
01/07/2025
Bengal Times : স্ত্রী এবং কন্যার জন্য প্রতি মাসে ৪ লাখ টাকা দিতে হবে, শামিকে নির্দেশ হাই কোর্টের। কলকাতা হাই কোর্টে ধাক্কা খেলেন মহম্মদ শামি। ভরণপোষণ বাবদ প্রাক্তন স্ত্রী হাসিন জাহানকে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা করে দিতে হবে শামিকে। মেয়ের জন্য মাসে দিতে হবে আরও আড়াই লাখ টাকা করে। চাইলে মেয়ের পড়াশোনা বা অন্য প্রয়োজনে আরও টাকা খরচ করতে পারেন ভারতীয় দলের ক্রিকেটার। গার্হস্থ্য হিংসার মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই টাকা দিতে হবে তাঁকে। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়।
২০১৪ সালে মডেল এবং অভিনেত্রী জাহানের সঙ্গে বিয়ে হয় শামির। ২০১৫ সালে তাঁদের কন্যা সন্তানের জন্ম। কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য সুখের হয়নি। ২০১৮ সালে যাদবপুর থানায় শামি এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেন জাহান। স্ত্রী নির্যাতন, বিষ খাওয়ানো, খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ-সহ একাধিক অভিযোগ করা হয় শামির বিরুদ্ধে। বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হন জাহান। প্রোটেকশন অফ উইমেন ফ্রম ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট ২০০৫ অনুযায়ী মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার খরচ এবং অন্তর্বর্তীকালীন ভরণপোষণ বাবদ ১০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। নিজের জন্য মাসে ৭ লাখ এবং মেয়ের জন্য মাসে ৩ লাখ টাকা চান। কিন্তু নিম্ন আদালতে তাঁর এই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। আলিপুর আদালত শুধুমাত্র তাঁর সন্তানকে ৮০,০০০ টাকা প্রতি মাসে দেওয়ার নির্দেশ দেয় শামিকে। পরে জেলা জজ সেই নির্দেশ সংশোধন করে জাহানকেও মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন জাহান। তাঁর আইনজীবী বলেন, মাসে জাহানের আয় ১৬ হাজার টাকা। ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানত থেকে সুদ বাবদ এই টাকা পান তিনি। এই টাকায় তাঁর এবং কন্যার খরচ চালানো সম্ভব নয়। অথচ শামির সঙ্গে থাকার সময় থেকে তাঁরা ব্যয়বহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁর প্রতি মাসে খরচ হয় প্রায় ৬ লাখ টাকা। অন্য দিকে, তাঁর প্রাক্তন স্বামীর ২০২০-২১ অর্থ বর্ষের আয় প্রায় ৭.১৯ কোটি টাকা। সামর্থ্য থাকতেও তিনি টাকা দিতে চাইছেন না।
শামি এর জবাবে আদালতকে জানান, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী এক জন সফল মডেল এবং অভিনেত্রী। বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন। তাঁর মাসিক আয় অন্তত ৫ লাখ টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর বেশ কিছু আমানত রয়েছে। তথ্য গোপনের অভিযোগও করেন শামি।
জোরে বোলারের যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শামিকে অন্তর্বর্তীকালীন ভরণপোষণ বাবদ মাসে ৪ লাখ টাকা করে দেওয়া নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। একই সঙ্গে নিম্ন আদালতকে মূল মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি (৬০ দিন) করার নির্দেশ দিয়েছেন।