13/07/2025
পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে, ঘন অরণ্যে ঘেরা ‘জিলিংসেরেং’ নামক এক প্রত্যন্ত সাঁওতাল গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন এক সংগ্রামী নারী—মালতী মুর্মু। প্রায় পাঁচ বছর আগে বিয়ের পর এই গ্রামে পা রেখেছিলেন তিনি। তখনই তাঁর চোখে পড়ে যায়—গ্রামের অধিকাংশ ছেলে-মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে না। কারণ, নিকটতম স্কুলটি প্রায় ১০-১২ কিমি দূরে, যার পথ পেরোতে হয় জঙ্গল আর পাহাড়ি পথ দিয়ে।
এই পরিস্থিতির পরিবর্তনে স্বামীকে পাশে নিয়ে মালতী গড়ে তোলেন এক ‘ঝুপড়ি’ পাঠশালা। মাটির দেওয়াল, টিনের ছাদ, দেওয়ালে আঁকা ব্ল্যাকবোর্ড, আর চট পেতে বানানো মেঝেতে শুরু হয় তাঁর শিক্ষাদান। উচ্চমাধ্যমিক পাশ মালতী অলচিকির পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি ভাষাও শেখাতে থাকেন। সম্পূর্ণ অবৈতনিক এই স্কুলে মালতী নিজেই শহর থেকে বই-খাতা-পেন এনে দেন। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫।
ভবিষ্যতে কম্পিউটার শিক্ষা চালুর স্বপ্ন দেখেন মালতী, তবে অর্থাভাবে তা বাস্তবায়িত করতে পারছেন না। তবুও নিরলস পরিশ্রমে তিনি আজও অরণ্যের অন্ধকারে আলোর বার্তা ছড়িয়ে চলেছেন।