19/07/2025
#হাবজিগাবজি
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে দিশেহারা শিক্ষাব্যবস্থা,একদিকে চাকরিপ্রার্থীর লড়াই।অন্যদিকে অনলাইন অফলাইন নম্বরের লড়াই।
আমরা ছুটে চলেছি মরুভূমিতে তৃষ্ণার্ত পথিকের মতো মরীচিকার পিছনে তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না কোনদিকে যাবো?কী করবো? সব বুঝে ওঠার আগেই কেমন যেন দায়িত্ব মাথায় এসে পড়ে।মাথায় পাহাড় হয়ে যায় চিন্তার, সব সময়ই মাথায় ঘোরে কোনদিকে গেলে আগে চাকরি পাওয়া যাবে ? কিংবা কোন ভালো কাজ? তাহলে অত্যন্ত পরিবারের চাপটা কমবে আমাকে নিয়ে।
ছোটবেলায় যে সহজেই বলে দিতাম ডাক্তার হবো কিংবা পুলিশ কিংবা মাস্টারমশাই। বড়ো হয়ে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি বাস্তবে তা কত কঠিন।
একটা বয়সের পর যাদের সাথে দেখা হয় কম-বেশী প্রত্যেকের প্রশ্ন একই থাকে কীরে কী করছিস?অথচ প্রত্যেকেই জানেন কিছু করি না। তাই বাধ্য হয়ে বলতে হয় এই হাঁটছি সাইকেল চালাচ্ছি নয়তো এড়িয়ে যায়। সেভাবে আর বন্ধুও নেই করতেও ইচ্ছে নেই,আমি অত্যন্ত বুঝেছি বন্ধু বলে কিছু হয় না শুধুমাত্র নিজেই নিজের বন্ধু।
জীবন থেকে সময় চলে যাচ্ছে কিছুই করা হয়ে উঠছে না সামান্য টিউশনের বেতনে অথবা কোন কাজের সামান্য বেতনে মাস চালাতে গিয়ে টের পেতে হয় পকেটের টানাপোড়েন। মাঝেমাঝে সেই বেতনে গন্ডগোল হলে খরচের হিসেব গুলিয়ে যায় বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা কিংবা বই এর খরচ,আটকে যায় কারেন্টে বিলের টাকা কিংবা কেনা হয় না ভালোবাসার মানুষের জন্য দেখা আসা জামাটা। চা খেতে গিয়েও তখন হিসেব কষতে হয় টিউশনের বেতন বাকি আছে,আগের মাসে যে দুটো বই কেনার কথা ছিলো কেনা হয়নি এখনো।বন্ধুর থেকে ধার নেওয়া ছিল কিছু টাকা আজ দেবো কাল দেবো করছি কারন বেতন টা আটকে গেছে।
নাহ! এভাবে আর হয়না একটা কাজ খুঁজতে হবে ভীষন দরকার কাজের,বাবা -মা এর বয়স বাড়ছে আর কতদিন কষ্ট করবে ওরা? এসব পড়াশোনা এখন বিলাসিতা। সংগ্রাম করতে করতে ক্লান্ত আমরা।আন্দোলন করতে করতে হ্যাজ নামাতে নামাতেও ক্লান্ত।কিছুই তো বদলাতে পারছি না।
এই ওরাই হল আমরা শিক্ষিত যুবসমাজ যারা ক্লান্ত কারন কোন কিছু নিশ্চত নয়।একটার পর একটা ফর্ম বেরোয় কয়েকবছর পর, তারপর কবে পরীক্ষা কবে নিয়োগ কিছুই ঠিক নেই। নাহ চাকরীর নাহ অন্য কোন কর্মসংস্থান তারপর স্বজন পোষন দুর্নীতি,জাতিভেদ প্রথা সব কিছু তো আছেই। বাড়ছে এ ডিগ্রি সে ডিগ্রি করার প্রবনতা কিন্ত কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না উপরন্তু সঞ্চয়ের টাকার তহবিল টা নিঃস্ব হয়ে গেলো।নিজেদের যোগ্যতা প্রমান হলো না।
এই ওরাই নিজেদের সমস্ত স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে খুলে বসলো m.a Pasa Chawla,b Ed Chawla,ph.d Chawla বা মিষ্টি ,ফুচকা ওয়ালা কিংবা শ্রমিক শ্রেনীর কোন পেশার সাথে জুড়ে গেলো। শহর যখন খুশিতে মাতে তখন ওরা ছুটে চলে দুটো পয়সার আশায় এ প্রান্তের উৎসব থেকে সে প্রান্তের উৎসব। ওদের ঠাকুর দেখা বন্ধ,ওদের আড্ডা দেওয়া বন্ধ, শখ-আহ্লাদ বন্ধ,স্ত্রী ছেলেমেয়েকে নিয়ে বেরোনো বন্ধ। ওরা খুশি হয় ওদের বানানো খাবার খেয়ে যখন কাস্টমার প্রশংসা করে,ওদের বানানো খাটের ডিজাইন দেখে আরো একটা অর্ডার আসে। ভালো থাকে ওরা যখন দেখে ওদের ইনকাম পরিশ্রম দেখে খুশি হচ্ছে পরিবার। কিন্ত সত্যিই ওদের ভালো থাকা হয় না,হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর আর বই নিয়ে বসা হয়না,তখন মনে পড়ে যায় পাড়ার শ্যামল ওর থেকে 10 নম্বর কম পেয়ে চাকরি করছে, বিমল যে টেনেটুনে পাশ করতো সেও আজ একটা মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরি করে কিন্ত আমি ?তারা আজ সফল আমাকে দেখে মুচকি হাসে যে এত পড়েও কিছু হলো না।সেই এক ই থাকল তোর অবস্থা। যারা কাঠমিস্ত্রী তারা আজ আমার চেয়ে বেশি সফল,গাড়ি-বাড়ি সবই আছে কিন্ত আমার কাছে!
একদিন কাজ না করলে আর পেট চালানোর মতো উপায় নেই।
এমন একটা বয়সে এসে পৌঁছেছি যেখানে না পারি সহজে যে কোন কাজ করতে কারন সেখানে হাজার একটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় আর না পারি আর পড়াশোনার খরচ টানতে পরিবারে মুখের দিকে তাকিয়ে একটা কাপড়ের দোকানে কাজ করি সেখানে হাজারো একটা কাপড়ের ভিড়ে নিজের ডিগ্রি আর মুখটা অত্যন্ত লোকাতে পারি ।
জীবন টা বয়ে চলে নীরবে যে কষ্ট টা ব্যর্থতা টা কাউকে বোঝানো গেলো না।