
24/07/2025
স্ত্রীকে কেউ “প্রিয় নারী” বলেই না।
কারণ তার প্রতিটা ভালোবাসা যেন দায়িত্বের ভিতর ঢাকা পড়ে যায়।
সে যতটা দেয়, তার স্বীকৃতি যেন ঠিক ততটাই অনুপস্থিত।
ছোটবেলায় মানুষ যখন বলে— ‘মা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় নারী’,
বড় হয়ে বলে— ‘মেয়ে আমার প্রাণ’,
আর একটু পরিণত হয়ে বলে— ‘বোনের মত আপন কেউ নেই’।
তবু মুখের ভাষায়, শ্রদ্ধায় বা ভালোবাসায়,
কেউ বলে না— “আমার স্ত্রীই আমার সবচেয়ে প্রিয় নারী।”
স্ত্রীকে কেউ খুঁটিয়ে দেখে না,
কিন্তু তাকেই দিয়ে দেয় জীবনের সবচেয়ে কঠিন দায়িত্বটা।
তার কাছেই চায় নিঃশর্ত সহবাস, নিঃশব্দ সহ্য,
তার কাছেই আশা করে একফোঁটা অভিযোগহীন সংসার।
কেউ ভাবে না—
এই মেয়েটা একদিন মায়ের আঁচল ছেড়ে,
চিরচেনা ঘর-ছাদ, রান্নাঘরের গন্ধ,
ছোটবেলার সেই আয়নাটা রেখে চলে এসেছে একটা ভিন্ন বাড়িতে।
কেউ বোঝে না—
সেই মেয়েটা কীভাবে অভ্যাস পাল্টে নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেয়,
অথচ তার হাসিতে, খাবারের স্বাদে বা চুলে পেঁচানো রোলারেই সবাই খোঁজে ভুল।
ভালো রান্না না করতে পারলে বলে “তুমি তো কিছুই পারো না”,
আর ভালো করলেও বলে “আমার মা এর থেকেও ভালো রান্না করতো।”
হাসপাতালের বেডে যখন স্বামী শুয়ে থাকে,
এই “অযোগ্য” স্ত্রীটাই নির্ঘুম থেকে পাশে বসে চুলে বিলি কেটে দেয়।
স্বামীর অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত মুখ দেখে এক কাপ চা বানায়,
তবুও সে প্রিয় হয়ে উঠতে পারে না, কারণ সে স্ত্রী!
কেন এমন হয়?
স্ত্রীকে ভালোবাসি বললে কি পুরুষত্ব কমে যায়?
নাকি মনে হয় অন্যরা হেসে বলবে— বউয়ের পায়ের নিচে?
আসলে, সমাজ কখনোই স্বীকার করে না,
একজন স্ত্রীও একসময় কারো আদরের মেয়ে ছিল,
যাকে ঘিরে ছিল স্বপ্ন, নিরাপত্তা আর ভালোবাসা।
সেই মেয়েটা একদিন সমস্ত কিছু ছেড়ে এক ছেলের জীবনে এসে
নিজেকে হারিয়ে দিয়ে, তাকে গড়ে তোলে এক রাজা।
তবুও সে রাজাকে বলতে শোনা যায়—
“আমার মা সবার আগে”, “আমার মেয়ে আমার জান”,
কিন্তু বউ? সে হয় দায়িত্ব, বোঝা, ভুলের খাতা।
হয়তো সেদিন, যেদিন কেউ বুক ফুলিয়ে বলবে—
“আমার স্ত্রীই আমার সবচেয়ে প্রিয় নারী”,
সেদিন সমাজ একটু সুন্দর হবে।
একটা মেয়ের আত্মত্যাগ শুধু দায়িত্বে নয়,
ভালোবাসার স্বীকৃতিতে ফিরবে।
(সংগৃহীত)
ভালো লাগল কথাগুলো তাই শেয়ার করলাম।