16/10/2025
🟩 সরকারের মুসলমানদের প্রতি অবিচার — একটি বাস্তব চিত্র
আজ আমরা এক গভীর বাস্তবতার মুখোমুখি — পশ্চিমবঙ্গের সরকার কি সত্যিই সমগ্র রাজ্যের জনগণের জন্য কাজ করছে, নাকি বিশেষ সম্প্রদায়ের মন জয়ের রাজনীতি করছে?
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা-পার্বণ, মন্দির নির্মাণ কিংবা পুজো কমিটিগুলিকে অর্থসাহায্য প্রদানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উদ্যোগী — এটি আমরা সকলেই প্রত্যক্ষ করছি। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, তিনি কি কেবলমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের মুখ্যমন্ত্রী? নাকি সমগ্র পশ্চিমবঙ্গবাসীর?
বিজেপির “ভূতের ভয়” দেখিয়ে বছরের পর বছর মুসলমানদের ভোট অর্জন করা কি ন্যায্য রাজনীতি? ভোটের সময় মুসলমান সমাজকে “ধর্মনিরপেক্ষতার ঢাল” হিসেবে ব্যবহার করা হলেও, বাস্তবে তাদের শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়।
বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার দুরবস্থা এখন লজ্জাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। বহু মাদ্রাসায় পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, নেই উপযুক্ত পরিকাঠামো। পাঠ্যক্রম আধুনিকীকরণের প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়িত হয়নি।
আরও বিস্ময়ের বিষয় হলো, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে কয়েকটি মাদ্রাসায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠদান চলছে, সেগুলি আজও কলেজে রূপান্তরিত করা হয়নি।
প্রশ্ন ওঠে — ভারতের আর কোনো রাজ্যে কি এমন উদাহরণ আছে, যেখানে একটি স্কুলসম মর্যাদাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে? এটি নিঃসন্দেহে শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অবিচার এবং মুসলমান সমাজের প্রতি স্পষ্ট অবহেলার পরিচয়।
মাদ্রাসাগুলির ছাত্রছাত্রীরা যারা একদিন দেশের মূলধারায় যুক্ত হতে চায়, তাদের ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চিত। সরকারের উচিত ছিল এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে কলেজে উন্নীত করা, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা, এবং যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা।
যদি সরকার সত্যিই “সবার মুখ্যমন্ত্রী” হতে চান, তবে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরে কেবল নির্বাচনের রাজনীতি না করে বাস্তব সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মুসলমান সমাজের শিক্ষাগত উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, এবং সামাজিক মর্যাদা — এগুলিই হবে প্রকৃত উন্নয়নের পরিচয়।
এ বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামত কি?