
27/05/2025
নীচের যে পুরনো ৫০০ টাকার নোটটি দেখছেন, সেটি ছিল এক সময়ের এক সাধারণ পরিবারের ভরসার প্রতীক।
সপ্তাহজুড়ে সংসারের ছোট-বড় সব প্রয়োজন মিটে যেত এই একটুকরো কাগজে। চলত সাপ্তাহিক বাজার, কেনা যেত সন্তানের জন্য বই বা খাতা, মায়ের ওষুধ, বাবার জন্য এক জোড়া স্যান্ডেল, কিংবা মাঝে মাঝে প্রিয়জনের জন্য ছোটখাটো উপহার।
এই টাকায় ছিল স্বস্তি, ছিল আত্মবিশ্বাস—এই টাকাটা থাকলেই মনে হতো, "সব ঠিক আছে"।
সেই ৫০০ টাকায় কেবল পণ্য কেনা হতো না,
কেনা যেত একরাশ নির্ভরতা, পারিবারিক নিশ্চয়তা, আর ভবিষ্যতের জন্য সামান্য হলেও প্রস্তুতির স্বপ্ন।
মানুষ তখন কম চাইত, কম পেত, কিন্তু তাতেই ছিল তৃপ্তি। জীবন ছিল সহজ, অভাব ছিল, কিন্তু অগোছালোতা ছিল না।
টাকাটার গায়ে ছিল সময়ের একধরনের মায়া।
আর এখন?
নিচের যে চকচকে, নিরাপত্তা চিহ্নে ভরা আধুনিক ৫০০ টাকার নোটটি দেখছেন, তা যেন ‘উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি’ বলে দাবি করে। কিন্তু এই নোট হাতে নিয়েও যেন স্বস্তি আসে না।
আজকের দিনে, একই ৫০০ টাকার নোট দিয়ে বাজারে গেলে ফিরতে হয় হতাশা নিয়ে—সবকিছু আগের চেয়ে অনেক বেশি দামী, কিন্তু টাকাটার দাম যেন প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে।
প্রয়োজন বেড়েছে, চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু আয়ের সাথে সেগুলোর ব্যবধান হয়েছে পাহাড়সম।
এখনকার ৫০০ টাকা যেন প্রতিনিয়ত আমাদের মনে করিয়ে দেয়— জীবন আর আগের মতো সহজ নয়। ছোট পরিবার, সীমিত চাহিদা, এবং মিতব্যয়ী জীবনধারার জায়গা নিয়েছে ক্রমবর্ধমান খরচ, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, আর এক ধরনের অদৃশ্য চাপ।
যে টাকাটা একসময় শান্তির নিঃশ্বাস এনে দিত, আজ তা হয়ে উঠেছে দুশ্চিন্তার প্রতীক—কখন যেন ফুরিয়ে যাবে, কখন যেন আর কিছু কেনা যাবে না!
এই দুই ৫০০ টাকার নোট কেবল দুইটি আলাদা সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে না—এরা বলছে আমাদের জীবনের পাল্টে যাওয়া গল্প।
একটা গল্প যেখানে সুখ ছিল সামান্য চাহিদায়, আরেকটা গল্প যেখানে অসুখ বাসা বেঁধেছে সীমাহীন প্রয়োজনের ভিড়ে।
একটি নোট বলছে অতীতের সরলতা ও স্বস্তির কথা,
আর অন্যটি জানাচ্ছে বর্তমানের টানাপোড়েন, হাহাকার আর এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আগমনী বার্তা।
এটা শুধু অর্থমূল্যের পার্থক্য নয়,এটা সময়ের প্রতিচ্ছবি—একটা দেশের, একটা সমাজের, আর লক্ষ-কোটি মানুষের জীবনের নীরব বিবরণ।
কদম রসুল............🖊️