25/05/2023
'তেলা মাথায় তেল' নয়, রাষ্ট্রপতি ভবনে
বন্ধ ইফতার পার্টি।
ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে ইফতার পার্টির রেওয়াজ বহুকাল ধরে চলে এলেও, ছন্দপতন ঘটিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডক্টর এপিজে আবদুল কালাম। তিনি যদিও ধর্মপ্রাণ মুসলমান ছিলেন, কিন্তু রাষ্ট্রপতি ভবন তার আমলে ছিল ইফতার পার্টি মুক্ত। আসলে তিনি মনেপ্রাণে ছিলেন একজন ভারতীয়, আর এটাই ছিল তাঁর আসল ধর্ম, প্রথম পরিচয়....
রাষ্ট্রপতি আবদুল কালামের প্রাক্তন সচিব অবসরপ্রাপ্ত আইএএস পিএম নায়ারের একটি লেখা থেকে জানা যায়, এই সিদ্ধান্তের পিছনের আসল কারণটি। ‘দি কালাম এফেক্ট; মাই ইয়ার্স উইথ দি প্রেসিডেন্ট’ বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৮ সালে। তার আগের বছরই নিজের টার্ম শেষ করে, রাষ্ট্রপতি ভবন ছেড়েছেন আব্দুল কালাম। নায়ারের বইয়েই লেখা আছে এই ঘটনা সহ কালামের জীবনের আরও বিস্ময়কর ঘটনা।
সেখানে পিএম নায়ার লিখেছিলেন, ২০০২ সালে ডক্টর আবদুল কালাম যখন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন, তখন রমজান ছিল জুলাই-আগস্ট মাসে। রাষ্ট্রপতির জন্যে একটা নিয়মিত রেওয়াজ ছিল যে, তিনি রমজানে ইফতার পার্টির আয়োজন করবেন রাষ্ট্রপতি ভবনে।
সে অনুযায়ী এই আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার পর, রাষ্ট্রপতি কালাম তার সচিব পিএম নায়ারকে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি ইফতার পার্টির আয়োজন করবেন রাষ্ট্রপতি ভবনে? কারণ এই পার্টিতে যে সব অতিথিরা আসবেন, তারা তো সবসময় ভালো খাবার খেয়েই অভ্যস্ত।
রাষ্ট্রপতি এও জানতে চান, একটি ইফতার পার্টির আয়োজনে কত খরচ পড়ে। সেই সময় রাষ্ট্রপতি সচিবলয়ের তরফ থেকে জানানো হয়, প্রায় ২২ লাখ টাকা খরচ করা হয় এই ইফতার পার্টিতে। ২০ বছর আগে ২২ লাখ টাকা, ভাবা যায়। গরীবের দেশে গণমান্য মানুষদের খাওয়াতে, সরকারের খরচা হবে একসন্ধ্যায় ২২ লাখ টাকা!?
শোনামাত্র আদ্যন্ত দেশপ্রেমিক ডক্টর কালাম রাষ্ট্রপতি ভবনে ইফতার পার্টি বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন, এবং জানিয়ে দিলেন ঐ টাকা দিয়ে রমজান মাসে খাবার, বই, পোশাক ও কম্বল কিনে কয়েকটি অনাথ আশ্রমে দান করতে। তাঁর ধর্মের অনেক মানুষ এর বিরোধিতা করেছিলেন, তবে এই মহাপুরুষের সিদ্ধান্ত ছিল অটল।
রাষ্ট্রপতি কালামের নির্দেশে অনাথ আশ্রম বাছাইয়ে, রাষ্ট্রপতি ভবনের কর্মকর্তাদের একটি টিম গঠন করা হয়। এরপর ডক্টর কালাম তাঁর সচিব পিএম নায়ারকে ডেকে এক লাখ টাকার চেক দেন এবং জানান, সরকারী সাহায্যের পাশাপাশি তিনি তার ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে এই অর্থ দান করছেন।
পিএম নায়ার তখনই এই খবর সবাইকে