14/08/2025
ওষুধের দোকানেই কি নেশার আঁতুড়ঘর? খোয়াইয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল দুই উপজাতি যুবক, কাঠগড়ায় ওষুধ ব্যবসায়ীও
নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপাল সিং, খোয়াই:
খোয়াইয়ের যুবসমাজকে ধ্বংসের পেছনে শুধু ড্রাগস মাফিয়ারাই নয়, সাদা পোশাকের কিছু অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীও যে সমভাবে দায়ী, সেই ভয়ঙ্কর সত্যিটা যেন আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল। গতকাল, ১৩ই আগস্ট, সন্ধ্যায় খোয়াই সরকারি দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের সামনে থেকে দুই উপজাতি যুবককে কিছু ট্যাবলেট সহ হাতেনাতে পাকড়াও করে আমজনতা। আর তাদের জবানবন্দিতেই উঠে এল শহরের এক পরিচিত ওষুধ দোকানের নাম, যা নিয়ে তোলপাড় গোটা খোয়াই।
ঘটনার সূত্রপাত, যখন বিদ্যালয়ের সামনে ওই দুই যুবকের আচরণে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তাঁদের ঘিরে ধরতেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। যুবকরা নিজেরাই স্বীকার করে, তাদের কাছে থাকা ট্যাবলেট তারা নেশার জন্যই ব্যবহার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। জনতার চাপের মুখে ধৃত যুবকরা জানায়, তারা এই ট্যাবলেট কিনেছে সুভাষপার্ক স্থিত 'ওম মেডিকেল হল' (𝗢𝗺 𝗠𝗲𝗱𝗶𝗰𝗮𝗹 𝗛𝗮𝗹𝗹) থেকে। জনগণের অভিযোগ নিত্যদিনই যুবকরা 'ওম মেডিকেল হল' (𝗢𝗺 𝗠𝗲𝗱𝗶𝗰𝗮𝗹 𝗛𝗮𝗹𝗹) এ আসে নেশার টেবলেট কিনতে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ড্রাগ ইন্সপেক্টর। তিনি দোকানে গিয়ে বেশ কিছু গরমিল খুঁজে পান বলে জানা গেছে। কিন্তু সবচেয়ে উদ্বেগজনক ঘটনাটি ঘটে এরপর। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঐ ঔষধগুলো মুলত মানসিক রোগীর জন্য। এই ঔষধের প্রকৃত দাম ৩৩/৭৫ পয়সা। কিন্তু অসাধু ওষুধ বিক্রেতারা এর দাম রাখে ২০০ টাকা।
এদিকে আরও অভিযোগ, দোকানের মালিক প্রভাবশালী মহলে তাঁর 'লম্বা হাত' রয়েছে বলে দম্ভোক্তি করেন এবং গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ড্রাগ ইন্সপেক্টর জানান, এই দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ রয়েছে।
জনগণ বলছেন আজ যে ব্যবসায়ীরা সামান্য কিছু টাকার লোভে অন্যের সন্তানকে নেশার অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে, তারা কি হলফ করে বলতে পারে যে তাদের সন্তানরা এই নেশার গ্রাসে পড়বে না! এই ঘটনায় খোয়াইয়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাঁদের একটাই দাবি—প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হোক। শুধুমাত্র চুনোপুঁটিদের ধরে নয়, পর্দার আড়ালে থাকা এই 'সাদা পোশাকের' মাফিয়াদেরও আইনের আওতায় আনা হোক। তবেই 'নেশামুক্ত ত্রিপুরা'র স্লোগান শুধু দেওয়ালে নয়, বাস্তবেও মর্যাদা পাবে। অন্যথায়, এই বিষের চক্রে আগামী দিনে আরও অনেক তরতাজা প্রাণ হারিয়ে যাবে, যার দায় প্রশাসন এড়াতে পারবে না।