02/05/2022
বিশ্ববরেণ্য বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী " সত্যজিৎ রায় " - এর আজ জন্মদিন ।।
এক নজরে সত্যজিৎ ........
১৯২১ সালের ২রা মে কলকাতায় জন্ম ।
১৯২৩ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর পিতা সুকুমার রায়-এর মৃত্যু ।
১৯২৫ সালে ইউ রায় এন্ড সনস-এর দেউলিয়া ঘোষণা ।
১৯২৬ সালে গড়পার থেকে বেলতলা রোডে মামা প্রশান্ত দাসের বাড়িতে স্থানান্তর ।
১৯২৮ সালের পৌষমেলায় শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথকে প্রথম দেখা ।
১৯৩০ সালে বালিগঞ্জ গভর্মেন্ট হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি ।
১৯৪০ সালের ১৩ই জুলাই শান্তিনিকেতন প্রবেশ , ১৯৪২ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতা প্রত্যাবর্তন ।
১৯৪৩ সালের এপ্রিল মাসে বিজ্ঞাপন সংস্থা ডি জে কিমার-এ চাকরি ।
১৯৪৭ সালের ৫ই অক্টোবর বন্ধুদের সঙ্গে ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি গঠন ।
১৯৪৮ সালে লেক এভেনিউ-এর বাড়িতে স্থানান্তরিত ।
১৯৪৯ সালের ০৩রা মার্চ বিজয়া দেবীর সঙ্গে বিবাহ ।
১৯৫০ সালের এপ্রিল মাসে ডি জে কিমার-এর কাজে সস্ত্রীক ইংল্যান্ড যাত্রা । পাঁচ মাস লন্ডনে থাকাকালীন পৃথিবীর সব দেশের শ্রেষ্ঠ ৯৯টি ছবির সঙ্গে পরিচয় ।
১৯৫০ সালে রেনোয়া-র সঙ্গে কলকাতা আলাপ । এই ফরাসী পরিচালকের শ্যুটিং লোকেশন দেখার সঙ্গী ।
১৯৫১ সালে রাশিয়ান পরিচালক পুদভকিন ও অভিনেতা চেরকাসভ ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটিতে বক্তব্য রাখেন ।
১৯৫১ সাল থেকে পথের পাঁচালী নির্মাণ করার পরিকল্পনা ।
১৯৫২ সালের অক্টোবর মাসে পথের পাঁচালী শুটিং শুরু ।
১৯৫৩ সালের ০৮ই সেপ্টেম্বর একমাত্র পুত্র সন্দীপ ( বাবু / খোকন )-এর জন্ম ।
১৯৫৫ সালের ২৬শে আগস্ট প্রথম ছবি পথের পাঁচালী-র মুক্তি । কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল রূপে পুরস্কৃত ।
১৯৬০ সালের নভেম্বর মাসে মা সুপ্রভা দেবীর মৃত্যু ।
১৯৬১ সালে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়-এর সঙ্গে যুগ্মভাবে পারিবারিক সন্দেশ পত্রিকা পুনঃপ্রকাশ ও সম্পাদনার ভার গ্রহণ । এই বছর লেখক সত্যজিৎ রায়-এর "প্রফেসর শঙ্কু" গল্প প্রকাশ ।
১৯৬৩ সালে টাইম পত্রিকার মতে বিশ্বের সেরা এগারোজন চিত্র পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম ।
১৯৬৫ সালে সন্দেশ পত্রিকায় প্রথম ফেলুদার গল্প প্রকাশ এবং প্রফেসর শঙ্কু গ্রন্থ প্রকাশ ।
১৯৬৯ সালে ফেলুদা সিরিজের বাদশাহী আংটি গ্রন্থরূপে প্রকাশ ।
১৯৭৫ , ১৯৭৬ , ১৯৭৭ ভারতের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বিচারক মন্ডলীর সভাপতি ।
১৯৮২ সালের ২৫শে এপ্রিল দূরদর্শন-এ সদগতি টেলিফিল্ম সম্প্রচার ।
১৮৮৩ সালের ১লা অক্টোবর হৃদরোগ-এ আক্রান্ত ।
১৯৮৪ সালে ১২ই জুন আমেরিকা যাত্রা করেন । ১৯শে জুন হিউস্টনে সেন্ট লিউকস হাসপাতালে বাইপাস হার্ট সার্জারি হয় । ২১শে জুলাই প্রস্টেট গ্ল্যান্ড অপারেশন করিয়ে ২৪শে আগষ্ট দেশে প্রত্যাবর্তন ।
১৯৮৯ সালের ডিসেম্বর মাসে পুত্র সন্দীপ-এর বিবাহ ।
১৯৯০ সালের ২২শে নভেম্বর একমাত্র নাতি সৌরদীপ-এর জন্ম ।
১৯৯২ সালের ২৭শে জানুয়ারি বেলভিউ নার্সিং হোমে ভর্তি হন । মার্চ মাসে ঐ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে Academy of Motion Pictures-এর সম্মান Life Time Achievement Award " OSKAR " গ্রহণ করেন । (১৯৯১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর আমেরিকা থেকে টেলিগ্রাম মারফত খবরটি জেনেছিলেন । এর আগে এই শিরোপা যে ছয়জন পেয়েছিলেন -- গ্রেটা গারবো , ক্যারি গ্র্যান্ট , চার্লি চ্যাপলিন , জেমস স্টুয়ার্ট , আকিরা কুরোশাওয়া ও সোফিয়া লরেন )। Life Time Award হাতে নিয়ে বললেন " Well , what an extraordinary experience for me to be here tonight to receive this magnificent award , certainly the best achievement of my movie making career ....... Every thing I have learned about the craft of cinema from the making of American films very carefully over the years and I loved them for how they entertain and then later loved them for what they taught " .
১৯৯২ সালে ২০শে মার্চ ভারত সরকার দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করেন ।
জাতীয় পুরস্কার , আন্তর্জাতিক পুরস্কার , ফ্রান্সের সর্বোচ্চ পুরস্কার " লিজিয়ন দ্য অনার "- সহ দেশ-বিদেশের অগণিত পুরস্কারে সম্মানিত ।
১৯৯২ সালের ২৩শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার দীর্ঘরোগভোগের পর বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে জীবনাবসান ।
১৯৯২ সালের ২৪শে এপ্রিল রবীন্দ্র সদনে সাধারণ মানুষের শেষ শ্রদ্ধা গ্রহণ করে সন্ধ্যায় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পূর্ন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরবিদায় ।
অনেক মানুষের মৃত্যুর পর তিনি তাঁদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ও সেই সব প্রতিভাবান মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন । দু'জন মানুষের প্রতি তাঁর রচনায় তিনি যে সম্মান জানিয়েছেন সেটা দিয়েই শেষ করব ।
ছবিবাবু চলে যাবার আগে বুঝতে পারিনি বাংলা ছবি কি বিপজ্জনকভাবে তাঁর উপর নির্ভরশীল ছিল । আজ যদি কোনো গল্প উপন্যাস পড়তে বসে কোনও জাঁদরেল জমিদার চরিত্র বা এক ধরনের কেতাদুরস্ত ভারভার্তিক বাঙালি বা ইঙ্গ-বঙ্গ চরিত্রের সামনে পড়ি , তা হলে অত্যন্ত আক্ষেপের সঙ্গে মনে মনে বলতে হয় যে এ চরিত্র ছবিতে মূর্ত করার উপযুক্ত কোনও অভিনেতা আজ আর বাংলাদেশে নেই ।
তুলসী চক্রবর্তী চলে গিয়েও বাংলা ছবিকে অন্য আর একটি দিক দিয়ে কানা করে দিয়ে গেছেন । শুধু কমিক চেহারা থাকলেই তো আর কমেডিয়ান হওয়া যায় না । আকৃতির সঙ্গে একটা বিশেষ ধরনের হাস্যরসবোধ বা কমিক সেন্স ও দুর্দান্ত অভিনয় ক্ষমতা থাকলে তবেই তুলসী চক্রবর্তীর মতো কমেডিয়ান হওয়া যায় । এখানে ভাড়ামোর স্থান নেই , যদিও দুর্ভাগ্যবশত এ কাজটাও তুলসীবাবুকে করতে হয়েছিল । একজন বহুগুণ-সম্পন্ন অভিনেতার কেবল দর্শক-সমর্থিত একটি গুণ বেছে নিয়ে , তাকে সেই ছাঁচে ঢেলে তাঁর পূর্ন বিকাশের পথ বন্ধ করে দেওয়ার অপকাজটা এদেশে মঞ্চে ও চলচ্চিত্রে এতজনের ক্ষেত্রে হয়েছে যে তার ইয়ত্তা নেই । ভাড়ামিতেই হোক বা জাত কমেডিতেই হোক , ঠিক তুলসীবাবুর জায়গা নিতে পারে এমন আর কেউ বাংলাদেশে নেই ।
🙏 প্রণাম ....... প্রণাম ......... প্রণাম 🙏