11/05/2025
আজ 11-ই মে নৃসিংহ চতুর্দশী
নৃসিংহ অবতার : নৃসিংহ বিষ্ণুর চতুর্থ অবতার। পুরাণ, উপনিষদ ও অন্যান্য প্রাচীন হিন্দু ধর্মগ্রন্থে তার উল্লেখ রয়েছে । দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের অন্যতম প্রতীক তিনি।নৃসিংহ অর্ধ-মনুষ্য অর্ধ সিংহ। তার দেহ মনুষ্যাকার, সিংহের ন্যায় মস্তক ও নখরযুক্ত। তার প্রধান অস্ত্র হল নখ। তিনি তার ভক্ত প্রলহাদ কে তার পিতা হিরন্যকশিপুর এর হাত থেকে রক্ষা করে ছিলেন । তিনি তার নখ দিয়ে হিরন্যকশিপুর এর বক্ষ ছিঁড়ে তাকে বধ করেন ।নৃসিংহ দেব হলেন সুরক্ষা, ধ্বংস, এবং কালের ঈশ্বর (সময়) ও মন্দ ও ভয়ের ধ্বংসকারী।
শ্রী শ্রী নৃসিংহ দেবের ধ্যানঃ
মাণিক্যাদিসমপ্রস্তং নিজকচা সংক্রান্তরক্ষোগণং জাম্বন্যস্ত করায়ুজং ত্রিনয়নং রাষ্ট্রাল্পসৎভূষণম্।
বাহুভাং ধৃতশঙ্খচক্রমনিশং দংষ্ট্রোগ্রস্বত্তোল্পসৎ জাল জিহ্বমুদায়কেশরচয়ং বলে নৃসিংহং বিভূম ।
অর্থঃ
নৃসিংহদেবের দেহকাস্তি মাণিক্যাদির স্তায় উজ্জ্বল, শরীয় প্রভায় রাক্ষসগণ সৰ্ব্বদা ভীত, হস্তদ্বয় জামুদ্বয়ের উপর বিন্যস্ত, ইনি ত্রিনয়ন এবং রত্নভূষণে ভূষিত । ইহার হস্তদ্বয়ে শঙ্খ ও চক্র । দেহ অৰ্দ্ধমনুষ্যাকার ও অৰ্দ্ধ সিংহসদৃশ। বিকট বদন হইতে অগ্নিশিখার দ্যায় জিহব নির্গত হইতেছে।
নৃসিংহ-গায়ত্রীঃ
বজ্রনখায় বিদ্মহে তীক্ষ্ণদংষ্ট্রায় ধীমহি। তন্নো নরসিংহ প্রচোদয়াৎ।।
নৃসিংহদেবের প্রণাম মন্ত্রঃ
ॐ উগ্রং বীরং মহাবিষ্ণুং জ্বলম্তং সর্বতোমুখম্।
নৃসিংহং ভীষণং ভদ্রম্ মৃত্যোর্মৃত্যুং নমাম্যহম্ ।।
শ্রীনৃসিংহের স্তব ও প্রার্থনাঃ
জয় নৃসিংহ শ্রীনৃসিংহ।
জয় জয় জয় শ্রীনৃসিংহ ॥
উগ্রং বীরং মহাবিষ্ণুং
জ্বলন্তং সর্বতোমুখম্।
নৃসিংহং ভীষণং ভদ্রং
মৃর্ত্যোর্মৃত্যুং নমাম্যহম্ ॥
শ্রীনৃসিংহ, জয় নৃসিংহ, জয় জয় নৃসিংহ।
প্রহ্লাদেশ জয় পদ্মামুখপদ্মভৃঙ্গ ॥
অনুবাদ– জয় শ্রীনৃসিংহদেব, জয় শ্রীনৃসিংহদেব, শ্রীনৃসিংহদেবের জয় হোক! জয় হোক! জয় হোক! সর্বদিক প্রজ্জ্বলনকারী উগ্র বীর, মহাবিষ্ণু, যিনি মৃত্যুরও মৃত্যুস্বরূপ সেই ভীষণ ভদ্র শ্রীনৃসিংহদেবকে প্রণাম জানাই। প্রহ্লাদের প্রভু, পদ্মা অর্থাৎ লক্ষ্মীদেবীর মুখপদ্মের প্রতি ভ্রমর রূপ শ্রীনৃসিংহদেবের জয় হোক, শ্রীনৃসিংহদেবের জয় হোক, জয় হোক।
নমস্তে নরসিংহায় প্রহ্লাদাহ্লাদ–দায়িনে।
হিরণ্যকশিপোর্বক্ষঃ শিলাটঙ্ক–নখালয়ে ॥
ইতো নৃসিংহঃ পরতো নৃসিংহো
যতো যতো যামি ততো নৃসিংহঃ।
বহির্নৃসিংহো হৃদয়ে নৃসিংহো
নৃসিংহমাদিং শরণং প্রপদ্যে ॥
তব করকমলবরে নখমদ্ভুতশৃঙ্গং
দলিতহিরণ্যকশিপুতনুভৃঙ্গম্।
কেশব ধৃত–নরহরিরূপ জয় জগদীশ হরে ॥
অনুবাদ– হে নৃসিংহদেব, আমি আপনাকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি। আপনি প্রহ্লাদ মহারাজকে আনন্দ দান করেন এবং পাথর কাটার ধারালো টঙ্কের মতো আপনার নখের দ্বারা আপনি হিরণ্যকশিপুর বক্ষ বিদীর্ণ করেছিলেন।
শ্রীনৃসিংহদেব, আপনি এখানে রয়েছেন এবং সেখানেও রয়েছেন, যেখানেই আমি যাই, সেখানেই আমি আপনাকে দর্শন করি। আপনি আমার হৃদয়ে এবং বাইরেও রয়েছেন। তাই আমি আদি পুরুষ, পরমেশ্বর ভগবান, শ্রীনৃসিংহদেবের শরণ গ্রহণ করি।
হে নৃসিংহদেব, আপনার পদ্মের ন্যায় হস্তে নখের অগ্রভাগগুলো অদ্ভুত এবং সেই হস্তে হিরণ্যকশিপুর দেহ ভ্রমরের মতো বিদীর্ণ করেছেন।
হে কেশব, আপনি নৃসিংহদেব রূপ ধারণ করেছেন, হে জগদীশ আপনার জয় হোক।
#দশমহাবিদ্যা