09/04/2025
প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা, আমি আপনাদের সামনে এক গম্ভীর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই। বিষয়টি হলো:
“ওয়াক্ফ সম্পত্তি ও সাম্প্রতিক ওয়াক্ফ বিল”
এটা শুধু একটা আইন নয়, বরং আমাদের ঈমান, ইসলাম, ও ভবিষ্যত প্রজন্মের উপর এক গভীর আঘাত।
---
*ওয়াক্ফ কী? কেন এটি এত গুরুত্বপূর্ণ?*
ওয়াক্ফ মানে — আল্লাহর নামে কোনো কিছু দান করে দেওয়া, যা শুধুমাত্র দ্বীনের কাজে ব্যবহার হবে।
উদাহরণ: মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান, পানির হাউস, দারুল উলুম, দরগাহ, গরীবের জন্য হসপিটাল ইত্যাদি।
*ওয়াক্ফের মূল বৈশিষ্ট্য:*
একবার ওয়াক্ফ হলে সেটা আর কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়।
সেটা শুধু আল্লাহর রাস্তায় ব্যবহার হবে — চিরকাল।
*এই ব্যবস্থার ফজিলত:*
মুসলিম সমাজে শত শত বছর ধরে দ্বীনি প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসা টিকে আছে এই ওয়াক্ফের মাধ্যমে।
হাজার হাজার আলেম, হাফেজ, মুয়াল্লিম তৈরি হচ্ছে ।
---
*নতুন ‘ওয়াক্ফ বিল’ কী আনছে?*
সম্প্রতি ভারতে একটি নতুন ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। এই বিলে কিছু ভয়ংকর পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা আমাদের জন্য মারাত্মক হুমকি:
১. *অমুসলিমদের ওয়াক্ফ বোর্ডে নিয়োগ:*
মুসলমানদের ওয়াক্ফ সম্পত্তি পরিচালনায় অমুসলিম থাকবে!
তারা সিদ্ধান্ত নেবে কোন মসজিদ থাকবে, কোনটা ভাঙা হবে!
২. *সরকারের ওয়াক্ফ দখলের অধিকার:*
সরকার চাইলে যেকোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারবে।
মাদরাসা বা কবরস্থানের জায়গায় অফিস, মার্কেট বা অন্য কিছু তৈরি করে ফেলতে পারবে।
৩. *মুসলমানদের অধিকার কমে যাবে:*
ওয়াক্ফ বোর্ড সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
মুসলমানদের মতামতের কোন মূল্য থাকবে না।
৪. *ওয়াক্ফ আয়ের হিসাব গোপন:*
মুসলমানরা জানবেও না তাদের দানকৃত সম্পত্তি থেকে আয় কোথায় যাচ্ছে!
---
*এর ভয়াবহ পরিণতি কী হতে পারে?*
মসজিদ-মাদরাসা ধ্বংস হয়ে যাবে।
হাফেজ-আলেম তৈরি বন্ধ হয়ে যাবে।
গরীবদের সাহায্য থেমে যাবে।
মুসলমানদের দানকৃত সম্পদ অন্যদের হাতে চলে যাবে।
ধীরে ধীরে ইসলামিক চিহ্ন মুছে ফেলবার পথ তৈরি হবে।
---
*মুসলিম ভাইয়েরা এটা কেবল একটি আইন না, এটা ঈমান বাঁচানোর লড়াই!*
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জিজ্ঞেস করবেন:
*> "তোমাদের মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান চলে যাচ্ছিল – তখন তোমরা কী করেছিলে?"*
---
*কুরআনের স্পষ্ট সতর্কতা:*
*وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا*
“তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জু (ধর্ম) শক্ত করে ধরো এবং বিভক্ত হয়ো না।”
(সূরা আলে ইমরান – আয়াত: ১০৩)
*وَلَا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ*
“তোমরা যালিমদের প্রতি ঝুঁকিও না, নইলে আগুন তোমাদের ছুঁয়ে ফেলবে।”
(সূরা হুদ – আয়াত: ১১৩)
---
*আমরা কী করবো?*
১. *সচেতনতা ছড়ান:*
নিজে জানুন, অন্যকেও জানান।
২. *মুসলিমদের ঐক্য গড়ে তুলুন:*
আলেম, ছাত্র, শিক্ষক, সংগঠন — সবাই মিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
৩. *দোয়া ও আমল করুন:*
কেঁদে কেঁদে দোয়া করুন, যেন আল্লাহ আমাদের হেফাযত করেন।
৪. *আইনি প্রতিবাদ গড়ে তুলুন:*
মুসলিম আইনজীবীদের নিয়ে আইনি লড়াই শুরু করুন।
---
*দোয়া:*
হে আল্লাহ! আমাদের ওয়াক্ফ সম্পত্তিকে হেফাযত করো।
হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান ও দ্বীনকে রক্ষা করো।
হে আল্লাহ! যারা ইসলাম ধ্বংস করতে চায়, তাদের তুমি হেদায়েত দাও – অথবা ধ্বংস করো।
আমিন।
---
*শেষ কথা:*
মুসলিম ভাইয়েরা, সময় এসেছে জেগে ওঠার।
চুপ থাকলে চলবে না।
কথা বলুন, ঐক্য গড়ুন,
দ্বীন ও ঈমানকে রক্ষা করুন।
জাযাকুমুল্লাহু খইরান।