16/10/2025
হিন্দি সিনেমায় পুলিশের চরিত্র এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের হিন্দি চলচ্চিত্রগুলোয় পুলিশ কেবল আইন রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি নয়, বরং সমাজের নৈতিকতা, ন্যায়বিচার এবং সৎ-অসৎ লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবেও উঠে এসেছে।
১৯৫০ থেকে ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত হিন্দি সিনেমায় পুলিশের চরিত্র সাধারণত ছিল সৎ, কর্তব্যপরায়ণ ও আত্মত্যাগী। যেমন— “শক্তিমান”, “আমার আকবর অ্যান্থনি”, কিংবা “শোলে”-এর মতো ছবিতে পুলিশের উপস্থিতি ন্যায় প্রতিষ্ঠার এক নৈতিক শক্তি হিসেবে দেখা যায়। “শোলে”-এর ইনস্পেক্টর ঠাকুর (সঞ্জীব কুমার) চরিত্রটি ভারতীয় সিনেমায় এক আইকনিক প্রতীক — এক সাহসী, দৃঢ়, কিন্তু মানবিক পুলিশ অফিসার, যিনি আইন ও ন্যায়বোধের জন্য নিজের ব্যক্তিগত ক্ষতিও মেনে নেন।
তবে একই সঙ্গে, কিছু ছবিতে পুলিশের ব্যর্থতা বা দুর্বলতাও তুলে ধরা হয়েছে — যেমন “জঞ্জির” (১৯৭৩)-এ অমিতাভ বচ্চনের ইনস্পেক্টর বিজয় চরিত্রের মাধ্যমে দেখা যায় কিভাবে এক সৎ পুলিশ অফিসার দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে একাকী লড়াই করে। এই সময় থেকেই হিন্দি সিনেমায় পুলিশের চরিত্রে অ্যান্টি-হিরো ভাবও ঢুকে পড়তে শুরু করে।
আরেক দিক থেকে, ৫০ ও ৬০-এর দশকে পুলিশের ভূমিকা প্রায়ই ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠার উপসংহার হিসেবে — অর্থাৎ পুরো সিনেমার শেষে এসে পুলিশ অপরাধীকে ধরে, সমাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দেয়। এতে দর্শক মনে করতেন, “শেষ পর্যন্ত ন্যায়ের জয় হয়।”
সংক্ষেপে বলা যায়, পুরোনো হিন্দি সিনেমায় পুলিশের চরিত্র ছিল একাধারে নৈতিকতার রক্ষক, আবার সমাজের দুর্বলতা ও মানুষের ন্যায়বোধের প্রতিফলনও। সেই সময়ের চলচ্চিত্রে পুলিশ শুধু ইউনিফর্মে থাকা মানুষ নয়, বরং “ন্যায়” নামক এক ধারণার প্রতীক ছিল।
😊