10/10/2025
নোবেল কমিটি ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কার দিয়েছে ভেনেজুয়েলার সাহসী নারী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে, এমন এক দেশে, যেখানে স্বৈরশাসন, নিপীড়ন ও ভয় প্রতিদিনের বাস্তবতা। অথচ তিনি বন্দুকের বদলে ভোটে বিশ্বাস রেখেছেন, প্রতিশোধের বদলে শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের পথ বেছে নিয়েছেন।
মাচাদো বছরের পর বছর ধরে লড়ছেন এক ভয়ংকর স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে,এমন এক সরকারের বিরুদ্ধে, যারা নির্বাচনে জালিয়াতি করে, বিরোধীদের কারারুদ্ধ করে, আর নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়। তবুও তিনি দেশ ছেড়ে পালাননি। বরং তিনি দেশেই থেকেছেন, মানুষকে সংগঠিত করেছেন, ভয়কে জয় করে জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
২০২৪ সালের নির্বাচনে যখন স্বৈরশাসক সরকার তার প্রার্থিতা বাতিল করে দেয়, তখনও তিনি হার মানেননি। বরং অন্য প্রার্থীর পক্ষে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবক ঝুঁকি নিয়ে ভোট পর্যবেক্ষণ করেছে, যাতে ভোটের ফল গোপন না থাকে। এই শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধই দেখিয়েছে— সাহস মানে যুদ্ধ নয়, বরং সত্যের পাশে দাঁড়ানো।
এমন সময়ে কিছু মানুষ হয়তো প্রশ্ন করেছে, "ট্রাম্প কেন নয়?" উত্তরটা সহজ।
শান্তি মানে বিভাজন নয়। শান্তি মানে একতা। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশে গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছেন, জনগণকে বিভক্ত করেছেন, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন, এমনকি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার সময় সহিংসতাকে উসকে দিয়েছেন। একজন সত্যিকারের শান্তির প্রতীক কখনও সহিংসতার ভাষায় কথা বলেন না। গা*জা তে সে চাইলেই আগে সব বন্ধ করতে পারতেন। বরং না করে সে তামাশা দেখেছে হিজড়াইলের।
নোবেল শান্তি পুরস্কার কোনো জনপ্রিয়তার প্রতিযোগিতা নয়। এটি তাদের স্বীকৃতি যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও ন্যায়ের পথ ছাড়েন না— যারা জানেন, শান্তি আসে ভোটের বাক্স থেকে, বন্দুকের নল থেকে নয়।
মারিয়া কোরিনা মাচাদো তাই ট্রাম্পের চেয়ে অনেক বেশি যোগ্য এই পুরস্কারের জন্য। তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে একটি নারী একাই অন্ধকারের মাঝে আলো জ্বালাতে পারে, ভয়কে জয় করে মানুষের মনে আশার স্ফুলিঙ্গ জাগাতে পারে।
আজকের পৃথিবী যখন নতুন নতুন স্বৈরশাসনের দিকে ধাবিত হচ্ছে, তখন মাচাদোর মতো মানুষ আমাদের মনে করিয়ে দেন—
“Freedom must never be taken for granted. It must always be defended – with words, with courage, and with determination.”
মাচাদো সেই সাহসের, সেই দৃঢ়তার প্রতীক। আর ট্রাম্প? তিনি বরং স্মরণ করিয়ে দেন কেন এই পৃথিবীতে এমন মানুষদেরই দরকার, যারা শান্তির নামে বিভাজন নয়, বরং সংহতি গড়ে তোলেন।
©