Guruchandali গুরুচণ্ডা৯

Guruchandali গুরুচণ্ডা৯ পড়ুন, আড্ডা মারুন, মতামত দিন, ব্লগ লিখুন?

আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্চিন্তার দিন শেষ হল। আপনার এবং কেবলমাত্র

আপনার জন্যেই নেটে চলে এসেছে আমাদের অনলাইন ওয়ান স্টপ শপ গুরুচন্ডা৯। এখানে আপনি পাবেন কাটিং এজ টেকনোলজির সফ্টওয়্যার থেকে শুরু করে আঁভাগার্দ সাহিত্যের কচকচানি, পোস্টকলোনিয়াল রাজনীতি থেকে দাদের অব্যর্থ মহৌষধ, জ্যানেট জ্যাকসন থেকে রঘুপতি রাঘব রাজারাম,রুশদি থেকে রামমোহন,ব্যান্ড মিউজিক থেকে রবিবাবুর গান, এককথায় আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি প্রয়োজনের জন্য এ এক অনবদ্য দ্রব্য সম্ভার। এর বঁড়শি আপনি গিলতে বাধ্য এবং তারপরে কখনই ওগরাতে পারবেন না।

খেলাঅযথা বিকেলে খেলা ফেলেচলে যায় দূরে, খামারের সীমানা আকুলকোলাহল এখনো প্রবলবিকেলে খোলামকুচি হাওয়ারাধিকা চলেছে দূরে রাধিক...
01/12/2025

খেলা

অযথা বিকেলে খেলা ফেলে
চলে যায় দূরে, খামারের সীমানা আকুল
কোলাহল এখনো প্রবল
বিকেলে খোলামকুচি হাওয়া
রাধিকা চলেছে দূরে রাধিকার পথভরা ভুল

বিকেলের খেলা ফেলে, স্নান শেষে, পাড়ায় পাড়ায়
রাধিকা চলেছে দুরে, দোলখেলা সেরে
রাধাচূড়া পিচ ঢালা পথে
অযথা রেখেছে এতো ফুল।

এই কবিতাটা কার লেখা জানেন? বলছি, শুনুন।

তার আগে বলি যে সে এক দিন ছিল যখন, প্রিয় কবিতা প্রিয় বন্ধুকে পাঠাতাম অহরহ। সেই এক হাতে বইয়ের পাতা, স্পাইনের উপর আঙুল রেখে সন্তর্পণে আরেক হাতের দ্রুত লিখে নেওয়া। “পড়েছিস? পড়িস! পড়লি?” … কখনো-সখনো এস-এম-এস - দুই আঙুলের সুচারু ট্র্যাপিজ। পাঠাই, উত্তর আসে, আসে না বা, ভুলে যাই, উঠে পড়ি, কোনোদিন উঠি না, কিছু দেরি হয়ে যায়। কবিতা পুড়িয়ে দিলে কী হয়? পাথর?

হ্যাঁ, উত্তর আসতো সেই এক পুরনো গল্পদের দিনকালে, আমাদের ফোন ছিলো না পকেটে, তবু গুচ্ছ কবিতা ও মেঘ জমে ছিলো মাথায়, তাদের উড়িয়ে দিতে পারতাম কবুতরের মত যদৃচ্ছ, খামখেয়ালি, সুউচ্চ মিনার থেকে। “পরিপাটি বিষাদের টুপি” পরে তারা উড়ে যেতো অলৌকিক ঠিকানায়। মনে পড়ে সেই আমাদের ক্ষুদে ফোন, রোমান হরফে ফুটে ওঠা কিছু “অপয়া বিষাদ”, কিছু মন উচাটন, আর ঘর-বার, ঘর-বার। পাড়ার ক্লাবে-ক্লাবে ক্যারম বোর্ডের উপর ঠিক তখন জ্বলে ওঠে হলুদ আলো।

মনে পড়ে, পড়ে না? আচ্ছা, আরেকটা কবিতা পড়ুন তাহলে।

পাড়ার গল্প

গল্পগুলি পুরনো আর ঘষা
কাঁচের মত, একটু দেখা যায়
আর বাকিটা কি'রম কারিকুরি
সময় গেছে কষ্টনদীর ঢেউয়ে

পাড়ার মোড়ে জোনাক জ্বলে নেবে
পাড়ার মোড় আলোয় আলোময়
গল্পগুলি হলুদ আলো মোড়া
নিওনবাতি নেহাৎ অপচয়

উঠোন জুড়ে জোছনা ঢলোঢলো
লেবুর ফুলে আদর অভিমান
জোছনা ঢলে শহরে আর গাঁয়ে
স্মৃতির ঘরে ধূলার পরিমান

চিকন শ্যাম নারিকেলের পাতা
হাওয়ায় দোলে ঝাঁকিয়ে দিয়ে সুখ
হাওয়ার ঝোঁকে পালক মায়াঘেরা
পড়ার ঘর, আয়না ঘেরা মুখ

তক্তপোশে মাদুর, স্বরলিপি
দরজা ঘিরে অল্প আয়োজন
জীবন কাটে বিকাল গুলি গুণে
রাধার মনে কষ্টনদী, ঢেউ।



পল ভ্যালেরি না মালার্ম না মেরি রুয়েফল কে যেন সেই লিখেছিলেন যে কোনো কবিতাই আসলে শেষ হয় না, কোনো এক সময় তাদের হাত ছেড়ে চলে আসি আমরা, ‘দে আর মিয়ারলি অ্যাবানডনড।’ অর্থাৎ, জীবনে যেমন ঠিক যতগুলো শুরুয়াৎ, ততগুলিই শেষ, কবিতার পৃথিবীতে শুরুয়াৎ-ই শুধু, শেষ কটিই বা? কোথায় যায় সেইসব কবিতারা? সব প্রেম কী অব্যয় হয়, সব ক্রিয়াপদ অসমাপিকা? জানি না। এর উত্তর এই ছোট্ট কবিতার বইটিতে অন্তত নেই। কী আছে তাহলে?

আছে একটা সেপিয়া রঙের ছবি, যেন চেনা বায়োস্কোপ। একটানা কবিতাগুলি পড়তে হবে বিকেলে, তারপর বুকের উপর আর্ধেক ভাঁজ করে বইটি রেখে চোখ বুজলেই দেখা যাবে সেই অদ্ভুত ছবি। সেই ছবি আমার চেনা, তবু সেই ছবি যেন দূরে সরে যায়, ঘষা কাচের ওপারে। প্রত্যেকটি শব্দ যেন দাঁড় বেয়ে যেতে চেষ্টা করছে সেই ছবির কাছে, অথচ, প্রত্যেকটি শব্দই অবধারিত ভাবেই তাকে নিয়ে চলেছে আরও দূরে। স্রোত তাকে অপর করেছে। শহর থেকে, নদী থেকে, প্রায়ান্ধকার বাড়ি থেকে। সে চলেছে সেখানে, যেখানে তাকে কেউ চিঠি লিখবে না প্রত্যহ।

কলকাতা

কলকাতা তো অন্য লোকের।
আমার শহর গুটিশুটি লোডশেডিঙের চাদর মোড়া রিক্সা প্রধান
রেলগাড়িটা দিনের মধ্যে দুয়েকবারই ঘাই মেরে যায়
উপকন্ঠে। আবোলতাবোল দালানকোঠা মঠমসজিদ মর্চে পড়া কামান
এদিক ওদিক সবুজ সবুজ রাত্রিবেলা বেজায় রাত্রি।

লম্ফ জ্বেলে গ্রামীণ লোকের হাট বসে ফাঁক ফোকর খুঁজে
মাংসের চাট, ঝাল ছুঁয়ে যায় ব্রহ্মতালু।
বাড়ি ফিরছে ট্রাফিক পুলিশ, অন্ধকারে
পানের দোকান। গঙ্গা কিংবা পদ্মা নদী
এই দিকে নেই। বুঢ়া লুঈয়ের আশীর্বাদী।

বাঁধের বাঁধন এদিক ওদিক। ঠিক ধরেছো, রবীন্দ্রনাথ
শহরজোড়া একের থেকে অন্যরকম সকল ঠাকুর
মুর্তি গড়ার কারিগরে খেয়াল মত, শালপ্রাংশু
ততটা নন, বেঁটেখাটো, মানুষ যেমন।
শহর বাড়ছে। উপকন্ঠে, কিনার ঘেঁষে।

উড়ালসেতু, ঝকঝকে মল, বাড়ছে এবং
অপর হচ্ছে।
কলকাতা তো তোমার শহর।
আমার কিসে
উচ্চারণের আড়ষ্টতা, কফি হাউস।
একটু তবু কিনার ঘেঁষে বসি আরকি
ঠেলেঠুলে সাইড দিন না, এই যে লোকটা দাঁড়িয়ে আছে।
আস্তিনে তার গোপন কথা। এই শহরটা আমার নয় তো।

তোমার শহর। একটু আমি বসে পড়ছি
আড়ষ্টতা চাপছি আরকি,
উপকন্ঠে ঘাই মারছে শহর থেকে শহর বদল।
ফিরছে না কেউ বাড়ির দিকে।
আলো জ্বলছে সন্ধ্যেবেলা।

কোনো এক বিখ্যাত কবির তত্ত্ব ছিলো যে কোনো কোনো ভাষায় নাকি মানুষ সারা জীবন ধরে যা কিছু বলে তার সবটাই একটা, মাত্র একটাই বাক্য - তার প্রথম অস্ফুট ডাক থেকে শেষ পারানির কড়ি - মাঝের সমস্ত যতিচিহ্ন অজস্র সেমিকোলন। একটি মানুষ, সেই তত্ত্ব অনুসারে, আসলে একটিই বাক্য - হয়তো একটি দীর্ঘ কবিতা, যা সে সারা জীবন ধরে রচনা করে চলেছে নিজের অজ্ঞাতসারে।

আমি তত্ত্ব বুঝি না, আমি বুঝি সায়নদার কবিতা আমার কাছে কী? এই কবিতাগুলি সূচিভেদ্য অন্ধকার জঙ্গলের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ কানে আসা বহুদূরের কোনো এক ক্ষীণতনু মুখচোরা নদীটির স্বর। আমি এই অন্ধকার বন হাতড়ে হাতড়ে, ক্ষত ও ক্ষয় নিয়ে শুধুই পৌঁছতে চেষ্টা করছি সেই নদীটির দিকে। যতোই যাই ততো অন্ধকার ঘন হয়, তবু মনে হয় এইসব শীতের নীরবতা ঠেলে একদিন সেই একলা তীরে দু-দণ্ড বসতে পারলে বড্ড শান্তি পাই আমি।

সায়নদার, হ্যাঁ, এই কবিতাগুলি সায়নদার। সায়ন কর ভৌমিকের। বইয়ের নাম আপাতত "রাধিকা ও আর্শোলা"। বইটি বেরুবে বইমেলায়। গুরুচণ্ডা৯-র তরফে। আমার কাছে অবশ্য হুতোদা। হুতোদার বই বেরুচ্ছে, খুব মজা।

এই লেখাটা আসলে দত্তকের ডাক, তবু, এ আমার প্রিয় কবিতার বই। একটু অভিমান লেগে আছে আস্তিনে - কিনে ঠকবেন না, উপকৃত হবেন, না চুল পড়া অথবা অগ্নিমান্দ্য সেরে যাবে অথবা বুদ্ধি খুলে যাবে এইসব কিছুই বলতে আমি অপারগ। তবে, বলতে পারি যে এই চটি কবিতার বইটিতে একটি লুকোনো জাদুকরী বীজ আছে কোথাও, একদিন সে আলোর দিকে মাথা তুলে ডালপালা মেলে দাঁড়াবেই এইটুকু প্রতিশ্রুতি আমি দিতেই পারি।



পুনশ্চ – গুরুর এই বইপ্রকাশের পদ্ধতিটা জানেন, তাঁরা এ-ও নিশ্চয়ই জানেন যে, গুরুর বই বেরোয় সমবায় পদ্ধতিতে। যাঁরা কোনো বই পছন্দ করেন, চান যে বইটি প্রকাশিত হোক, তাঁরা বইয়ের আংশিক অথবা সম্পূর্ণ অর্থভার গ্রহণ করেন। আমরা যাকে বলি দত্তক। এই বইটি যদি কেউ দত্তক নিতে চান, আংশিক বা সম্পূর্ণ, জানাবেন [email protected] এ মেল করে।

 কুমুদি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়নের পিএইচডি, পেশায় বিজ্ঞানী, পরে দিল্লী প্রবাসী সুসাহিত্যিক জয়ন্তী অধিকারী ...
10/11/2025


কুমুদি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়নের পিএইচডি, পেশায় বিজ্ঞানী, পরে দিল্লী প্রবাসী সুসাহিত্যিক জয়ন্তী অধিকারী গুরুচণ্ডালীর বড় আপনজন ছিলেন। তার সাহচর্যের মধুর স্মৃতি গুরুচন্ডা৯ কে এখনো আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে রেখেছে তাই তাঁরই স্মৃতিতে গুরুচন্ডা৯ প্রতিবছর কিশোর কিশোরীদের কাছ থেকে 'কুমুদির গল্প' বলে এক গল্প প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চলেছে।

২০২৫ এর আগস্ট মাসে তাই রইল গুরুচন্ডা৯-র তরফে কুমুদি পুরস্কারের জন্য নবীন কলমদের থেকে গল্প লেখার আহ্বান।

বয়স অনুযায়ী তিনটি বিভাগ-

ক বিভাগ- ১১ বছর বয়স পর্যন্ত;
খ বিভাগ- ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত;
গ বিভাগ- ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত।

গল্প লিখে মেল বডিতে টাইপ, লেখা স্ক্যান বা পিডিএফ করে ইমেইল করতে হবে [email protected] এই ঠিকানায়। লেখা পাঠাবার শেষ তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫,
এর পরে আসা কোনও লেখা আমরা প্রতিযোগিতার জন্য বিবেচনা করতে অক্ষম।
বিষয় উন্মুক্ত, শব্দসীমার কোনও বাধা-নিষেধ নেই।

প্রত্যেক বিভাগের শ্রেষ্ঠ গল্পকার পাবে ২০০০ টাকার পুরস্কার এবং সকল নির্বাচিত গল্পকার পাবে ৫০০ টাকার পুরস্কার।
নির্বাচিত গল্পগুলি প্রথমে গুরুচণ্ডা৯-র ওয়েবসাইটে ও পরে বই আকারে প্রকাশ পাবে, যেটি বিনামুল্যে নির্বাচিত গল্পকারদের দেওয়া হবে।

09/08/2025
বাংলা তিনবার ভেঙেছে। প্রথম বঙ্গভঙ্গ ১৯০৫ সালে।  প্রতিবাদে সারা বাংলা জুড়ে রাখিবন্ধন হয়েছিল সেবার। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ রাস্...
23/07/2025

বাংলা তিনবার ভেঙেছে। প্রথম বঙ্গভঙ্গ ১৯০৫ সালে। প্রতিবাদে সারা বাংলা জুড়ে রাখিবন্ধন হয়েছিল সেবার। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ রাস্তায় নেমেছিলেন। অবনীন্দ্রনাথ লিখেছেন, "রবিকাকা বললেন, সবাই হেঁটে যাব, গাড়িঘোড়া নয়।—রওনা হলুম সবাই গঙ্গাস্নানের উদ্দেশ্যে। রাস্তার দুধারে বাড়ির ছাদ থেকে আরম্ভ করে ফুটপাত অবধি লোক দাঁড়িয়ে আছে—মেয়েরা খই ছড়াচ্ছে, শাঁখ বাজাচ্ছে, মহা ধুমধাম—যেন একটা শোভাযাত্রা, দিনুও সঙ্গে ছিল, গান গাইতে গাইতে রাস্তা দিয়ে মিছিল চলল—বাংলার মাটি, বাংলার জল বাংলার বায়ু, বাংলার ফল পুণ্য হউক পুণ্য হউক পুণ্য হউক হে ভগবান।"

তারপর সেটাই একটা মিছিল হয়ে গেল। যাকেই সামনে পাওয়া যাচ্ছে, তার হাতেই ​​​​​​​বেঁধে ​​​​​​​দেওয়া ​​​​​​​হচ্ছে ​​​​​​​রাখি। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে। প্রায় অনাবৃত ঊর্ধাঙ্গে কলকাতার রাজপথে হাঁটছেন রবীন্দ্রনাথ। পাথুরেঘাটা গিয়ে মিছিল যাচ্ছে, বীরু মল্লিকের আস্তাবলে গিয়ে মুসলমান সহিসদের হাতে রাখি পরিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথ। তারপর চললেন চিৎপুরের বড়ো মসজিদের দিকে। মসজিদে যাঁদের পাওয়া গেল, সবাইকে পরানো হল রাখি। তাঁরাও খুশি মনে হেসে রাখি পরেছিলেন সেদিন। এই ঐক্যের তাপে ইংরেজ বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব রদ করতে বাধ্য হয় একটা সময়।

১৯৪৭ সালে হল পরের বঙ্গভঙ্গ। দ্বিতীয়বার। সেটা এরকম গর্বের ব্যাপার নয়। রবীন্দ্রনাথ মারা গেছেন তার ৬ বছর আগে, শেষযাত্রায় তাঁর দাড়ি উপড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশবন্ধু আরও অনেক আগে গত। সুভাষ বসু কোথায়, কেউ জানেনা, শরৎ বসু হীনবল। কেউ রাখিবন্ধনের ডাক দেয়নি সেবার। বরং ৪৬-৪৭ সাল জুড়ে চলেছিল তাণ্ডব নৃত্য। চিল, শকুন, মিনা পেশোয়ারি আর গোপাল পাঁঠারা রাজত্ব করেছে ভারত-ছাড়োর পরের কলকাতায়। গান্ধিজি অনশন করেছেন বেলেঘাটায়। কেউ রাখিবন্ধনের কথা বলেননি। যাঁদের বলার কথা ছিল, তাঁরা ক্ষমতার আঁচলের নিচে মুখ লুকিয়ে বসে ছিলেন। যাঁদের মুখ খোলার কথা ছিল, আমাদের সম্মাননীয় বুদ্ধিজীবীগণ কেউ এই সময়টা নিয়ে একটা কথা অবধি বলেননি, পাপ ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত ছিলেন। বাংলায় রাখিবন্ধন হয়নি, বাংলায় কোনো মান্টো তৈরি হয়নি, প্রচুর ক্ষমতাশালী লোক থাকার পরেও। কেবল জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, ১৯৪৬ -৪৭। এ-যুগে কোথাও কোনো আলো— কোনো কান্তিময় আলো, চোখের সুমুখে নেই যাত্রিকের। এর কিছুদিন পর দিন ট্রামে চাপা পড়ে মারা যান, যেমন মারা যান আরেক ভগ্নহৃদয় ট্রাজিক নায়ক শরৎ বসু। এই ট্রাজেডি ধারণ যাঁরা করেছেন, তাঁদের বেশিদিন বেঁচে থাকাই অসম্ভব।

তাঁদের শেষযাত্রায় কে কে ছিল, তাও আর যে জানা যায়না, এ আমাদের পূর্বপুরুষের পাপ। সে পাপ, অনুতাপহীন, ধামাচাপা দেওয়া হয়ে গেছে। ১৯৪৬-৪৭ আমাদের পাঠক্রমে ছিল। প্রথমবার যখন পড়ি, হতাশা-টতাশা সবই বোঝা গিয়েছিল, কিন্তু অবোধ বালক ও বালিকা আমরা, প্রশ্ন করেছিলাম, এর নাম ৪৬-৪৭ কেন? রক্তের নদী থেকে কেন ইয়াসিন, হানিফ, গগন, বিপিনরা প্রেতাত্মার মতো উঠে আসবে? ওই বছরই দেশ স্বাধীন হয়েছিল না? অবোধ কিশোর ও কিশোরীরা, হায়, জানতনা, ভাগের ইতিহাস, কলঙ্কের ইতিহাস, দাঙ্গার ইতিহাস, পিতৃপুরুষের পাপ, সব ধামাচাপা দেওয়া হয়ে গেছে ১৫ই আগস্টের মহোৎসবের নিচে। ৪৬ সালে জীবনানন্দের চোখের সুমুখে শুধু লাশ ছিল, কোনো রাখিবন্ধন ছিলনা।
তৃতীয় বঙ্গভঙ্গ, বিতাড়ন, হচ্ছে, হয়ে চলেছে, হতে চলেছে, এই ২০২৫ সালে। পাথুরেঘাটার শশী বা মুর্শিদাবাদের ইয়াসিন, আসামের ব্রজ শীল, মার খাচ্ছে, তাড়া খাচ্ছে, মরে যাচ্ছে, ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকে বসে আছে, বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, রোজ। আমাদের এবার অন্তত একটা রাখিবন্ধন চাই।

৯ তারিখ, আগস্টের ৯, ২০২৫, আর কেউ করুক না করুক, আমরা রাখিবন্ধন করব। পাঁজিটাজিতেও ওইদিনই রাখি। কিন্তু সে জন্য না। আমাদের ঠেক বদল হচ্ছে কলেজ স্ট্রিটে, ওইদিনই একটা আলোচনা সভাও ঠিক করা হয়েছিল ত্রিপুরা হিতসাধনী সভায়। ঘটনাচক্রে সেদিনই রাখি। ইতিহাসের বাঁকে বোধহয় এইরকম আপতিক ঘটনা ঘটেই থাকে। ওইদিন তাই আমরা একে অপরের হাতে রাখি বাঁধব, অজানা লোকেদের হাতেও বেঁধে দেব, কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। সঙ্গের পোস্টারে সব দেওয়া আছে, যাঁরা চেঁচামেচি, মিটিং-মিছিল কিচ্ছু করতে চাননা, আসুন, অবশ্যই আসুন। সঙ্গে নিয়ে আসুন হাতে বানানো রাখি। একটা সুতো হলেই হবে, এ তো প্রতীক ছাড়া আর কিছু নয়। বেঁধে নিন, বেঁধে দিন রাখি।

পত্রদ্বারা আমন্ত্রণের ত্রুটি মার্জনা করবেন। আর যারা একান্তই আসতে পারবেন না, নিজের এলাকায়, নিজের বাড়িতে, নিজের অফিসে, নিজের মতো করে রাখি বাঁধুন। সবাইকে কলেজস্ট্রিটেই আসতে হবে এমন তো না। সকল ঘর, সকল মাঠ, সকল রাস্তা হয়ে উঠুক রাখিবন্ধনের রাস্তা। বাঙালির প্রাণ বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাইবোন, এক হউক এক হউক এক হউক হে ভগবান। ভগবানে সকলে ঠিক বিশ্বাস করে না বটে, কিন্তু বাঙালিতে তো করে। অতএব গুরুচণ্ডালির পক্ষ থেকে এই আবেদন রইল। যাঁরা পড়লেন, ছড়িয়ে দিন, বা নিজের মতো করে আবেদন করুন, যা খুশি।

“গত কয়েকদিন ধরেই, বিশেষ করে গতকাল রাত থেকে প্রায় সমস্ত মূলধারার মিডিয়া, ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন...
09/05/2025

“গত কয়েকদিন ধরেই, বিশেষ করে গতকাল রাত থেকে প্রায় সমস্ত মূলধারার মিডিয়া, ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাপে (ট্যুইটার/এক্স, ফেসবুক, হোয়াটস-অ্যাপ ইত্যাদি) নাগাড়ে ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়েছে। সেইগুলি ছড়ানোর কাজ শুরু করেছে মূলধারার মিডিয়া এবং তাদের প্রচার করা খবর সত্যি বলে ধরে নিয়ে সেগুলিকে দাবানলের মত সারাদেশে ছড়িয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে অভূতপূর্ব আতঙ্ক (এবং কোনোক্ষেত্রে উল্লাস)। এই ভুয়ো খবরের যুদ্ধে ভারতের মূলধারার মিডিয়া, যা বহুদিন ধরেই শুধুমাত্র প্রোপাগাণ্ডা মেশিন, যেমন দুষ্ট, তেমনি দুষ্ট পাকিস্তানি ফেক নিউজের কারখানাগুলিও। যুদ্ধবিক্ষত গাজা বা অন্যান্য অঞ্চলের ফুটেজ তো আছেই, তার সাথে খুঁড়ে বের করা হয়েছে কোথায় গ্যাস সিলিণ্ডার ফেটে পুরনো বিস্ফোরণের ভিডিও, কোথায় পুরনো এয়ারপ্লেন ক্র্যাশের ভিডিও, কোথাও আবার ভিডিও গেম সিমুলেশনের ছবি। এইগুলি দুইদেশের মিডিয়া অজান্তে, দুর্ঘটনাবশত করে ফেলেনি, করেছে রীতিমত পরিকল্পনা করে এবং সম্ভবত অনেকে মিলে, এবং কো-অর্ডিনেটেড ভাবেই, এক একটি মিডিয়া দখল করেছে এক-একটি অঞ্চল, কেউ শিয়ালকোট, কেউ লাহোর, কেউ করাচি, কেউ ইসলামাবাদ। ভুয়ো খবরের লক্ষ্যবস্তুগুলিও যথাসম্ভব আলাদা আলাদা করার উদ্দেশ্য মানুষ এবং ফ্যাক্ট-চেকিং এজেন্সিদের আরও আরও দিশেহারা করে দেওয়া, আর কিছু নয়।”

এইরকম কয়েকটি খবর ও আলোচনা নিয়ে সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভিডিও প্রতিবেদন আর এই বিশাল ফ্যাক্ট-চেকিং/ফেক-বাস্টিং-এর কাজ, যা অক্লান্ত ভাবে করে গেছেন অল্ট-নিউজের কর্মীরা, তার কয়েকটি পাবেন মন্তব্যের লিঙ্কে। স্ক্রিনশটও আছে।

"সামনের দুই পায়ে ধরে বন্দুকবর্ডারে চললেন মেজর ময়ূখগলায় হাম্বা ডাক, টাই বাঁধা বুকশিং দেখে চুপ হয় পেঁচো নিন্দুক।বিপক্ষে এস...
27/04/2025

"সামনের দুই পায়ে ধরে বন্দুক
বর্ডারে চললেন মেজর ময়ূখ
গলায় হাম্বা ডাক, টাই বাঁধা বুক
শিং দেখে চুপ হয় পেঁচো নিন্দুক।

বিপক্ষে এসে গেছে বলদ মেজর
শত্রুর সেনাপতি কাঁপে থরথর
উনিজিকে বলে প্রভু সব কিছু নাও
বদলা তুচ্ছ, শুধু বলদা ফেরাও।"

ফেকু কীর্তন - ভয় পেয়োনা ভয় পেয়োনা তোমায় আমি মারবনা
26/04/2025

ফেকু কীর্তন - ভয় পেয়োনা ভয় পেয়োনা তোমায় আমি মারবনা

দেশ যখন জ্বলছে তখন উনিজি কীর্তন গাইছেন। পিছনে দু হাত তুলে বড় মেজ ছোটো বাচ্চারা।

এই বইয়ের একটি পর্বে শেখরনাথ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন"বিদ্রোহী তকমা যার নামের সঙ্গে এঁটে যায় একবার, তার তো শত্রুর অভাব হয় না। ...
24/04/2025

এই বইয়ের একটি পর্বে শেখরনাথ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন

"বিদ্রোহী তকমা যার নামের সঙ্গে এঁটে যায় একবার, তার তো শত্রুর অভাব হয় না। শত্রু যদি না-ও হয়, তার বিরোধী তো হয় অনেকেই। বিরোধ তো আছেই, এবং যে-বিষয়ে বিরোধ তার প্রতিবাদ করে যে, সে-ই প্রতিবাদী, সে-ই বিদ্রোহী। কাজি নজরুলের নাম আর পাঁচজন বাঙালি জেনেছে তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে। এবং সেই জানার এখনো এক দশকও হয়নি। এরই মধ্যে গড়পড়তা বাঙালি শুধু নয়, বাঙালিদের যাঁরা নেতৃস্থানীয়, তাঁরা সবাই মিলে তাকে জাতীয় কবি এবং বিদ্রোহী কবি দুটো উপাধিই দিয়ে ফেলেছেন। যাঁরা পছন্দ করেননি ব্যাপারটা তাঁরা হয়তো কাজিকে হুঙ্কারবাদী উপাধিতেও উল্লেখ করেন – সেটা অবিশ্যি খানিকটা স্বগতোক্তির মতোই; কারণ বাংলা সাহিত্যে যাঁর উপর আর কথা চলে না সেই রবীন্দ্রনাথও – জাতির জীবনে নজরুল বসন্ত এনেছে – এই কথা বলে নিজের হাতে ১০ই ফাল্গুন, ১৩২৯ তারিখ-চিহ্নিত স্বাক্ষরসহ তাঁর বসন্ত গীতিনাট্যখানা খোদ কারাগারে বন্দী কাজিকে উৎসর্গ করে তার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন"

এই উপন্যাস আবর্তিত হয়েছে এই মানুষটিকে কেন্দ্রে রেখে, যাঁর কর্মজীবন ব্যাপ্ত হয়েছে বিশ শতকের বিশ ও ত্রিশের দশক জুড়ে। বস্তুত, এই আখ্যানের নায়ক এই সময়কাল। লেখকের নিজের কথাতে - "রাজনৈতিক আন্দোলন ছাড়াও সমাজ শিল্প এবং সাহিত্যের নানা আন্দোলনের কারণে গত একশো বছরের ভারতীয় ইতিহাসে এই সময়কাল বিশিষ্ট। উপন্যাসটির নায়ক এই সময়কালই।"

পাঠক সমাদৃত ৪৮ পর্বের উপন্যাসটির প্রথম ২৫ পর্ব নিয়ে গত বছর প্রকাশিত হয়েছিল, প্রথম খণ্ড। এবার বাকি পর্বগুলি নিয়ে প্রকাশিত হতে চলেছে দ্বিতীয় খণ্ড। সঙ্গের ছবিটি প্রচ্ছদ হিসেবে চূড়ান্ত নয়, কাজ চলছে।

বই: সীমানা, দ্বিতীয় খণ্ড
লেখক: শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়
প্রকাশক: গুরুচণ্ডা৯
প্রকাশ: ২০২৫

যাঁরা গুরুর বইপ্রকাশের পদ্ধতিটা জানেন, তাঁরা অবগত আছেন, যে, গুরুর বই বেরোয় সমবায় পদ্ধতিতে। যাঁরা কোনো বই পছন্দ করেন, চান যে বইটি প্রকাশিত হোক, তাঁরা বইয়ের আংশিক অথবা সম্পূর্ণ অর্থভার গ্রহণ করেন। আমরা যাকে বলি 'দত্তক'। এই বইটি যদি কেউ দত্তক নিতে চান, আংশিক বা সম্পূর্ণ, জানাবেন। এই লেখার নিচে। অথবা [email protected] -তে ইমেল করে।

'দত্তক' কী ও কেন? জানতে কমেন্টের লিঙ্কটা একবার খুলে দেখুন।

14/04/2025
লিট্ল ম্যাগাজিন মেলায় গুরু রয়েছে ১৩৩ নম্বর স্টলে... 😊 চলবে ৫-৯ই এপ্রিল পর্যন্ত। পারলে চলে আসুন।
05/04/2025

লিট্ল ম্যাগাজিন মেলায় গুরু রয়েছে ১৩৩ নম্বর স্টলে... 😊
চলবে ৫-৯ই এপ্রিল পর্যন্ত। পারলে চলে আসুন।

Address

15, Bankim Chatterjee St, College Square West, College Square
Calcutta Bara Bazar
700073

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Guruchandali গুরুচণ্ডা৯ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Guruchandali গুরুচণ্ডা৯:

Share

Category