Amar leykha.

Amar leykha. মনের খুশিতে লেখা

অপারেশন থিয়েটারের দরজা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেল।বাইরে অস্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল স্বামী, পরিবারের সবাই। ভেতরে একজন নারী—যে আজ ...
18/09/2025

অপারেশন থিয়েটারের দরজা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেল।
বাইরে অস্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল স্বামী, পরিবারের সবাই। ভেতরে একজন নারী—যে আজ নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ লড়তে যাচ্ছে।

শরীরে অজ্ঞান করার ওষুধ ঢুকতেই চোখ ধীরে ধীরে ভারী হয়ে এলো তার। হঠাৎ করে কানে এলো ডাক্তারদের শব্দ—“বেবি আউট!”
শিশুর প্রথম কান্না যেন মুহূর্তেই সব যন্ত্রণা ঢেকে দিল। কিন্তু সেই কান্নার পেছনে যে কতটা ত্যাগ, সেটা হয়তো কেউ বুঝতেই পারে না।

অপারেশনের পরে পেট কেটে সেলাই দেওয়া হলো।
কিন্তু মাত্র ছয় ঘণ্টা পরেই নার্স এসে বললো—
“আপনাকে উঠতে হবে।”

তীব্র ব্যথায় শরীর কাঁপছে, সেলাইয়ের জায়গাটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে, তবুও দাঁড়াতে হলো। কারণ নতুন অতিথিকে তো বুকে নিতে হবে, তাকে দুধ খাওয়াতে হবে।

মায়ের চোখে তখন একদিকে অশ্রু, অন্যদিকে ভালোবাসার আলো।
তিনি জানেন—শরীরটা ভীষণ দুর্বল, প্রতিটি পা ফেলার সাথে সাথে মনে হচ্ছে বুক ফেটে যাবে যন্ত্রণায়। তবুও শিশুর ছোট্ট কান্না শুনলেই সবকিছু ভুলে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেন বুকের মাঝে।

এই পুরো যন্ত্রণার মাঝেও নতুন জীবনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয় একজন মা।
রাত জেগে কাঁদতে থাকা শিশুকে কোলে নিয়ে দোলাতে থাকে, নিজের ক্ষত উপেক্ষা করে বুকের দুধ খাওয়ায়।
অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক, সেলাইয়ের টান, শরীরের অসহ্য যন্ত্রণা—এসবের মাঝেও তার হাসি শুধুই সন্তানের জন্য।

এটাই তো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ত্যাগ।
এটাই সিজারিয়ান মায়ের মহত্ত্ব।

তুমি যদি একজন সিজারিয়ান মা হও—
জেনে রেখো, তুমি অদ্ভুত শক্তিশালী।
তুমি কষ্টের পাহাড় বুকে নিয়ে, হাসি দিয়ে জীবনকে আলিঙ্গন করো।
তুমি সত্যিই অসাধারণ 🤗🤗🤗🤗

28/08/2025

আজ ১৭ নম্বর আদালতের এজলাসে এক অদ্ভুত মামলা উঠেছে।

এক নারী, বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই, হঠাৎ করে জানিয়ে দিলেন—তিনি আর সংসার করতে চান না। তিনি চুপচাপ নিজের মত বাঁচতে চান। সব সম্পর্ক থেকে নিঃশর্ত মুক্তি চান। কিন্তু বিপরীতে, তার স্বামী এই বিচ্ছেদ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। তার যুক্তি—মেয়ে বড় হয়েছে, সংসার অনেকটাই গুছেছে, এখন সময় শুধু দু’জন মিলে একসাথে কাটানোর। তবু অনুপমা, সেই নারীর নাম, তাঁর নিজের মত করে বাঁচতে চাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল।

শঙ্খনীল আর অনুপমা—এই দম্পতির গল্প অনেকেই জানে। সমাজে তারা ‘সুখী দম্পতি’র উদাহরণ হিসেবে পরিচিত। পঁচিশ বছরের সংসার, একটি মেয়ে—সব মিলিয়ে বাইরের চোখে নিখুঁত পরিবার। অথচ, আজ অনুপমা দাঁড়িয়েছেন বিচ্ছেদের জন্য, কোর্টের রায় চেয়ে।

বিচারক প্রশ্ন করেন, “আপনার স্বামী কি অন্য কোনো সম্পর্কে জড়িত?”

অনুপমার হাসি মিশ্রিত উত্তর, “আজও ওর জীবনে আমি ছাড়া কেউ নেই। আমিই ওর সবচেয়ে প্রিয়।”

“তাহলে কি কোনো নির্যাতন? গায়ে হাত তোলেন?”

“না। ওরকম কিছু না। আমি নিজেও আয় করি, একজন কর্মজীবী নারী—আমার ওপরে অত্যাচার করার সাহস হয়তো ওর হতো না,” বললেন অনুপমা।

“তাহলে কেন?” — বিচারকের এই প্রশ্নে যেন জমে থাকা এক নদীর জল একসাথে বয়ে গেল।

“আজকের ভালোটা দেখেই আপনি বিচার করতে চাইছেন, বিচারক মহাশয়। কিন্তু কেউ দেখেছে আমার গত পঁচিশ বছরের ক্লান্তি, প্রতিটি দিনের অভিমান, প্রতিটি রাতে চুপচাপ কাঁদা? আমার স্বামী একজন ভালো মানুষ, ভালো বাবা, ভালো অফিসার। কিন্তু ভালো প্রেমিক? না, সে কোনোদিন হতে পারেনি।

আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম। বিশ্বাস ছিল, এই সম্পর্কটা হবে বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, যত্নে মোড়া। কিন্তু বিয়ের পর সেই প্রেমিক হারিয়ে গেল। বউ হওয়া মানে রান্না শেখা, কাজের ভার নেওয়া, শাশুড়ির অপমান সহ্য করা—এসবই যেন ‘স্বাভাবিক’ হয়ে গেল। আমি তখনও আয় করতাম, তবু সংসারের প্রতিটি দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছিলাম এই আশায়—প্রেম ফিরে পাবো। কিন্তু তেমন কিছুই হলো না। শাশুড়ির গঞ্জনা, শারীরিক কষ্ট, অফিস আর ঘরের চাপ—সবকিছুর মাঝেও আমি চাইতাম, আমার স্বামী একটিবার পাশে এসে বলুক, ‘চলো, আজ দুজন মিলে কাজ করি।’ কিন্তু সে চুপ থেকেছে।

সন্তান হওয়ার পর শরীরে কিছু বদল এল, চোখে ঘুমের অভাবে কালি, গায়ে ক্লান্তি—তখন আমি বুঝলাম, তার দৃষ্টিতে আমি কেমন যেন অচেনা। অফিসের চটকদার সহকর্মী তার কাছে হয়ে উঠলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি শুধু এক সংসার সামলানো মানুষ, প্রেমিকা নই।

একবার নয়, বহুবার বলেছি, আমি আবার প্রেম পেতে চাই, তোমার প্রেমিকা হয়ে থাকতে চাই। সে শোনেনি। আমি তবুও থেকেছি। কারণ, মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে। বাবার স্নেহ থেকে তাকে বঞ্চিত করতে চাইনি। কিন্তু আমার স্বামী? সে কি একবারও আমার অভিমান বুঝতে চেয়েছে?

সে আমাকে দিয়েছে “সবচেয়ে ভালো বউ”র খেতাব, বন্ধুদের সামনে আমার ‘সহ্যশক্তি’র প্রশংসা করেছে। কিন্তু নিজের ভালোবাসাটা কোনোদিন তুলে দেয়নি।

আমি তার একটিবার পাশে থাকাও পাইনি, একটিবার জিজ্ঞেস করাও পাইনি—‘তুমি কেমন আছো?’

সে নিজের মতো জীবনের স্বাদ নিয়েছে—বন্ধুদের সাথে ঘোরা, রাত জেগে আড্ডা, নিজের সময়কে নিজের মতো করে কাটানো। কিন্তু আমার সময়?

আমি পঁচিশ বছর সংসার করেছি, তেইশ বছর মায়ের দায়িত্ব পালন করেছি, নিজের জীবনকে ফুরিয়ে দিয়েছি যেন। বিনিময়ে আমি পেয়েছি—শূন্যতা।

তবে আজ আর না। আজ আমি শুধু একজন ‘বউ’ হয়ে বাঁচতে চাই না। আমি স্বাধীন মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই। আমি সকালে সূর্য দেখার সময় চাই, রাতে ডায়েরির পাতায় নিজের অনুভব লেখার সময় চাই। আমি চাই না, ভোরে উঠে কারো জন্য চা বানাতে গিয়ে আমার ঘুম কেটে যাক।

আমি একটু সুখ চাই, নিজের মতো করে। একটু শান্তি চাই, যেটা কাউকে বোঝাতে হয় না। একটু ভালোবাসা চাই—নিজের জন্য।

বেশি কিছু চেয়েছি কি আমি?

নারী হয়ে জন্মেছি বলে সারাজীবন দিয়ে যাব, আর কিছুই ফিরবে না? মনুষ্যজন্ম পেয়েছি বলেই না এই পৃথিবীর স্বাদ নিতে চাই।

তাই, আমি নিজেকে মুক্ত করতে চাই। সম্পর্কের মেকি দায় থেকে নয়, জীবনের প্রতি নতুন ভালোবাসার খোঁজে।”

অনুপমার কথা শুনে পুরো আদালত স্তব্ধ। এমন সৎ, এমন গভীর হৃদয়ের কথা শুনে কিছু বলার থাকে না কারোরই। বিচারকের চোখেও যেন জল।

এই দাবি কি অনুপমার একার? না কি, এই গল্পটা পৃথিবীর অনেক অনুপমার?

কারও জানা নেই।

তবে এটুকু বোঝা যায়—জীবনের প্রতিটি সম্পর্কেই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া ভালোবাসা না থাকলে, তা শুধু দায়িত্ব হয়ে পড়ে। আর দায়িত্বে মন তুষ্ট হলেও, আত্মা হয়তো চুপিচুপি কাঁদে...

লেখা সংগৃহীত









Address

Raiganj

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Amar leykha. posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category