The Legacy of Knowledge

The Legacy of Knowledge Welcome to The Legacy

At The Legacy, we dive deep into the world of history, culture, and Islamic heritage.

Our channel offers a unique blend of educational content, focusing on the inspiring lives of the Prophets, pivotal moments in Islamic history

27/07/2025

আসসালামু আলাইকুম
কেমন আসেন আপনারা?

30/06/2025

📖 কারবালার দিনলিপি – পর্ব ৭: ৪ মুহররম, ৬১ হিজরি

“শত্রু বাড়ে সংখ্যায়, আর হুসাইনের হৃদয় বাড়ে আল্লাহর দিকে।”

🌄 ফজরের আলো – শত্রুর ধোঁয়াশায় ডুবে থাকা সূর্য

কারবালার সকাল শুরু হয় এক অদ্ভুত নিরবতায়।
ধুলো উড়ছে, হাওয়া ভারী,
আর দূর থেকে ঘোড়ার পায়ের শব্দ কারবালার নিস্তব্ধতায় থাবা বসায়।

👤 আলী আকবর (আ.) তাঁবু থেকে বের হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলেন:

“আব্বা… এই তো যুদ্ধের গন্ধ!
কতজনকে পাঠাচ্ছে আজ ইয়াজিদ?”

🏇 সৈন্য সংখ্যা বাড়ে মারাত্মকভাবে

এই দিন কুফা, বসরা, নাহাওয়ান, এবং শাম থেকে আরও ১০ হাজার সৈন্য এসে কারবালায় পৌঁছে যায়।

📌 ইয়াজিদের বাহিনীর মোট সংখ্যা এখন প্রায় ২০,০০০ ছুঁই ছুঁই!

উমর ইবনে সাদ নিজের বাহিনীর চারপাশে আরও তাঁবু ফেলায়,
কারবালার চারদিকে জালের মতো ঘিরে ফেলে ইমাম হুসাইনের তাঁবুগুলো।

⚔️ ইয়াজিদি কৌশল: মানসিক যুদ্ধ

শত্রুপক্ষ এই দিন থেকে শুরু করে “আতঙ্ক সৃষ্টির নীতি”।
প্রতি রাতে দামামা, ঘোড়ার শব্দ, তলোয়ারের ঝনঝনি —
যেন ইমামের পরিবারকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে।

👤 একজন সৈন্য হাসতে হাসতে বলে:
“দেখো, কতদিন তারা টিকতে পারে পানি ছাড়া!”

👶 কিন্তু তাঁবুর ভেতরে রুকাইয়া (আ.), উম্মে লায়লা, আলী আসগর –
সবাই শুষ্ক ঠোঁট নিয়ে আল্লাহকে ডেকে যাচ্ছেন।

💔 কুফার নীরবতা: প্রতারণার চূড়ান্ত রূপ

কুফা থেকে যারা চিঠি লিখেছিলো, তারা কেউ আসছে না।

কেউ কেউ ইবনে জিয়াদের ভয়ে ইয়াজিদি বাহিনীতে জোর করে ঢুকে গেছে।

📜 ইমাম বলেন:
“এরা আমায় ডেকেছিলো, কিন্তু আজ চুপ।
ফিতনার সময় সত্য কণ্ঠ নীরব হয়ে যায়।”

🕊️ ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সন্ধ্যার ভাষণ

এই দিন বিকেলের দিকে,
হুসাইন (আ.) তাঁর পরিবার ও সাহাবিদের একত্র করে বলেন:
“আমরা যদি চাইতাম, তারা আমাদের ভয় পেতো।
কিন্তু আমরা চাইনি ভয়, আমরা চাইনি হারানো ক্ষমতা।
আমরা চাইেছি—
মানুষ বুঝুক, সত্যের মূল্য কখনও ক্ষমতা নয়, বরং কোরবানী।”

👤 হাবিব ইবনে মাজাহির চোখে অশ্রু নিয়ে বলেন:
“ইয়া আবা আবদিল্লাহ, আপনি চললে আমরা রক্ত দেবো।
ফোরাত যদি পানি না দেয়, আমরাই ফোরাত হবো!”

🌙 রাতের ছায়ায় জ্বলছে কুরআনের আলো

রাতে হুসাইন (আ.) তাঁবুর বাইরে এসে চাঁদের আলোয় বসে কুরআন তেলাওয়াত করেন।

চুপচাপ কান্না করেন জয়নাব (আ.)।

আব্বাস (আ.) তরবারি শান দিতে থাকেন।

শিশুদের ঠোঁট আরও শুষ্ক, শরীর দুর্বল।

কিন্তু কারোর ঈমান কাঁপে না।

📌 সারসংক্ষেপ – ৪ মুহররম, ৬১ হিজরি

বিষয় বিশদ

সেনা সংখ্যা প্রায় ২০,০০০ ইয়াজিদি সৈন্য
পরিস্থিতি ফোরাত থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, তারা তাঁবু ঘিরে ফেলে
কুফা পূর্বে চিঠি লেখারা কেউ আসে না, চুপ হয়ে যায়
মানসিক চাপ দামামা, হুমকি, ফাঁদ তৈরি
হুসাইনের বার্তা যুদ্ধ নয়, আত্মত্যাগ — ইসলামের সজীবতা রক্ষার জন্য
সাহাবিদের অবস্থান সাহসী, প্রস্তুত, কেউ পিছিয়ে যায়নি
#কারবালা #ইমামহুসাইন #পানিবন্ধ #মুহররম৩ #ইসলামেরআত্মত্যাগ

29/06/2025

📖 কারবালার দিনলিপি – পর্ব ৬: ৩ মুহররম, ৬১ হিজরি

“ফোরাতের জল বন্ধ, কিন্তু হৃদয়ে জ্বলন্ত প্রতিজ্ঞা বয়ে চলে।”
🌄 তৃতীয় দিন।

কারবালার মরুভূমি ধীরে ধীরে সূর্যের রোদের নিচে আরও উত্তপ্ত হতে শুরু করে।
চলছে প্রচণ্ড গরম, মরুভূমির বালু যেন জ্বলন্ত কয়লা।
শিশুরা ঘুম থেকে জেগে উঠে খুঁজছে এক ফোঁটা পানি,
রুকাইয়া (আ.) কাঁদতে কাঁদতে বলে —

> “আম্মা… পানি আছে?”

🚫 ইয়াজিদি বাহিনীর নির্দেশ: পানি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ

উমর ইবনে সাদ এবার ফোরাত নদী থেকে এক ফোঁটা পানিও ইমামের পরিবার ও সাথীদের জন্য নিতে দেবে না।
নদীর তীরে সশস্ত্র সৈন্য বসানো হয় সারিবদ্ধভাবে।
তাদের আদেশ:

> “হুসাইন এবং তার অনুসারীরা যেন পানি না পায়।
যুদ্ধ হবে না, কিন্তু পিপাসা দিয়ে হার মানানো হবে।”

⛔ পানি আনতে গেলেই বাঁধা, ভয় দেখানো, তলোয়ার তুলে ধাওয়া।

🏇 ইবনে জিয়াদের নির্দেশে আরও ২০০০ সৈন্য এসে পৌঁছে যায় ৩ মুহররমে।

ইয়াজিদি বাহিনীর সংখ্যা এখন ৬০০০ ছাড়িয়ে গেছে।

📌 তারা নদীর চারপাশ ঘিরে ফেলেছে।
আরও তাঁবু, অস্ত্র, ঘোড়া, ঢোল, বর্শা এসে কারবালার মাঠকে যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তর করছে।

🕊️ ইমামের বার্তা – শেষবারের মতো শান্তির আহ্বান

হুসাইন (আ.) তখনও চেষ্টা করছেন যেন যুদ্ধ না হয়।

তিনি উমর ইবনে সাদের কাছে দূত পাঠান:

> “আমাকে ফিরে যেতে দাও,
অথবা সীমান্তে চলে যেতে দাও,
আমি সংঘাত চাই না।”

📩 উমর ইবনে সাদ এই বার্তা ইবনে জিয়াদের কাছে পাঠায়।

😠 ইবনে জিয়াদের কঠিন জবাব

ইবনে জিয়াদ হুকুম দেয়:

> “না। কোনো শর্তে হুসাইনকে ছাড়া যাবে না।
বায়াত অথবা যুদ্ধ — এর বাইরে কিছু গ্রহণযোগ্য নয়।”

📌 এই চিঠির শেষে লেখা ছিল:

> “হুসাইন ও তার দল যেন একটি ফোঁটা পানিও না পায়।
তৃষ্ণা হোক তাদের দুর্বলতা।”

🌤️ বিকেলে হঠাৎ প্রবল উত্তাপ, শিশুর কান্না

বিকেলের দিকে গরম আরও বাড়ে।

তাঁবুর ভেতরে শিশুর ঠোঁট শুকিয়ে ফাটতে থাকে।

কেউ মুখে কাগজ ভিজিয়ে রাখছে, কেউ মাটি খুঁজছে ঠান্ডা হওয়ার জন্য।

👶 আলী আসগরের কান্না থামছে না।
জয়নাব (আ.) তাঁকে বুকে নিয়ে বসে থাকেন, চোখে অশ্রু, মুখে দোয়া।

⚔️ সাহাবিরা পানির জন্য শেষ চেষ্টা করেন

হাবিব ইবনে মাজাহির এবং আব্বাস (আ.) কিছু সাহাবিকে নিয়ে নদীর দিকে এগিয়ে যান।

কিন্তু…

সৈন্যরা তাদের ঘিরে ফেলে।

বর্শা আর তলোয়ারের ঝলকে কোনো সাহাবি এক ফোঁটা পানিও আনতে পারলেন না।

তারা ফিরলেন খালি হাতে, ক্লান্ত, রক্তাক্ত মশক নিয়ে।

🌙 রাত: তৃষ্ণা, ভয়, এবং অটল প্রতিজ্ঞা

ইমাম হুসাইন (আ.) আবার সবাইকে একত্র করেন।

তিনি বলেন:

“তোমরা চাইলে আজ রাতে এখান থেকে চলে যেতে পারো।
আমি কেউকে বাধা দেব না।”

👤 জুহায়ের ইবনে কাইন বলেন:

“আপনার ছাড়া কে আছে এই জালিমদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে?
আমি যাবো না।”

👤 আব্বাস (আ.) বলেন:

> “আমার তরবারি পানি আনতে না পারলেও,
তা আপনার জন্য জীবন দেবে ইনশাআল্লাহ।”

📜 সারসংক্ষেপ – ৩ মুহররম

বিষয় বিস্তারিত

তারিখ ৩ মুহররম, ৬১ হিজরি
পানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ, নদীতে সশস্ত্র পাহারা
সৈন্য ইয়াজিদি বাহিনী বাড়িয়ে প্রায় ৬০০০+
হুসাইনের অবস্থান শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইলেও প্রত্যাখ্যাত
শিশুদের অবস্থা তৃষ্ণা, কান্না, অসহায়তা
সাহাবিদের প্রতিক্রিয়া কেউ পিছিয়ে যায়নি, সবাই প্রস্তুত
#কারবালা #ইমামহুসাইন #পানিবন্ধ #মুহররম৩ #ইসলামেরআত্মত্যাগ

28/06/2025

📖 কারবালার দিনলিপি – পর্ব ৫: ২ মুহররম, ৬১ হিজরি

“সত্যের সৈনিকেরা মরুভূমির বুকে পা রাখে, আর অন্যপাশে ইতিহাস ঘিরে ধরে তাদের।”

🌅 সকালবেলা — ধুলাবালিতে ছাওয়া সূর্যোদয়

দ্বিতীয় দিন।
তপ্ত কারবালার বালিতে শিশুরা খালি পায়ে হেঁটে বের হয় একটু শীতলতার খোঁজে।
আলী আজগর, রুকাইয়া, ফাতিমা ছোট ছোট পাথরের উপর হেঁটে এসে ফোরাত নদীর দিকে তাকিয়ে থাকে —
যেখানে এখনও পানি প্রবাহিত হচ্ছে, কিন্তু ভয় ও নিষেধাজ্ঞার ছায়া ঝুলে আছে।

হুসাইন (আ.) তাঁবুর বাইরে দাঁড়িয়ে ধীর চোখে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করেন।
তাঁর হৃদয় জানে — আজকের সকাল শুধু এক নতুন দিনের সূচনা নয়,
বরং মরণ কিংবা মহান বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ার আরেকটি ধাপ।

ফজরের নামাজের পর তিনি তাঁর সঙ্গীদের একত্রিত করেন।

তিনি বলেন:

> “আমাদের সঙ্গে যারা আছে, তাদের হৃদয়ে ভয় থাকলে এখনই ফিরে যাওয়া উত্তম।
আমি কাউকে বাধ্য করবো না। কারবালা রক্ত চায়, সংখ্যা নয়।”

কিন্তু কেউ পিছিয়ে যায় না।

👤 হাবিব ইবনে মাজাহির বলেন:

> “ইয়া আবা আবদিল্লাহ, যদি হাজারবার জীবন দিয়ে দিতে হয়, তবুও আমরা আপনার পাশে থাকব।”

এই দিনে সকালে কুফার গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ উমর ইবনে সাদকে আদেশ দেন —
“হুসাইন ও তার পরিবার যেন কারবালা ত্যাগ না করতে পারে। তাদের পথ আটকে দাও।”

📍 উমর ইবনে সাদ কারবালায় উপস্থিত হয় প্রথম ধাপে ৪০০০ সৈন্য নিয়ে।

সৈন্যরা কারবালার উত্তরে এসে ঘাঁটি গাড়ে।

তারা ফোরাত নদীর দিক থেকে ধীরে ধীরে আগাতে থাকে।

তাদের উদ্দেশ্য:

1. হুসাইন (আ.)-এর পরিবারকে বিচ্ছিন্ন রাখা

2. পানি সরবরাহের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া

3. মানসিক চাপ সৃষ্টি করে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা

🚱 ফোরাত নদীর নিয়ন্ত্রণ

হুসাইন (আ.) এখনো তাঁর লোকদেরকে নদী থেকে পানি আনার অনুমতি দেন,
কিন্তু তাতে বাধা দেওয়া শুরু করে ইয়াজিদপন্থী সৈন্যরা।

তারা বলাবলি করে:

> “তোমরা যদি পানি চাও, তবে আগে ইয়াজিদের হাতে বায়াত দাও।”

👤 এক সাহাবি বলেন:

“তোমরা কি রাসূলের পরিবারকে ফোরাত থেকেও বঞ্চিত করবে?”

ইমাম হুসাইন (আ.) একটি শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব পাঠান:

> “আমাকে ফিরে যেতে দাও। অথবা সীমান্তে চলে যেতে দাও।
যুদ্ধ নয়, আমি সংঘাত এড়াতে চাই। আমি সত্যের আলো বহন করে এসেছি।”

উমর ইবনে সাদ প্রথমে নরম থাকে।
সে চিঠিটি কুফায় পাঠায় উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের কাছে।

📨 চিঠির ভাষা ছিল:

> “হুসাইন যুদ্ধ করতে চায় না। তাকে ফিরতে দিলে রক্তপাত এড়ানো সম্ভব।”

😠 ইবনে জিয়াদের নিষ্ঠুর উত্তর

ইবনে জিয়াদ স্পষ্ট ও কঠিন নির্দেশ পাঠায়:

> “তিনটি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই:
১. হুসাইন ইয়াজিদের হাতে বায়াত দেবে
২. আত্মসমর্পণ করবে
৩. নয়তো যুদ্ধ হবে”

এবং সেই চিঠির শেষ লাইনে লেখা ছিল:

> "তুমি যদি হুসাইনের ব্যাপারে কঠোর না হও, তবে তোমার নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।"

এই বার্তার পর উমর ইবনে সাদ নিজের ঘোড়ার সামনে বসে থাকে —
তাঁর চোখে তীব্র দোটানা:
একদিকে দুনিয়ার ক্ষমতা, অন্যদিকে মহান হুসাইনের রক্ত।

🌙 সন্ধ্যা — তারা জ্বলছে, কিন্তু হৃদয়ে আলো নেই

সন্ধ্যায় আবু ফজল আব্বাস পানির পাত্র হাতে ফোরাতের দিকে যান।
তাকে কড়া পাহারার মুখে থামিয়ে দেওয়া হয়।
তবুও পানি আনতে সফল হন —
যা দিয়ে শিশুরা, নারীরা, সাহাবিরা কিছুটা শান্তি পায়।

👤 জয়নব (আ.) তাঁর তাঁবুতে বসে বলেন:

> “কারবালা যেন আর কাঁদে না, বরং ইতিহাস হয়ে বাঁচে।”

🧕 তাঁবুর নীরবতা ও ভেতরের তাওয়াক্কুল

হুসাইন (আ.) রাতে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি তাঁবুতে যান।

তিনি পরিবার, শিশুদের ভালোবাসায় জড়িয়ে নেন।

আলী আকবরকে বুকে টেনে বলেন:

> “তুমি আমার রক্তের উত্তরাধিকার। হয়তো তোমার তরবারির আঘাতে ইতিহাস জেগে উঠবে।”

বিষয় বিস্তারিত

আগমন উমর ইবনে সাদ – ৪০০০ সৈন্য নিয়ে কারবালায় প্রবেশ করে
পানি নিয়ন্ত্রণ শুরু, সরাসরি বাধা দিয়ে পানি আনার পথে ভয় দেখানো
আলোচনার চেষ্টায় হুসাইন (আ.) প্রস্তাব দেন ফিরে যেতে, কিন্তু ইবনে জিয়াদ অস্বীকার করেন
সৈন্যদের মনোভাব দ্বিধায়, কেউ চুপচাপ, কেউ ভয়ভীত, কেউ লোভে অন্ধ
রাতের পরিবেশ তাফসির, দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত, দোটানার সময়
শিশু ও নারীদের অবস্থা অবরুদ্ধ, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, কিন্তু ভরসায় অটল।

#কারবালা
#ইমামহুসাইন
#মুহররম
#কারবালারইতিহাস
#আশুরা
#সত্যেরপক্ষে
#ইসলামেরআত্মত্যাগ
#ইসলামেরনেতা
#ইয়াজিদেরজুলুম
#হুসাইনআমারনেতা
#কারবালারদিনলিপি
#ইমাম_হুসাইন_আ

27/06/2025

📖 কারবালার দিনলিপি – পর্ব ৪: ১লা মুহররম, ৬১ হিজরি (একটি আগুনপোড়া সকাল)

৬১ হিজরির মুহররম মাসের প্রথম দিন।
তপ্ত রৌদ্রে ফুরাত নদীর ধারে বিস্তীর্ণ উষর জমি — যার নাম কারবালা।
এই দিন সকালে ইমাম হুসাইন (আ.), তাঁর পরিবার, শিশু, নারীকূল এবং বিশ্বস্ত সাহাবিরা প্রায় ৭২ জনের একটি কাফেলা নিয়ে এই ভূমিতে পৌঁছেন।

তাঁরা মক্কা থেকে কুফার দিকে যাত্রা শুরু করেছিলেন মুসলিম ইবনে আকীলের খবর পেয়ে,
কিন্তু কুফা ছিল তখনই প্রতারণার এক শহর —
ইবনে জিয়াদের ভয়-ভীতি, ঘুষ আর চাপের সামনে সবাই হুসাইনের সাথে প্রতারণা করেছে।

পথে পথে তৃষ্ণা, ক্লান্তি ও আতঙ্ক ছিল সঙ্গী।
কিন্তু তাঁদের মন ছিল অটুট — সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে জীবন উৎসর্গের প্রস্তুতি।

🏞️ কারবালায় তাঁবু স্থাপন

সকাল বেলায় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কাফেলা ফোরাত নদীর কাছাকাছি একটি খোলা জমিতে তাঁবু স্থাপন করে।

তিনি তাঁর ঘোড়া থামিয়ে জিজ্ঞেস করেন:

> “এই ভূমির নাম কী?”

বলা হলো, এটি “নাইনাওয়া”, আরেকজন বলে “গাজরিয়া”।

হুসাইন (আ.) জিজ্ঞেস করেন, “আর কোনো নাম আছে কি?”

এক বয়স্ক ব্যক্তি উত্তর দেন, “এই জমিকে কারবালা বলা হয়।”

🩸 ইমাম থেমে যান। তাঁর চোখে এক বিষণ্ণতা। তিনি বলেন:

> “আল্লাহ্‌র কসম, এটি কারব (দুঃখ) ও বালা (মহা বিপদ)-এর স্থান।”
এখানেই হবে আমাদের শাহাদাত, এখানেই হবে আমাদের কবর।

তাঁবু স্থাপন করা হয় নদীর দিকের কিছুটা দূরে, যাতে আত্মরক্ষার সুযোগ থাকে।

পুরুষ সাহাবিরা পাহারার ব্যবস্থা করেন।

নারীরা ও শিশুরা তাঁবুতে অবস্থান নেয়।

কেউ আগুন জ্বালাতে যায়, কেউ উটের বোঝা নামাতে ব্যস্ত।

আলী আসগর (৬ মাসের শিশু), রুকাইয়া (সন্তান), জয়নব (আ.) — সবাই সেই করুণ ইতিহাসের সাক্ষী হতে প্রস্তুত।
⚔️ উমর ইবনে সাদের বাহিনী এসে ঘাঁটি গাড়ে

একই দিন কুফার গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ,
তার সেনাপতি উমর ইবনে সাদ-কে নির্দেশ দেয়:
“হুসাইন ও তার পরিবারকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করো।”

উমর ইবনে সাদ কারবালার উত্তরে প্রথম ধাপে প্রায় ৪০০০ সৈন্য নিয়ে ঘাঁটি গাড়ে।

সৈন্যরা প্রস্তুত হয় — কিন্তু যুদ্ধ নয়, মানসিক চাপ দিয়ে আত্মসমর্পণ করাতে চায়।

যদিও প্রথম দিনেই পানি পুরোপুরি বন্ধ করা হয়নি,
কিন্তু ফোরাত নদীর পাশে সৈন্য মোতায়েন করে হুসাইনের পক্ষের লোকজনের পানি তোলায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়।

একজন সাহাবি তখন বলেন:

> “আমরা তো রাসূলের পরিবার! আমাদের কি ফোরাত থেকেও বঞ্চিত করা হবে?”

হুসাইন (আ.) বারবার বলেন:

> "আমার লক্ষ্য যুদ্ধ নয়। আমি চাই উম্মাহ জাগুক, এবং সত্য বুঝুক।"

তিনি উমর ইবনে সাদের কাছে বার্তা পাঠান — আলোচনার পথ খোলা রাখেন।

ইয়াজিদের পক্ষ থেকে শর্ত ছিল একটাই:

> "বিনা শর্তে বায়াত করো ইয়াজিদের হাতে।"

ইমাম হুসাইন (আ.) দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে প্রত্যাখ্যান করেন।

রাতে ইমাম ও তাঁর সঙ্গীরা কুরআন তিলাওয়াত করেন।

তাঁবুতে আলী আকবর (যুবক পুত্র), হাবিব ইবনে মাযাহির, মুসলিমের এতিম সন্তান, আব্বাস (আ.) — সবাই শান্ত কিন্তু প্রস্তুত।

জয়নব (আ.) বলেন:

> “হে আমার ভাই হুসাইন, এ রাতটা যেন কত অলৌকিক ভারে নেমে এসেছে!”
হুসাইন (আ.) বলেন, “এ রাত তোমার আমার শেষ রাত হতে পারে। কিন্তু আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।”

তারিখ ১লা মুহররম, ৬১ হিজরি
স্থান কারবালা
আগমন ইমাম হুসাইন (আ.) ও ৭২ জন সঙ্গী
সেনা মোতায়েন উমর ইবনে সাদের প্রথম বাহিনী – ৪০০০
ফোরাত নদী দখল শুরু
আলোচনার প্রস্তাব হুসাইন (আ.) দেন, ইয়াজিদের পক্ষ প্রত্যাখ্যান করে
যুদ্ধ তখনও শুরু হয়নি
আবহ করুণ, প্রস্তুতিপূর্ণ, নীরবতা ভরা

27/06/2025

📜 পর্ব ৩: ইয়াজিদের বায়াত দাবি, কুফার চিঠি ও হুসাইন (আ.)-এর সিদ্ধান্ত

🏛️ মুয়াবিয়ার মৃত্যু ও ইয়াজিদের আগমন (60 হিজরি)

60 হিজরিতে মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান মারা যান।

মৃত্যুর পূর্বেই তিনি নিজের ছেলে ইয়াজিদ-কে উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করেন—
এটি ছিল ইসলামে বংশানুক্রমিক রাজনীতির পূর্ণ প্রতিষ্ঠা।

👑 ইয়াজিদের চরিত্র

ইয়াজিদ ছিল ইসলামবিরোধী জীবনযাপনে অভ্যস্ত:
🍷 মদ্যপান, 🎶 গান-বাজনা, 🦴 নির্মমতা, এবং দুনিয়াদারী রাজনীতি ছিল তার চিহ্ন।

ইসলামের মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার, দীনদারিত্ব— এসব তার মধ্যে অনুপস্থিত ছিল।

🛑 বায়াতের দাবি ও ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রত্যাখ্যান

ইয়াজিদ ক্ষমতায় বসেই মদিনার গভর্নর ওলিদ ইবনে উতবা-কে আদেশ দেয়:
“ইমাম হুসাইন (আ.), আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের ও আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর থেকে বায়াত আদায় করো।”

📌 ইমাম হুসাইন (আ.)-এর উত্তর ছিল ইতিহাসে অমর:

> "আমার মতো মানুষ, ইয়াজিদের মতো লোককে বায়াত দিতে পারে না!"
কারণ:

1. ইয়াজিদের খিলাফত ইসলামবিরোধী ছিল

2. এটি ছিল জুলুম ও অশ্লীলতার প্রতিনিধিত্ব

3. ইসলামের আত্মাকে রক্ষা করা ছিল ইমাম হুসাইনের দায়িত্ব

🕋 মদিনা থেকে মক্কা: হিজরত ও পরিকল্পনা

পরিস্থিতি সঙ্কটময় দেখে ইমাম হুসাইন (আ.) পরিবারসহ মদিনা ত্যাগ করে মক্কায় চলে যান।

মক্কায় থেকে তিনি হজের প্রস্তুতি নিতে থাকেন।

✉️ কুফাবাসীর শত শত চিঠি

কুফার মানুষ ইয়াজিদের শাসনে অসন্তুষ্ট ছিল।

তারা হুসাইন (আ.)-কে বারবার চিঠি লিখে আহ্বান জানায়:

> "আমরা আপনার বায়াত নিতে প্রস্তুত। আপনি আসুন, আমরা আপনার সাথে থাকব।"

শত শত প্রতিনিধি, দল, চিঠি, কুফার নেতারা— সবাই হুসাইন (আ.)-কে আশ্বাস দেয়।

🧭 হুসাইন (আ.)-এর কূটনৈতিক পদক্ষেপ

তিনি তাড়াহুড়া করেননি।

প্রথমে তিনি তাঁর বিশ্বস্ত প্রতিনিধি ও চাচাতো ভাই মুসলিম ইবনে আকীল-কে পাঠান কুফার পরিস্থিতি যাচাই করতে।

🕊️ মুসলিম ইবনে আকীলের করুণ পরিণতি

মুসলিম কুফায় গিয়ে হাজার হাজার মানুষের বায়াত পান।

মনে হয়েছিল, জনসাধারণ সত্যিই হুসাইনের পক্ষে।

❗ কিন্তু…

ইয়াজিদ কুফার গভর্নর বানায় উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ-কে।

সে ভয়ভীতি, ঘুষ ও হুমকির মাধ্যমে মানুষদেরকে হুসাইন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করে।

মুসলিম ইবনে আকীলকে একা করে দেয় জনতা।

🩸 শেষ পর্যন্ত, মুসলিম ইবনে আকীলকে গ্রেফতার করে শহীদ করা হয়।
ইমামের পক্ষের প্রথম রক্ত ঝরে যায়।

🛤️ হুসাইনের সিদ্ধান্ত: সত্যের পথে চলাই হবে সফলতা

মুসলিমের শাহাদাতের খবর পাওয়ার আগেই হুসাইন (আ.) তাঁর পরিবারসহ মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।

➡️ এখন শুরু হয় কারবালার পথে যাত্রা — যেখানে ইসলামের আত্মা রক্ষার জন্য এক মহাকুরবানী অপেক্ষা করছিলো।

24/06/2025

📜 পর্ব ২: হযরত আলী (আ.)-এর খিলাফত এবং কারবালার বীজ

“কারবালার আগুন শুধু ইয়াজিদের রাজত্ব থেকে নয়, বরং তার আগেও মুসলিম সমাজে বিশ্বাসঘাতকতা ও ক্ষমতার লালসার বীজ বপন হয়েছিল।”

🕌 হযরত আলী (আ.)-এর খিলাফতের সূচনা (35 হিজরি)

উসমান (রাঃ)-এর শাহাদাতের পর মুসলিম উম্মাহ গভীর সংকটে পড়ে।

উম্মাহর গণমানুষ ও কিছু সাহাবিদের দাবিতে হযরত আলী (আ.)-কে খলীফা নির্বাচিত করা হয়।

কিন্তু কিছু প্রভাবশালী সাহাবি এবং রাজনৈতিক শক্তি এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি।

⚔️ বিভক্তি শুরু — প্রথম মুসলিম গৃহযুদ্ধ

1. যুদ্ধ-ই-জমল (Battle of the Camel)

📍 বিপক্ষে ছিলেন: হযরত আয়েশা (রাঃ), তালহা (রাঃ), ও জুবাইর (রাঃ)

এই যুদ্ধ ঘটে 36 হিজরিতে, বসরার নিকটে।

উদ্দেশ্য ছিল হযরত উসমান (রাঃ)-এর হত্যার বিচার দাবি করা।

কিন্তু বাস্তবে তা রাজনৈতিক বিরোধ ও বিভাজনের সূচনা ছিল।

যুদ্ধের সময় তালহা ও জুবাইর মারা যান, এবং হাজারো মুসলমান নিহত হয়।

2. সিফফিন যুদ্ধ (Battle of Siffin)

📍 বিপক্ষে ছিলেন: মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (তৎকালীন شامের গভর্নর)

মুয়াবিয়া, যিনি হযরত উসমান (রাঃ)-এর আত্মীয় ছিলেন, আলী (আ.)-এর খিলাফত মানতে অস্বীকৃতি জানান।

উসমান (রাঃ)-এর হত্যার বিচারের অজুহাতে তিনি নিজেকে উসমানের রক্তের প্রতিশোধদাতা হিসেবে তুলে ধরেন।

সিফফিনে বিশাল যুদ্ধ হয় — যা ইসলামের প্রথম বড় রাজনৈতিক সংঘর্ষ।

⚖️ হাকামিয়্যাহ (Tahkeem) — চরম বিশ্বাসঘাতকতা

যুদ্ধ চলাকালীন মুয়াবিয়ার সেনারা কুরআনের পৃষ্ঠা বর্শার মাথায় তুলে শান্তির আহ্বান জানায়।

আলী (আ.) যুদ্ধ জয়ের পথে ছিলেন, কিন্তু তাঁর কিছু নিজের সেনা তাঁকে চাপ দেয় মধ্যস্থতা মেনে নিতে।

দুই পক্ষ arbitrator নির্ধারণ করে — এবং চালাকিতে মুয়াবিয়ার লোকেরা বিজয়ী হয়।

এভাবেই তাহকিম ছিল এক রাজনৈতিক চক্রান্ত, যা আলী (আ.)-এর অবস্থান দুর্বল করে।

🗡️ খারিজিদের বিশ্বাসঘাতকতা

যারা আগে হযরত আলীকে তাহকিম মানতে বাধ্য করেছিল, তারা পরে আবার তাঁকেই কাফির বলে ঘোষণা দেয়।

এদের একটি দল তাঁকে শাহাদাতের দিকে ঠেলে দেয়।

🩸 40 হিজরিতে, কুফায় ফজরের নামাজে হযরত আলী (আ.)-কে ইবনে মূলজিম বিষমিশ্রিত তরবারি দিয়ে আঘাত করে শহীদ করে।

🤝 হাসান ও হুসাইন (আ.) তখন কী করলেন?

আলী (আ.)-এর শাহাদাতের পর ইমাম হাসান (আ.) খলীফা নির্বাচিত হন, কিন্তু মুয়াবিয়ার সঙ্গে শান্তির চুক্তি করে রাজনীতি থেকে সরে আসেন উম্মাহর রক্তপাত ঠেকাতে।

চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল: মুয়াবিয়ার পর খিলাফত আবার হুসাইন (আ.) বা জনগণের হাতে ফিরে আসবে।

❗ কিন্তু বিশ্বাসভঙ্গ হয়…

মুয়াবিয়া সেই চুক্তি ভঙ্গ করে তাঁর জীবিত অবস্থায়ই নিজের পুত্র ইয়াজিদকে খলীফা ঘোষণা করেন।

এই ঘোষণা ইসলামে রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করে, যা কারবালার আগুনকে আরও জোরালো করে তোলে।

🧩 কিছু সাহাবির ভূমিকা ও রাজনৈতিক পক্ষপাত

কয়েকজন প্রভাবশালী সাহাবি ব্যক্তিগত স্বার্থ ও গোত্রীয় রাজনীতির কারণে আলী (আ.)-এর সঙ্গে পূর্ণ সমর্থন দেখাননি।

কেউ কেউ চুপ থেকেছেন, আবার কেউ সরাসরি বিরোধ করেছেন।

এদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, নীরবতা, অথবা বিভ্রান্তিকর ভূমিকা পরবর্তীতে ইয়াজিদের মত শাসককে ক্ষমতায় বসতে সাহায্য করে।

📌 সংক্ষিপ্তভাবে:

হযরত উসমান (রাঃ)-এর হত্যার পর থেকেই ইসলামী নেতৃত্বে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

হযরত আলী (আ.) শান্তি, ইনসাফ ও ইসলামের নীতিতে রাজনীতি চালালেও
একের পর এক যুদ্ধ, বিদ্রোহ, বিশ্বাসঘাতকতা তাঁকে দুর্বল করে দেয়।

হাসান (আ.)-এর পরবর্তীতে হুসাইন (আ.)-এর সময় যখন ইয়াজিদ ক্ষমতায় আসে,
তখন সত্য ও বাতিলের মাঝে চূড়ান্ত সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে।

📢 সত্য জানুন, শেয়ার করুন। ইতিহাস শুধু জানার জন্য নয়, জেগে ওঠার জন্য।
#কারবালা #ইমামহুসাইন #হযরতআলী #ইতিহাস #বিশ্বাসঘাতকতা

24/02/2025
16/02/2025

Musa AS Part- 02

Address

Khanka Road
Kharupatia
784115

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when The Legacy of Knowledge posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share