08/07/2025
যা চাইছে জনগণ, যা বলছে জনমত
রেল কোচ ফ্যাক্টারি আজ বিশ বাঁও জলে!
কাঁচরাপাড়া রেলওয়ে ওয়ার্কশপ তৈরি হয়েছিলো ভারতের স্বাধীনতার বহু আগে ১৮৬৩ সালে। কাঁচরাপাড়া-হালিশহর-সহ সন্নিহিত এলাকার মানুষের একমাত্র জায়গা ছিলো এই রেলওয়ে ওয়ার্কশপ। দিন যতো গড়িয়েছে ততো রুগ্ন হতে শুরু করে এই রেলওয়ে ওয়ার্কশপ। ১৪-১৫ হাজার থেকে ৮ হাজার, সেখান থেকে বর্তমানে কর্মীসংখ্যা দাঁড়িয়েছে হাজার দুয়েকে। বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন শিক্ষানবিশ, দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নিয়োগ।
এর মধ্যে আশার আলো দেখান বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বীজপুরে রেল কোচ ফ্যাক্টারি গড়ার উদ্যোগ নেন। যদিও মাঝপথে তাঁকে সেই পদ ছাড়তে হয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায়। ওই রেলমন্ত্রীর পদে বসেন বীজপুরের ভূমিপুত্র তথা তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায়। সময়টা ২০১১-১২ সাল। বহু আশা নিয়ে বীজপুরের মানুষ এগিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলের ছত্রছায়ায়। রাতারাতি সেই কোচ ফ্যাক্টারির জন্য রেল ইয়ার্ডের বিস্তর প্রান্তরের গাছপালা কেটে, জঞ্জাল সাফ করে, ডোবা ভরাট করে পরিষ্কার করা হয় গোটা এলাকা। সূত্রের খবর, গাছ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়। এমনকি বেশকিছু বিষধর সাপও ধরা পড়ে এসময়। সেগুলিও নাকি বিক্রি হয়ে যায় বলে নিন্দুকেরা বলেন। তবে সঠিক জানা যায়নি এবাবদ রেলের কোষাগারে কতো অর্থ জমা পড়েছিলো।
এসময় অনুসারি শিল্পের জন্য আরেকটি কারখানা গড়ে ওঠে। যা সম্ভবত বেসরকারি সংস্থার হাতেই আবদ্ধ! চওড়া হয় ভূতবাগান এলাকার রাস্তা। ভাঙা পড়ে বেশ কিছু দোকানপাট। কিন্তু ব্যাস ওই অবধি। তার পর থেকে রেলের বাজেটে মেলেনি এরজন্য বরাদ্দ অর্থ। স্বভাবতই আর এগোয়নি কোচ ফ্যাক্টারির কোনও কাজ। ওই বিশাল চত্বর এখন দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
যে কারণে এই প্রতিবেদন, তা হলো খাতায় কলমে না হলেও এই বীজপুরেই এখন তিনজন বিধায়কের বাস। সকলেই তৃণমূল কংগ্রেসের। তাঁদের একজন কৃষ্ণনগরের বিধায়ক মুকুল রায়, দ্বিতীয়জন বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী ও তৃতীয়জন বারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। তিনজনই বীজপুরের ভূমিপুত্র। পাশাপাশি বারাকপুরের বর্তমান সাংসদ পার্থ ভৌমিকের সঙ্গেও বীজপুরের নাড়ির সম্পর্ক। তাঁর বাবা ছিলেন হালিশহর জেটিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক। যদিও সেটি নৈহাটি বিধানসভার অধীন। তাই প্রত্যক্ষ না হলেও বর্তমান সাংসদের সঙ্গে বীজপুরের পরোক্ষে গভীর যোগাযোগ। তিন ভূমিপুত্র বিধায়ক ও সাংসদ যৌথভাবে এই রেল কোচ ফ্যাক্টারি নির্মাণের জন্য কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেন না কি!
এমনই কথা একটু কান পাতলেই শুনতে পাওয়া যায়। আশা করা যায়, আগামীতে রেল কোচ ফ্যাক্টারি নির্মাণে তাঁরা বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন।
বার্তা ৩৬৫ ডট নেট-এর বিশেষ প্রতিবেদন।