26/08/2025
“বাড়ি আমার ভাঙনধরা অজয় নদীর বাঁকে,
জল যেখানে সোহাগ ভরে স্থলকে ঘিরে রাখে।”
খুবই জনপ্রিয় এই কবিতার দুটি লাইন আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু জানেন কি এই কবিতাটির নাম কি? কার লেখা এই কবিতা? কোথায় বাড়ি লেখকের? চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক।
প্রথমেই কবিতার যে দুটি লাইন তুলে ধরেছি সেটা ‘আমার বাড়ি’ কবিতার। কবিতার লেখক হলেন স্বনামধন্য কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক। এই ‘পল্লীকবি’ কুমুদ রঞ্জন মল্লিক জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমারই জন্মভূমি জেলা পূর্ব বর্ধমান জেলাতেই।
পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার কোগ্রাম-এ জন্মেছিলেন কবি। এখনও তাঁর জন্মভিটে অনেকের কাছে দর্শনীয় স্থান। মঙ্গলকোটের নতুনহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে সামান্য দুরত্বেই অবস্থিত কোগ্রাম এবং গ্রামের একদম শেষ সীমান্তে অজয় নদের কিনারে অবস্থিত কবির জন্মভিটে। কবির গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে অজয় নদ ও কুনুর নদী। কবির সঙ্গে নদ-নদীর যোগ আজন্মকাল। যার ফলস্বরূপ মন ছুঁয়ে যাওয়া এমন চরণ আমরা উপহার পাই। তাঁর কবিতায় সহজ-সরল পল্লীরূপের বর্ণনা, আপামর বাঙালি পাঠকের মন খুব সহজেই জয় করে নেয়। গ্রাম-বাংলার স্নিগ্ধ আন্তরিকতা কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের কবিতায় অন্য এক সুর বহন করে চলে।
কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের লেখা কবিতাগুলোর মধ্যে ‘ছুটি’, ‘হয়তো’, ‘শেষদান’, ‘আমাদের সঙ্গী’ এইগুলি বেশ জনপ্রিয়৷ এ ছাড়াও ‘নূপুর’, ‘উজানী’, ‘বনতুলসি’র মতো কাব্যগ্রন্থও বাঙালিদের মনে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিল৷ ‘দ্বারাবতী’ নাটকও কবির রচনা৷ কবির লেখা কবিতাগুলো দিয়ে পরবর্তীকালে একটি কালজয়ী গানের অ্যালবামও বানানো হয়েছিল ‘কুমুদ কাব্যগীতি’ নামে৷
এছাড়াও বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত করা হয় কবিকে, তার মধ্যে ‘জগত্তারিনী স্বর্ণপদক’ এবং স্বাধীনতার পর ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী’ উল্লেখযোগ্য৷ তাঁর লেখা দারুণ দারুণ কবিতার মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের মধ্যে চিরকালের জন্য তাঁর বিশেষ অবদান রেখে গেছেন।
বর্তমানে কবির জন্মভিটেতে তাঁর বংশধররা কেউ থাকেননা। কর্মসূত্রে সকলেই কলকাতায় থাকেন। তবে বাড়ি দেখাশোনা করার জন্য রয়েছে কেয়ারটেকার।।
গ্রাম:- কোগ্রাম, থানা:- মঙ্গলকোট, জেলা:- পূর্ব বর্দ্ধমান...
কলমে ও ছবিতে: Jishnu Hati