অহর্নিশ - Ahornish

অহর্নিশ - Ahornish Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from অহর্নিশ - Ahornish, Digital creator, North 24 Parganas, KOLKATA.
(2)

আমরা ঘুরে বেড়াই ইতিহাসের সেই সব ঘনঘটায় যাদের হয়তো জায়গা দেওয়া হয়নি বইয়ের পাতায়। চেষ্টা করি এমন অনেক অজানা তথ্য ও গল্প তুলে আনার যা আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। শক্তি দেয় ইতিবাচক নতুন কিছু ভাবার কিংবা অভাবনীয় কিছু করার।

প্রায়ই ল্যাবরেটরিতে তাঁর ছাত্রছাত্রী ও সহ-বিজ্ঞানীদের বলতেন, “পোলোনিয়াম আর রেডিয়াম আমার ওপর রাগ পুষে রেখেছে।” শুরুর দিন ...
07/11/2025

প্রায়ই ল্যাবরেটরিতে তাঁর ছাত্রছাত্রী ও সহ-বিজ্ঞানীদের বলতেন, “পোলোনিয়াম আর রেডিয়াম আমার ওপর রাগ পুষে রেখেছে।” শুরুর দিন থেকেই নিজেই বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর নিজের গবেষণাই তাঁকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে | তবুও তিনি গবেষণার কাজে কোনো অবহেলা করেননি। বরং স্বাভাবিকভাবেই গবেষণার চালিয়ে গেছেন। তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করা আর মৃত্যু সমার্থক | তাই তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে খুব একটা সতর্কতা মানার অভ্যাস তার ছিল না। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ লেগে থাকা টেস্টটিউব পকেটে নিয়ে চলাফেরা করতেন | এগুলো সংরক্ষণে ডেস্কের ড্রয়ার ব্যবহার করতেন। বুকপকেটে করে গবেষণার জন্যে রাতে বাড়িতেও নিয়ে আসতেন রেডিয়াম | রাতে না ঘুমিয়ে বাড়িতে বসে রেডিয়াম নিয়ে গবেষণা করতেন | কি অদ্ভুত তাই না !

বোহেমিয়া থেকে যখন পিচব্লেন্ডের টিন আসত ল্যাবরেটরিতে, উত্তেজনার বশে অনেক সময় তিনি ইলেক্ট্রোমিটার নিয়ে পিচব্লেন্ডের ভেতরে সরাসরি হাত ডুবিয়ে দিতেন। কোনওরকম সুরক্ষা না নিয়েই। পিচব্লেন্ডের গোপন রহস্য জানার জন্য এত উদগ্রীব হয়ে পড়তেন, যে নিজের সুরক্ষা নেওয়ার সময়টুকু নষ্ট করতে চাইতেন না। অথচ তিনি তাঁর ছাত্রছাত্রীদের তেজস্ক্রিয় মৌলের টেস্ট টিউব ধরতে বলতেন চিমটা দিয়ে। তাঁদের সুরক্ষিত করতেন সিসার আস্তরণ দেওয়া দস্তানা পরিয়ে।

১৮৮৯ থেকে ১৯০২ পর্যন্ত তিনি যে নোটবুক ব্যবহার করেছেন সেটা আজও রাখা আছে প্যারিসের "বিবলিয়োথেক ন্যাশনাল’-এ | সেই নোটবুক থেকে যে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে সেটা আগামী ১৫০০ বছর অবধি চলবে | হ্যাঁ ঠিক শুনছেন | ১৫০০ বছর | কারণ এই সমস্ত জিনিসপত্রে লেগে আছে ভয়ঙ্কর তেজস্ক্রিয় মৌল রেডিয়াম-২২৬, যার তেজস্ক্রিয়তার আয়ু ১৫০০ বছর | আজ যদি কোনও গবেষক ওগুলো ঘাঁটতে চান, তা হলে তাঁকে মুচলেকা দিয়ে ঘোষণা করতে হয় তিনি বিপদ বুঝে কাজে নামছেন , তার জীবন ঝুঁকিতে পড়লে সংগ্রহশালা কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। তবে আজও মহান এই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর পরও তার প্রতি জ্ঞানপিপাসুদের আগ্রহ কমেনি। আজও অনেকেই তাঁর ডায়েরি, গবেষণার কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে গবেষণা করেন। যদিও তেজস্ক্রিয় নিরাপত্তার বিশেষ পোশাক পরে তবেই মেরি কুরির জিনিসপত্রে হাত দেওয়ার অনুমতি মেলে।

© অহর্নিশ

৪ জুলাই, ১৯৩৪ |
মায়ের বিছানা থেকে একটু দূরে বসেছিলেন ছোট মেয়ে ইভ। বিছানার সঙ্গে মিশে যাওয়া মায়ের দিকে তাকিয়ে নিজের মনে বিড়বিড় করছিলেন, “মা কেন চুপচাপ হয়ে গেল! আর কেন কাঁপছে না মায়ের হাত দু’টো।”

মাকে ছোঁয়ার অনুমতি ছিল না। মেরি কুরির হাত দু’টি ক্রমশ শক্ত হতে শুরু করেছিল। হাতের চামড়ার জায়গায় জায়গায় পুড়ে যাওয়ার মত অসংখ্য কালো কুচকুচে দাগ দেখতে পাচ্ছিলেন ইভ। সেগুলি তেজস্ক্রিয়তার চুম্বনের চিনহ। ক্রমশ দ্রুত হতে শুরু করেছিল ঘরের ভিতরে চিকিৎসক ও নার্সদের চলাফেরা।

একসময় মাথা নিচু করে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসক। যাওয়ার আগে ইভকে বলে গিয়েছিলেন,” মেরি আর নেই।” সূর্য্যের শেষ রশ্মি গায়ে মেখে পৃথিবী ছেড়েছিলেন কুরি। মৃত্যুর কারণ ‘অ্যাপ্লাস্টিক পার্নিসিয়াস অ্যানিমিয়া’। ভয়াবহ তেজস্ক্রিয়তার ফলে কার্যক্ষমতা হারিয়েছিল কুরির হাড়ের ভেতরে থাকা মজ্জা। মাদাম কুরির শরীরে রক্তকণিকা তৈরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চিরতরে।
© অহর্নিশ

মৃত্যুর পর মাদাম কুরিকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থিত একটি বিখ্যাত সমাধিক্ষেত্রে। যেখানে শুয়ে ছিলেন দার্শনিক রুশো, ভলতেয়ার সহ ফ্রান্সের আরও অনেক বিখ্যাত মানুষ।

মৃত্যুর পরেও মাদাম কুরির শরীর ছড়িয়ে চলেছিল তেজস্ক্রিয়তা। তাই তাঁর দেহের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে বাঁচাতে, মাদাম কুরির কফিনকে মুড়ে ফেলা হয়েছিল এক ইঞ্চি পুরু সিসার আস্তরণ দিয়ে।

এবার এক অজানা ঘটনা শুনুন | শুনলে অনেকেই চমকে উঠবেন | মেরি কুরিকে কিন্তু ১৯০৩ সালে নোবেল পুরস্কার দিতেই চায়নি নোবেল কমিটি | এমনকি তাঁর নাম মনোনীতও হয়নি | সেই বছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারের মনোনয়ন পান পিয়ের কুরি (মেরি কুরির স্বামী) এবং হেনরি বেকারেল | কিন্তু এতে বেঁকে বসেন পিয়ের কুরি | দাবি স্পষ্ট - মেরির নাম না থাকলে তিনি কোনওভাবে পুরস্কার গ্রহণ করবেন না | এরপর নড়েচড়ে বসে নোবেল কমিটি | মেরি কুরির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় | তিনজনেই একত্রে নোবেল পান |

দ্বিতীয়বার যখন নোবেল পেলেন নোবেল কমিটি মেরিকে বলেছিল আপনি পুরস্কার না নিতে এলেই মঙ্গল ! এ বার মনোনীত হয়েছেন কেমিস্ট্রি প্রাইজের জন্য। পোলোনিয়াম ও রেডিয়াম আবিষ্কারের জন্য | অর্থাৎ, মাত্র আট বছরের ব্যবধানে দু’-দু’বার দুই আলাদা বিষয়ে নোবেল। এ হেন বিজয়িনীর তো মহাসমারোহে অভ্যর্থনা পাওয়ার কথা। তাঁকে কিনা চিঠি লিখে জানানো হল, আপনি পুরস্কার নিতে না এলে ভাল হয় ! কিন্তু কেন এমন বলা হল ? কারণ মানুষের কুৎসা আর তাঁর অবৈধ প্রেমকাহিনি নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা প্রচার | কেউ তাঁকে বলত ‘ডাইনি’, কেউ বলত ‘ঘর-ভাঙানি’।তথাকথিত প্রগতিশীল দেশ ফ্রান্সের মানুষের বিষনজর ছিল তাঁর উপর | তবুও শেষমেশ তিনি নোবেল পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন |
© অহর্নিশ

এত কুৎসার পরেও মেরি কুরি নিজের গবেষণায় ছিলেন অবিচল | হয়ত এই কারণেই প্রায়ই বলতেন “Be less curious about people and more curious about ideas.” যে ফ্রান্সের মানুষরা তাঁর নামে কুৎসা ছড়িয়েছিল,প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তাদের পাশেই দাঁড়ালেন তিনি | ফরাসি সেনাদের চিকিৎসায় ১৮টা ভ্যানে এক্স-রে মেশিন নিয়ে ছুটে বেড়ালেন লড়াইয়ের ময়দানে | তিনি এমনই !
মেরি কুরি বিশ্বের প্রথম মহিলা যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন |

তিনি বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি যাকে দুইবার নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে |
তিনি আজ অবধি বিশ্বের একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিজ্ঞানের দুটি পৃথক বিভাগে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন |
স্বামী-স্ত্রী দুজনেই নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মোট ছ’বার, তার মধ্যে পাঁচবার একই বিষয়ে, একসঙ্গে। শুরুটা হয়েছিল ১৯০৩ সালে, পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেলেন পিয়ের ও মেরি কুরি একত্রে (হেনরি বেকারেলের সঙ্গে)। মজার কথা হল এর পরেই যে স্বামী-স্ত্রী জুটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন, তাঁরা এঁদেরই মেয়ে-জামাই আইরিন জোলিও-কুরি আর ফ্রেডরিক জোলিও। তাঁরা এই পুরস্কার পান রসায়নে ১৯৩৫ সালে। একই পরিবারের চারজন নোবেল পুরস্কার প্রাপক | সুতরাং স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও বাবা-মেয়ে, মা-মেয়ে, বাবা-জামাই, মা-জামাই সকলেই হলেন নোবেল প্রাপক | এমন পরিবার আজ অবধি পৃথিবীতে একটিই - কুরি পরিবার |

সাফল্য সবাই দেখে | মাঝের লড়াইয়ের বছরগুলোর কথা কতজনই বা জানে !

মারি স্ক্লোদাওস্কা কুরি | মেরি কুরি | এক লড়াইয়ের নাম | আজ এই মহান বিজ্ঞানীর জন্মদিবস |

প্রণাম ও শ্রদ্ধার্ঘ্য !
© অহর্নিশ
তথ্য : রূপাঞ্জন গোস্বামী (the wall ), তেজস্বিনী - পথিক গুহ - আনন্দবাজার পত্রিকা , উইকিপিডিয়া, রোর বাংলা
(ছবিতে স্বামী পিয়ের কুরির সাথে মেরি কুরি)
বিস্তারিত জানতে পড়ুন The Life and Times of Madame Curie
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3CV5lBx

দ্বিতীয়বার যখন নোবেল পেলেন নোবেল কমিটি তাঁকে বলেছিল আপনি পুরস্কার না নিতে এলেই মঙ্গল ! যিনি না এলে খুশি হবে নোবেল কমিটি,...
07/11/2025

দ্বিতীয়বার যখন নোবেল পেলেন নোবেল কমিটি তাঁকে বলেছিল আপনি পুরস্কার না নিতে এলেই মঙ্গল ! যিনি না এলে খুশি হবে নোবেল কমিটি, তিনি এক মহিলা। বিজ্ঞানী। বিখ্যাত। মাত্র আট বছর আগে, ১৯০৩ সালে, তিনি পেয়েছিলেন সে প্রাইজ। সে বার ফিজিক্সে। তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণার জন্য। এ বার মনোনীত হয়েছেন কেমিস্ট্রি প্রাইজের জন্য। পোলোনিয়াম ও রেডিয়াম আবিষ্কারের জন্য | অর্থাৎ, মাত্র আট বছরের ব্যবধানে দু’-দু’বার দুই আলাদা বিষয়ে নোবেল। এ হেন বিজয়িনীর তো মহাসমারোহে অভ্যর্থনা পাওয়ার কথা। তাঁকে কিনা চিঠি লিখে জানানো হল, আপনি পুরস্কার নিতে না এলে ভাল হয় ! কিন্তু কেন এমন বলা হল ? কারণ মানুষের কুৎসা আর তাঁর অবৈধ প্রেমকাহিনি নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা প্রচার | কেউ তাঁকে বলত ‘ডাইনি’, কেউ বলত ‘ঘর-ভাঙানি’।তথাকথিত প্রগতিশীল দেশ ফ্রান্সের মানুষের বিষনজর ছিল তাঁর উপর | তবুও শেষমেশ তিনি নোবেল পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন |

কলেজে পড়ার সময় থাকতেন একটি ঘুপচি ঘরে | ঠান্ডায় সেই ঘর হয়ে যেত হিমঘর | পেট চালাতে ল্যাবরেটরিতে কাচের পাত্র ধোয়ামোছার কাজও করেছেন | শুকনো ফল,পাউরুটি খেয়ে রাতের পর রাত কাটিয়ে দিয়েছেন | কষ্টের সেই দিনগুলো সম্পর্কে পরে স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘এ জীবন, কোনও কোনও দৃষ্টিকোণে বেদনাদায়ক হলেও, আমার কাছে প্রকৃত আনন্দের। আমি পেলাম মুক্তি আর স্বাধীনতার স্বাদ, যা দারুণ মূল্যবান। প্যারিসে আমি অজানা-অচেনা, হারিয়ে গেলাম বিশাল শহরে। কিন্তু সেখানে একা থাকার, অন্যের সাহায্য ছাড়া বেঁচে থাকার, অনুভূতি মোটেই হতোদ্যম করল না আমাকে, বরং এক প্রশান্তি আর তৃপ্তি ছেয়ে রাখল মন।’ ফিজিক্সের ডিগ্রিতে প্রথম হয়েছিলেন | সেইসময় আলাপ হয়েছিল বিশেষ এক জনের সঙ্গে। পিয়ের কুরি। অধ্যাপক। গবেষণা করেন চাপের প্রভাবে ক্রিস্টালের তড়িৎ উৎপাদন এবং চুম্বকত্বের ওপর উষ্ণতার প্রভাব নিয়ে। দুজনে প্রেমে পড়লেন | বিয়েও করলেন | দু’বছর পর জন্মাল প্রথম মেয়ে। আইরিন। সাত বছর পর দ্বিতীয় মেয়ে ইভ |
পদার্থবিজ্ঞানে চলেছে ধুন্ধুমার কাণ্ড। জার্মান বিজ্ঞানী উইলহেল্‌ম রন্টজেন আবিষ্কার করেছেন এক বিচিত্র আলো, যা চোখে দেখা যায় না, কিন্তু ভেদ করে যায় অনেক কিছু | রন্টজেন নাম দিয়েছেন ‘এক্স-রে’। সে আবিষ্কারের কয়েক মাসের মধ্যে ফরাসি বিজ্ঞানী অঁরি বেকারেল পেয়েছেন আর এক খোঁজ। ইউরেনিয়াম মৌল আভা বা আলো ছড়ায়। আপনাআপনি। কেন ? জানা নেই। কী সেই আলো ? জানা নেই। ১৬ ডিসেম্বর, ১৮৯৭। রহস্যভেদে নামলেন দম্পতি |

ইউরেনিয়ামের আলো বিকিরণের নাম দিলেন ওঁরা। রেডিয়োঅ্যাক্টিভিটি। আলো কেন? তারা বুঝলেন, ওটা পরমাণুর ভেতরের খেলা। শুধু ইউরেনিয়ামই কি আলো ছড়ায়? না কি তেমন মৌল আছে আরও? এটা-সেটা নিয়ে পরীক্ষা। শেষে এক পদার্থ। পিচব্লেন্ডি। যা থেকে ইউরেনিয়াম নিষ্কাশন করা হয়। দম্পতি দেখলেন, পিচব্লেন্ডি-র রেডিয়োঅ্যাক্টিভিটি ইউরেনিয়ামের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ, ওই জিনিসে লুকিয়ে আছে ইউরেনিয়াম ছাড়া অন্য কোনও মৌল, যা ছড়ায় রেডিয়োঅ্যাক্টিভিটি। কী সেই মৌল? খোঁজ পেতে চলল মরিয়া চেষ্টা। আগুন জ্বালিয়ে পেল্লায় কড়াইতে মানুষ-সমান খুন্তি নেড়ে টন-টন পিচব্লেন্ডি গলিয়ে মৌল খোঁজা। দিন-রাত লাগাতার। পরিত্যক্ত এক ছাউনি ঘর ধোঁয়াধুলোয় অন্ধকার। অবশেষে মিলল সেই মৌল। মাতৃভূমির স্মরণে দম্পতি তার নাম দিলেন পোলোনিয়াম। কয়েক মাস পরে ও-রকম আরও এক মৌল। রেডিয়াম। ১৯০৩। রেডিয়োঅ্যাক্টিভিটি আবিষ্কার, তার ব্যাখ্যা এবং প্রবল গবেষণার জন্য ফিজিক্সে নোবেল প্রাইজ পেলেন । ১৯০৬-এর ১৯ এপ্রিল | রাস্তা পেরোতে গাড়ি চাপা পড়লেন পিয়ের। তক্ষুনি মৃত্যু। শোকে পাগল হলেন তিনি | তবে কাজ থামল না | ১৯১১ সালে সেই মহিলা বিজ্ঞানী নোবেল প্রাইজ পেলেন রসায়নে - পোলোনিয়াম ও রেডিয়াম আবিষ্কারের জন্য |

এরই মাঝে তেজস্ক্রিয়তার বিষে আক্রান্ত হলেন | যার পরিণাম একটাই - মৃত্যু | কিন্তু তাতেও থামেনি সেই মহিলা বিজ্ঞানীর গবেষণা | গবেষণার জন্যে রাতে বাড়িতেও নিয়ে আসতেন রেডিয়াম | রাতে না ঘুমিয়ে বাড়িতে বসে রেডিয়াম নিয়ে গবেষণা করতেন | কি অদ্ভুত তাই না ! ১৮৮৯ থেকে ১৯০২ পর্যন্ত তিনি যে নোটবুক ব্যবহার করেছেন সেটা আজও রাখা আছে প্যারিসের "বিবলিয়োথেক ন্যাশনাল’-এ | সেই নোটবুক থেকে যে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে সেটা আগামী ১৫০০ বছর অবধি চলবে | এতটাই যে, আজ যদি কোনও গবেষক ওগুলো ঘাঁটতে চান, তা হলে তাঁকে মুচলেকা দিয়ে ঘোষণা করতে হয় তিনি বিপদ বুঝে কাজে নামছেন।

যে ফ্রান্সের মানুষরা তাঁর নামে কুৎসা ছড়িয়েছিল,প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তাদের পাশেই দাঁড়ালেন তিনি | ফরাসি সেনাদের চিকিৎসায় ১৮টা ভ্যানে এক্স-রে মেশিন নিয়ে ছুটে বেড়ালেন লড়াইয়ের ময়দানে | তিনি এমনই !

তিনি বিশ্বের প্রথম মহিলা যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন |

তিনি বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি যাকে দুইবার নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে |

তিনি আজ অবধি বিশ্বের একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিজ্ঞানের দুটি পৃথক বিভাগে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন |

সাফল্য সবাই দেখে | মাঝের লড়াইয়ের বছরগুলোর কথা কতজনই বা জানে !

মারি স্ক্লোদাওস্কা কুরি | মেরি কুরি | এক লড়াইয়ের নাম | আজ এই মহান বিজ্ঞানীর জন্ম দিবস |

প্রণাম ও শ্রদ্ধার্ঘ্য !

© অহর্নিশ

তথ্য : তেজস্বিনী - পথিক গুহ ( আনন্দবাজার পত্রিকা )
বিস্তারিত জানতে পড়ুন The Life and Times of Madame Curie
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3CV5lBx

ঠিক আছে। না হয় ক্যানসার-ই হয়েছে। ক্যানসার তো এখন অলক্ষ্মীর ঝাঁপির মতো ঘরে ঘরে গুছিয়ে বসেছে। আমিই বা বাদ যাই কেন? আমার...
07/11/2025

ঠিক আছে। না হয় ক্যানসার-ই হয়েছে। ক্যানসার তো এখন অলক্ষ্মীর ঝাঁপির মতো ঘরে ঘরে গুছিয়ে বসেছে। আমিই বা বাদ যাই কেন? আমার ছোট্ট ভাইঝিটা গিনুমা, ছোটো বোনটা মুন্নু, ছোটো ভাইটা অভীক, ছোটো দেওরটা শিব, প্রিয় দাদা অশোকদা, ছাত্রবেলার বন্ধু শ্যামল, কবিবেলার বন্ধু সুনীল আর সন্তোষকুমার ঘোষ, আরও কত আপনজনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। হঠাৎ অশীতিপর নবনীতার জন্য এত শোক কীসের? তার তো যাওয়ার সময় এমনিতেই হয়েছে। কিন্তু বন্ধুবান্ধবের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, কচি বাচ্চার মহাপ্রয়াণ হতে চলেছে। তার জীবন যেন ভরেইনি। আরে! আমি তো এখনও মরিনি, মরব কি না, তার ঠিকও নেই। এখন থেকে এত শোক কীসের?

যেসব মানুষ আমাকে একবারও চোখে দ্যাখেনি, দূর দূর গ্রাম থেকে ছুটে আসতে চাইছে, একবার শেষ দ্যাখা দেখতে— আরে, এটাই শেষ দ্যাখা— তোমায় কে বলল? এরপর তো আমি ইলেকশনে দাঁড়াব। তারপর হইহই পড়ে যাবে। শেষ দ্যাখাটা তখনকার জন্য তোলা থাক। এতশত জরুরি কাজ ফেলে রেখে আমি কি না শেষ দর্শন দেব ?

এই যে এত লম্বা জীবনটা কাটালুম, তার একটা যথাযথ সমাপন তো দরকার। পাঁজিপুঁথি দেখে, শুভ দিন, শুভ লগ্ন স্থির করে, স্বজনবান্ধবকে নেমন্তন্ন খাইয়ে তবে তো শুভযাত্রা।

কিন্তু জীবনে সবকিছু কি পরিকল্পনামাফিক করা যায়? আমার এক কবিরাজ দাদা একটি ভেষজ উদ্যান কিনতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে ঝড়ের মধ্যে ওই বাগানেরই একটি গাছ ভেঙে ওঁর গাড়িতে পড়ার ফলে দাদার মৃত্যু হয়। জীবন যে কখন ফুরাবে, তা কি আমরা জানি? বেচারা ক্যানসারকে এত দোষ দিয়ে কী হবে?

তাই এই জানা-অজানা, চেনা-অচেনা আত্মীয়বন্ধুর হাহাকারে, শেষ দর্শনের ধাক্কায়, শেষ প্রণামের অবেদনে বেজায় ঘাবড়ে গেলুম। এ কী রে বাবা! এরা তো ভুল বিসর্জনের লাইনে লেগে গিয়েছে!

আর তাছাড়া, আমার কি তালা ভাঙা দরজার অভাব আছে? আমার তো হৃৎকমল থেকে শ্বাসকমল— সব দরজাই আধখোলা। তো এই কর্কটকমলের এত মাতব্বরি কীসের? লাঠিসোঁটা একটু বেশি আছে বলে ?

দ্যাখো বাপু, এই বিশাল পৃথিবীতে কতরকম বড়ো বড়ো লড়াই-যুদ্ধ চলছে, সেখানে তোমার ওই লাঠিসোঁটায় ভয় পাব ভেবেছ? ওসব তো তুশ্চু! 'আই ডোন্ট কেয়ার্ কানাকড়ি— জানিস্, আমি স্যান্ডো করি?'

******************************
নবনীতা দেবসেন-এর এই লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ রোববার পত্রিকায়।
আজ এই মহান সাহিত্যিকের প্রয়াণ দিবস | আমাদের প্রণাম |

অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন নবনীতা দেবসেন-এর লেখা বই নবনীতা । বইটি ১৯৯৯ সালে সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3QowC5T

অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন নবনীতা দেবসেন-এর লেখা নানা রঙের নবনীতা । এই বই সংগ্রহে রাখার মত বই ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/49pqZwH

শান্তিনিকেতনের সঙ্গে ছিল নাড়ির টান | বোধহয় তৈরি হয়েছিল জন্মের অব্যবহিত পরেই। রবীন্দ্রনাথ নাম রেখেছিলেন নবনীতা | বয়স তখন ...
07/11/2025

শান্তিনিকেতনের সঙ্গে ছিল নাড়ির টান | বোধহয় তৈরি হয়েছিল জন্মের অব্যবহিত পরেই। রবীন্দ্রনাথ নাম রেখেছিলেন নবনীতা | বয়স তখন মাত্রই তিন মাস। নামকরণের প্রসঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দম্পতি রাধারাণী এবং নরেন্দ্র দেবের কাছে একটি চিঠি লেখেন , তাতে লেখা— ‘যেহেতু তোমার উপহার প্রত্যাখ্যানের বয়স হয়নি তাই এই নামটি তুমি গ্রহণ কোরো...’।

শান্তিনিকেতনে তিনি প্রথম যখন আসেন তখন বয়স মাত্র তিন বছর | রবীন্দ্রনাথের আমন্ত্রণেই এসেছিলেন তাঁর পরিবারের সকলে | দুপুরে আশ্রমের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং সেখানে উপস্থিত। পাতে সাদা ভাত পড়তেই একরত্তি মেয়ে ফুঁসে উঠল... ‘এ কেমন নেমন্তন্ন! পোলাও নেই কেন?’

উপস্থিত সবাই বিব্রত। দেব দম্পতি লজ্জায় অধোমুখ। মুশকিল আসান হয়ে এগিয়ে এলেন প্রতিমা দেবীর ‘বাবা মশাই’ অর্থাৎ স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । পুত্রবধূকে চুপিচুপি পরামর্শ দিলেন কমলা লেবুর কোয়া ছাড়িয়ে ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে। সেই হলদে রঙা ভাত পোলাও ভেবে খেয়ে অবশেষে মেয়ের মন ভরল। এ ভাবেই শান্তিনিকেতনের সঙ্গে ‘দেবকন্যা’র মনবীণার তারটি বাঁধা হয়ে গিয়েছিল। ১৯৪১-এর ২২শে শ্রাবণ মধ্যরাতে মায়ের কোলে মুখ গুঁজে তিন বছরের ‘খুকু’ দেখেছিল, অসম সাহসী ‘মা’কে বাচ্চা মেয়ের মতো আকুল হয়ে কাঁদতে।

১৯৬০ সালে আশ্রম কন্যা অমিতা দেবীর বিশ্বখ্যাত পুত্র অমর্ত্য সেনকে বিয়ে করে নবনীতা এলেন শান্তিনিকেতনে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও ছেদ পড়েনি শাশুড়ি, ননদের সঙ্গে বন্ধুতায়, তাঁদের প্রতি কর্তব্যবোধে। শান্তিনিকেতন আশ্রমের প্রধান দু’টি অনুষ্ঠান বসন্তোৎসব এবং পৌষমেলাতেও ছিল তাঁর নজরকাড়া উপস্থিতি। অমর্ত্য সেনের সঙ্গে কাটানো বসন্তোৎসবের স্মৃতিচারণায় বলেছেন: ‘একবার দোলপূর্ণিমার আগের রাতে আমরা দু’জনেই শান্তিনিকেতনে, আশ্রমের বৈতালিকে পাশাপাশি হেঁটেছিলুম। ‘সব কুঁড়ি মোর ফুটে ওঠে তোমার হাসির ইশারাতে--!’ গাইতে গাইতে।

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর রক্তে। বাংলার রক্ষণশীল সমাজে নবনীতা আজীবন ডানপিটে পরিচয়ে সমুজ্জ্বল ছিলেন। নিজের মতো করে বেঁচেছেন হার না-মানা প্রকৃতিতে। ব্যক্তিত্বের বহুমুখী বিস্তারে নবনীতা মা রাধারানিকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন কখনও কখনও।

নবনীতা দেবসেন বহু বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপনা করেছেন। সামলেছেন ওই বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব। আমেরিকার কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়, ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়েছেন। তুলনামূলক সাহিত্যে তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল প্রবাদপ্রতীম। বাংলা, হিন্দি, সংস্কৃত, হিব্রু, ওড়িয়া, অসমিয়া, ফরাসি, জার্মান ভাষায় তাঁর পারদর্শিতা ছিল। গবেষণা এবং অধ্যাপনার পাশাপাশি সমান তালে চালিয়ে গেছেন সাহিত্যচর্চাও। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি, রম্যরচনা - সবেতেই তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ছোটোদের জন্যও লিখেছেন সাবলীলভাবে। নারী ক্ষমতায়ন আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সীতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ‘রামায়ণ’-কে বিশ্লেষণ করেছেন। বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতীকে নিয়ে তাঁর কাজ বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে।

আজ নবনীতা দেবীর প্রয়াণ দিবস, তাঁকে স্মরণ করি শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায়।

© অহর্নিশ
তথ‍্যঋণ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার :- শান্তিনিকেতনের ‘সই’ নবনীতা...আনন্দবাজার পত্রিকা, চার নম্বর প্ল‍্যাটফর্ম ডট কম, শ্রেয়ণ - বঙ্গদর্শণ, প্রথম আলো ‘রূপকথা সমগ্র’ - নবনীতা দেবসেন, উইকিপিডিয়া

অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন নবনীতা দেবসেন-এর লেখা বই নবনীতা । বইটি ১৯৯৯ সালে সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3QowC5T

অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন নবনীতা দেবসেন-এর লেখা নানা রঙের নবনীতা । এই বই সংগ্রহে রাখার মত বই ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/49pqZwH

অমল আলোয়…অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল; পারেনি।“অমল ও দইওয়ালা”-র অমল রাজার চিঠির অপেক্ষায় ছিলো; তার অপেক্ষাই সার হলো...
06/11/2025

অমল আলোয়…
অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল; পারেনি।

“অমল ও দইওয়ালা”-র অমল রাজার চিঠির অপেক্ষায় ছিলো; তার অপেক্ষাই সার হলো।

তেমনই গুরু আচরেকারের সুযোগ্য ছাত্র ক্রিকেটার অমল মুজুমদারও মনে প্রাণে চেয়েছিলেন “ইন্ডিয়া ক্যাপ” কিন্তু সেখানেও সেই স্বপ্নভঙ্গের কাহিনিরই রিপিট টেলিকাস্ট।

…এই এতসব না পাওয়ার মধ্যেও, ঘাড়ে চেপে বসা সমস্ত ব্যর্থতা, হতাশা, আক্ষেপের ভারী বোঝাটাকে আরব সাগরে ভাসিয়ে আজ বিশ্বজয়ী “কোচ” অমল মুজুমদার…

সত্যি, এই অমল না থাকলে ভারতের মহিলা ক্রিকেট হয়তো পিছিয়ে যেতো আরও চার বছর বা তারও বেশি…কিন্তু ওই যে আফটারঅল “ক্রিকেট ইস এ গ্রেট লেভেলার”…তাইতো দীপাবলীর বারোদিন বাদে শয়ে শয়ে আতসবাজির ঝলকানিতে অমল আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো নভি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়াম সাথে সমগ্র ভারতবর্ষ!

আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো ভারতের মহিলা ক্রিকেট, অনেকগুলো ধাপ এগিয়ে গেলো ভারতবর্ষ!

মেয়েদের কাছে জীবনের সাত ঘণ্টা চেয়েছিলেন অমল‘চক দে ইন্ডিয়া’–য় কবীর খান মেয়েদের কাছ থেকে চেয়েছিলেন জীবনের মাত্র ৭০ মিনিট। ...
06/11/2025

মেয়েদের কাছে জীবনের সাত ঘণ্টা চেয়েছিলেন অমল
‘চক দে ইন্ডিয়া’–য় কবীর খান মেয়েদের কাছ থেকে চেয়েছিলেন জীবনের মাত্র ৭০ মিনিট। মাঠে নামার আগে ড্রেসিংরুমে দাঁড়িয়ে কবীর–রূপী শাহরুখ খানের পেপ টক যেন ফিরে এল আবার! রবিবার বিকেলে নভি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমও যেন এক টুকরো ‘চক দে ইন্ডিয়া।’ মেয়েদের টিমের কোচ অমল মুজুমদার হরমনপ্রীত–স্মৃতিদের থেকে চেয়ে নেন আগামী সাত ঘণ্টা। তিনি বলেন, ‘জীবন থেকে আগামী সাত ঘণ্টা তোমরা দেশকে দাও। নিজেদের জীবনের গল্প নিজেরাই লেখো। বাকিটা ইতিহাসে লেখা থাকবে।’
সত্যিই তো ইতিহাস। সাত ঘণ্টার এই ইতিহাসে জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম—অমল মুজুমদার।
ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে আসছে বছর পনেরো আগের কথা। গুয়াহাটিতে টিম ইন্ডিয়ার ওয়ান ডে ম্যাচ ছিল নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। গুয়াহাটির নেহরু স্টেডিয়ামে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। যুবরাজ সিং, গৌতম গম্ভীর, সুরেশ রায়না, রবিচন্দ্রন অশ্বিনে টিম ইন্ডিয়া তখন ঝলমল করছে।
সেই রাতেই দেখা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। একটি তিন তারা হোটেলের ঘরে নক করতে দরজা খুলে যিনি বেরিয়েছিলেন, বিকেলের দিকে তিনি একটি অসামান্য রেকর্ড করেছিলেন। সেটা হলো রঞ্জি ট্রফিতে দশ হাজার রান পার করার রেকর্ড। এবং সেই মুহূর্তে সেটাই ছিল রঞ্জিতে সবচেয়ে বেশি রান। প্রায় নিষ্পাপ, সরল মুখের সেই ক্রিকেটারের নাম ছিল অমল মুজুমদার। নানা কথার মাঝে যিনি বলেছিলেন, ‘সবার কপালে হয়তো দেশের হয়ে খেলা লেখা নেই। কী আর করা যাবে।’ সেই একবারই কোথায় যেন অমলের মুখে পড়েছিল হালকা বিষাদের ছায়া।
গুয়াহাটি থেকে এক লাফে ফিরে আসুন নভি মুম্বইয়ে। রবিবারের মধ্যরাত। ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামের মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা অমলের মুখে তখন হাজার ওয়াটের আলো। বলছিলেন, ‘আমি শুরু থেকেই বলেছিলাম, শেষটা ভালো করতে হবে। কোচ হিসেবে আজ আমি সত্যিই গর্বিত। পুরো কৃতিত্বই মেয়েদের।’
নয়ের দশকের শুরুর দিকে মুম্বই ক্রিকেটে তিনটে নাম উচ্চারিত হতো প্রায় একসঙ্গে। সচিন তেন্ডুলকর, অমল মুজুমদার এবং বিনোদ কাম্বলি। তিনজনেই কিংবদন্তি কোচ রমাকান্ত আচরেকরের প্রিয় ছাত্র ছিলেন। অমলের ধ্রুপদী ব্যাটিং দেখে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা প্রায় নিশ্চিত ছিলেন, এই ছেলেটা দেশের হয়ে টেস্ট খেলবেই। পরে জাতীয় টিমের দরজায় বারবার টোকা মারলেও সেই দরজা আর কোনওদিন খোলেনি অমলের জন্য। রঞ্জিতে ১১ হাজার ১৬৭ রান। ৩০ সেঞ্চুরি। রঞ্জি অভিষেকেই অমলের ব্যাটে এসেছিল রেকর্ড ২৬০ রান। এত কিছুর পরেও চিরকাল ঘরোয়া ক্রিকেটের নায়ক হয়েই থেকে যেতে হলো!
২০১৪ সাল থেকে কোচিংয়ে আসেন অমল। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ২০২৩ সালে মেয়েদের সিনিয়র ক্রিকেটে কোচ হিসেবে যখন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অমলকে, তখনও মেয়েদের ক্রিকেটে কিছুটা ডামাডোল চলছিল। নেতৃত্ব নিয়েও সমস্যা ছিল। অমলের সামনে ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথমেই পুরো টিমকে এক সুতোয় বেঁধেছিলেন তিনি। নীরবে তৈরি করেছিলেন একটা সেট টিম। সেখান থেকে রবিবারের বিশ্বকাপ জয়। অমল একবার বলেছিলেন, ‘ক্রিকেট আমায় সব কিছু দিয়েছে। শুধু জাতীয় টিমের ক্যাপ ছাড়া।’
কিন্তু ক্রিকেট ঈশ্বর ভেবে রেখেছিলেন অন্য কিছু। বিশ্বকাপ হাতে এই ছবিটা কিন্তু অনেক নামী ক্রিকেটারের ড্রয়িংরুমেই নেই!

- অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়

আমার বাবা উত্তম“উত্তমকুমারের পপুলারিটি কি কমে গেছে ?”—আশঙ্কা মাখানো এই প্রশ্নটি স্বয়ং উত্তমকুমারের। বছর দুয়েক আগে এক প...
06/11/2025

আমার বাবা উত্তম
“উত্তমকুমারের পপুলারিটি কি কমে গেছে ?”—আশঙ্কা মাখানো এই প্রশ্নটি স্বয়ং উত্তমকুমারের। বছর দুয়েক আগে এক পয়লা বৈশাখের সকালে একমাত্র ছেলে গৌতমের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। ঘটনাটি এইরকম : গৌতম নববর্ষ উদযাপন করতে বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে যাচ্ছেন। এমন সময় বাড়ি চকলেন তাঁর 'বাবি', মানে উত্তম- কুমার। ছেলেকে দেখেই জিজ্ঞেস করলেনঃ “কি ব্যাপার বেরোচ্ছো নাকি? তা কোনও গার্ল ফ্রেন্ড যাবে না পিকনিক করতে?" গৌতম কী বলবেন এর উত্তরে !
আমতা আমতা করছেন।
তখনই উত্তমের ওই প্রাগুক্তি। হেসে বললেন :
“উত্তমের ছেলের কোনও গার্ল ফ্রেন্ড নেই, উত্তমকুমারের পপুলারিটি কি এত কমে গেছে ?”
বাবার সঙ্গে এমনই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল গৌতমের। পিতৃস্মৃতি রোমন্থন করতে করতে সে কথাই বারবার শোনাচ্ছিলেন তিনি। বার- বার বুঝিয়ে দিতে চাইছিলেন তাঁর বাবি কতটা গর্বের ছিলেন তাঁর কাছে, ছিলেন কত বড় বন্ধু।

টুকরো টুকরো ঘটনা, ব্যবহারিক জীবনের নানান টুকিটাকি শোনালেন গৌতম। জানালেন কিভাবে সচেতন মনের ভুলে সিগারেটের প্যাকেটটা গৌতমের হাতের কাছে ফেলে রেখে যেতেন উত্তম।
হয়ত বা মুখে থেকে চায়ের নামিয়ে রেখে গৌতমকে শুনিয়েই গৌরী দেবীর কাছে জানতে চাইতেন। সিগারেট নেই বাড়িতে ?
বাবা-ছেলের ব্যবধান এভাবেই সহজ হয়ে গিয়েছিল, সহজ করে নিয়ে- ছিলেন বাবা উত্তমকুমার।

গতবছর যুক্তরাষ্ট্র সফরে রওনা হবার আগে দমদম এয়ারপোর্টে বিদায়কালীন ককটেল পার্টিতে গৌতমকে বিয়ার দিতে বলেছিলেন উত্তম।গৌতম নিজেই বললেন একথা। উত্তমের ছবি দেখে সর্বদাই সমালোচনা করতেন গৌতম। ওঁরই মুখের কথায়, বাবির ছবি দেখে সবাই যেমন হই হই করত, আমি তা করতাম না। বরং ক্রিটিসাইজ করতাম। বাবি শুনতো মন্তব্য।

কিন্তু বন্ধুত্বের তো সব নয়। শাসনও তো পিতৃস্নেহের অন্যতম একটি দিক। না, তা থেকেও একে- বারে বঞ্চিত হননি গৌতম। মারা যাবার দিন দুয়েক আগেও কী যেন একটা ব্যাপারে বকুনি দিয়েছেন তাঁর বাবা। এছাড়া, কোনও কিছ তাঁর পছন্দসই না হলেই ঝাল পড়ত ছেলে গৌতম, আর ভাই তরুণ কুমারের ওপর।

শাসনের সব থেকে বড় নিদর্শন মিলেছিল একবার । গৌতম তখন বছর পাঁচেকের। ছেলেকে পড়াতে বসেছেন উত্তম। পাঠ্য বর্ণপরিচয়। "গ" অক্ষরের প্রতি একটা বেশি ঝোঁক ছিল গৌতমের। 'ক-খ-গ', তাই বারবারই বদলে যাচ্ছে 'ক-গ- খ'-তে। বাবি শুধরে দিয়েছেন এক- বার-দুবার তিনবার। তারপরই বাঁ হাতে সপাটে চড়। সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছিলেন গৌতম। ওঁদের বাড়ির ডাক্তারবাবু, লাল- কাকু এসে ওঁর চিকিৎসা করেন। এভাবে মারার জন্য বকুনিও দেন বাবি-কে। ব্যস, ওই একদিনই।

প্রাণহীন উত্তমের গালে গভ ২৪ জুলাই, সেই চড়ই বুঝি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন গৌতম। বেলভিউ-এর বিছানায় নিষ্প্রাণ উত্তম কুমারের দুই গাল চাপড়ে ডুকরে উঠেছিলেন, "বাবি, তুমি কথা -বলো।" উত্তম ও 'বাবি' বলেই তো ছেলেকে ডাকতেন। তবে তফাৎ এইটুকুই—উত্তমের 'বাবি' ফিরে এসেছিলেন; গৌতমের 'বাবি' ফিরলেন না।

- গৌতম চট্টোপাধ্যায় (১৬ই আগস্ট,১৯৮০ আনন্দলোক উত্তম সংখ্যা)

=============================
বিস্তারিত জানতে আরও পড়ুন মহানায়ক উত্তমকুমারের আত্মজীবনী - নিজের লেখা বই - আমার আমি । এই বইতে পাবেন মহানায়ক সম্পর্কে বহু অজানা তথ্য ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3QyRcle
============================
বিস্তারিত জানতে আরও পড়ুন সুপ্রিয়া দেবীর লেখা বই আমার জীবন আমার উত্তম । এই বইতে পাবেন মহানায়ক সম্পর্কে বহু অজানা তথ্য । উত্তমকুমারকে নিয়ে এরকম বই আর একটিও নেই ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/4bVaavn
=======================
উত্তমকুমার প্রয়াত হওয়ার ঠিক পরেই ১৬ই আগস্ট,১৯৮০ আনন্দলোক উত্তম সংখ্যা বেরিয়েছিল ওনার স্মরণে । অতি স্বল্পমূল্যে দুষ্প্রাপ্য পত্রিকাটির পিডিএফ চাইলে হোয়াটস্যাপ করুন
Whatsapp Link : https://wa.me/9831930921

‘অতিথি’ গল্পটা বাবার খুব প্রিয় ছিল। শাখাপ্রশাখার পর সেই গল্প পড়তে-পড়তে বাবা উপলব্ধি করেছিলেন, ওই গল্পটাকে আরও বাড়ানো...
06/11/2025

‘অতিথি’ গল্পটা বাবার খুব প্রিয় ছিল। শাখাপ্রশাখার পর সেই গল্প পড়তে-পড়তে বাবা উপলব্ধি করেছিলেন, ওই গল্পটাকে আরও বাড়ানো যাবে। বাবার সব গল্প তো বাড়ানো যায় না। এত কমপ্যাক্ট। কিন্তু অতিথি তেমন নয়। তিনি ঠিক করলেন ওই গল্প নিয়েই পরের ছবি করবেন। ধীরে-ধীরে সেই গল্পের চিত্রনাট্য লিখলেন। ছবির নাম দিলেন, আগন্তুক। এর পর অভিনেতা নির্বাচন। গোড়াতে ভেবে রেখেছিলেন উৎপল দত্ত করবেন মূল চরিত্রে। কারণ বাবার মনে হয়েছিল, ওই চরিত্র উৎপলদা ছাড়া আর কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়।

শাখাপ্রশাখার সেই জুটি দীপঙ্কর দে-মমতা শঙ্করকে নিলেন এই ছবিতেও। ছবি শুরু করার আগে বাবা এক দিন সব শিল্পী এবং কাছের টেকনিশিয়ানদের সামনে চিত্রনাট্য পড়তেন। আগন্তুকের চিত্রনাট্য পড়ার আগে উৎপলদাকে বলেছিলেন, “এটা আমার খুব ইম্পর্ট্যান্ট ছবি। এই ছবিতে তুমি আমার স্পোকসম্যান। আমি যা বলতে চাই তোমার মধ্যে দিয়ে বলব। এটা তুমি মাথায় রেখো।”

উৎপলদা সত্যিই সেই কথা মাথায় রেখে অভিনয় করেছিলেন। ছবি দেখতে-দেখতে এখনও তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে যাই। আগন্তুকের প্রথম শুটিং হয়েছিল ১৯৯০ সালের ২২ নভেম্বর, কলকাতার ময়দানে। সেদিন ভোর রাতে জন্মেছিল আমার ছেলে সৌরদীপ। খবর পেয়ে বাবা তো ভারী খুশি। বললেন, “নাতির মুখ দেখে শুটিং করতে যাব।” সারা রাত হাসপাতালে ছিলাম। সকালে বাবা এসে নাতির মুখ দেখলেন। তার পর আমি আর বাবা সোজা চলে গেলাম ময়দানে। ছবির শুটিংয়ে। সেখানে উৎপলদা খবরটা পেয়ে মজা করে বলেছিলেন, “ওরে বাবা, ঘরে, বাইরে আগন্তুক!”

প্রথম দিনের কাজ ভালয় ভালয় শেষ হয়েছিল। এর পর তো টানা শুটিং চলেছিল। কোথাও সমস্যা হয়নি। এমনকী, বোলপুরের আউডোরেও নয়। কিন্তু শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পর ধরা পড়ল, একটা দৃশ্যে ছোট্ট ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। তখন তো ডিজিটাল যুগ শুরু হয়নি। শুটিংয়ের পর নেগেটিভ প্রসেসিং করতে পাঠানো হত চেন্নাইয়ে জেমিনি কালার ল্যাবরেটরিজে। সেই প্রসেসিং হয়ে আসার পর ত্রুটি ধরা পড়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে সেই দৃশ্যকে রিটেক করা ছাড়া উপায় থাকে না। ছবিতে একটা বাকযুদ্ধের দৃশ্য ছিল ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে উৎপল দত্তের। সেই অংশে উৎপলদার একার একটা শট ছিল। গোলমালটা হয়েছিল সেখানে। বাবা দেখলেন, ওইটুকু দৃশ্যের জন্য একটা আস্ত সেট তৈরি করা অনেক খরচসাপেক্ষ। এবং ঝক্কিরও। অতএব সেই পরিকল্পনা খারিজ করে তিনি আমাদের বাড়িতে সেই দৃশ্য তোলার কথা ভাবলেন। সেই মতো বাবার ঘরের একটা অংশকে তৈরি করা হল। সেখানেই দৃশ্যটা আবার শুট করলেন। পুরো দৃশ্যটা এমন ভাবে তোলা হল যে ছবি দেখে কারও বোঝার উপায় থাকল না, কোন অংশটুকু আমাদের বাড়িতে শুট করা। সেটাই ছিল ছবির শেষ শট। সেই শট ভাল ভাবে নেওয়ার পর বাবা বললেন, “প্যাকআপ। ছবি শেষ। আমার যা বলার, তা-ও শেষ।”
সেই কথা শুনে আমাদের মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল ।

- - - আমার বাবা সত্যজিৎ রায় (সন্দীপ রায়)
==========================
ছোটবেলা থেকে সত্যজিৎ রায়কে নানা ভূমিকায় দেখেছিলেন সন্দীপ রায়। কখনও তিনি স্নেহশীল পিতা। ছেলের জন্মদিনের কার্ডের ডিজ়াইন করছেন। কখনও আবার গুরুগম্ভীর পরিচালক। একের পর এক কালজয়ী ছবি পরিচালনা করছেন। পাশাপাশি যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। জিতে নিচ্ছেন পুরস্কার। আবার সেই মানুষই নিজের ঘরে বসে এক মনে লিখছেন ফেলুদা, শঙ্কুর কাহিনি। আঁকছেন বইয়ের প্রচ্ছদ। ছবির পোস্টার। সুর দিচ্ছেন। সম্পাদনা করছেন ‘সন্দেশ’ পত্রিকার। পরবর্তীকালে যখন বাবার ইউনিটে কাজ করছেন, তখন আবার সত্যজিৎ রায়কে আর-একভাবে তিনি চিনেছিলেন। সেই সব অভিজ্ঞতা নিয়ে এই বই। এখানে সত্যজিৎ রায় এবং তাঁর পারিপার্শ্বিক জগৎকে তুলে ধরেছেন সন্দীপ রায়। সেই সূত্রে এসেছে বিভিন্ন ছবির শুটিংয়ের ঘটনা। ছবি বিশ্বাস, উত্তমকুমার, কিশোরকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ থেকে মার্লন ব্র্যান্ডো, রিচার্ড অ্যাটেনবরো, জ়েরার্ড দেপারদিউ, আকিরা কুরোসাওয়া, ফ্র্যাঙ্ক কাপরা, রোমান পোলানস্কি, আর্থার সি ক্লার্ক এবং আরও অনেকের কথা। ‘আনন্দমেলা’য় ধারাবাহিক হিসেবে প্রকাশিত হওয়ার সময়ই এই লেখা সাড়া ফেলে দিয়েছিল। এই বইয়ে লেখার সঙ্গে আরও কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য ছবি সংযোজিত হয়েছে।
"আমার বাবা সত্যজিৎ রায়" সংগ্রহে রাখার মত বই
আমাজন লিংক : https://amzn.to/4lxLA7b
==========
কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার সমগ্র সংগ্রহে রাখার মত বই । এই বইতে পাবেন সত্যজিৎ রায়ের সকল সাক্ষাৎকার । সত্যজিৎ প্রেমীরা অবশ্যই সংগ্রহ করুন এই বই ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3QkMffA
=======================
জীবনের প্রান্তসীমায় এসে হাতে কলম তুলে নিয়েছিলেন প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্রস্রষ্টা সত্যজিৎ রায়-এর সহধর্মিণী বিজয়া রায়। অন্তরের গভীরে থাকা বহু মানুষের মুখ, বহু ঘটনা, বহু জানা-অজানা কাহিনি তাঁকে এই অনন্য স্মৃতিকথা লেখার প্রেরণা দিয়েছে । এই বইয়ের পরতে পরতে ব্যাপ্ত রয়েছে যে বহুবর্ণী কাহিনি যা না জানলে মানুষ ও স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় ও বিজয়া রায় সম্পর্কিত অনেক কথা অজানা থেকে যেত। অবলুপ্ত হত অজস্র দিকচিহ্ন। সত্যজিৎ রায় এর অনেক অজানা তথ্য ও সুন্দর ছবি পাঠকের কাছে রত্ন।
বিজয়া রায়ের লেখা "আমাদের কথা" সংগ্রহে রাখার মত একটি বই ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3oDozba
=========
২৮ মার্চ ১৯৯২ দেশ ও ২ মে ১৯৯২ দুটি সত্যজিৎ রায় সংখ্যা বেরিয়েছিল ওনার স্মরণে ।
অতি স্বল্পমূল্যে পত্রিকাটির পিডিএফ চাইলে whatsapp করুন এই লিংকে
Whatsapp Link : https://wa.me/9831930921

সাধারণত গোয়েন্দার অস্ত্র নিয়ে বাবার মতো কম লেখকই মাথা ঘামিয়েছেন। গোয়েন্দার একটা রিভলভার থাকে। কিন্তু কোন রিভলভার দিল...
06/11/2025

সাধারণত গোয়েন্দার অস্ত্র নিয়ে বাবার মতো কম লেখকই মাথা ঘামিয়েছেন। গোয়েন্দার একটা রিভলভার থাকে। কিন্তু কোন রিভলভার দিলে ফেলুদাকে মানাবে সেটাও তিনি ঠিক করে ফেলেছিলেন। কোল্ট পয়েন্ট থ্রি টু। বাবার একটা বই ছিল। ‘গান ডাইজেস্ট’। সেই বইয়ে তখনকার দিনের সব ধরনের অস্ত্রের ছবি এবং বৈশিষ্ট্য বিশদে লেখা ছিল। সেখানে বহু ধরনের রিভলভার নিয়ে পড়াশোনা করার পর তিনি ঠিক করেছিলেন ওই রিভলভারই ফেলুদার হাতে দেবেন। রিভলভারটা ছোট। দেখতে সুন্দর। ঝকঝকে। পকেটে রাখা যায়। অস্ত্র হিসেবে মোক্ষম। তা ছাড়া কোল্ট নামটা কোথায় যেন ফেলুদার সঙ্গে মানিয়ে যায়। শেষ দিন পর্যন্ত ওই রিভলভার ফেলুদা ব্যবহার করেছে। জেমস বন্ড পরের দিকে অস্ত্র পাল্টেছে। ফেলুদা পাল্টায়নি।

সোনার কেল্লার সেই দৃশ্যের কথা ভাবো। রিভলভারের বোর, ক্যালিবার কাকে বলে সেই সব লালমোহনবাবুকে বোঝাচ্ছে ফেলুদা। সেই সব বাবা নিজে বই পড়ে জেনেছিলেন। রিভলভারের মেশিনারি সম্পর্কে তিনি খুব ভাল ভাবে জানতেন। ফেলুদা লেখার আগে তিনি প্রচুর গবেষণা করতেন। বই পড়তেন। নানা জায়গায় যেতেন। এমনকি, পুলিশ এবং ডাক্তারদের সঙ্গে কথাও বলতেন। কলকাতা পুলিশের বড় অফিসার আয়ান রশিদ খানকে অনেক দিন তিনি ডেকে তদন্তের খুঁটিনাটি জেনে নিতেন। বিশেষ করে গল্পে খুন কিংবা ওই ধরনের অপরাধ থাকলে তো বটেই।

আবার অনেক সময় ডাক্তারদের কাছ থেকেও পরামর্শ নিতেন। বলতেন, “আমি এই ধরনের একটা জিনিস ভেবেছি। এটা কি করা যায়? এতে লোক মরবে? গোয়েন্দা কি ধরতে পারবে?” এমনও হয়েছে, ডাক্তাররা হয়তো আরও ভাল কোনও বুদ্ধি দিতেন। আরও ভাল কোনও পদ্ধতির কথা বলতেন। যাতে ফেলুদাকে আরও বেশি করে মগজাস্ত্র প্রয়োগ করতে হবে অপরাধীকে ধরার জন্য। তেমনই এক জন ডাক্তার ছিলেন ড. দীনেশচন্দ্র মল্লিক। তিনি ছিলেন আমাদের পারিবারিক চিকিৎসক। বাবার বন্ধুর মতো। তবে অন্য অনেক ডাক্তারের সঙ্গে বাবা পরামর্শ করতেন। ভুলে গেলে চলবে না সেই সব পুলিশ অফিসার এবং ডাক্তার ছিলেন ফেলুদার ভক্ত। তাই তাঁরাও উৎসাহী হয়ে বাবাকে নানা তথ্য দিতেন। বাবার মৃত্যুর পর দেখেছিলাম, ফেলুদার বেশ কিছু গল্প তিনি শুরু করেও শেষ করেননি। কিছু গল্প তো আগে লেখা। পরে সেই কাহিনি নিয়ে তিনি অন্য উপন্যাস লিখেছেন। আবার কিছু গল্প সত্যিই শেষ করতে পারেননি। যেমন “আদিত্য বর্ধনের আবিষ্কার'। এটা লেখার সময় বাবার শরীর খুব খারাপ। তার পর তো তিনি চলেই গেলেন। আর একটা অদ্ভুত ঘটনা হল, ‘ইন্দ্রজাল রহস্য' গল্পটা তিনি লিখে রেখেছিলেন। কিন্তু সন্দেশে ছাপেননি। কেন তিনি অমনটা করেছিলেন জানতে পারিনি। তবে ফেলুদা প্রকাশের তিরিশ বছর উপলক্ষে সন্দেশে গল্পটা ছেপেছিলাম। তিন সংখ্যা ধরে। সেটাই ছিল ফেলুদার শেষ গল্প।

- - - - আমার বাবা সত্যজিৎ রায় (সন্দীপ রায়)
==========================
ছোটবেলা থেকে সত্যজিৎ রায়কে নানা ভূমিকায় দেখেছিলেন সন্দীপ রায়। কখনও তিনি স্নেহশীল পিতা। ছেলের জন্মদিনের কার্ডের ডিজ়াইন করছেন। কখনও আবার গুরুগম্ভীর পরিচালক। একের পর এক কালজয়ী ছবি পরিচালনা করছেন। পাশাপাশি যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। জিতে নিচ্ছেন পুরস্কার। আবার সেই মানুষই নিজের ঘরে বসে এক মনে লিখছেন ফেলুদা, শঙ্কুর কাহিনি। আঁকছেন বইয়ের প্রচ্ছদ। ছবির পোস্টার। সুর দিচ্ছেন। সম্পাদনা করছেন ‘সন্দেশ’ পত্রিকার। পরবর্তীকালে যখন বাবার ইউনিটে কাজ করছেন, তখন আবার সত্যজিৎ রায়কে আর-একভাবে তিনি চিনেছিলেন। সেই সব অভিজ্ঞতা নিয়ে এই বই। এখানে সত্যজিৎ রায় এবং তাঁর পারিপার্শ্বিক জগৎকে তুলে ধরেছেন সন্দীপ রায়। সেই সূত্রে এসেছে বিভিন্ন ছবির শুটিংয়ের ঘটনা। ছবি বিশ্বাস, উত্তমকুমার, কিশোরকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ থেকে মার্লন ব্র্যান্ডো, রিচার্ড অ্যাটেনবরো, জ়েরার্ড দেপারদিউ, আকিরা কুরোসাওয়া, ফ্র্যাঙ্ক কাপরা, রোমান পোলানস্কি, আর্থার সি ক্লার্ক এবং আরও অনেকের কথা। ‘আনন্দমেলা’য় ধারাবাহিক হিসেবে প্রকাশিত হওয়ার সময়ই এই লেখা সাড়া ফেলে দিয়েছিল। এই বইয়ে লেখার সঙ্গে আরও কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য ছবি সংযোজিত হয়েছে।
"আমার বাবা সত্যজিৎ রায়" সংগ্রহে রাখার মত বই
আমাজন লিংক : https://amzn.to/4lxLA7b

==========
কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার সমগ্র সংগ্রহে রাখার মত বই । এই বইতে পাবেন সত্যজিৎ রায়ের সকল সাক্ষাৎকার । সত্যজিৎ প্রেমীরা অবশ্যই সংগ্রহ করুন এই বই ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3QkMffA

=======================
জীবনের প্রান্তসীমায় এসে হাতে কলম তুলে নিয়েছিলেন প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্রস্রষ্টা সত্যজিৎ রায়-এর সহধর্মিণী বিজয়া রায়। অন্তরের গভীরে থাকা বহু মানুষের মুখ, বহু ঘটনা, বহু জানা-অজানা কাহিনি তাঁকে এই অনন্য স্মৃতিকথা লেখার প্রেরণা দিয়েছে । এই বইয়ের পরতে পরতে ব্যাপ্ত রয়েছে যে বহুবর্ণী কাহিনি যা না জানলে মানুষ ও স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় ও বিজয়া রায় সম্পর্কিত অনেক কথা অজানা থেকে যেত। অবলুপ্ত হত অজস্র দিকচিহ্ন। সত্যজিৎ রায় এর অনেক অজানা তথ্য ও সুন্দর ছবি পাঠকের কাছে রত্ন।
বিজয়া রায়ের লেখা "আমাদের কথা" সংগ্রহে রাখার মত একটি বই ।
আমাজন লিংক : https://amzn.to/3oDozba

=========
২৮ মার্চ ১৯৯২ দেশ ও ২ মে ১৯৯২ দুটি সত্যজিৎ রায় সংখ্যা বেরিয়েছিল ওনার স্মরণে ।
অতি স্বল্পমূল্যে পত্রিকাটির পিডিএফ চাইলে whatsapp করুন এই লিংকে
Whatsapp Link : https://wa.me/9831930921

Address

North 24 Parganas
Kolkata

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when অহর্নিশ - Ahornish posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to অহর্নিশ - Ahornish:

Share