09/09/2025
এক্স পোস্টে উত্তাল চাঁচল কলেজ
চাঁচল কলেজে মোদি শাহ রবীন্দ্রনাথের ছবিতে আগুন অভিযোগ!
বিশ্বজিৎ সাহা, মালদহ
চাঁচল: সেনার আওতাধীন জমিতে কলকাতায় তৃণমূলের প্রতিবাদ মঞ্চ খুলে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মালদার চাঁচল কলেজ ইউনিট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) উদ্যোগে গত মঙ্গলবার বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ পালিত হয়। বিক্ষোভকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র ছবির পাশাপাশি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিতেও আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে।ঘটনার ভিডিও রবিবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। আমাদের সংবাদ পত্রিকা ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি, তবু কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বালুরঘাটের সাংসদ ডঃ সুকান্ত মজুমদার এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “অশিক্ষা, বর্বরতা ও ঔদ্ধত্য চরম সীমায় পৌঁছালে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটতে পারে!” তাঁর অভিযোগ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তথাকথিত ভাষা আন্দোলনের নামে যে ভণ্ডামি চলছে, রবীন্দ্রনাথের ছবিতে আগুন ধরানো তার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ। এটি বাঙালির সংস্কৃতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।”
বিক্ষোভের দিন কলেজ গেটের সামনে টিএমসিপি সমর্থকেরা মনীষীদের ছবি হাতে নিয়ে স্লোগান দেন। উপস্থিত ছাত্রদের একাংশের দাবি, সেদিনকার কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন জেলা টিএমসিপি সাধারণ সম্পাদক বাবু সরকার, চাঁচল কলেজ ইউনিট সভাপতি নাসিমুল হক সোহেল, কোর কমিটির সদস্য বাপি আলি, রকি হোসেন, ফাইয়াজ আলম, মিরাজ হোসেন প্রমুখ।
অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়। বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা কোন বর্বর রাজ্যে বাস করছি, এই ঘটনা তার প্রমাণ। তৃণমূল মুখে বাংলার কথা বলবে আর রবীন্দ্রনাথের ছবিতে আগুন দেবে—তা হয় না। রাজ্যের ঐতিহ্য ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে। অবিলম্বে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।”অন্যদিকে টিএমসিপি-র জেলা সভাসদ প্রসূন রায় জানান, “আমার কাছে অভিযোগ এসেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মনে হয় না কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করবে। তবে ইচ্ছাকৃত হোক বা অনিচ্ছাকৃত—ঘটনাটি কাম্য নয়। সত্যিই যদি এমন ঘটে থাকে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এই বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি। ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় স্থানীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি মহলে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, “রবীন্দ্রনাথের ছবি দাহের অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার বাইরে গিয়ে বাঙালির আবেগকে নাড়া দিয়েছে।” পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট পদক্ষেপের খবর মেলেনি। ঘটনায় উত্তাল চাঁচল মহকুমা।