13/08/2024
Father of Modern Science in India
Sir Acharya Jagadish Chandra Bose
জন্ম- 30 November 1858, Bikrampur
মৃত্যু- 23 November 1937 (age 78 years), Giridih
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস, এই বিশ্ব বিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিকের নাম জগতের সবাই জানে, আমরা ধরেই নিচ্ছি আপনিও জানেন, কোথাও পড়েছেন বা কোন ভিডিওতে দেখেছেন,
কিন্তু আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা স্যার জগদীশ চন্দ্র বোস সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা তথ্য জেনে নেব।
আচ্ছা আপনাদের মনে হয় না আমাদের এই বঙ্গ ভুমিতে জন্ম গ্রহন করেছিলেন জগত বিখ্যাত এই বৈজ্ঞানিক, তাঁর বিষয়ে সমস্ত তথ্য জানতে, গর্ব করতে বাঙালি হয়ে। তাহলে আপনার এই প্রতিবেদন টি সম্পূর্ণ পড়া উচিত।
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস তিনি ছিলেন একধারে উদ্ভিদ বিজ্ঞানি এবং অপর ধারে পদার্থ বিজ্ঞানী। তিনিই প্রথম
আবিস্কার করেন উদ্ভিদের প্রান আছে। তিনিই প্রথম রেডিও অয়েভ বা তরঙ্গ অনুসন্ধান করেন। তিনিই প্রথম অত্যন্ত খুদ্র গতিবিধি রেকর্ড করার স্বয়ংক্রিয় রেকর্ডার তৈরি করেন। বিদ্যুৎ তরঙ্গ অনুসন্ধানের জন্য তিনি বিশ্বে প্রথম Semiconductor এর ব্যবহার করেন। উদ্ভিদের বৃদ্ধি পরিমানের জন্য Crescograph আবিস্কার করেন। তিনি বসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন, আরও কত কি,
তিনি তাঁর জিবত কালে অনেক গুলি বই রচনা করেন তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য
"Response in the Living and Non-Living" (১৯০২) এবং "The Nervous Mechanism of Plants" (১৯২৬)
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর অবিভক্ত বাংলার ময়মনসিংহ শহরের এক কায়স্থ পরিবারে জন্ম গ্রহন
করেন। পিতা- ভগবান চন্দ্র বসু, মাতা- বামা সুন্দরী বসু। তাঁর পিতা শ্রী ভগবান চন্দ্র বসু, ছিলেন একজন সিভিল সারভেন্ট তিনি এক সময়
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং পরে Assistant commissioner of Police এর পদে চাকরি করেন। এটি ছাড়াও তাঁর আর একটা পরিচয় ছিল তিনি সেই সময় কার ব্রামহ সমাজের একজন বিশিষ্ট সদস্য।
স্যার জগদীশ চন্দ্র বোস তাঁর বাবার মতোই সিভিল সারভেন্ট হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর বাবার ইচ্ছে ছিল তিনি যেন উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেন কোন মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য, তাই তাঁর সিভিল সারভেন্ট হয়ে ওঠা হলনা। তাঁর ইচ্ছে ছিল ইংল্যন্ডে ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনে Medicine নিয়ে পড়ার কিন্তু তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারনে তাঁর সেটাও হল না।
এর পর তিনি nature science এ ডিগ্রী অর্জন করেন University of Cambridge থেকে ১৮৮৩ সালে।
ডিগ্রী অর্জনের পরে তিনি University of Cambridge এর অধ্যাপকের Recommendation এ Presidency College এ Physics এর অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
এখানে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেই নয়, সেই সময় যেকোনো ইউরোপিয়ান অধ্যাপকের যা বেতন দেওয়া হত তাঁর একের তিন অংশ দেওয়া হত ভারতীয় অধ্যাপক কে। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস তা নিতে চান নি, তিনি এর বিরোধিতা করে বিনা পারিশ্রমিকে
পড়াতে শুরু করেন, অচিরেই তিনি ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তাঁর বাস্তবসম্মত পরিক্ষা নিরিক্ষার জন্য। ফলে কলেজ ম্যানাজম্যান্ট বাধ্য হয়ে তাকে সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক দিতে শুরু করে। তিনি তাঁর সমস্ত অর্থ তাঁর পরিক্ষা নিরিক্ষা এবং ভগিনি নিবেদিতার সামাজিক কাজে ব্যয় করতেন।
Microwave radio research
১৮৯৪ সালে এক ব্রিটিশ পদার্থবিদ Oliver Lodge এর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পায় যাতে তিনি Radio waves transmit এবং Detect করার পদ্ধতি জানিয়েছিলেন সেখান থেকেই স্যার জগদীশের Radio waves সম্পর্কে আগ্রহ বাড়তে থাকে। তিনি ১৯৮৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্সি কলেজে একটি ২০sq ফুট এর ঘরে তাঁর পরিক্ষা নিরিক্ষা শুরু করে দেন। তাঁর পরিক্ষা নিরিক্ষার প্রধান লক্ষ ছিল
আলোর তরঙ্গ পরিমাপ করার পদ্ধতি আবিস্কার করা, যা Long waves detector দ্বারা পরিমাপ করা সম্ভব নয়।
বোস এর পরিক্ষা প্রথমে প্রেসিডেন্সির কেও আমল দিতে চায় নি, তাদের মতে বোস এর এই পরিক্ষা নিরিক্ষা ছেড়ে ছাত্রদের পড়ানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। বোস-কে সি সময় সপ্তাহে ২৬ ঘণ্টার লেকচার দিতে হত।
পরবর্তী কালে যখন তাঁর পরিক্ষা বৃহত্তর বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় এর মধ্যে আলোচনা হয় তখন সেই সময়কার Lieutenant- Governor od Bengal বোস এর জন্য বাৎসরিক 2৫০০ টাকার একটি ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরে অবশ্য তা বাতিল করা হয়
বোস যখন ইউনিভার্সটি মিটিং এ ইংরেজ সরকারের পলিসির বিরুদ্ধে ভোট দেন।
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু ১৮৯৫ সালের May মাসে তাঁর প্রথম Scientific Paper “ On polarisation of electric rays by double – refracting crystal” জমা করেন এসিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গলে। সেই বছরেই অক্টোবরে তিনি তাঁর দ্বিতীয় Scientific Paper জমা করেন রয়্যাল সোসাইটি অফ লন্ডন এ। আবার সেই বছরেই ডিসেম্বরে The Electrician পত্রিকায় তাঁর Scientific Paper প্রকাশিত হয় প্রসঙ্গত তিনিই প্রথম ভারতীয় জার প্রতিবেদন The Electrician পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে কলকাতার টাউন হলে এক সর্ব সাধারন সভায় স্যার জগদীশ চন্দ্র বোস দেখিয়েছিলেন কীভাবে খুব সুক্ষ তরঙ্গ মানুষের দেহের মধ্য থেকে পার হয়।
তিনি ইয়োরোপের বিজ্ঞানীদের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ৬ মাসের জন্য লন্ডনে যান সেখানে তাঁর সাথে দেখা হয় ইতালিয় বৈজ্ঞানিক Guglielmo Marconi র সাথে (Guglielmo Marconi wireless telegraphy আবিস্কার করেন) তাছাড়া William Thomas, 1st Baron kelvin প্রমুখের সাথেও দেখা হয়) লন্ডনে থাকা কালিন university of London তাকে Doctor of Science উপাধি দেয়।
Place in radio development
বোস এর radio microwave optics প্রকৃতি কে বোঝার জন্য ব্যবহার করেছিলেন, রেডিওর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে তাঁর বিন্দু মাত্র আগ্রহ ছিল না, তিনি কেবল প্রকৃতি কে আরও কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করার উদ্দেশ্যে radio microwave ব্যবহার করছিলেন,
যদিও তাঁর Radio Communication এ আগ্রহ ছিল না তবুও তাঁর পরিক্ষা থেকে প্রভাবিত হয়ে অনেক বৈজ্ঞানিক Radio কে একটা Communication এর মাধ্যম রুপে আরও উন্নত করতে থাকে।
তিনি তাঁর আবিস্কারের কোন patent করেন নাই।
তিনি প্রথম ব্যাক্তি যিনি Radio Waves detect করার উদ্দ্যেশে Semiconductor ব্যবহার করেছিলেন।
Plant research
জগদীশ চন্দ্র বোস-এর গবেষণায় উদ্ভিদবিদ্যায় এক অভাবনীয় গতি দেখা গিয়েছিল যা অনস্বীকার্য, তিনি প্রথম প্রত্যক্ষ করেছিলেন উদ্ভিদ সূর্যের দিকে গমন করে, উদ্ভিদ তো আর আমাদের মতো হাঁটা চলা করতে পারে না কিন্তু সে তাঁর মতো করে গমন করে আলোর অভিমুখে।
তিনি উদ্ভিদের উপর ঋতু পরিবর্তন এর প্রভাব, উদ্ভিদের উদ্দিপনায় রাসায়নিক প্রভাব, তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে গভীর অধ্যয়ন ও পর্যবেক্ষণ করেছেন।
প্রতিবেদন শেষে বলা যায় স্যার জগদীশ চন্দ্র বোস পরাধীন ভারতে থেকেও যে আশ্চর্য প্রতিভা দেখিয়েছিলেন তাঁর জন্য তাকে কোটি কোটি প্রনাম। তিনি বাঙ্গালিকে বিজ্ঞান চর্চা করতে উদ্ভুদ্দ করেছেন। তাঁর Research Paper নিয়ে অনেক বিজ্ঞানী আলোচনা করেছেন। তাই তাকে Father of Morden Science বলা হয়।