06/08/2025
ভিন্জাতের ছেলেকে বিয়ে, মেয়ের চোখের সামনেই ‘নতুন’ জামাইকে গুলি করে খুন করলেন শ্বশুরমশাই!
প্রেমিক-প্রেমিকা দু’জনেই নার্সিং পড়ুয়া। ছেলেটির বয়স ২৫ বছর। মেয়ে ২০ বছরের। পরিবার তাঁদের সম্পর্ক মেনে নেবে না, এই ভেবে বিয়ে করে নেন যুগলে। কিন্তু বিয়ের পরেই মেডিক্যাল কলেজে হাজির হলেন মেয়ের বাবা। মেয়ের চোখের সামনেই জামাইকে গুলি করে খুন করলেন তিনি। ঘটনাস্থল বিহারের দ্বারভাঙা মেডিক্যাল কলেজ চত্বর। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম রাহুল কুমার। বিহারের সরকারি মেডিক্যাল কলেজের বিএসসি নার্সিং পড়ুয়া ছিলেন। বেশ কিছু দিন আগে তন্নু প্রিয়া ঝা নামে কলেজেরই প্রথম বর্ষের নার্সিং পড়ুয়াকে বিয়ে করেছিলেন যুবক। মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করেছে এবং ছেলে ভিন্জাতের— এই খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন প্রেমশঙ্কর ঝা এবং তাঁর পরিবার। মঙ্গলবার তিনি পৌঁছে যান দ্বারভাঙা মেডিক্যাল কলেজে। মেয়েকে ডেকে পাঠান। জামাইকে ডেকে পাঠান প্রেমশঙ্কর। অভিযোগ, এক-দু’কথার পর রাহুলের উপর গুলি চালান শ্বশুর।
গুলির শব্দে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে। ঘটনাস্থলে ছিলেন রাহুলের বন্ধুরা এবং অন্যান্য ছাত্র। তাঁরা দৌড়ে গিয়ে ঘিরে ধরেন প্রেমশঙ্করকে। শুরু হয় মারধর। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। রাহুলের মৃতদেহ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রেমশঙ্করকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য। প্রৌঢ়ের শারীরিক পরিস্থিতিও আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। তাঁকে পটনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, মাস চারেক আগে বিয়ে করেন রাহুল ও তন্নু। বিয়ের পরে হস্টেলেই থাকতেন যুগলে। মঙ্গলবার সেখানে হঠাৎ হাজির হন তন্নুর বাবা। তরুণীর দাবি, সন্ধ্যায় একটা হুডি পরা লোক এসে তাঁর স্বামীর সঙ্গে হাত মেলান। তখনও তিনি চিনতে পারেননি যে লোকটি তাঁর বাবা। খানিক দেখার পরে বুঝতে পেরে কাছে এগিয়ে যান। তরুণীর কথায়, ‘‘আমার বাবা বন্দুক নিয়ে কলেজে এসেছিল। হাত মেলানোর পর স্বামীর বুকে গুলি করেছে বাবা। আমার চোখের সামনেই ঘটল... আমার কোলে মাথা দিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল রাহুল।’’ হাহাকার করে ওঠেন সদ্য বিধবা। তরুণীর দাবি, স্বামীকে খুনের জন্য বাবা দায়ী হলেও বাপের বাড়ির সকলে মিলে ওই ষড়যন্ত্র করেছেন। তাঁর দাবি, আগেও তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতেও গিয়েছিলেন তিনি। তন্নু বলেন, ‘‘আমরা আদালতেও গিয়েছিলাম। জানিয়েছিলাম আমার ভাইয়েরা স্বামীর ক্ষতির চেষ্টা করছে।’’ হাসপাতালে গুলিকাণ্ডে মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল শুরু হয়েছে নীতীশ কুমারের রাজ্যে। রাহুলের খুনের বিচার চেয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন নার্সিং এবং ডাক্তারি পড়ুয়ারা। দ্বারভাঙার জেলা শাসক কুশল কুমার এবং পুলিশ সুপার জগন্নাথ রেড্ডি ঘটনাস্থলে যান। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পুলিশ সুপার জানান, গুলকাণ্ডে একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। (আনন্দবাজার)