
01/07/2025
"‘প্রগতি’ একটি সমাজসেবী সংস্থা। কলকাতার বহু প্রান্তিক অঞ্চলে তারা মানুষের উপকারে বিদেশি দয়াবানদের দানের টাকা কষ্ট করে ব্যয় করেন। এই ব্যয় বাবদ যা খরচ হয়, তা তারা ঐ অর্থ থেকে নিয়ে নেন। এই সংস্থায় চাকরি করেন আদিত্যবাবু— দিত্যদা। তাঁর উৎসাহে এখানে আমরা কয়েক জন এসেছিলাম স্কুল করতে। ‘প্রগতি’ চেয়েছিল একটা স্কুলঘর বানিয়ে দিতে এবং আমাদের মধ্যে যে দু-এক জন কলেজের ছাত্র আছে, তাদের কিছু একটা মাসোহারা দিতে। আমরা রাজি হইনি। কলকাতায় আমাদের অন্য স্কুলগুলোর মতো এখানেও চেয়েছিলাম বস্তির মানুষের নিজেদের চেষ্টাতেই গড়ে উঠুক একটা পড়াশোনার প্রাঙ্গণ। দাক্ষিণ্য-প্রাপ্তিতে স্বীকৃত এখানকার পুরুষদের অত খাটার ইচ্ছে ছিল না। ‘প্রগতি’ যদি কাজটা করে দেয়, তা হলেই তো ভালো, মনে হয়েছিল তাঁদের। অনেক বুঝিয়েও কাজ হচ্ছিল না। একসময় যখন ক্লান্ত হয়ে আমরা হাল ছেড়ে দিচ্ছিলাম, তখনই দেখা মিলেছিল কমলাদির।
সে সময়ে দিন-দশেক প্রচণ্ড ম্যালেরিয়ায় শয্যাশায়ী ছিলেন কমলাদি। তাই প্রতিদিনের সন্ধেবেলার আলোচনাচক্রে তাঁকে দেখা যায়নি। জ্বর থেকে উঠে পাইকপাড়ায় বিকেলের ঠিকে কাজ সেরে ফেরার সময়ে আমাদের মিটিংয়ে প্রথম আসেন কমলাদি। প্রথম দিন কিচ্ছু বলেননি। কিন্তু পরের দিন, আমরা যখন পুরুষদের এক-বাক্যে রাজি হতে দেখে আনন্দ পাচ্ছি নিজেদের অন্যকে ‘কনভিন্স’ করার ক্ষমতায়, তখন জানলাম সারাটা দিন কমলাদি কেমন করে বুঝিয়ে আমাদের কথা শুনতে সকলকে রাজি করিয়েছেন। অবশ্য, কেবল বুঝিয়েছেন বললে সবটা বলা হবে না, কমলাদির কাংস্যবিনিন্দিত কণ্ঠ এবং বাছাই-করা শব্দের প্রবল ব্যবহারও সকলকে রাজি হতে সাহায্য করেছে।
তার পরে খুব দ্রুত স্কুল তৈরির কাজ এগিয়েছে। বসতির মেয়েপুরুষ একযোগে ক-দিনের মধ্যেই ঝুপড়িপট্টির এক ধারে একটা বাড়ির পাঁচিল ঘেঁষে বানিয়ে ফেলেছে একটা ছোট্ট স্কুলঘর, যে-ঘর এই বসতির যে-কোন বাসিন্দার ঘরের তুলনায় রাজপ্রাসাদের শামিল। সেই প্রথম জেনেছিলাম, কলকাতায় পোড়া-ফাটা বাঁশ আর ফেলে-দেওয়া ছেঁড়া ত্রিপলের একটা রমরমা কারবার আছে। এক সন্ধেবেলা ছোট্ট অনুষ্ঠান করে স্কুল চালুও হয়ে গেছে।
এ কথা বলতেই হবে, এই স্কুল তৈরির কাজে ‘প্রগতি’ সাহায্য করেছে— দিত্যদার ব্যক্তিগত উৎসাহে। এই স্কুলটাও অবশ্যই ‘প্রগতি’র কাজের খতিয়ানে ঢুকে গিয়ে বিদেশে তার শক্তির উৎসকে আরও উদার করবে, কিন্তু সে নিয়ে বেশি ছুঁৎমার্গ আমরা আর করলাম না। স্কুল চালু হয়ে গেল।"
এটি একটি কাহিনির অংশ। এরকম আরও কিছু কাহিনির সংকলন
'অন্তর্ঘাত ও অন্যান্য কাহিনি', একসময়ে যা লিখেছিলেন প্রয়াত শিক্ষাবিদ সলিল বিশ্বাস।
শেষ কিছু কপি পাওয়া যাচ্ছে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় :
বইছবিঘর, 16 কানাই ধর লেন (দোতলা), কলকাতা 700012
(বুধবার ৩টে-৭টা, বৃহস্পতি ও শুক্র ১টা-৬টা,
ফোন করে নিন : 84209 29111)
দক্ষিণ কলকাতায় পাওয়া যাবে :
হারিত, H/345, বৈষ্ণবঘাটা পাটুলি টাউনশিপ, কলকাতা 700094,
ফোন 8336941108
অনলাইনে সংগ্রহের জন্য (ডেলিভারি ফ্রি) এবং
দাম ও অন্যান্য তথ্য জানার জন্য ক্লিক করতে হবে এই লিঙ্কে : https://boipattor.in/product/antorghaat-o-onyanyo-kahini/
অথবা সারা দেশে ফ্রি ডেলিভারির জন্য
WhatsApp করা যাবে এই নম্বরে : 84209 29111
প্রকাশিত অন্যান্য বইয়ের জন্য দ্রষ্টব্য : https://boipattor.in/