20/09/2025
৭৫ বছর পূর্ণ, তবুও মোদী-ভাগবতের অবসর নেই—প্রশ্ন উঠছে দেশজুড়ে❓
২০১৪ সনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে
নরেন্দ্রভাই দামোদর দাস মোদী প্রথম শপথ গ্রহণ করেন।
২০১৩সনেই বিজেপি এবং আরএসএস এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মোদিজির নাম বিজেপি দলে ঠিক হয়।
সেই সময় গুজরাটের দীর্ঘকালীন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দলে মোদিজির প্রভাব ছিল অনন্য। সেইসময় একটি অলিখিত নিয়ম বিজেপি দলে চালু হয়, যার
সুবাদে বিজেপি দলের অনেক পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয়
নেতাকে মার্গদর্শন মণ্ডলীতে পাঠানো হয় তাঁদের বয়স ৭৫ বছর হওয়ার কারণে। অনেক প্রভাবশালী নেতাকে তখন লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভ করা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হয়নি। এদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী লাল কৃষ্ণ আদবানী অন্যতম। অটলবিহারী বাজপেয়ীর পর এল কে আদবানীই ছিলেন দেশবাসীর কাছে একমাত্র এমন একজন ব্যক্তি যার নাম ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশবাসীর মনে আলোচনার শীর্ষে ছিল। কিন্তু দল তো আর দেশবাসীর মন বুঝে চলে না, দল চলে দলের কৌশলে। তাই সেই সময় ৭৫ বছর বয়স হওয়ায় প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিংহ, মুরলী মনোহর যোশ মার্গদর্শন মণ্ডলীতে যেতে হয় ৭৫ বছর বয়সের কারণে। এছাড়া পরবর্তীকালে আরও অনেক নেতাকেই বয়সের কারণে সুস্থ সবল থাকা সত্ত্বেও অবসরে যেতে হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন বি সি খান্ডুরে, গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দি বেন, শান্তা কুমার, হুকুমত সিং সহ অনেকে। এরা অবসরে চলে যাওয়ায় বিজেপির মধ্যে আর কেউ রইলো না মোদিজির মতো অভিজ্ঞ ও সমকক্ষ। তবে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া সহ অনেক সংবাদ মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয় যে মোদিজিকেও কি পূর্বসূরীদের মতোই মার্গদর্শন মণ্ডলীতে চলে যেতে হবে? কিছুদিন আগে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতও এক সভায় বলেছিলেন যে ৭৫ বছর হওয়ার পর কোনো নেতাকে অন্যের জন্য পদ খালি করে দেওয়া উচিৎ। আবার সেই মোহন ভাগবতই গত ২৫ আগস্ট ২০২৫ ইং, বলেন যে এমন কোনো নিয়ম নেই যে ৭৫ বছর বয়স হওয়ার পর অবসরে চলে যেতে হবে। মোদিজির ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছে, মোদিজি পদত্যাগ করেন নি। কারণ বিজেপিতে এটা কোনো নিয়ম নয়, এটা ছিল একটা কৌশল মাত্র। তাই প্রধানমন্ত্রী এবং আরএসএস প্রধান কেউই আপাতত পদত্যাগ করছেন না। দেশব্যাপী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন পালিত হচ্ছে মহা সমারোহে। কারণও আছে- এটা প্রায় নিশ্চিত যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যতো দিন সুস্থ ও সবল থাকবেন ততো দিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকতে কোনো আপত্তি নেই। হয়তো শতবর্ষ কিংবা অনন্তকাল তিনিই একই পদে থেকে যেতেও পারেন। কারণ ৭৫ বছর বয়সে অবসরে যাওয়ার বিষয়টি বিজেপিতে আর চালু হওয়ার আশংকা আপাতত নেই। অনন্তকাল মন্ত্রী থাকার সৌভাগ্য সকলের হবে না। তবে শতবর্ষ বা অনন্তকাল সুস্থ থাকলে প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোনো মন্ত্রী থাকার বিষয়টি যদি বিজেপিতে চালু হয়ে যায় তাহলে কেন্দ্র রাজ্য সর্বত্রই তা চালু করতে হবে। কিন্তু পরে কোনো দিন এই ৭৫ বছর বয়সে অবসরে যাওয়ার বিষয়টি আর চালু করা কঠিন হবে। এই বিষয়টি যদি সকলের জন্য প্রযোজ্য হয় তাহলে হয়তো দলে ৭৫এর কম বয়সি নেতাই খুঁজে পাওয়া যাবে না এক সময়। তবে মন্ত্রীদের অবসরে যাওয়ার বয়স যদি নির্ধারিত না থাকে তাহলে সরকারি কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়সও অনন্তকাল করে দেওয়া হোক। তাহলে অনেকদিন পর্যন্ত স্কুলগুলিতে শিক্ষকের পদ খালি থাকবে না। ৮০/১০০ বছর পর্যন্ত যারা সুস্থ থাকবে চাকরি করতে পারবে। হাসপাতালেও চিকিৎসকের অভাব কম থাকবে। শূন্য পদের সংখ্যাও কমে যাবে। অনেকেরই চাকরি পাওয়ার বয়স পার হয়ে যাবে মন্ত্রীদের জন্য সরকারি পদে থাকার বয়সের কোনো সীমারেখা যদি না থাকে তাহলে সরকারী কর্মচারীদের সীমারেখা থাকবে কেন?