11/07/2025
বাবলু তাড়াতাড়ি খেয়ে নে বাবা
আমাকে আবার বাবুর বাড়ি কাজ করতে যেতে হবে
আজ আবার বাবুর বাড়িতে অনেক লোকজন আসবে
তাই একটু তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে ।
আয় বাবা তাড়া তাড়ি খেয়েনে,
আসলে রিতাদেবী আর তার ছেলে বাবলু দুজন থাকে
রিতা দেবীর স্বামী মারা যাওয়া রিতাদেবী এখন লোকের বাড়ির
কাজ করে ছেলেমানুষ করছেন ।
রিতা দেবীর অনেক স্বপ্ন তাই ছেলেকে অনেক কষ্ট করে
পড়াশোনা শেখাচ্ছেন, ছেলে যাতে মানুষের মতন মানুষ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে ।
রিতাদেবী কাজে বেরোনোর সময় বাবলুকে বলে ভালো করে
দরজা লাগিয়ে রাখবে,
আর ঘর থেকে একদমই বেরোবে না ।
তখন বাবলু বলে
ও মা আজকে কাজ থেকে ফেরার সময়
আমার জন্য দুটো রসগোল্লা আনবে,
রিতাদেবী মনে মনে ভাবে বাবুর বাড়িতে তো আজকে অনেক লোকজন আসবে ওখানে নিশ্চয়ই অনেক মিষ্টি আনবে, ওখান থেকে ছেলেটার জন্য দুটো মিষ্টি না হলে আমি চেয়ে নেব ।
তারপর রিতাদেবী বলেন
হ্যাঁ বাবা আমি তোমার জন্য মিষ্টি আনবো
তুমি দুষ্টুমি করবে না
ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও ।
এই বলে রিতাদেবী কাজে চলে যান।
রিতা দেবী সকালে ছেলেকে খাইয়ে ঘরের মধ্যে রেখে দুটো বাড়ি কাজে চলে যান।আর ফিরেন বিকেলে ।
বাবুর বাড়িতে কোন সময় বাসি খাবার থাকলে বা খাওয়ার বেঁচে গেল খাওয়ার গুলো রিতা দেবীকে দিয়েদেন। আর রিতদেবী খুব খুশি সঙ্গে ওই খাবার নিয়ে এসে মা ছেলে মিলে খান,সেই মতো আজও কিছু খাবার দিয়েছে বাবুর বাড়ি থেকে তাই খুশি হয়ে ছেলের জন্য নিয়ে ফিরছিলেন ।
কিন্তু রাস্তার মধ্যে মনে পড়ল তার ছেলে বাবলু তাকে রসগোল্লা নিয়ে বাড়ি ফিরতে বলেছিল কিন্তু আজকের মধ্যে রসগোল্লা তো ছিল না,
তাই ভাবল সামনের দোকান থেকে দুটো রসগোল্লা নিয়ে নেই বলব পয়সা বাকি রাখতে, পরে দেবো
কিন্তু দোকানদার কে বোলাতে
দোকানদার রাজি হয় না ।
রিতাদেবী দেখেন দোকানের সামনে একটা নোংরা কড়া পড়ে আছে,
রিতা দেবী তখন দোকানদারকে বলে
আমি যদি নোংরা কড়া টা পরিষ্কার করে দিই
তাহলে কি তুমি আমাকে দুটো রসগোল্লা দেবে?
দোকানদার কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলল আচ্ছা
ঠিক আছে..
রিতা দেবী দোকানের নোংরা কড়া টা ভালোভাবে পরিষ্কার করে দিয়ে ছেলের জন্য দুটো রসগোল্লা নিয়েবাড়ি আসেন ।
রিতাদেবী তার সামর্থ মতো ছেলের সমস্ত শখ আল্লাদ পূরণ
করার চেষ্টা করতেন,
এইভাবে বাবলু বড় হতে থাকে.....
বেশ কয়েক বছর পর ,,,,,,,,,,,,,,
এখন বাবলু একটা ভালো চাকরি করে, মা কে আর আগের মতো বাবুর বাড়ি কাজ করতে দেয় না।
মাছেলে খুব আনন্দে থাকে..
বাবুলু একদিন জানায় সে একটা মেয়েকে ভালবাসে এবং তাকে সে বিয়ে করতে চায়..
রিতা দেবী এক কথায় রাজি হয়েযায় আর বাবলুকে বলেন তুমি তাহলে বিয়টা করে নাও ,তাই শুনে বাবলু খুব খুশি হয়েযায় ।
ছেলে ভালো চাকরি করে তাই মেয়ের বাড়িতে ও রাজি থাকায় দুজনের বিয়ে হয়েযায়।
নুতুন বৌমা পেয়ে রিতা দেবী খুব আনন্দে দিন কাটাতে থাকেন
কিন্তু ভগবানের বোধহয় অন্যরকম ইচ্ছে ছিল
হঠাৎ রিতা দেবী চোখের দৃষ্টি হারায় রিতা দেবী এখন চোখে আর কিছু দেখতে পান না, তাই রিতা দেবীর সব কাজ বৌমাকে করতে হয়, আর বৌমা ও মাঝে মাঝে রেগে জায় আর রিতা দেবীকে বলেন
বয়স তো হয়েছে আর চোখেও দেখতে পান না
এবারে তো স্বর্গে যেতে পারেন..
কেনো এতো জলাছেন বলুন তো,
রিতাদেবী কিছু না বলে না।
শুধু কান্না করে থাকে,
রিতা দেবীর বৌমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে
বৌমা ভাবে রিতা দেবীকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে গাড়ি করে অনেক দূরে ছেড়ে চলে আসবো তাহলে উনি আর বাড়ি ফিরতে পারবেন না,
আর আমারও একটু বেঁচে যাবো।
আর বাবলুকে বলব মা কোথায় চলে গেছে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তো যেমন বাবা তেমন কাজ সত্যি সত্যি রিতা দেবীকে অনেক দূরে ছেড়ে বাড়ি চলে আসে বৌমা।
আর এদিকে বাবলু সন্ধ্যায় ,বাড়ি এসে মাকে অনেক খোঁজা খুঁজি করে কিন্তু পায়না।
আর কাগজেও বিজ্ঞাপন দেয়,
তাও কোনো খোঁজ পায়না।
এই ভাবে কেটে যায় ছয় মাস ....
তারপর বাবলু কিছু দরকারী কাজের জন্য শহরের বাইরে জায় আর বাড়ি ফেরার সময় কিছু ফল কিনবেন বলে ফল দোকানে জায় আর ফল দোকানে গিয়ে দেখেন
তার মা রিতাদেবী দোকানে দোকানে ভিক্ষা করছে,
বাবলু তখন মা বলে জড়িয়ে ধরে
আর রিতা দেবী কিছুক্ষণ পর বুজতে পারে যে
এটা তার ছেলে বাবলু
তখন রিতাদেবীও ছেলেকে জড়িয়ে ধরে খুব কান্না করতে থাকে আর সব বলে বৌমা কি ভাবে তাকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে ছেড়ে চলে গেছে....
বাবলু তখন মা কে নিয়ে বাড়িতে ডুকলে রিতা দেবীর স্ত্রী সম্পা অবাক হয়ে যায়,
আর বাবলু ঘরে ঢুকেই সম্পাকে ঠাস ঠাস করে গালে চড় মারে আর সম্পা তখন রিতা দেবীর পা ধরে ক্ষমা চায় আর বলে আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দিন.......
বাবলু চেয়েছিল সম্পকে পুলিশে দেওয়ার জন্য
কিন্তু...
রিতা দেবী তার একমাত্র বৌমাকে পুলিশে দিতে চাননি,তাই
ক্ষমা করে দেন।
এর পর জীবনের বাকি দিন গুলো ছেলে বৌমার সঙ্গে আনন্দে দিন কাটায়......
✍️কলমে - সুষমা বাগ প্রধান
কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন
কেউ শেয়ার করলে নাম সহ শেয়ার করবেন
প্রতিনিয়ত এরকম লেখা পেতে প্রোফাইলটি ফলো করে রাখতে পারেন 🙏🏼
#সংগৃহীত
゚
#অনুগল্প
সংগৃহীত