24/09/2025
কদিন আগে আমার পরিচিত এক বোনের ডি"ভো"র্স হয়েছে। অনেক শ"ক"ড হয়েছিলাম। তাঁর স্বামী কয়দিন আগে তাকে Whatsapp এ' ডি"ভো"র্সের ফাইনাল কপি-টা সেন্ড করেছে। তখন আমার ঐ বোনের রিপ্লাইটা ছিলো ঠিক এরকম -
'আজকে যদি আমার কাবিনটা বেশি না, অন্তত ৩ লাখ টাকা-ই হতো। তুমি আমাকে ডি"ভো"র্স লেটার পাঠানোর আগে কম করে হলেও ১শত বার ভাবতে।
কারণ যখন তুমি আমাকে ডি"ভো"র্স লেটার পাঠাও বা আমি তোমার বাসা থেকে চলে আসি, তখন তোমার কতটুকু সামর্থ ছিলো সেটা আমার থেকে তোমার ভালো করে জানা।
আমি বিশ্বাস করেছিলাম, ভরসা করেছিলাম বলেই কাবিন মাত্র ১৫ হাজার টাকা ছিলো। আমার মধ্যে এই ভরসাটা ছিলো যে, যাকে আমি ভালোবাসি সে মানুষটা কোনোদিন আমার হা"ত ছাড়বে না।
আমার আল্লাহ আমাকে একজন ভু"ল মানুষের থেকে সরিয়ে নিয়ে আসছেন।
লেটার, মা"ম"লা কাগজ এইসব দিয়ে আমি কি করবো? বি"চা"র-টা আমার উপরওয়ালার আ"দা"ল-তে দিয়ে রাখছি। আল্লাহর চেয়ে ন্যায়-বি"চা"রক কে আছে?
হাসবুনাল্লাহ ওয়া নিয়া মাল ওয়া কি"ল, "আমার জন্য আমার আল্লাহই যথেষ্ট।"
হকদারের হক আল্লাহ ও মা"ফ করেন না। আমার হক পরিপূর্ণ ভাবে আদায় করোনি। আমি এখনো তোমার কাছে একজন পাওনাদার। সব হিসাব ইহকালে নিলে হবে? কিছু জমা থাক প"র"কালের জন্য।
যেদিন জীবনে কারো কাছে বাজে-ভাবে ঠ"কে যাবে, সেদিন এই আমার কথা মনে কইরো যে, আমি ওর সাথে কি করেছিলাম and it has to be. আল্লাহ ছা"ড় দেন, কিন্তু ছেড়ে দেন না।'
---
পোস্টটা করার একটি কারণ হচ্ছে - দেনমোহর। ইদানীং আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখি মেয়েরা ভালোবাসার খাতিরে অনেকেই 'এক টাকা কিংবা ১০০১ টাকা' অথবা যত কম টাকায় দেনমোহর নির্ধারণ করে বেড়ায় নিজেদের কঠিন ভালোবাসা প্রকাশ কিংবা ভাইরাল হতে।
এটা মোটেও ঠিক নয়। দেনমোহর ই"স"লামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। অবশ্যই দেনমোহর এমন নির্ধারণ করা উচিত যাতে মেয়ে তাঁর প্রাপ্ত সম্মানটূকু পায় এবং ছেলের প্রতিও জু"লু"ম না হয়ে যায়।
এই যে, আমার এই বোনটাও ভালোবেসে মাত্র ১৫ হাজার টাকা দেনমোহর রেখেছিলো। যেটি পরিশোধ করা সামান্য একজন দিন মজুরের জন্যও কঠিন নয়। ফলাফল, মন চাইলো, স্ত্রীকে পরিবর্তন করে ফেললো। গা"য়ে"ও লাগলো না।
এবার ডি"ভো"র্সের কারণটা বলি, যেটি শুনে সবচেয়ে বেশী শক*ড হয়েছিলাম। আসলে এমন কারণেও কারও ডি"ভো"র্স হতে পারে কখনও শুনিনি।
ছেলের শখ ছিলো ইউরোপে যাবে। তাই সে টাকা জমা দেয় মেয়ের কাজিনের কাছে। মেয়ের কাজিন তাকে ইউরোপ পাঠাতে পারেনি।
এদিকে মেয়ের কাজিনের লো"ভ ছিলো তাদের একটা জ"মি"র উপর। যেখানে কাজিন একটি ফা"র্ম দিতে চাচ্ছিলো। প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ঐ জমিটি কেনার জন্য কাজিন যে, দাম বলে তা অনেক কম।
তাছাড়া মেয়েরা ঐ জমি সেল করবে না। কারণ ঐ জমিটুকুই ওরা এতি'*ম ভাই বোনের জন্য শেষ সম্বল।
এখন কাজিন অনেকভাবে চেষ্টা করে যখন ব্য"র্থ হয়। তখন মেয়ের স্বামীকে বলে, তুমি যদি ঐ জমি বিক্রি করার জন্য রাজী করাতে পারো, তাহলে তোমাকে আমি এক মাসের মধ্যে বিদেশে পাঠাবো। আর যদি রাজী করাতে না পারো, তাহলে ওরে ডি"ভো"র্স দিয়ে দাও। ডি"ভো"র্স দিলেও আমি তোমাকে বিদেশ পাঠাবো।
ছেলেটি বিন্দুমাত্র না ভেবে স্ত্রীকে ডি"ভো"র্স দিয়ে দেয়। মেয়েটির কাজিন ছেলেটিকে ইউরোপে না পাঠাতে পারলেও আফ্রিকায় পাঠিয়েছে।
এদিকে মে"ন্টা"লি মেয়েটা এতটাই ভে"ঙ্গে পড়েছিলো যে, বলার বাইরে! তবে সে থেমে থাকেনি। নিজেকে ভেঙ্গে গড়ে তুলেছে। IELTS এ অসাধারণ একটি রেজাল্ট করেছে। খুব শীঘ্রই সে তাঁর প্রাক্তন স্বামীর স্বপ্নের দেশ - ইউরোপেই কোনে একটি ইউনিভার্সিটিতে মুভ করবে ইনশাআল্লাহ্!
পোস্টটা ঐ বোনের অনুমতি নিয়েই করেছি। সেই আমাকে অনুরোধ করেছে দেনমোহর নিয়ে তার মত ভুল যেন মেয়েরা না করে।
ওর জন্য দোয়া করবেন। ও যেন জীবনে সুখী হতে পারে।
আবারও মেয়েদের জন্য অনুরোধ - আবেগের বশে কখনও দেনমোহর এমন অসামঞ্জস্যপূর্ণ নির্ধারণ করো না।
এটি ঠিক যে, থাকার সে চলেই যাবে। সেটি যত বড় এমাউন্টেরই দেনমোহর হোক না কেন! তাছাড়া টক্সিক সম্পর্কে থেকেও শা"ন্তি নেই।
যেহেতু দেশের অধিকাংশ ন্যা"য্য দেনমোহর অপরিশোধিত এবং পাত্র সেটি বিয়ের সময় পূরণ করতে ইচ্ছুক নয়।
এর বেশীরভাগ কারণ আর্থিক অক্ষমতা কিংবা উদাসীনতা।
তাই অন্তত ন্যা"য্য দেনমোহরে এই সি"কি"উরিটি থাকে, চাইলাম আর হুট করে স্ত্রীকে দেনমোহর দিয়ে তাড়িয়ে দিলাম। সেই সুযোগটা পায় না।
রা"গ বা ভু"লের বশবর্তী হলেও সম্পর্কটা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবার সুযোগ পায়। কিন্তু ১ টাকা, ১০০১ টাকা কিংবা নাম-মাত্র দেনমোহরে এই দ্বিতীয়বার ভাবার সুযোগটা থাকে না। কম দেনমোহরে স্বামীর পেছন ভর্তি দেমাগ আর দু:সা"হ"স থাকে।
সর্বোপরি, দেনমোহর শুধুমাত্র টাকার এমাউন্ট নয়। নামমাত্র দেনমোহর, মেয়েদের জন্য অসম্মানজনক।
নিশ্চয়ই এই বিধান আল্লাহ্ তায়ালা মেয়েদের জন্য মঙ্গলকর বলেই নির্ধারণ করেছেন।
> অন্তর মাশঊদ
#মাই_নেম_ইজ_খোকা