Care of Kolikata - কলিকাতা

Care of Kolikata - কলিকাতা পরিবার মানে মেলবন্ধন,পরিবার মানে আন্তরিকতা এবং পরিবার মানে শুধুমাত্র কেয়ার অফ কলিকাতা ❤️

-কি গো গুনছো?-হ্যাঁ গো গিন্নি বলো ।-আমি তো বাড়িতে কিছুদিন ছিলাম না । নিজেকে কি একবার হলেও দেখেছো। ছাই ভস্ম মেখে কি হাল ...
16/10/2025

-কি গো গুনছো?
-হ্যাঁ গো গিন্নি বলো ।
-আমি তো বাড়িতে কিছুদিন ছিলাম না । নিজেকে কি একবার হলেও দেখেছো। ছাই ভস্ম মেখে কি হাল করেছো নিজের ?
-গিন্নি না থাকলে কেমন করে ভালো থাকবো বলো তো ।
-আদিখ্যেতা! সারাবছর তো তোমার সংসারে হেঁসেল ঠেলছি ।আর চার দিনের জন্য বাবার বাড়ি গেলেই উনার যত আপত্তি।
-উমা হয়ে তো আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাও না । তো কষ্ট তো হবেই।
-বাবা গো বাবা আদিখ্যেতা দেখে আর পারি না।
-ওমন করে বলো না গিন্নি ।
-উমা হয়ে নিয়ে যায় নি তো কি হয়েছে।শ্যামা হয়ে নিয়ে যাবো তো।
-ছেলে মেয়েদের তো নিয়ে যাওয়া হবে না । নন্দী ভিঙ্গি কে বলবো ওদের যেন দেখাশোনা করে ।
-ওরা যা দুষ্টু হয়েছে ঠিকঠাক পড়াশুনাও করে না । শুধু এই করব সেই করব ।
-আমার সরু মা এই সব বিষয়ে খুব পটু ।পড়াশুনা নিয়ে কিছুই বলতে হয় না ।
-সরুকে নিয়ে চিন্তা নেই । বাকিদের নিয়ে চিন্তা ।
-অত চিন্তা করো না গিন্নি । ওরা ঠিক পড়াশুনা করে নিবে ।
-সে করলেই ভালো ।
-আমার যেন আনন্দ ধরে না ।
-কেনো কেনো? কি হয়েছে তোমার ?
-উমা হয়ে যেতে পারি নি ।এবার শ্যামা হয়ে একসাথে যাবো,শুধু তুমি আর আমি ।
কলমে: দেবলীনা

ছবি: সংগৃহীত
Care of Kolikata - কলিকাতা

কলমে: উজানCare of Kolikata - কলিকাতা
15/10/2025

কলমে: উজান
Care of Kolikata - কলিকাতা

12/10/2025

কলমে: জ য় ন্তী
কন্ঠে: সোহাগ স্মৃতি
সাউন্ড: FSN Production
Debjit Maity
Care of Kolikata - কলিকাতা

প্রকৃতির ভয়াল তাণ্ডবে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে উত্তরবঙ্গ। এই ছবিটা শুধু একটা বিপর্যয়ের দৃশ্য নয় ...এটা এক দীর্ঘশ্বাস, এক নির্...
12/10/2025

প্রকৃতির ভয়াল তাণ্ডবে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে উত্তরবঙ্গ। এই ছবিটা শুধু একটা বিপর্যয়ের দৃশ্য নয় ...এটা এক দীর্ঘশ্বাস, এক নির্বাক আর্তনাদ। আকাশের বুক চিরে নামা বিদ্যুতের ঝলকানি আর পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের মধ্যে ভেঙে পড়া সেতুটা যেন নিঃশব্দে বলে দিচ্ছে, প্রকৃতির সামনে মানুষ আসলে কিছুই না ।
কিন্তু গভীরে গেলে বোঝা যায়, এটা শুধু লোহার আর কংক্রিটের ভাঙন নয়,এটা মানুষের জীবনের ছন্দ থেমে যাওয়ার গল্প। সেই সেতুটা ছিল শুধু একটা কাঠামো নয়, ওটাই ছিল ওই অঞ্চলের প্রাণরেখা। প্রতিদিন সকালে তার ওপর দিয়ে যেত স্কুলে যাওয়া ছাত্রছাত্রী, কৃষকের ফসলভর্তি গাড়ি, কারও কাজের তাগিদে দৌড়, কারও প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করার আনন্দ। সেতুর গায়ে লেগে ছিল হাজার মানুষের ঘাম, গল্প, আর স্বপ্নের ধুলো। কত প্রেমের শুরু, কত মায়ের সন্তানের হাত ধরে বাড়ি ফেরার সুখ..সবকিছুর সাক্ষী ছিল সে। তাই আজ যখন উন্মত্ত জলের স্রোতে সেটা ভেঙে গেছে, তখন শুধু যোগাযোগ নয়, ভেঙে পড়েছে এক প্রজন্মের ভরসা, ভবিষ্যতের আশাও।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হলো এই ভাঙনের পরের নীরবতা। নদীর ওপারে আটকে থাকা বাবা ভাবছেন, অসুস্থ ছেলেটার কাছে কীভাবে পৌঁছবেন। ক্ষেতে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষক দেখছেন তাঁর সারা বছরের পরিশ্রম জলের নিচে হারিয়ে যাচ্ছে। এই বিচ্ছিন্নতা শুধু ভৌগোলিক নয়, মানসিকও, যন্ত্রণায়, ভয়ে আর অজানা ভবিষ্যতের অন্ধকারে ঘেরা। কিছুদিন পর হয়তো খবরের কাগজের শিরোনাম থেকে এই বিপর্যয় হারিয়ে যাবে, কিন্তু এই এলাকার মানুষদের মনে থেকে যাবে এক দগদগে ক্ষত হিসেবে বহু বছর ধরে।
এই সময় ‘Pray for North Bengal’ শুধু একটা বাক্য নয়, এক মানবিকতার আহ্বান। এই প্রার্থনা হতে পারে আমাদের সকলের গড়া এক অদৃশ্য সেতু , যে সেতু জুড়ে দেবে মানুষকে মানুষের সঙ্গে, সহানুভূতিকে কর্মের সঙ্গে। প্রশাসন একদিন নতুন সেতু গড়ে তুলবে ঠিকই, কিন্তু তার আগেই আমাদের গড়তে হবে বিশ্বাসের সেতু। আজ দরকার শুধু ইট-পাথরের নয়, দরকার উষ্ণতার, দরকার আশ্বাসের। আমাদের প্রার্থনাই হোক সেই প্রথম পদক্ষেপ—একটু আলো, একটু ভরসা, একটু মানবতা।
কলমে: ঋষভ
Osi Risav
ছবি: সংগ্রহীত
Care of Kolikata - কলিকাতা

রাজ – কাকিমা, আজ ঈশান পড়তে যাবে তো?ঈশানের মা – হ্যাঁ, যাবে। তুই আয় না, দু’মিনিট এসে ঘরে বস। ও জামা পাল্টে এলো বলে।পড়তে য...
11/10/2025

রাজ – কাকিমা, আজ ঈশান পড়তে যাবে তো?
ঈশানের মা – হ্যাঁ, যাবে। তুই আয় না, দু’মিনিট এসে ঘরে বস। ও জামা পাল্টে এলো বলে।

পড়তে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে এলো ঈশান... রাজ তার একমাত্র ভালো বন্ধু, তারা প্রতিদিন একসাথেই পড়তে যায়। ওরা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকে...

রাজ – কী রে, পুজো কেমন কাটল?
ঈশান – ভীষণ ভালো, অনেক ঠাকুর দেখেছি... আর তোর?
রাজ – আমারও ভালো কেটেছে। এই শোন না... স্যারের কাছে বিজয়ার পর পড়তে যাচ্ছি, স্যার কী খাওয়াবেন বল তো?
ঈশান – এই হ্যাঁ! ঠিক বলেছিস, এটা তো ভেবে দেখিনি... সবাই মিলে একসাথে স্যারকে ধরবো, কিন্তু মনে থাকে যেন!
রাজ – হ্যাঁ, তাই হবে। এখন পা চালিয়ে ছো, নাহলে দেরি হয়ে যাবে যে!

ওরা দু’জনে ওদের ক্লাসে ঢোকে... সবাই স্যারকে শুভ বিজয়া জানায়।
ঈশান বলে ওঠে—
ঈশান – স্যার ও স্যার, শুভ বিজয়ায় আমাদের কী খাওয়াবেন?

স্যার – অমনি না? দিন-রাত ঘোরা আর খাওয়ার কথা! খাওয়াবো খাওয়াবো, আগে অঙ্কগুলো করে দেখা দেখি কেমন পারিস। তারপর সব কথা হবে ক্ষণ! নে নে, বইপত্র বার কর এবার সবাই।

ওদের মধ্যে কেউই আর বেশি কিছু বলে না, পাছে যদি ধমক খায়। সবাই মুখ ভার করে বইপত্র বার করে বোর্ডের দিকে তাকায়।
স্যার আড়চোখে দেখে যে সবার মুখ ভার, সে পড়াতে পড়াতে উঠে গিয়ে তার ব্যাগের পেছনে লুকিয়ে রাখা মিষ্টির হাঁড়িটা বার করে...
সেই দেখে ঈশান আর ঈশানের বন্ধুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল...

---

২০ বছর পর...
অফিস থেকে বাড়ি ফিরল এক যুবক। এসেই ব্যাগটা পাশে রেখে সোফার ওপর গা এলিয়ে দিল সে। সারাদিনের ক্লান্তি তার চোখে-মুখে প্রকাশ পাচ্ছে। চোখ বন্ধ করতেই মাথায় আসে— সামনে ছেলে-মেয়ের স্কুলের ফি দিতে হবে, শ্রীর সাথে শপিংয়ে যেতে হবে। কিন্তু অফিস থেকে এখনো ছুটি পায়নি। কবে আর কী করবে! ছেলে-মেয়েদেরও সময় দিতে পারেনি পুজোতেও।

হঠাৎ ফোনটা বেজে ওঠে... সে ফোনটা তুলতেই এক অতি চেনা কণ্ঠ ওপাশ থেকে বলে ওঠে—

রাজ – কী রে? বিদেশে গিয়ে ভুলেই তো গেছিস! পুজোতে তো এলি না, বিজয়ায় এখন কলকাতায় আসছিস তো?
ঈশান – ছুটিটা আদৌ পাব কি না, সেইটাও জানি না। পুজো-বিজয়া সব উঠেই গেছে জীবন থেকে।
রাজ – সত্যিই তাই... দিনের পর দিন কত মানুষ হারাচ্ছে... ভীষণ একা লাগে এখন। এখন দিনের শেষে যখন পেছন ঘুরে তাকাই, কাউকে দেখি না... মা ছাড়া!
ঈশান – ওহ, ভালো কথা! কাকিমা কেমন আছেন? আমার হয়ে শুভ বিজয়া জানাস, প্রণাম করিস।
রাজ – হ্যাঁ, ভালো আছেন। আচ্ছা, শোন না— তোর স্যারকে মনে আছে? সৌমেন স্যার...
ঈশান – আমাদের ছোটবেলার সেই সৌমেন স্যার? অঙ্ক মাস্টার?
রাজ – আরে হ্যাঁ হ্যাঁ! আমরা ছোটবেলায় বিজয়ার পর পড়তে যেতাম— সে কী আবদার, খাওয়াতেই হবে!
ঈশান – মনে আছে... তা কেমন আছেন উনি?
রাজ – খবর পেয়েছি, শরীর অসুস্থ। বয়স হয়েছে, ছেলে-মেয়েরা যে যার মতো আলাদা হয়ে গেছে... নিজের জীবনের শেষ কটা দিন গুনছেন আর কী।
আচ্ছা শোন না, আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে!
ঈশান – কী বল?

---

৩ সপ্তাহ পর...
বাড়ির বেল বেজে ওঠে। এক বৃদ্ধ লোক খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে উঠে দরজা খোলেন। সামনে দু’টো লোক দাঁড়িয়ে থাকে।
বৃদ্ধ দরজা খুলতেই তারা প্রণাম করে বলে—

দু’জন মিলে – শুভ বিজয়া, স্যার!
স্যার – তোমরা কে বাবা? ঠিক চিনতে পারলাম না...
ঈশান – স্যার, আমি ঈশান আর ও রাজ। মনে আছে? আমরা পড়তে আসতাম— ব্যাচে সবার থেকে বাজে পড়াশুনায় থাকার জন্য কত বকাবকি করতেন!
রাজ – হ্যাঁ স্যার, এখন আমি কলকাতায় আইটি সেক্টরে চাকরি করি আর ঈশান বিদেশে। আমরা ছুটি নিয়ে শুধু আপনাকে সময় দিতে এসেছি।

দীর্ঘ বছর পর নিজের সামনে নিজের সেই ছাত্রদের আজ নিজের পায়ে দাঁড়াতে দেখে গর্বে বুকটা ফুলে ওঠে সৌমেন স্যারের।
চোখ ছলছল করে ওঠে এই ভেবে— যেখানে নিজের ছেলে-মেয়েরা খোঁজ নেয় না, সেখানে আজ তার দুটি ছাত্র নিজেদের কাজ সরিয়ে রেখে শুধুমাত্র তার জন্য এসেছে।

সে তাদের পরম স্নেহে ঘরে ডাকে। নিজের দুই পাশে দু’জনকে বসিয়ে গল্প আর খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে দিয়ে এক বেলা কেটে যায়...।
কলমে: কালান্তর
ছবি সংগৃহীত
Care of Kolikata - কলিকাতা

10/10/2025

তিনি আসছেন.........
আমাদের আজকের উপস্থাপনায় যে গল্পটি আপনারা শুনবেন, তার সমস্ত চরিত্র এবং ঘটনা সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক। যদি গল্পটির কোন চরিত্র, স্থান বা ঘটনার সাথে মিল পাওয়া যায়, তা একান্তভাবেই কাকতালীয়।

চোখ রাখুন Friday Suspense Night এর ইউটিউব চ্যানেলে 😊
Link : 👇
https://youtube.com/?si=6CcQUv4Zmd-hE6nV
Care of Kolikata - কলিকাতা

(১)"এমন করে ডাকলে আমায়, মর্মভেদী ছুঁয়ে,নয়নতারার কাজলাদিঘি তোমায় দিলাম সঁপে।একটা প্রহর, দুইটা অধিক, বহু পক্ষকাল—বর্ষ ...
09/10/2025

(১)
"এমন করে ডাকলে আমায়, মর্মভেদী ছুঁয়ে,
নয়নতারার কাজলাদিঘি তোমায় দিলাম সঁপে।
একটা প্রহর, দুইটা অধিক, বহু পক্ষকাল—
বর্ষ যাবৎ রইনু বসে তোমার অপেক্ষায়...
থাকবে তুমি অবলীলায়, পারবে আমায় ছাড়া?
বলতে পারো, নবমীনিশি— তোমার এত কিসের তাড়া?"
ডায়রী লিখতে লিখতে হঠাৎই মন্ডপের দিকে চোখ চলে গেল শৈলজার। ওর ঘরের ব্যালকনি থেকে সোজাসুজি চোখ রাখলে পাড়ার বারোয়ারী দুর্গা মন্ডপটা দেখা যায়। ঘণ্টাখানেক আগে ওখানে ঢাক বাজছিল, আরতি হচ্ছিল— সন্ধিপুজোর। কত লোক জুটেছিল তখন। এখন তার চিহ্নমাত্র নেই। যে যার ঘরে ফিরে দোর দিয়েছে। রাত পোহালেই দশমী। এবারে নবমী-দশমী একদিনে পড়েছে কিনা! মন্ডপে মা একা ছেলেমেয়েদের সাথে। দূর থেকেও শৈলজার মনে হয় মা-এর চোখদুটো যেন আজ একটু বেশিই চিকচিক করছে। লাবণ্যময় ঐ মুখে আজ যেন বিষণ্ণতার ছাপ। এ কি শৈলজার মনের ভুল? নাকি ওর মতো মা দুর্গাও মনেপ্রাণে চাইছেন এই মহানবমীর রাত আরো কয়েক ঘন্টা বেশি স্থায়ী হোক। অথচ মহাকালের বিচার দেখো, যা আমরা সবচাইতে বেশি করে চাই, সে আমাদের থেকে সেইটেই সবথেকে আগে কেড়ে নেয়। সে' পুজোর কটা দিনই হোক, বা অন্যকিছু।
সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে শৈলজা একবার আকাশের দিকে তাকায়। শুক্লানবমীর আধখানা চাঁদ আস্তে আস্তে মেঘের বুকে মুখ লুকোচ্ছে। সন্ধ্যের খবরে বলেছিল বটে রাতের দিকে বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাত হতে পারে।
রাত একটা বাজতে যায়। ডায়রী লেখা বন্ধ করে শৈলজা এবার ঘরে ঢোকে। ব্যালকনির দরজাটা ভেতর থেকে লাগিয়ে দেয়। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি নামে বাইরে। মণ্ডপে ছেলেমেয়েদের নিয়ে দুগ্গা মা দাঁড়িয়ে থাকেন। এবার সত্যিই একা।
(২)
রাঙাপিসিদের বাড়ি থেকে বিজয়া করে বেরোতে বেরোতে ৭টা বেজে গেল। শৈলজা একবার ভেবেছিল শর্টকাট ধরে নেবে। কিন্তু রাস্তাটার বেশ বদনাম আছে। উপরন্তু, আজ ভাসানের দিন। দিনকাল ভালো না। তাই একটু ঘুরপথ হলেও, ও স্টেশনের রাস্তাটাই ধরল।
—কিরে...?
একটা অতি পরিচিত ডাকে শৈলজা থমকে গেল। পিছন ফিরতে না ফিরতেই ওর বুকটা ধড়াস করে উঠল। একটা বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ যেন মুক্তিবেগে এসে ওর গোটা শরীরটাকে বিদ্যুৎপিষ্ট করে দিয়ে মাটিতে মিশে গেল তৎক্ষণাৎ! ও শুধু স্থবিরের মতো হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকল। নীলাদ্রি! গোটা একটা বছর পর! শৈলজা জানত পুজো আসবে, আর নীলাদ্রির সঙ্গে ওর দেখা হবে না, এ যে হতেই পারে না। সারা বছরের অপেক্ষা যে তবে মিথ্যে হয়ে যাবে। মা দুর্গা এত নিষ্ঠুর হতেই পারেন না।
—কিরে! চিনতেই তো পারছিস না...
শৈলজা এবার নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বলতে শুরু করল
—না, মানে... আমি আসলে...
—থাক। বুঝেছি। এতদিন পর আমাকে এভাবে এক্সপেক্ট করিসনি তাই না?
—ঠিক তা নয়। অন্ধকারে প্রথমটায় তোকে ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারিনি রে।
—লেম এক্সকিউজ। বল, ভুলে গেছিস আমায়।
—এরম মনে হওয়ার কারণ?
—অনেক আছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি...
—আপাতত একটা দিয়েই স্টার্ট কর।
—যেতে যেতে বলি?
—বেশ।
—আচ্ছা, তোর কি এখন খুব তাড়া আছে, শৈল?
—না তো। কেন?
—গঙ্গার ধারে যাবি? জেটিতে বসে গল্প করতাম। বহুদিন কথা হয় না তোর সাথে। অবশ্য যদি তোর কোনো প্রবলেম না থাকে তো।
—প্রবলেম নেই।
শৈলজা আড়চোখে একবার নীলাদ্রিকে দেখে নিল। হাঁটতে হাঁটতে এটা ওটা কথা হচ্ছিল ওদের মধ্যে। শৈলজা বুঝতে পারে অনেক বদলে গেছে নীল। কৈশোরের সেই পাগলপারা, বাউন্ডুলে ভাবটা আর নেই। এখন ওর সামনে যে আছে সে অনেক পরিণত, সংসারী একটা মানুষ।
(৩)
জেটিতে তেমন ভিড় নেই। লঞ্চগুলোও বেশ ফাঁকাই যাচ্ছে। অন্য ঘাটে মায়ের ভাসান হচ্ছে, গান বাজছে বেশ জোরে।
—কবে এলি, নীল?
—সপ্তমীতে।
—এখন কোথায় আছিস?
—দিল্লিতে।
—সাবাস! তা পানিপুরি কেমন লাগছে?
—ধুসস... আমাদের ফুচকার ধারেকাছেও কোনোদিন আসতে পারবে না।
—মানছিস তাহলে?
—আমি চিরকালই মেনে এসেছি রে, শৈল। নেহাত আমাদের বাংলার বরাত খারাপ, তাই আমাদের ইয়ং জেনারেশনকে ফুচকার স্বাদ পানিপুরি দিয়ে মেটাতে হচ্ছে! যাইহোক, বাদ দে ওসব। তোর খবর বল। কি করছিস এখন?
—আই.টি. সেক্টরে আছি মাস ছয়েক হল।
—বাহ্! তা, বিয়ে থা কবে করছিস?
—উমম... দেখা যাক...
—পাত্রটি কে?
—উঁহু, বলবো না। তার জন্য বিয়েতে আসতে হবে।
—সে তুই ইনভাইট করলে আমি দশদিনের সিক লিভ নিয়েও আসতে পারি তোর বিয়েতে।
—বলিস কি রে! দ..শ দিন! আলাদাই সুখে আছিস তো মনে হচ্ছে!
—হাহা! মজা করছিলাম।
—বুঝেছি।
—এই, তোর মনে আছে, এই লঞ্চঘাটে বসে বন্ধুরা মিলে কত আড্ডা মারা হত একসময়।
—তা আবার মনে থাকবে না! সেসব দিন কি ভোলা যায়?
—টাইম ফ্লাইস্, ম্যান... এখন সে সময়ও আর নেই, আর সব মানুষগুলোও...
—হুমম... সময় আর পরিস্থিতির স্রোতে কে কোথায় হারিয়ে গিয়েছি, খোঁজও রাখা হয়নি সেভাবে। কেবল তোর সাথেই যা বারবার দেখা হয়ে যায় আমার। কাকতালীয়ভাবেই, বল?
—একদম!
—সোশ্যাল মিডিয়াও আছে অবশ্য।
—সে আর কতটুকুই বা? আর তাই যদি হবে, তবে বাকিদের সাথে আর দেখা হয় না কেন বল?
—সেই...
—আচ্ছা, তোর মনে আছে, লাস্ট বার যখন আমাদের স্কুলের গ্রুপটা এখানে আসা হয়েছিল...
—হ্যাঁ... ২০১৪। এইচ. এস. -এর প্রিপারেশন তখন তুঙ্গে সবার। সব সামলে সেবার অষ্টমীতে ঠিক করা হয়েছিল সবাই মিলে এখানে এসে আড্ডা মারা হবে।
—কি দারুণ ছিল না দিনটা!
—দারুণই বটে! মেরুন-রঙা পাঞ্জাবী আর ব্লু জিন্স পরেছিলি তুই সেদিন। বাম হাতে ছিল তোর সেই চিরাচরিত রিস্ট ওয়াচটা। ঝাঁকড়া এলোমেলো চুলে, চোখে অনেকখানি মায়া নিয়ে গিটার বাজিয়ে বেশ গাইছিলি সেদিন...
"আমিও ছুটে যাই সে গভীরে,
আমিও ধেয়ে যাই কী নিবিড়ে।
তুমি কি, মরীচিকা না ধ্রুবতারা?
তোমায় ছুঁতে চাওয়ার মুহূর্তরা,
কে জানে, কী আবেশে দিশাহারা।"
এই গানটা গেয়েই তো সেদিন প্রপোজ করেছিলি ঈশানীকে।
নীলাদ্রি অপলকে তাকিয়ে থাকে শৈল-র দিকে। এই কি সেই মেয়েটা যে একসময় মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনত নীল গাইলে? ও একবার ডাকলে কি এই মেয়েটাই সব ফেলে ছুট্টে চলে আসত শুধু ওকে একটিবার দেখতে পাবে বলে? এ-ই কি সে যার ডায়রী নীল একবার চুরি করে পড়ে ফেলেছিল? কোমর ছোঁয়া খোলা চুল আর লাল পেড়ে সাদা শাড়িতে কি অপূর্ব লাগছে ওকে আজ! আগে কখনো এত ভালো লাগেনি কেন? ওর চোখের দিকে তাকাতেই বা আজ নীলের এত ভয় করছে কেন? কেন এমন মনে হচ্ছে, যেন তাকালেই অতলে হারিয়ে যাবে! তাই, শৈল-র কপালের মাঝের লাল টিপ-টার দিকে চেয়ে নীল অস্ফুটে বলে ফেলে
—তু্ই একটুও বদলাসনি, শৈল।
—সবকিছু কি বদলে না গেলেই নয়, নীল?
—বদলাতে হয় যে...
—তাহলে, এই দশমীর সূর্যাস্ত বদলায় না কেন? মা'য়ের চলে যাওয়া বদলায় না কেন? প্রতিবারের অপেক্ষারা বদলায় না কেন?
—এই অপেক্ষাদের অবসান আছে তাই...
সব প্রশ্নের উত্তর যে এটাই হবে, শৈল তা জানত। তবু কিছু প্রশ্ন এমন থাকে যে না করলেই নয়। উত্তর আলাদা হলেও হতে পারে, সে মিথ্যে আশায় নয়। এমনকি যেচে কষ্ট পাওয়ার অহেতুক অভিপ্রায়েও নয়। কেবলই যে না বলতে পারা এতকাল কুরে কুরে পাঁজরের অস্থি-মজ্জা এক করে দিচ্ছিল, সে' কথাদের দিগন্ত পারে উড়িয়ে দেওয়ার জন্যেই এ প্রশ্ন। দিগন্ত যে আসলেই মরিচীকার মতো, তা ওদের বোঝা দরকার। এতে করে, কিছু পাওয়া যাক বা না যাক, আত্মার শান্তি মেলে।
—তারপর... তোরা বিয়ে করছিস কবে?
—সামনের অগ্রহায়ণে।
—কনগ্রাচুলেশনস্।
—থ্যাঙ্কস্।
—আর কদিন আছিস কলকাতায়?
—একদিনও না। আজ রাতের ফ্লাইট।
—আজই?
—এর বেশি ছুটি যে পেলাম না রে।
—সাবধানে যাস...
—ভালো থাকিস, শৈল। আসি আজ?
—আবার কবে আসবি?
নীলাদ্রি কোনো উত্তর দেয় না। কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আর প্রশ্নকর্তাকে খু/ন করা সমান। গন্তব্যের পথে ধরে। ওকে যেতেই হবে এবার। নয়তো ফ্লাইট মিস করবে। ঈশানী দিল্লিতে অপেক্ষা করছে ওর জন্য।
অতঃপর, নীলাদ্রি চলে যায়।
শৈল জানে নীল আর কখনো ফিরবে না। কোথাও একটা যেন পড়েছিল, প্রয়োজন ফুরালে এই ব্রহ্মাণ্ড নাকি আর কখনো দুটো মানুষকে মেলায় না, তা সে' তারা যত কাছাকাছিই থাকুক না কেন। দেশের দু'প্রান্তে থাকে দুজন, তাও তো বারবার নীলের সাথে দেখা হয়ে যায় শৈলর। আজও হয়েছিল। নিছকই কাকতালীয়? নাকি আজ সেই প্রয়োজন ফুরালো? বুকের ভেতর অদ্ভুত এক শূন্যতা অনুভব করে। যে শূন্যতায় শুধু একটা সত্যিই অনুরণিত হতে থাকে, "শত চেষ্টাতেও আমার আর তোকে ভুলে যাওয়া হল না, নীল... ভুলে যাওয়া আর হল না তোকে..."। দীর্ঘশ্বাসে সেই অনুরণন মিলিয়ে যায় গাঙ্গেয় বাতাসে।
ওদিকের ঘাট থেকে ভেসে আসে, "বলো দুগ্গা মাঈকি!" মা দুর্গা ভাসানে যান। শৈলজা জোড়হাতে প্রণাম করতে করতে অস্ফুটেই বলে ফেলে, "আবার এসো মা"।
© সৃষ্টিছাড়া
Soumita Paul
ছবি: সংগ্রহীত
Care of Kolikata - কলিকাতা

কলমে: উজানSourav Das Care of Kolikata - কলিকাতা
08/10/2025

কলমে: উজান
Sourav Das
Care of Kolikata - কলিকাতা

কার্তিক: এই কী খাচ্ছিস রে গণু?গণেশ: এই তো নারু খাচ্ছি রে ভাই!এবার কার্তিক বলে,-একা একা খেয়ে নিবি? আমি আর সরস্বতী বুঝি ব...
06/10/2025

কার্তিক: এই কী খাচ্ছিস রে গণু?
গণেশ: এই তো নারু খাচ্ছি রে ভাই!

এবার কার্তিক বলে,
-একা একা খেয়ে নিবি? আমি আর সরস্বতী বুঝি বাদ?

গণেশ হাসতে হাসতে উওর দিল,
-আরে তোরাও খাবি, এই নে…

এই শুনে কার্তিক আর সরস্বতী গোটা কয়েক নারু তুলে নিল। এসবের মাঝে হঠাৎ গণেশ বলল

গণেশ: আচ্ছা আমরা সবাই দিদুনের পাঠানো নারু খেলাম শুধু বাদ গেল লক্ষী। ও যদি থাকত এক সাথে খাওয়া যেত।

কার্তিক হেসে বলল,
-ও নিজেই দিদুনের হাতে বানানো নারু খাচ্ছে দেখ।

গণেশ এবার নিশ্চিন্ত হয়ে বলল,
-তবে আমরা এবার নিশ্চিন্তে দিদুনের পাঠানো নারু খেতে পারি। কি বলিস?

সরস্বতী আর কার্তিক সন্মতি জানিয়ে বলল,
-একদম নির্দ্বিধায় খাওয়া যাবে।
কলমে: রমিত
Ramit Kar
ছবি: সংগ্রহীত
Care of Kolikata - কলিকাতা

#লক্ষ্মীপুজো #লক্ষ্মী

ডিজিটাল আর্ট: সৌনকSounak Sebak Care of Kolikata - কলিকাতা       #লক্ষ্মীপুজো
06/10/2025

ডিজিটাল আর্ট: সৌনক
Sounak Sebak
Care of Kolikata - কলিকাতা

#লক্ষ্মীপুজো

এসো মা লক্ষ্মী, বসো ঘরেআমার এ ঘরে থাকো আলো করে🦉🪷অঙ্কনে: স মী ক্ষা Care of Kolikata - কলিকাতা   #লক্ষ্মীপুজো             ...
06/10/2025

এসো মা লক্ষ্মী, বসো ঘরে
আমার এ ঘরে থাকো আলো করে🦉🪷
অঙ্কনে: স মী ক্ষা
Care of Kolikata - কলিকাতা

#লক্ষ্মীপুজো

05/10/2025

কলমে: জ য় ন্তী
কন্ঠে: মৈত্রী
সাউন্ড & ভিডিও: FSN Production
Debjit Maity Maitri Das
Care of Kolikata - কলিকাতা

Address

Kolkata
700030

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Care of Kolikata - কলিকাতা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share