26/04/2025
JK NEWS BANGLA: কাশ্মীর হামলার প্রতিশোধ গর্ভবতী মুসলিম নারীর ওপর! চিকিৎসকের ঘৃণা-উক্তি: “মুসলিম রোগী দেখব না”
কলকাতা | এপ্রিল ২০২৫
দক্ষিণ কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক জঙ্গি হামলার জেরে সারা দেশে মুসলিমবিরোধী ঘৃণা বাড়ছে—এবার সেই ঘৃণার বিষ ছড়িয়ে পড়ল কলকাতার নামী এক হাসপাতালে!
অভিযোগ উঠেছে, কসবা অঞ্চলের কস্তুরি দাস মেমোরিয়াল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কর্মরত গাইনোকলজিস্ট ডা. সি. কে. সরকার, সাত মাসের গর্ভবতী এক মুসলিম নারীকে চিকিৎসা দিতে স্পষ্ট ভাষায় অস্বীকৃতি জানান। তিনি নাকি বলেন, “কাশ্মীরের ঘটনার পর আমি আর কোনো মুসলিম রোগী দেখব না।”
আরও চমকে দেওয়ার মতো তথ্য, ওই গর্ভবতী নারী গত সাত মাস ধরে ডা. সরকারের তত্ত্বাবধানে ছিলেন! কিন্তু সম্প্রতি পাহেলগাঁও-এ হিন্দু পর্যটকদের ওপর হামলার পর, তিনি সহানুভূতির বদলে উগরে দিলেন ঘৃণা!
পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক আরও বলেন—
“তোমার স্বামীকে যদি হিন্দুরা মেরে ফেলত, তাহলে বুঝতে পারতে তাদের কেমন লাগে। তোমরা মুসলিমরা এই দেশের ক্ষতি করছো। সব মুসলিমদের নিষিদ্ধ করা উচিত।”
এই বক্তব্যে আতঙ্কে ভেঙে পড়েছেন রোগী এবং তাঁর পরিবার।
এক ফেসবুক পোস্টে রোগীর আত্মীয়া অ্যাডভোকেট মেহফুজা খাতুন লিখেছেন,
“আমার ভাবী চিকিৎসকের এমন আচরণে দিশেহারা। তিনি শুধু নিজের জন্য নয়, তাঁর গর্ভের সন্তানের জন্যও আজ আতঙ্কগ্রস্ত। এমন অমানবিকতা কোনো চিকিৎসকের পেশাগত নীতির সঙ্গে যায় না।”
ঘটনাটি ভাইরাল হতেই সমাজের নানা স্তরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রখ্যাত সমাজকর্মী মোনা আমবেগাঁওকর বলেন,
“এই চিকিৎসক শুধু ঘৃণার কথা বলেননি, একজন গর্ভবতী নারীর জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। তাঁকে অবিলম্বে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বহিষ্কার করতে হবে। এটি ফৌজদারি অপরাধ।”
চিকিৎসাবিদ্যার শপথ কি হারিয়ে যাচ্ছে?
ঘটনার পর চিকিৎসা জগতে নৈতিকতা ও মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ। ধর্মের ভিত্তিতে চিকিৎসা বেছে নেওয়া—এটা কি ভারতীয় সংবিধানের ‘সকল নাগরিকের সমান অধিকার’-এর লঙ্ঘন নয়?
প্রতিবাদ ও দাবি:
অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
হাসপাতাল প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্ত
মেডিক্যাল কাউন্সিলের স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ
মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ ও পর্যবেক্ষণ
শেষ কথা:
একটি ধর্মীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আরেক নিরীহ ধর্মাবলম্বীর গর্ভে বেড়ে ওঠা প্রাণকে শাস্তি দেওয়া কি আমাদের সভ্যতা? প্রশ্নটা আজ আমাদের সকলের কাছে।