিশুরা প্রশ্ন তুলতে পারে না, তাদের হয়ে কথা বলা আমাদের দায়িত্ব। এই কলাম সেই দায় থেকেই রচিত। এই লেখার প্রতিটি শব্দ সেই পোড়া কণ্ঠের প্রতিধ্বনি, যে কণ্ঠ আর কোনোদিন আকাশে গান গাইবে না। এখনই না জাগলে, না প্রতিরোধ গড়লে, আগামীকাল হয়তো শিরোনামে থাকবে আমাদেরই সন্তানদের নাম।
চীনা যুদ্ধবিমান ‘ঋ-৭’ যিনি পরিচালনা করছিলেন তিনি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির। তিনি মারা যাননি আকাশে। এটা দুর্ঘটনা নয়। এটা হত্যা। তিনি মরে গিয়েছিলেন সেই দিন, যেদিন কোটি কোটি বাজেট চুরি হয়েছিল। ৪৮ বছরের পুরনো ঋ-৭ দিয়ে ট্রেনিং! দুর্নীতির প্রতীক সেই জংধরা প্লেনই ছিল তাঁর কফিন। সিস্টেম তাঁকে বাঁচার সুযোগ দেয়নি। আজ শুধু একজন পাইলট নয়, নিচে থাকা শিক্ষার্থীরাও প্রাণ হারিয়েছে।এই মৃত্যু নয়, এটা ব্যর্থতা। এটা দুর্নীতি। এটা বিশ্বাসঘাতকতা। এই মৃত্যুর দায় আমাদের সবার। এখনো যদি আমরা না জাগি, না প্রশ্ন করি, না প্রতিরোধ গড়ি-তবে আমরা আর মানুষ নই, আমরা ইতিহাসের নিষ্ঠুর পাঠ মাত্র। আজ যারা নিথর, কাল তাদের জায়গায় হয়তো আমাদের সন্তান। তাই, চোখের জল যথেষ্ট নয়-প্রতিবাদই হবে প্রকৃত শোক। কিন্তু এই শোককে আমরা কেবল আবেগে মুড়ে রাখতে পারি না। এই মৃত্যু কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়—এটা রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা, নিরাপত্তাহীনতা ও চিরচেনা ‘চলে যাবে’ সংস্কৃতির নির্মম পরিণতি। এই কলামে আমরা সেই ব্যর্থতাগুলোকেই একে একে উন্মোচন করার চেষ্টা করব।
এটি ছিল রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনার নিষ্ঠুর পরিণতি। যুদ্ধবিমানের উড্ডয়নপথ, জরুরি প্রটোকল, নিরাপত্তার খতিয়ান-সব কিছুই যেন নেই। শিশুদের মৃত্যু হলো রাষ্ট্রের সীমাহীন গাফিলতির প্রতীক হয়ে। এই মৃত্যু আকাশ থেকে আসেনি, এটি এসেছিল রাষ্ট্রযন্ত্রের নিচু নৈতিকতা থেকে। বিমান চলাচলের নিরাপত্তা, শহরের ওপর দিয়ে বিমান উড্ডয়নের অনুমতি, জরুরি পরিস্থিতিতে বিকল্প রুট ও অটোমেটিক ইজেকশন ব্যবস্থা-সব কিছুতেই ছিল গলদ। অথচ এগুলো থাকা উচিত ছিল একটি সচেতন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা কাঠামোতে। প্রশ্ন ওঠে, কেন এখনো আমরা ৪৮ বছর পুরনো বিমান দিয়ে প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছি? কেন আধুনিকীকরণের নামে বরাদ্দের টাকা গিয়ে পড়ে অজানা খাতে? এই মৃত্যু শুধু পাইলটের নয়, নিচে থাকা নিরপরাধ শিশুদের-এটা এক সম্মিলিত ব্যর্থতার ফল, যার দায় শুধু একজন বা দুজনের নয়, পুরো ব্যবস্থার।
এ যেন মৃত্যুফাঁদ! মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কতটা অনিরাপদ! কোনো প্রকার অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই, নেই রুটিন মহড়া, নেই জরুরি সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা। স্কুল যেন স্কুল নয়, যুদ্ধক্ষেত্র! সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকরা যেন এক ধরনের আত্মঘাতী ঝুঁকি নিচ্ছেন প্রতিদিন। শুধু অবকাঠামো নয়, আমাদের নীতির মধ্যেও রয়েছে মারাত্মক ফাঁকফোকর। শিক্ষার সংজ্ঞায় নিরাপত্তা নেই। শিশুদের হাতে পেনসিল আছে, দেয়ালের ওপারে লুকিয়ে আছে মৃত্যু। রাষ্ট্র কি জানে, পরবর্তী মৃত্যু কখন, কোথায়? আরও গভীর বাস্তবতা হলো—বহু স্কুল গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিক ভবনে, যেখানে নেই কোনো ন্যূনতম অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, নেই কোনো রুটিন সংকেত মহড়া, এমনকি নেই কোনো প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। শিক্ষার নামে চলছে নির্মম অব্যবস্থা। স্কুল ভবনের পাশেই অবৈধ গ্যাস সংযোগ, অসংরক্ষিত বিদ্যুৎ লাইন, এবং ট্রাফিক জটের মতো বিপদগুলো ঘিরে রেখেছে শিশুদের জীবনকে। এতসব বিপদ মাথায় নিয়ে কি কোনো শিশু স্বপ্ন দেখতে পারে?
আর শোক নয়, চাই রাষ্ট্রীয় জবাবদিহি! শোক দিবস পালনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে আমাদের দেশে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে-এই শোকের ফল কী? যদি কোনো দায় নির্ধারিত না হয়, কোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতে আনা না হয়, তবে শোক কেবলই আবেগ। শিশুদের মৃত্যু কেবল দুঃখজনক নয়, এটি রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। কাজেই চাই কাঠামোগত ব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে সুরক্ষিত, প্রতিটি ঘটনায় তদন্ত হবে সত্যিকার। শোককে প্রতিবাদে রূপান্তর করতে না পারলে, এই শিশুরা কেবল স্মৃতি হবে। আমরা কি শুধু মোমবাতি জ্বালিয়ে দায় শেষ করব? নাকি এই মুহূর্ত থেকেই দাবি তুলব—“প্রত্যেক শিশুর জন্য নিরাপদ স্কুল চাই”? আমরা কি কেবল ক্ষণিকের শোক দেখিয়ে রাষ্ট্রকে রেহাই দেব? নাকি এবার হিসাব চাইব—কোন বিভাগ ব্যর্থ, কোন কর্মকর্তা ঘুমাচ্ছিলেন, কার গাফিলতিতে এই প্রাণ হারাল? রাষ্ট্র যদি জবাব না দেয়, তবে জনতার রাস্তাই একমাত্র জবাবদিহির পথ। সময় এসেছে শোককে বদলে দেওয়ার, প্রতিরোধে রূপান্তর করার।
শিশুদের কথা কে বলবে? শিশুরা তো ভোট দেয় না, তাই তাদের নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারও। কিন্তু তাদের কণ্ঠ, তাদের চাহিদা, তাদের নিরাপত্তা-সবই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এক শিশুর মৃত্যুও একটি জাতির ব্যর্থতা। আজ যারা নিথর হয়ে গেল, তারা তো কিছু চাইতে পারেনি-তাদের হয়ে কথা বলার দায়িত্ব আমাদের। এখন যদি আমরা না বলি, তাহলে আগামী প্রজন্মও বিশ্বাস হারাবে এই রাষ্ট্র, এই সমাজ, এমনকি আমাদের ওপরও। শিশুদের কথা বলুন, তাদের পক্ষ নিন-কারণ তারা কথা বলার সুযোগ না পেয়েই চলে যাচ্ছে। এভাবে আর চলে যেদে দেওয়া যাবে না। রাষ্ট্র তার শিশুদের স্কুলেও নিরাপত্তা দিতে পারে না, তাহলে সে রাষ্ট্র কাদের জন্য? একটি যুদ্ধবিমান, একটি প্রশিক্ষণ প্লেন-অথচ বিধ্বস্ত হলো একটি স্কুলের উপর! শিশুদের চিৎকার, কাঁচা মাংসের গন্ধ, বইয়ের পাশে রক্ত... এ কেমন অব্যবস্থা? কেমন ‘প্রশিক্ষণ’? বিমান উড়ছে, কিন্তু রুটপথ জানা নেই। স্কুল আছে, কিন্তু নিরাপত্তা নেই। জীবন আছে, কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে তার দাম নেই। রাষ্ট্র তোদের বাঁচতে দেয়নি। রাষ্ট্র তোদের নাম রাখবে না কোনো স্মারকে- কারণ তোরা ক্ষমতাধর কারও ছিলি না। তারা ছিলি কেবল নাম না-জানা একটা ভবিষ্যৎ। ধিক রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা! ধিক এই পরিকল্পনাহীনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, অমানবিক প্রশিক্ষণ-নীতি! আমরা আর চুপ থাকব না। আমরা শুধু শোক প্রকাশ করব না- প্রতিবাদ করব। এই রাষ্ট্রকে জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। শিশুরা আকাশ চেয়েছিল, আগুনে পুড়ল! প্রশ্ন থাকবেই: কেন নিরাপত্তাহীন আকাশে উড়ছিল যুদ্ধবিমান, আর কেন তার ধাক্কা খেল একদল নিষ্পাপ শিশু?
যাদের ঘরে নিথর শিশু, তাদের শোক কে বোঝে? সেই সব মায়েরা আজ আর কিছুতেই ঘুমাতে পারেন না। চোখ বন্ধ করলেই সন্তানের পোড়া মুখ, বিকৃত শরীর, দগ্ধ মুখের চিৎকার—সব দৃশ্য ফিরে আসে দুঃস্বপ্নের মতো। এক মা বারবার একই কথা বলেন, ও সকালে শুধু বলেছিল, ‘মা, একটু লেট হলে রাগ করো না’। ও যে আর ফিরবে না, আমি জানতাম না।” সেই মা এখন নির্বাক, চোখের ভাষায় আর্তি—এতো নিষ্ঠুর হতে পারে কি এই পৃথিবী? যাদের ঘরে নিথর শিশু পড়ে আছে, তাদের ব্যথা বুঝে না সমাজ, না রাষ্ট্র। একদিন পত্রিকার হেডলাইন ছিল, পরদিনই আমরা চলে গেছি অন্য শিরোনামে। কিন্তু এই মা-বাবাদের জন্য জীবন থেমে গেছে সেই মুহূর্তেই। এই শোক কখনো মুছে যাবে না, কারণ হারানোর বেদনা চিরস্থায়ী। আমরা যদি না শুনি তাদের কান্না, না বুঝি তাদের নিঃশব্দ আর্তি—তাহলে আমরা আসলে আর মানুষ নই। আজ যদি আমরা শিশুদের জন্য আওয়াজ তুলতে না পারি, তবে এই রাষ্ট্র, এই সমাজ—সবকিছুর ওপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে যাবে। শিশুরা নিরাপদ নয় এমন রাষ্ট্র কেবলই এক বিভ্রম, এক ভয়াবহ আত্মপ্রতারণা। এখনই সময় প্রশ্ন তোলার-“রাষ্ট্র কার জন্য?”
বাংলাদেশে ট্র্যাজেডির ইতিহাস দীর্ঘ-তাজরীন থেকে চকবাজার, নারায়ণগঞ্জ থেকে মাইলস্টোন। কিন্তু কয়টায় বিচার হয়েছে? কয়টি পরিবার পেয়েছে ন্যায়বিচার? বিচারহীনতা যেন এই দেশের নতুন নিয়ম। এই সংস্কৃতিই বারবার অপরাধীদের সাহসী করে তোলে। শিশুদের মৃত্যুর দায় কেউ নেয় না—না ভবনের মালিক, না প্রশাসন, না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদি এবারও বিচার না হয়, তবে নিশ্চিত জানবেন, আগামী মৃত্যুর জন্যও আমরা প্রস্তুত করছি মঞ্চ। বিচার চাইলে যারা বলে “ঘোলা পানিতে মাছ ধরছো”-তাদেরই চোখের সামনে তৈরি হয় নতুন শবদেহ।
কি আশ্চর্য ব্যাপার! এত বড় এক শিশুমৃত্যু, অথচ কেউ পদত্যাগ করলো না! কেউ দায়িত্ব নিলো না! বরং ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত অনেকেই। আমাদের দেশে কীভাবে যেন প্রতিটি ঘটনা চাপা পড়ে যায় ‘তদন্ত চলছে’-এর আড়ালে। প্রশ্ন হলো, এত মৃত্যু দেখেও যারা দায়বদ্ধতা অনুভব করেন না—তারা কীভাবে নীতিনির্ধারক হন? একজন শিক্ষামন্ত্রী, একজন নিরাপত্তা উপদেষ্টা, একজন সিটি করপোরেশনের প্রধান—তারা কীভাবে ঘুমান? এই নৈঃশব্দ্য যেন এক নিষ্ঠুর অভ্যস্ততা, যেখানে রাষ্ট্র শুধু দেখেও না দেখার ভান করে।
রাষ্ট্রীয় অপরাধের দায় এড়ানো চলবে না! প্রতিটি শিশুর মৃত্যু শুধুই একটি ট্র্যাজেডি নয়—তা একেকটি রাজনৈতিক অপরাধ। কারণ রাষ্ট্র যখন জানে, যুদ্ধবিমান চলছে পুরনো কাঠামোয়, জানে, স্কুল ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, জানে, অভিভাবকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন—তবুও কিছু করে না, তখন সে অপরাধের অংশীদার হয়ে যায়। এসব মৃত্যু হলে আমাদের বলা হয় “দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনা”, কিন্তু ভুলে যাই—যে দুর্ঘটনা বারবার ঘটে, তা আর দুর্ঘটনা নয়, তা একটি প্যাটার্ন। সেই প্যাটার্নের নাম অব্যবস্থা, দায় এড়ানোর সংস্কৃতি, এবং ‘ভুল হতেই পারে’ ধাঁচের আমলাতান্ত্রিক উদাসীনতা। তাই রাষ্ট্র যদি নিজের ভেতরে তল্লাশি না চালায়, তদন্তে নিরপেক্ষতা না আনে, দোষীদের নাম প্রকাশ না করে—তাহলে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস ফিরে আসবে না। এ বিশ্বাসহীনতা একদিন বিস্ফোরণ ঘটায়, ক্ষোভ জমে যায় এমন উচ্চতায়, যেখানে শিশুর কান্নাও আর কানে ঢোকে না কারো।
শিশুর মৃত্যু রাজনৈতিক নীরবতা ভাঙে। এই মৃত্যু শুধু স্কুলের দেয়াল ভেঙে দেয়নি, ভেঙে দিয়েছে আমাদের নিস্পৃহতার দেয়ালও। রাজনীতিকরা যেভাবে চুপ থেকেছেন—তা আরেকটি জাতীয় লজ্জা। সংসদে এক মিনিট নীরবতা, কিছু শোকবার্তা, আর কিছু বিলাপ—এই কি আমাদের শিশুদের জন্য যোগ্য সম্মান? এ ঘটনায় তো কোনো কমিটি পর্যন্ত হয়নি সংসদে। কই, কোথায় সেই শিশুবান্ধব রাজনীতি? তারা কি কেবল বক্তৃতার জন্য? কেবল বাণী পাঠিয়ে দায় শেষ? শিশুদের মৃত্যু নিয়ে যদি রাষ্ট্রনায়করা রাজনীতির বাইরে এসে কিছু বলেন না, ব্যবস্থা না নেন, তাহলে জনগণের চোখে তাঁরা আর নায়ক থাকবেন না। আজ যদি শিশুদের মৃত্যুতে কোনও দল এক প্ল্যাটফর্মে না আসে, তবে কবে আসবে? যখন সব শেষ?
মিডিয়া চতুর্থ স্তম্ভ না ক্ষণস্থায়ী শোকদূত? মিডিয়া হয়ত প্রথম দুদিন সরব থাকে—লাইভ কাভারেজ, রিপোর্টারদের কণ্ঠে কাঁপা কাঁপা গলা। কিন্তু তারপর? ধীরে ধীরে চাপা পড়ে যায়। এরপর অন্য কোনো সেলিব্রিটি স্ক্যান্ডাল বা রাজনীতির তর্জা এসে ঢেকে দেয় শিশুর পোড়া চামড়ার গন্ধ। এটাই কি গণমাধ্যমের ভূমিকা? নিউজরুমগুলোতে কি সত্যিই শিশুদের মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ থাকে? নাকি ‘ট্রেন্ড’ শেষ হলেই রিপোর্টার বদল? মিডিয়াকে জানতে হবে—এই ঘটনা শুধু সংবাদ নয়, এই ট্র্যাজেডি ইতিহাসের অংশ। সাংবাদিকতা কেবল খবর পরিবেশন নয়, দায়িত্বশীলতার নামও বটে।
জনতার আন্দোলনই একমাত্র ভাষা: যতক্ষণ না পর্যন্ত জনতা রাস্তায় নামছে, ততক্ষণ এই রাষ্ট্র নড়বে না। শিশুর মৃত্যুতে যদি আমরা শুধু ফেসবুক স্ট্যাটাস দিই, তাহলে দায় আমাদেরও। একটি নয়, দশটি নয়—এই দেশে শত শত শিশুর মৃত্যু ঘটেছে অব্যবস্থাপনায়। এবার সময় এসেছে—“নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন চাই”, “দুর্নীতিমুক্ত জরুরি ব্যবস্থা চাই”, “পুরনো যুদ্ধবিমান বাতিল চাই”—এসব দাবিতে সারাদেশ কাঁপানোর। আজ যারা স্কুলে, কাল তারা রাষ্ট্র চালাবে। কিন্তু যদি আজ তাদের নিশ্চিন্তে ক্লাসে বসতে না দেওয়া যায়, তাহলে ভবিষ্যতের রাষ্ট্র কোথায়?
উপসংহার: তারা বই হাতে স্কুলে এসেছিল, ক্লাসে বসতে, খেলতে, ভবিষ্যতের গল্প শুনতে। কেউ ডাক্তার হতে চেয়েছিল, কেউ শিক্ষক, কেউ হয়তো কেবল খেলার ছলে বড় হতে চেয়েছিল। কিন্তু ফিরে গেলো না আর। কাঁধে বই নয়, উঠলো কফিন। টিফিন বক্সে রাখা খাবার শুকিয়ে গেল—খুলে দেখারও সময় হলো না। মা টিফিনে আদর রেখেছিল, সেই আদরও অভিশাপে রূপ নিল।
এই কলাম লিখতে লিখতে কাঁপছে আঙুল, ঝাপসা হয়ে আসছে পর্দা। কারণ ওরা তো আমার-আপনার ঘরের শিশুই। আপন ঘরের হাসি, স্বপ্ন, অবুঝ জেদ। যারা চিৎকার করতে পারেনি, যারা জানতে পারেনি কেমন মৃত্যু তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল—তাদের হত্যাকারী আসলে আমাদের নিষ্ক্রিয়তা, আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘুম। শুধু প্রশ্ন রেখে যেতে চাই রাষ্ট্রের দরজায়-এই মৃত্যুর ভার কে নেবে? আর কতটা নিস্তরঙ্গ শিরোনাম হলে কানে পৌঁছবে শাসকের? আর কত শিশুর প্রাণ গেলে আপনার ঘুম ভাঙবে? না হয় ধরে নেব, আমরা এক নিস্প্রাণ প্রজাতি-যাদের চোখে জল আছে, কিন্তু হৃদয়ে দাহ নেই।
-লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
www.mirabdulalim.com

Arrest Report of Bank Fraud Section, DD.Dtd: 26.07.2025.Ref: Sec G Case No.92/2025 Introduction: This case was registere...
27/07/2025

Arrest Report of Bank Fraud Section, DD.
Dtd: 26.07.2025.

Ref: Sec G Case No.92/2025

Introduction: This case was registered on the basis of letter of complaint from HDFC Bank, HO, Kolkata.

Brief fact: Six personal loans were obtained by submitting fake salary slips and bank statement etc and the loanees posed as employees of different govt departments like Irrigation, Health, Forest Dept etc.
Total Rs. 62 lakh was siphoned off by the fraudsters in this case.

Investigation: During investigation IO collected relevant documents and oral evidences. It was surfaced that a group of accds defrauded the bank and they mostly operated from Bankura, Burdwan area through some DSAs appointed by bank.

Earlier Arrest: In course of investigation the following accd was arrested from Sonamukhi, Bankura and Burdwan earlier.

1.Akash Dhibar (28)
S/o Kalidas Dhibar
Lalbazar, Sonamukhi, Bankura, 722207
PS: Sonamukhi.

2. Rana Balmiki(37 yrs)
S/o Rabi Shankar Balmiki,
Lakshmipur, College More, Burdwan,
PS Burdwan
( Both are now in PC till 04.08.2025)

Further arrest:
During investigation, further raids were conducted at Howrah on yesterday and one more accd namely,

3. Soumitra Roy(32yrs)
S/o Joydeb Roy
Vill+PO: Somsar
PS: Indus, Bankura
was arrested.

He is one of the borrowers, took Personal Loan of Rs. 9 lakh by submitting forged documents before the bank authority to avail financial assistance and later siphoned and misappropriated the public money.

This accd is being produced before Ld. CJM, Kolkata today, for Police remand.

হেরিটেজ কমিশনের স্বীকৃতি সত্ত্বেও বালিতে অক্ষয়কুমার দত্তের শোভনোদ্যান আজ হানাবাড়ি, ধ্বংসের পথে নবজাগরণের স্মারকপার্থসা...
22/07/2025

হেরিটেজ কমিশনের স্বীকৃতি সত্ত্বেও বালিতে অক্ষয়কুমার দত্তের শোভনোদ্যান আজ হানাবাড়ি, ধ্বংসের পথে নবজাগরণের স্মারক

পার্থসারথি সেনগুপ্ত

সুবিশাল ভবনটি নামেই শুধু শোভনোদ্যান! আদতে একটি খন্ডহর।

কারণ তার অন্দরের হাল হকিকত বড়ই অ- শোভন। শুধুই ভগ্নদশা বললে একটু কম বলা হয়। বলতে গেলে নিতান্তই অন্তিম দশা। জি টি রোডের পূর্ব ধারে দেওয়ান গাজীর মাজারের ঠিক উল্টো দিকে গঙ্গার কোল ঘেঁষে অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় , জঙ্গলে আকীর্ণ হয়ে এক পোড়ো বাড়ির হাল হয়েছে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ও চারু পাঠের রচয়িতা অক্ষয় কুমার দত্তের বড় সাধের শোভনোদ্যানের। সন্ধ্যার আঁধার ঘনিয়ে এলে যে বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে গা ছম ছম করাও কিছু বিচিত্র নয়।

অথচ একদা এই বাড়িতই অক্ষয়বাবু তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন একটি " মিনি বোটানিক্যাল গার্ডেন"। বিশ্বের নানা প্রান্তের অজস্র বৃক্ষ রাজি - লতা - গুল্মের শুধু সংগ্রহ নয়, সন্তান স্নেহে নিজ হাতে সেগুলির পরিপালন ছিল তাঁর নিত্য দিনের কাজ। শুধু সবুজের অভিযানেই ক্ষান্ত থাকেনি শোভনোদ্যানের বিকাশ ও বিবর্তন। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকে বাংলা তথা ভারতের নব জাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম এই মানুষটি উপমহাদেশে প্যালিওন্টোলজি বা জীবাশ্মের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন ও চর্চার জগতেও পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছিলেন। নানা জায়গা থেকে সংগৃহিত অজস্র জীবাশ্ম ছিল এই বাড়িতে। এর সাথে ছিল বিভিন্ন বইয়ের সমাহারে সমৃদ্ধ পাঠাগারও। সেই বাড়ীই এখন প্রখ্যাত অক্ষয়- গবেষক আশীষ লাহিড়ীর ভাষ্যে, " পুরোদস্তুর এক হানাবাড়ির চেহারা। " ( সূত্র: আশীষবাবু প্রণীত ' অক্ষয়কুমার দত্ত: আঁধার রাতে একলা পথিক)।

উল্লেখ্য , অক্ষয়কুমার দত্তর অসামান্য কীর্তি"চারুপাঠ"-এর তিনটি ভাগ প্রকাশিত হয়েছিল যথাক্রমে ১৮৫২, ১৮৫৩ আর ১৮৫৯-এ। বিদ্যাসাগরের মতো শিশু নয়, তিনি বরং অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন কিশোরদের শিক্ষার ওপর। ছাত্রদের মধ্যে ভাষাশিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক চেতনার উন্মেষ ঘটানোই ছিল দেওয়াই ছিল অক্ষয়কুমারের লক্ষ্য। নানা বিদেশি সূত্র ঘেঁটে চারুপাঠ-এর জন্যে বিজ্ঞান-নির্ভর নিবন্ধগুলি লেখেন তিনি। তার মধ্যে কিছু আগেই প্রকাশিত হয়েছিল তত্ত্ববোধিনীতে । মানব জমিনে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি ভঙ্গির বিকাশে তাঁর এই প্রয়াসের সাথে তাল মিলিয়েই খানিক রসিকতার সুরে শোভনোদ্যান সম্পর্কে বিদ্যাসাগর মশাই বলেছিলেন এই ভবনই যেন "চারু পাঠ চতুর্থ ভাগ"! এই তথ্য মেলে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত মুহম্মদ সাইফুল ইসলামের রচনা "অক্ষয়কুমার দত্ত ও ঊনিশ শতকের বাংলা" বইটি থেকে।

এক কথায়, যে ভবনটি সারা দেশের মধ্যে এক অন্যতম প্রাচীন সংগ্রহ শালার রূপ নিতে পারত, কালচক্রে তা এখন চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার দিন গুনছে। যদিও এমন বেহাল পরিণতি হওয়ার কথাই ছিল না শোভনোদ্যানের। কারণ সরকারি " বদান্যতায় " খাতায় কলমে এটি রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের নিয়ম বিধি অনুযায়ী এ বা প্রথম সারি ভুক্ত একটি ঐতিহ্য শালী ভবন। বাড়ির গা ঘেঁষে গলির লাগোয়া দরজায় লাগানো বোর্ডটির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই ভবনটির কোনো বিকৃতি বা সৌন্দর্য হানি সরকার বরদাস্ত করবে না। কেউ এসব অপকর্ম করলে, তা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবেই গণ্য হবে।

২০০৬ সালে জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সেক্রেটারির তরফে প্রয়াত অক্ষয় কুমার দত্তের বাসভবনের বিষয়ে সাফ জানানো হয়েছে, " ... এই ঐতিহ্য সম্পন্ন পুরাকীর্তিটি সংরক্ষিত ও ঐতিহ্য সম্পন্ন পুরাকীর্তি রূপে ঘোষিত হয়েছে। যে কেউ চৌহিদ্দি সহ এই স্মারকের ধ্বংস, ক্ষতি, পরিবর্তন, বিকৃতি, সৌন্দর্য হানি, অপসারণ বা বিলুপ্তি ঘটাইবেন, তিনি আইনত দায়বদ্ধ থাকবেন।" সরকারি এই কড়া চেতাবনি সত্ত্বেও কি শোভনাদ্যানের খিড়কি থেকে সিংহ দুয়ারতক "ঐতিহ্যের" আর তিলমাত্র কিছু কি অবশিষ্ট আছে! বাড়ির চৌহিদ্দি মধ্যে রয়েছে একাধিক কারখানা। সবকটিই বন্ধ। বাড়ির সদর দরজাটি সব সময়ই ভিতর থেকে বন্ধ থাকে। অন্য একাধিক দরজাও একই ভাবে বন্ধ থাকে। আম জনতার প্রবেশ নিষিদ্ধ।

অক্ষয়কুমার দত্তের বাড়ির ক্রমবিবর্তন, ইতিহাস ও চলতি পর্যায় নিয়ে " "শোভনোদ্যানের অশোভন পরিণতি" শীর্ষক প্রামাণ্য গ্রন্থের রচয়িতা ও এশিয়াটিক সোসাইটির স্কলার অর্ণব চট্টোপাধ্যায়ের মতে " ধরা যাক কোনো গবেষক অক্ষয়কুমার দত্তের জীবন ও কর্মকান্ড নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী। গবেষণার প্রয়োজনেই সংশ্লিষ্ট গবেষকের, অক্ষয়কুমার দত্তের কর্মজীবনের এক বড় অংশ কেটেছে যে শোভনোদ্যানে, তার চৌহদ্দি বা অন্দর ঘুরে পর্যবেক্ষণ করে দেখা দরকার। কিন্তু তিনি সেই সুযোগ পাবেনই না। আবার কোনো স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা যদি তাদের স্টাডি ট্যুরের জন্য এই ভবনটি একবার চোখের দেখা দেখতে চায়, সে সুযোগও তাদের মিলবে না। আমাদের একটিই প্রশ্ন, প্রথম সারির হেরিটেজ ভবনে সাধারণ মানুষের কোনো একসেস বা প্রবেশাধিকার থাকবে না কেন? " দীর্ঘ দুই দশক ধরে এই বাড়ির পুনরুদ্ধার ও সংস্কারের দাবিতে ব্রতী রয়েছেন অর্ণববাবু। তিনি মনে করেন, " শোভনোদ্যানের এই ট্রাজিক পরিণতি বাঙালির লজ্জা।"

অথচ, ভারতের রেঁনেসা পর্বে জ্ঞান বিজ্ঞানের বহুমুখী চর্চার ইতিবৃত্তে এক গৌরবময় অধ্যায় রচিত হয়েছিল শোভনোদ্যানেই। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে আদর্শ গত মতবিরোধ ও তীব্র শির: পিড়া জনিত মারাত্মক শারীরিক সমস্যার কারণে অক্ষয়বাবুর কর্ম জীবনের দীর্ঘ বারো বছরের পর্বের অবসান ঘটে। তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ছাড়ার পর ১৮৫৬ সালে বই বিক্রির টাকায় তৎকালীন বালি গ্রামে গঙ্গার তীরে জমি কিনে তিনি গড়ে তোলেন তাঁর সাধের শোভনোদ্যান। শান্ত পরিবেশ দিন কাটানোটাও তাঁর এখানে বাড়ি করার অন্যতম কারণ ছিল। তাঁর শারীরিক অবস্থা এতটাই বেহাল ছিল জোরে কোনো শব্দ হলেও তিনি অসুস্থ বোধ করতেন।সে সময় মাক্স মূলর অক্ষয়বাবুর আরোগ্য কামনা করে চিঠিও লিখেছিলেন। Hindu Patriot তাঁর অসুস্থতাকে জাতীয় বিপর্যয় বা National Calamity বলে আখ্যা দিয়েছিল।

কিন্তু এসব সত্ত্বেও তাঁর কর্ম যজ্ঞ থেমে থাকে নি। এবং তার ব্যাপ্তি যে কতটা প্রসারিত ছিল, সেই সাবুদ মেলে ১৮৭৬ সালে "সোমপ্রকাশে' শোভনোদ্যানের যে বিবরণী প্রকাশিত হয় তা থেকে।

'... বাড়িটি বালিগ্রামে গঙ্গার অতি সন্নিকটে অবস্থিত। ঘরগুলি অতি পরিষ্কার ও বায়ু সঞ্চালনের উপায় আছে। তিনি (অক্ষয়বাবু) যে স্থানে বসেন, তাঁর চারদিকে নানা প্রকার সিন্ধু জাত শঙ্খ, শামুক, প্রাণীদেহ, জীব কঙ্কাল ইত্যাদি অতি পরিপাটি ভাবে সজ্জিত দেখিলাম। তিনি এক একটি হস্তে করিয়া তাহার প্রকৃতি, স্বরূপ ও ইতিবৃত্ত প্রভৃতি ও তৎসঙ্গে ডারউইনের মত প্রভৃতি বুঝাইতে লাগিলেন।"

এখানে তৎকালে এই বাড়ি সম্পর্কে প্রকাশিত একটি লেখায় এমনও বলা হয়েছে" এই উদ্যান মধ্যস্থ দ্বিতলে অক্ষয় কুমারের বসিবার ঘরটি কি বলিব? ... উদ্যানে উদ্ভিত বিদ্যা মূর্তিমতী, গৃহে সাঙ্গ- পাঙ্গ ভূ তত্ত্ব জ্ঞান জাজ্বল্যমান । নানাবিধ শঙ্খ, শম্বুক, প্রবাল পঞ্জর, জীব কঙ্কাল, ধাতু নি: স্রব - বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা মত চারিদিকে সুসজ্জিত রইয়াছে। ... চারিদিকে নানা বিধ বৈজ্ঞানিক মানচিত্র।"

মহেন্দ্রনাথ রায় তাঁর " বাবু অক্ষয়কুমার দত্তের জীবন বৃত্তান্ত " (১৮৮৫) - তে বলেছেন, " উদ্যানটি ছোট বটে, কিন্তু তরু - রাজি - সংগম ও সুচারু রূপ পারিপাট্য... বিভিন্ন জাতীয় আর্কেরিয়া, থুজা, সাইপ্রেস, জুনিপেরস, পাইনস, কপ্রেসস, পামন, সেলাজেনিলা, ফরম ( নানা বর্গ) এন্থেরিয়াম, পোথোস, মনস্টেরা ক্রোটন, কোলিয়স, বিগোলিয়া, মেরেন্টা, কেলেথিয়া, হফমেনিয়া , সেন্ট্রাডেনিয়া, কুরমেরিয়া, পেপোরামা, ড্রেসিনা, ভিফন বেকিয়া, এগ্লোনিমা, এলোকেশিয়া, কেলেডিয়াম, একালিফা , ওরেলিয়া... ইত্যাদি বিবিধ বর্গের অন্তর্গত সুশোভন বৃক্ষজাতি, এবং এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, লোবা তেজপত্র, কাবাবপিচিনি, খদির, হিঙ্গু, কর্পূর, চন্দন, ভুর্জ্জ পত্র, হরীতকী, সাগু, আমলকী, পান্থ পাদপ ইত্যাদি নানা জাতীয় অশেষ প্রকার পরম রমনীয় অসাধারণ বৃক্ষ রাজি সমূহ... চিত্র পটের ন্যায় দৃশ্য মান। ... অনেকে নানা স্থানের উদ্যান সন্দর্শন করিয়া বলিয়া থাকেন, শিবপুরস্থ রাজকীয় উদ্যান ( অধুনা শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন) ব্যাতিরেকে অন্য কোনো লোকের উদ্যানে এত প্রকার অসাধারণ অপূর্ব চিত্র - বিচিত্র
বৃক্ষাদি দৃষ্টি করি নাই।"

আশীষবাবু তাঁর বইতে উল্লেখ করেছেন, " বহু লোক সেখানে আসত, কেউ বাগান দেখতে, কেউ উদ্ভিদ বিদ্যা শিখতে। তাদের উদ্ভিদ বিদ্যা পড়িয়ে দুর্লভ গাছ চিনিয়ে আনন্দ পেতেন অসুস্থ মানুষটি। " এই প্রসঙ্গে মহেন্দ্রবাবুর রচনা থেকে জানা যায়, " অক্ষযবাবু যস্টি ধারণ করিয়া মৃদু পদে আসিতে লাগিলেন এবং প্রত্যেক তরু, গুল্ম ও লতার উদ্ভিজ্জ - বিদ্যাসম্মত ল্যাটিন নাম ও তাহার স্বরূপ, প্রকৃতি প্রভৃতি বর্ণন করিতে লাগিলেন। " মহেন্দ্রবাবু শোভনোদ্যানে নানাবিধ জীবাশ্মের যে মূল্যবান সংগ্রহশালা ছিল, সেগুলির বর্ণনাও দিয়েছেন, " প্রস্তরীভূত অস্থি বিশেষ, প্রস্তরীভূত হস্তি হনু বা হস্তি চিবুক, প্রস্তরীভূত অতি সুন্দর বৃক্ষ, প্রস্তরীভূত কাষ্ঠ খন্ড, প্রস্তরী ভূত তন্ডুল রাজি, বৃক্ষ বীজ, মানভূমে পতিত উল্কা পিন্ডের খন্ড বিশেষ, স্তরীভূত পর্বতের সুস্পষ্ট স্তর - চিহ্ন বিশিষ্ট পাষাণ সমূহ, আকরিক অর্থাৎ অসংস্কৃত লৌহ ইত্যাদি।" লক্ষণীয়, শোভনোদ্যানে "মানভূমে পতিত উল্কা পিন্ডের খন্ড" এর মত সংগ্রহ অক্ষয়কুমার দত্তের বিজ্ঞান চর্চার যে দিকটি সামনে আনে, তা হলো তারায় তারায় খচিত এই ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যের উন্মোচনেও তিনি ছিলেন তৎপর। সে আমলে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ ভারতীয় উপমহাদেশে এভাবে মহাকাশের গতি প্রকৃতি পর্যবেক্ষনে অক্ষয়ের মতো আগ্রহ ছিল নিতান্তই বিরল।

অক্ষয়কুমারকে নিয়ে যে কোনো আলোচনার প্রসঙ্গে একটি প্রশ্ন ওঠা খুবই সঙ্গত। তা হলো, তাঁর অতি যত্নে সংগৃহীত শঙ্খ, শম্বুক, প্রবাল পঞ্জর, জীব কঙ্কাল, ধাতু নি:স্রব বা জীবাশ্মগুলি শোভনোদ্যানে ছিল, সেগুলি এখন কোথায়? এর আংশিক উত্তর মিলেছে বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক ও গবেষক শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। তিনি জানিয়েছেন, এই সংগ্রহের কিছু রয়েছে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে। কিন্তু বাকিগুলির কি হয়েছে, তার হদিস জানা নেই। বিস্ময়কর হলো, অক্ষয় দত্ত তার জীবনের উপান্তবেলায় যে উইল তিনি করে গিয়েছিলেন, তাতে তিনি সুস্পষ্ট দিশা দিয়েছিলেন, " আমার পুস্তক, শঙ্খ, , শম্বুক, প্রবালদি, সামুদ্রিক জন্তুর পঞ্জর , পশুর প্রস্তুরীভূত জন্তুপঞ্জর ও অস্থি, ভূতত্ত্ব ও প্রাকৃতিক ভূগোল সংক্রান্ত চিত্র ইত্যাদি শিক্ষাদায়ক দ্রব্য সমুদয় যদি এগজিকিউটর আমার কোনো উত্তরাধিকারীকে ব্যবহার করিবার উপযুক্ত জ্ঞান করেন তবে তাকেই দিবেন। নচেৎ সাধারণ লোকের শিক্ষা স্থানে অর্পণ করিবেন।" আঁধার রাতের নিঃসঙ্গ পথিকের শেষ ইছাপত্র যে আদতে মান্যতা পায় নি, তা শোভনোদ্যানের " ভগ্ন প্রায় ধ্বংস স্তূপ" থেকেই ঠাওর করা যায়।

সব মিলিয়ে শোভনোদ্যানের ইতিবৃত্ত জুড়ে রয়েছে এক নিদারুণ ট্র্যাজেডির ছোঁয়া। এই বাড়িতে থিতু হয়েও যে অক্ষয়কুমার দত্তের বহু কাঙ্খিত " প্রাণের
আরাম, মনের আনন্দ, আত্মার শান্তি’ পুরোমাত্রায় মিলেছিল, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। শোভনোদ্যান ঘিরে তাঁর স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল। একদিকে অক্ষয়কুমার দত্তের চরম শারীরিক অসুস্থতা। তার সাথে ছিল পারিবারিক কিছু টানাপোড়েনও। সর্বোপরি তাঁর প্রয়াণের পর এই তাঁর " উত্তরাধিকারী" - র তরফে শোভনোদ্যান ঘিরে চারুপাঠের রচয়িতার গৌরবোজ্জ্বল লিগাসীর রক্ষায় "অবহেলার" মনোভাবের অভিযোগও উঠেছিল তৎ কালীন সুধি সমাজে।

১৮৮৬ সালে মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরের অধ্যায়ের অনেকটাই হদিশ মেলে কেদারনাথ মজুমদারের " বাঙ্গালা সাময়িক সাহিত্য ( ১৯১৭) " বইটি থেকে। সেখানে কেদারনাথ শোভনোদ্যান সম্পর্কে লিখেছেন, " অক্ষয়বাবুর শেষ জীবন এই বালী গ্রামে অতিবাহিত হয়। তাঁহার এখানকার বসতবাটি শোভনাদ্যান দর্শনার্থ কলিকাতা ও সুদূর পল্লিগ্রাম হইতে বহু লোক আসিত। তিনি ইউরোপ ও আমেরিকা হইতে বহু বৃক্ষ আনিয়া এই বাগানে লাগাইয়াছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর পর তদীয় পৌত্র তাঁহার শোভনোদ্যান এক ইংরেজ সওদাগরকে বিক্রয় করিয়া দরিদ্র গ্রামবাসীর হৃদয়ে দাগা দিয়াছেন। ... অক্ষয়কুমারের সুযোগ্য বংশধরের চেষ্টায় সেই শোভনোদ্যান এখন জাহাজ মেরামতের বৃহৎ কারখানায় ( dockyard) পরিণত হইয়াছে। " অক্ষয়কুমারের পৌত্রও তাঁর নিজ গুণেই খুবই প্রসিদ্ধ। তিনি কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। যাঁর ছন্দের জাদুকরিতে মুগ্ধ হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথও ।

সেই জাহাজ মেরামতির সাহেবি কোম্পানি এখান থেকে অনেককালই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। কতক গুলি ছোট কারখানা পরে এখানে চালু হয়েছিল। সেগুলিও বন্ধ। শক্তিসাধনবাবুর কথায়, " এই বাড়িটিকে সংরক্ষণ করে সংগ্রহ শালা, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান ও সাহিত্য চর্চার কেন্দ্র হিসাবে গড়ে না তুললে ভারতের ইতিহাসের একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ স্মারক চিরতরে হারিয়ে যাবে। " তিনি জানিয়েছেন, " হেরিটেজ কমিশনের কাছে আবেদন এটির রক্ষায় তাঁরা যেন সচেষ্ট হন। বাংলা ও বাঙালির মুখ চেয়ে এইটুকু তারা করুন।"

এটাও ঘটনা, সরকারের কাছে আবেদন নিবেদনের পর্ব তো জারি রয়েছে বহু বছর ধরেই। এবার তার জেরে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে সমস্যার কি কোনো সমাধান তাতে হয়েছে। শোভনোদ্যানের সংরক্ষনের কোনো সূত্র কি মিলেছে? উত্তর টা অবশ্যই নেতিবাচক। কারণ, যে হেরিটেজ ভবনে প্রবেশাধিকার মেলার জন্য খোদ রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের কর্তাকেই থানার "বড়বাবুর '' কাছে ডায়েরী করতে হয়েছিল! ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য ঠেকলেও ঠিক সেটাই ঘটেছিল। ঘটনা হলো, ২০২০ সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝি কমিশনের ও এস ডি হেরিটেজ ভবন শোভনোদ্যানের হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন। সেইসময় সিকিউরিটি গার্ড তাকেই আটকে দিয়েছিল। বাধ্য হয়ে সরকারি কর্তা বালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে জানান যে পুলিশ যেন এগিয়ে আসে, হেরিটেজ কমিশনকে এই বাড়িটি দেখতে সহায়তা করে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পরিস্থিতির জট পুলিশ দৌড়ে এসেছিল বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর।

এমনকি হাওড়া জেলার ভূমি পুত্র মন্ত্রী অরূপ রায়ও চুপ করে বসে নেই। তার কাছে অর্ণববাবু ও অক্ষয় গুণগ্রাহীরা অনেকেই আবেদন করেছিলেন যে আম জনতার যেন প্রবেশাধিকার মেলে এই ভবনে। যেন এই ভবনটি উপযুক্ত মর্যাদায় সংরক্ষিত হয় । তিনি বিষয়টি চলতি বছরের মার্চ মাসেই সরকারি ভাবে " ফরোয়ার্ড " করেছেন হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান কাছে।

তবে এত টানা পোড়েনের মধ্যেও এই মুহূর্তে অবশ্য খানিক "আশার" আলো দেখিয়েছে রাজ্যে হেরিটেজ কমিশন। কমিশনের এক বরিষ্ঠ কর্তা "আশ্বাস" দিয়েছেন, " এই মুহুর্তে যারা জমির মালিক তাঁরা, এখানে নতুন কিছু "ডেভেলপ" করার পরিকল্পনা করেছেন। সেই সুবাদেই শোভনোদ্যানের নতুন করে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে বলে আমরাও আশা করছি।" যদিও এই "ডেভেলপমেন্টের" কাজ কি ধরনের হবে তা নিয়ে কমিশন এখনও নীরব।সূত্রে খবর, এই বিষয়ে সরকারি কর্তাদের সঙ্গে জমির মালিকদের কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। এই বিষয়ে ধন্দে রয়েছেন বালির বাসিন্দারা ও সুধীজনেরাও। তাঁরা মনে প্রাণে চাইছেন, উপযুক্ত মর্যাদায় সংরক্ষিত হোক এই হেরিটেজ ভবন। এমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে, শেষ পর্যন্ত " ডেভেলপমেন্টের " বুলডোজারের ধাক্কায় বালির বুক থেকে চিরতরে কী মুছে যেতে চলেছে শোভনোদ্যান।

22/07/2025

নাম ধর্ম ভাঁড়িয়ে নারী পাচারে অভিযুক্তর জেলা আদালতে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল কলকাতা হাইকোর্টও

পার্থসারথি সেনগুপ্ত

সর্ষের মধ্যেই ভূত!

ঘটনাটি একটু সবিস্তারে পেশ করা যাক। তা হলো এক ব্যক্তি আদতে মুসলিম। সাকিন উত্তর প্রদেশ। ভাঁড়িয়ে নাম ভাঁড়িয়ে হিন্দু। পেশায় উত্তর ২৪ পরগণা আদালতেরই অস্থায়ী কর্মী। নারী পাচার ও ধর্মান্তকরণের অভিযোগে বারাকপুর থেকে সেই বিতর্কিত গ্রেপ্তার শেখর রায় ওরফে হাসান আলিকে বৃহস্পতিবারই গ্রেফতার করেছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ। অভিযুক্তকে আগ্রা নিয়ে যাওয়ার জন্য বারাকপুর এসিজেএম আদালতে রিমান্ডের আবেদন জানায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সবশেষে বিচারক অভিযুক্তকে তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য,একই অভিযোগে কলকাতা থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঋথ বণিক ওরফে মহম্মদ ইব্রাহিমকে।

চমকে যাওয়ার বিষয়টি হলো গত বছরই কলকাতা হাইকোর্ট শেখর ওরফে হাসানের নিয়োগ যে যথাযথ তা জানিয়েছিল। তা সত্ত্বেও অবশ্য অভিযুক্ত চাকরিতে বহালই ছিল। এই ঘটনা ঘিরে রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে জোর আলোড়ন বেধে গিয়েছে। কিভাবে নারী পাচার চক্র ও বলপূর্বক ধর্মান্তকরণের সঙ্গে যুক্ত " রাষ্ট্র বিরোধী" এক ব্যক্তি রাজ্যের বিচার ব্যবস্থার অন্দরে সিঁদ কেটে অনুপ্রবেশের সুযোগ পেল, এমন প্রশ্নও উঠছে। তার মাথার উপর কী কোন "প্রভাবশালীর" হাত ছিল?

তবে এই মুহূর্তে ঘটনাটির কথা শুনে হালে অনেকেই চমকে উঠলেও এই ব্যক্তিকে ঘিরে যে বড় ধরনের ধোঁয়াশা রয়েছে, সেই আশঙ্কা অনেক আগেই ব্যক্ত করেছিলেন আদালতেরই কর্মীদের একাংশ। বিশেষ করে শেখর ওরফে হাসানের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে তাঁরা প্রশ্নও তুলেছিলেন। ঘটনায় প্রকাশ সরকারি নথি অনুযায়ী ওই আদালত কর্মীর নাম শেখর রায় এবং তিনি গত বছর জেলা আদালতে অদক্ষ কর্মী হিসাবেই যোগ দিয়েছেন। তার রোল নম্বর ছিল ১৫৮ ও পিতার নাম রতন রায়। বলা ভালো, বিধিবহির্ভূত নিয়োগের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গ আদালত কর্মচারী সমিতির তরফে মামলাও দায়ের করা হয়েছিল।

এই প্রসঙ্গে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বিনয় হালদার বলেন, " আমরা বহুবার উচ্চ আদালত, রাজ্য সরকার এবং জেলা জজদের কাছে স্থায়ী নিয়োগের দাবি জানিয়েছি । কিন্তু প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি। রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে সিভিক ভলান্টিয়ার বা চুক্তিভিত্তিক কর্মী দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে, যা স্থায়ী কর্মীদের ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করছে। কোনো রেকর্ড হারানো বা তথ্য পাচার হলে দায়ভার গিয়ে পড়ছে স্থায়ী কর্মীদের ওপর। আমরা এই Unskilled Employee নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেছি এবং এও বারবার বলেছি এটি অসাংবিধানিক ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপন্থী। প্রশাসনের উদাসীনতায় আজকের এই ভয়ঙ্কর পরিণতি।”

এক্ষেত্রে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের রায়ে সাফ বলা হয়েছে যে বিচারব্যবস্থা তথা আদালত একটি অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ ও সংবেদনশীল ক্ষেত্র। সেখানে অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে কাজ চালানো কতটা যুক্তি যুক্ত সেই প্রশ্নটা থেকেই যায়। কেন বার বার বলা সত্ত্বেও প্রশাসন স্থায়ী মানবসম্পদ নিয়োগে গড়িমসি করছে, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে উচ্চ আদালত। বিচারপতি তাঁর রায়ে এও বলেছেন, " ইট ইজ এ ম্যাটার অফ আঙ্গুইস দ্যাট... রিক্রুটিং রেগুলার এমপ্লয়ীজ এগেনস্ট সাংশনড পোস্ট লাইং ভ্যাক্যান্ট হাজ নট বিন কনডাক্টেড ফর ইয়ার্স।" অর্থাৎ এটা অত্যন্ত ক্ষোভের বিষয় যে অনুমোদন প্রাপ্ত পদগুলিতেও বছরের পর বছর স্থায়ী কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। এই ব্যাপারে প্রশাসনের তরফে আশ্বাস কথার কথাই থেকে গিয়েছে।

এমন কথাও বিচারপতি তাঁর রায়ে বলেছেন, " জেলা আদলতগুলির কাজ সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করার জন্যে স্টেনোগ্রাফার ও পেশকারের মত পদ গুলি খুবই সংবেদনশীল ( ভেরি সেনসিটিভ পোস্ট)। সাধারণ ভাবে চুক্তিতে বা অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত কোনো কর্মী কোন নিয়ম বিরুদ্ধ ব্যাপারে জড়িয়ে পড়লে, তাঁকে আর যাই এক জন স্থায়ী কর্মীর মত " দায়বদ্ধ" করা যায় না। বিশেষ করে সংবেদনশীল পদ গুলিতে চুক্তিভিত্তিক তথা অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ জেলা আদালতে দৈনন্দিন কাজে নানা জটিলতা ও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে উচ্চ আদালত।

বিনয়বাবু বলেন, " আমরা কর্মী সংগঠন তো গোড়া থেকেই এই নিয়োগ ঘিরে সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলাম। যে আশঙ্কা আমরা করেছিলাম, তার অশনি সংকেত মিলেছিল উচ্চ আদালতের মহামান্য বিচারপতির বক্তব্যেও। " কর্মী- নেতার সংযোজন, " এই ধরনের অপরাধ চক্রের কালো হাত কত টা প্রসারিত হয় , তার সাবুদ মেলে এই ধরনের নিয়োগ থেকেও। ভাবা যায়, আদতে উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা এক ব্যক্তি নাম পরিচয় বদলে, রীতিমত ঘুর পথে পশ্চিমবঙ্গে আদালতে চাকরি পেয়ে গেলো! এখন দেখা যাচ্ছে সে আবার বড় মাপের দুষ্কৃতী। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি কে বা কারা অন্যায় ভাবে প্রভাব খাটিয়ে এই ব্যক্তিকে আদালতে চাকরীর ব্যবস্থা করে দিয়েছিল তাদের অবিলম্বে খুঁজে বের করতেই হবে। সেই প্রভাবশালীদেরও গ্রেফতার করতে হবে।

Address

20 Srinagar
Ichchapuram
743144

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when banglarchokhtv24.com posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to banglarchokhtv24.com:

Share