24/05/2025
“পাঁশকুড়ায় চিপসের প্যাকেট ‘চুরি’র অপবাদে শিশুর আত্মহত্যা — সিভিক ভলান্টিয়ারদের অমানবিকতার বহিঃপ্রকাশ: শবনম মুস্তারি"
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ায় ঘটে যাওয়া হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমরা গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। একটি চিপসের প্যাকেটকে কেন্দ্র করে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কৃষ্ণেন্দু দাসের উপর এক সিভিক ভলান্টিয়ার যেভাবে চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার গায়ে হাত তোলে, জনসমক্ষে হেনস্থা করে এবং চূড়ান্তভাবে যে মানসিক আঘাত সে পায়, তাতে একটি নিষ্পাপ প্রাণ অকালে ঝরে গেল। শিশুটি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে — মৃত্যুর আগে মায়ের উদ্দেশ্যে লিখে গেছে, “মা, আমি চুরি করিনি, কুড়িয়ে পেয়েছিলাম।”
এই ঘটনা কেবল ব্যক্তিগত বর্বরতার উদাহরণ নয় — এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতার নগ্ন চেহারা। সিভিক ভলান্টিয়ারদের কোনও সাংবিধানিক বা বিচারিক ক্ষমতা নেই কাউকে ধরে মারধর বা হেনস্থা করার। অথচ রাজ্যের নানা প্রান্তে কিছু সিভিক সদস্য আজ বেআইনি দমনমূলক শক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রশাসন, পুলিশ এবং রাজনৈতিক পরিসরের নীরবতা তাঁদের বেআইনি কার্যকলাপকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে।
সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অব ইন্ডিয়া এই ঘটনায়— শিশুটির মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছে। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং দীর্ঘমেয়াদি মানসিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করতে বলছে। এবং রাজ্যের প্রতিটি সিভিক ভলান্টিয়ারের ভূমিকা, সীমা ও আচরণবিধি পুনর্মূল্যায়ন করে এক কঠোর বিধিসমূহ আরোপ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
একটি শিশুর মৃত্যু আমাদের সকলের ব্যর্থতা। এই রাজ্য, সমাজ ও শাসকের কাছে জবাবদিহি চাই। কৃষ্ণেন্দুর মতো আর কোনও শিশুর জীবন যেন এমন অমানবিকতার শিকার না হয় — এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
শবনম মুস্তারি
রাজ্য সম্পাদিকা
এসডিপিআই