কবিতাবাড়ি

কবিতাবাড়ি শব্দ অনুভূতি আর আবেগ এর ইট দিয়ে বানানো বাড়ি -----কবিতাবাড়ি 🍃

15/02/2025

বিদায় ....

#প্রতুলমুখোপাধ্যায়
#কোলকাতার
#বাংলা #বাংলাদেশ
#বাঙালি

ট্রেন    শুভ দাশগুপ্ত চার বুড়ো মানুষরোজ বিকেলে আগরপাড়া স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে অলস বসে থাকে, গল্প করে, একদিন যখন...
04/01/2025

ট্রেন
শুভ দাশগুপ্ত

চার বুড়ো মানুষ
রোজ বিকেলে আগরপাড়া স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে অলস বসে থাকে, গল্প করে, একদিন যখন বয়স কম ছিল, কাজ ছিল তখনকার গল্প, স্মৃতি। ট্রেন আসে, ট্রেন যায় ভিড় ঠাসা ট্রেন হাজার মানুষ বুকে নিয়ে চলে যায় রাণাঘাট, শান্তিপুর, নৈহাটি, কৃষ্ণনগর ॥

প্রথম বুড়ো ভাবে।

একদিন বয়স ছিল। রোজ সকালে ধরতাম আটটা বিয়াল্লিশ। ট্রেনের কামরায় ডেলি প্যাসেঞ্জারির আড্ডা। তাস, রাজনীতি মাঝে মধ্যে সদলে বিয়ে বাড়ি অথবা পিকনিক আজো আটটা বিয়াল্লিশ আসে, যায়। আমারই নাম নেই আর।

দ্বিতীয় বুড়ো ভাবে:

পূজোর সময় তখন কেমন যেতুম প্রতি বছর বেড়াতে। বউ বাচ্চা নিয়ে পুরী, জয়পুর, আগ্রা, মথুরা। কতকাল আর যাইনা কোথাও। যাওয়া হয় না।

তৃতীয় বুড়ো ভাবে:

ভালই আছি। ছেলে আর ছেলের বউ যত্ন-আত্তি করে। তবু ছেলের মায়ের ছবির সামনে দাঁড়ালেই মনে পড়ে বড়দিনের সময় বেশ কবার নিয়ে গিয়েছিলাম ওকে কলকাতার সাহেবপাড়ায়। ট্যাক্সি করে ঘুরিয়েছিলাম পার্ক স্ট্রিট। চৌরঙ্গী-

কতকাল কলকাতা দেখি না। বাতের ব্যথাট্যো বেড়েছে।

চতুর্থ বুড়ো ভাবে:

কয়লার ইঞ্জিন ছিল। ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে চোখ রাখলে চোখে কয়লার গুঁড়ো ঢুকত। তবে, ভারি সুন্দর ছিল সেই আওয়াজ-ঝিক ঝিক ঝিক ঝিক কোথায় যে গেল সেই সব দিন।

চার বুড়ো বিকেলের নিভে আসা আলোর নিচে চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের সিমেন্টের বেঞ্চিতে বসে প্রতিদিন ভাবে... প্রতিদিন ট্রেন যায়, ট্রেন আসে।

কাল দেখলাম তিন বুড়ো

সত্যিকারের ট্রেন এক বুড়োকে নিয়ে গেছে অচেনা ইস্টিশানের দিকে।

তিন বুড়োর কানে বাজছে ঝিক ঝিক

#শুভ #দাশগুপ্ত #কোলকাতার

Soumyajoti Sen

রূপসাগরে ডুব দিয়েছি       অরূপ রতন আশা করি;ঘাটে ঘাটে ঘুরব না আর       ভাসিয়ে আমার জীর্ণ তরী।             সময় যেন হয় রে এ...
03/01/2025

রূপসাগরে ডুব দিয়েছি

অরূপ রতন আশা করি;

ঘাটে ঘাটে ঘুরব না আর

ভাসিয়ে আমার জীর্ণ তরী।

সময় যেন হয় রে এবার

ঢেউ খাওয়া সব চুকিয়ে দেবার,

সুধায় এবার তলিয়ে গিয়ে

অমর হয়ে রব মরি।



যে গান কানে যায় না শোনা

সে গান সেথায় নিত্য বাজে,

প্রাণের বীণা নিয়ে যাব

সেই অতলের সভামাঝে।

চিরদিনের সুরটি বেঁধে

শেষ গানে তার কান্না কেঁদে,

নীরব যিনি তাঁহার পায়ে

নীরব বীণা দিব ধরি।




#খরবায়ুবয়বেগে Soumyajoti Sen
কবিতাবাড়ি

খরবায়ু বয় বেগে,   চারি দিক ছায় মেঘে,            ওগো নেয়ে, নাওখানি বাইয়ো।        তুমি কষে ধরো হাল,   আমি তুলে বাঁধি পাল--...
31/12/2024

খরবায়ু বয় বেগে, চারি দিক ছায় মেঘে,

ওগো নেয়ে, নাওখানি বাইয়ো।

তুমি কষে ধরো হাল, আমি তুলে বাঁধি পাল--

হাঁই মারো, মারো টান হাঁইয়ো॥

শৃঙ্খলে বারবার ঝন্‌ঝন্‌ ঝঙ্কার, নয় এ তো তরণীর ক্রন্দন শঙ্কার--

বন্ধন দুর্বার সহ্য না হয় আর, টলমল করে আজ তাই ও।

হাঁই মারো, মারো টান হাঁইয়ো॥

গণি গণি দিন খন চঞ্চল করি মন

বোলো না, 'যাই কি নাহি যাই রে'।

সংশয়পারাবার অন্তরে হবে পার,

উদ্‌বেগে তাকায়ো না বাইরে।

যদি মাতে মহাকাল, উদ্দাম জটাজাল ঝড়ে হয় লুণ্ঠিত, ঢেউ উঠে উত্তাল,

হোয়ো নাকো কুণ্ঠিত, তালে তার দিয়ো তাল-- জয়-জয় জয়গান গাইয়ো।

হাঁই মারো, মারো টান হাঁইয়ো॥

#খরবায়ুবয়বেগে










কৃষ্ণকলি        - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠেকালো মেয়ের ...
28/12/2024

কৃষ্ণকলি
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,
মুক্তবেণী পিঠের ‘পরে লোটে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

ঘন মেঘে আঁধার হল দেখে
ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই,
শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে
কুটির হতে ত্রস্ত এল তাই।
আকাশ-পানে হানি যুগল ভুরু
শুনলে বারেক মেঘের গুরুগুরু।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

পূবে বাতাস এল হঠাত্‍‌ ধেয়ে,
ধানের ক্ষেতে খেলিয়ে গেল ঢেউ।
আলের ধারে দাঁড়িয়েছিলেম একা,
মাঠের মাঝে আর ছিল না কেউ।
আমার পানে দেখলে কিনা চেয়ে,
আমি জানি আর জানে সেই মেয়ে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

এমনি করে কাজল কালো মেঘ
জ্যৈষ্ঠমাসে আসে ঈশান কোণে।
এমনি করে কালো কোমল ছায়া
আষাঢ়মাসে নামে তমাল-বনে।
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে
হঠাত্‍‌ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
আর যা বলে বলুক অন্য লোক।
দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
মাথার পরে দেয়নি তুলে বাস,
লজ্জা পাবার পায়নি অবকাশ।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

এত হাসি কোথায় পেলে-- জসীমউদ্দীনএত হাসি কোথায় পেলে এত কথার খলখলানি কে দিয়েছে মুখটি ভরে কোন বা গাঙের কলকলানি। কে দিয়েছে রঙ...
28/12/2024

এত হাসি কোথায় পেলে

-- জসীমউদ্দীন

এত হাসি কোথায় পেলে
এত কথার খলখলানি
কে দিয়েছে মুখটি ভরে
কোন বা গাঙের কলকলানি।

কে দিয়েছে রঙিন ঠোঁটে
কলমী ফুলের গুলগুলানি।
কে দিয়েছে চলন বলন
কোন সে লতার দোল দুলানী।

কাদের ঘরে রঙিন পুতুল
আদরে যে টইটুবানি।
কে এনেছে বরণ ডালায়
পাটের বনের বউটুবানী।
কাদের পাড়ার ঝামুর ঝুমুর
কাদের আদর গড়গড়ানি
কাদের দেশের কোন সে চাঁদের
জোছনা ফিনিক ফুল ছড়ানি।

তোমায় আদর করতে আমার
মন যে হলো উড়উড়ানি
উড়ে গেলাম সুরে পেলাম
ছড়ার গড়ার গড়গড়ানি।

জসীমউদ্দীনের "এত হাসি কোথায় পেলে" কবিতাটি মজার ছলে লেখা একটি প্রেমের কবিতা। এখানে কবি প্রিয়জনের হাসি, কথা, সৌন্দর্য ও চলনবলনের প্রশংসা করেছেন কাব্যিক উপমায়। প্রিয়তমার রূপ, সরলতা এবং প্রাণবন্ততায় মুগ্ধ কবি তার প্রতি ভালোবাসা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। কবিতাটি প্রকৃতি ও রোমান্সের এক অনবদ্য মিশ্রণ।









মেঘ বলল যাবি ?       – শুভ দাশগুপ্তমেঘ বলল যাবি ?অনেক দূরে গেরুয়া নদীঅনেক দূরের একলা পাহাড়অনেক দূরের গহন সে বনগেলেই দেখত...
28/12/2024

মেঘ বলল যাবি ?
– শুভ দাশগুপ্ত

মেঘ বলল যাবি ?

অনেক দূরে গেরুয়া নদী

অনেক দূরের একলা পাহাড়

অনেক দূরের গহন সে বন

গেলেই দেখতে পাবি , যাবি?

জানলা দিয়ে মুখ ঝুকিয়ে

বলল সে মেঘ

যাবি ? আমার সঙ্গে যাবি ?

দিন ফুরিয়ে রাত ঘনাবে

রাত্রি গিয়ে সকাল হবে

নীল আকাশে উড়বে পাখি

গেলেই দেখতে পাবি ,যাবি ?

শ্রাবণ মাসের একলা দুপুর



মেঘ বলল যাবি? আমার সঙ্গে যাবি?



কেমন করে যাবরে মেঘ, কেমন করে যাব ,

নিয়ম বাঁধা জীবন আমার

নিয়ম ঘেরা এধার ওধার

কেমন করে নিয়ম ভেঙ্গে এ জীবন হারাব



কেমন করে যাবরে মেঘ কেমন করে যাব ?



মেঘ বলল দূরের মাঠে বৃষ্টি হয়ে ঝরব

সবুজ পাতায় পাতায় ভালবাসা হয়ে ঝরব

শান্ত নদীর বুকে আনব জলচ্শাসের প্রেম

ইচ্ছে মত বৃষ্টি হয়ে ভাঙব, ভেঙ্গে পরব
এই মেয়ে, তুই যাবি? আমার সঙ্গে যাবি?



যাব না মেঘ ,পারব নারে যেতে

আমার আছে কাজের বাঁধন ,

কাজেই থাকি মেতে

কেবল যখন ঘুমিয়ে পরি তখন আমি যাই

সীমার বাঁধন ডিঙিয়ে দৌড়ে একছুটে পালাই

তখন আমি যাই….

সবপনে আমার গেরুয়া নদী

সবপনে আমার সুনীল আকাশ

সবপনে আমার দূরের পাহাড়

সবকিছুকে পাই …

জাগরনের এই যে আমি ক্রীতদাসের মতন

জাগরনের এই যে আমি এবং আমার জীবন

কাজ অকাজের সুতোয় বোনা মুখোশ ঘেরা জীবন

তবুরে মেঘ যাব

একদিন ঠিক তোরই সঙ্গে

শ্রাবণ হাওয়ায় নতুন রঙ্গে

যাবরে মেঘ যাব

সেদিন আমি শিমুল পলাশ ভিজব বলে যাব

পাগল হাওয়ায় উতল ধারায়

আমায় খুঁজে পাব

যাবরে মেঘ যাব, যাবরে মেঘ যাব, যাবরে মেঘ যাব ।

মেঘ তাকে ডাকে অনন্ত প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখার জন্য, কিন্তু সে নিয়ম-বাঁধা জীবনের শৃঙ্খলা থেকে মুক্ত হতে পারে না। তবে তার স্বপ্ন তাকে সীমার বাইরে নিয়ে যায়, যেখানে সে প্রকৃতির সৌন্দর্য, স্বাধীনতা, এবং অনাবিল আনন্দ খুঁজে পায়। একদিন সেই সীমাবদ্ধ জীবন ভেঙ্গে, মেঘের সঙ্গে শ্রাবণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার আকাঙ্ক্ষা তার চূড়ান্ত সংকল্প। এই নিয়ে লেখা শুভ দাশগুপ্ত এর বিখ্যাত কবিতা

#কবিতা #কলকাতা #কবিতার
#সুভদাশগুপ্ত
#বাংলা #মেঘ









আমিই সেই মেয়ে              -- শুভ দাশগুপ্তআমিই সেই মেয়ে।বাসে ট্রেনে রাস্তায় আপনি যাকে রোজ দেখেনযার শাড়ি, কপালের টিপ কানে...
27/12/2024

আমিই সেই মেয়ে
-- শুভ দাশগুপ্ত

আমিই সেই মেয়ে।
বাসে ট্রেনে রাস্তায় আপনি যাকে রোজ দেখেন
যার শাড়ি, কপালের টিপ কানের দুল আর পায়ের গোড়ালি
আপনি রোজ দেখেন।
আর
আরও অনেক কিছু দেখতে পাবার স্বপ্ন দেখেন।
স্বপ্নে যাকে ইচ্ছে মতন দেখেন।
আমিই সেই মেয়ে।
বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে দিনের আলোয় যার ছায়া মাড়ানো
আপনার ধর্মে নিষিদ্ধ, আর রাতের গভীরে যাকে বস্তি থেকে
তুলে আনতে পাইক বরকন্দাজ পাঠান আপনি
আর সুসজ্জিত বিছানায় যার জন্য অপেক্ষায় অধীন হয়
আপনার রাজকীয় লাম্পট্য
আমিই সেই মেয়ে।
আমিই সেই মেয়ে- আসামের চাবাগানে ঝুপড়ি কামিন বস্তি থেকে
যাকে আপনি নিয়ে যেতে চান সাহেবি বাংলোয় মধ্যরাতে
ফায়ার প্লেসের ঝলসে ওঠা আলোয় মদির চোখে দেখতে চান
যার অনাবৃত শরীর
আমি সেই মেয়ে।
রাজস্থানের শুকনো উঠোন থেকে পিপাসার জল আনতে যাকে আপনি
পাঠিয়ে দেন দশ মাইল দূরে সরকারি ইঁদারায়- আর কুড়ি মাইল
হেঁটে কান্ত বিধ্বস্ত যে রমণী ঘড়া কাঁখে ঘরে ফিরলেই যাকে বসিয়ে দেন
চুলার আগুনের সামনে আপনার রুটি বানাতে
আমিই সেই মেয়ে।
আমিই সেই মেয়ে- যাকে নিয়ে আপনি মগ্ন হতে চান গঙ্গার ধারে কিংবা
ভিক্টোরিয়ার সবুজে কিংবা সিনেমা হলের নীল অন্ধকারে, যার
চোখে আপনি একে দিতে চান ঝুটা স্বপ্নের কাজল আর ফুরিয়ে যাওয়া
সিগারেটের প্যাকেটের মত যাকে পথের পাশে ছুঁড়ে ফেলে আপনার ফুল সাজানো
গাড়ি শুভবিবাহ সুসম্পন্ন করতে ছুটে যায় শহরের পথে-
কনে দেখা আলোর গোধুলিতে একা দাঁড়িয়ে থাকা
আমিই সেই মেয়ে।
আমিই সেই মেয়ে- এমন কি দেবতারাও যাকে ক্ষমা করেন না। অহংকার
আর শক্তির দম্ভে যার গর্ভে রেখে যান কুমারীর অপমান
আর চোখের জলে কুন্তী হয়ে নদীর জলে
বিসর্জন দিতে হয় কর্ণকে। আত্মজকে।
আমিই সেই মেয়ে।
সংসারে অসময়ের আমিই ভরসা।
আমার ছাত্র পড়ানো টাকায় মায়ের ওষুধ কেনা হয়।
আমার বাড়তি রোজগারে ভাইয়ের বই কেনা হয়।
আমার সমস্ত শরীর প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে।
কালো আকাশ মাথায় নিয়ে
আমি ছাতা হয়ে থাকি।
ছাতার নিচে সুখে বাঁচে সংসার।
আপনি
আপনারা
আমার জন্য অনেক করেছেন।
সাহিত্যে কাব্যে শাস্ত্রে লোকাচারে আমাকে
মা বলে পুজো করেছেন।
প্রকৃতি বলে আদিখ্যেতা করেছেন- আর
শহর গঞ্জের কানাগলিতে
ঠোঁটে রঙ মাখিয়ে কুপি হাতে দাঁড় করিয়েও দিয়েছেন।
হ্যা, আমিই সেই মেয়ে।
একদিন হয়ত
হয়ত একদিন- হয়ত অন্য কোন এক দিন
আমার সমস্ত মিথ্যে পোশাক ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে
আমিই হয়ে উঠবো সেই অসামান্যা !
খোলা চুল মেঘের মত ঢাকবে আমার খোলা পিঠ।
দু চোখে জ্বলবে ভীষণ আগুন।
কপাল-ঠিকরে বেরুবে ভয়ঙ্কর তেজরশ্মি।
হাতে ঝলসে উঠবে সেই খড়গ।
দুপায়ের নুপুরে বেজে উঠবে রণদুন্দভি।
নৃশংস অট্টহাসিতে ভরে উঠবে আকাশ।
দেবতারাও আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে বলতে থাকবেন
মহামেঘপ্রভাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাং
কালিকাং দক্ষিণাং মুণ্ডমালা বিভুষিতাং।
বীভৎস দাবানলের মত
আমি এগোতে থাকবো ! আর আমার এগিয়ে যাবার পথের দুপাশে
মুণ্ডহীন অসংখ্য দেহ ছটফট করতে থাকবে-
সভ্যতার দেহ
প্রগতির দেহ-
উন্নতির দেহ-
সমাজের দেহ
হয়ত আমিই সেই মেয়ে ! হয়ত ! হয়ত বা।












আজব লড়াই          -- সুকান্ত ভট্টচার্য ফেব্রুয়ারী মাসে ভাই, কলকাতা শহরে ঘটল ঘটনা এক, লম্বা সে বহরে!লড়াই লড়াই খেলা শুরু ...
27/12/2024

আজব লড়াই
-- সুকান্ত ভট্টচার্য

ফেব্রুয়ারী মাসে ভাই, কলকাতা শহরে
ঘটল ঘটনা এক, লম্বা সে বহরে!

লড়াই লড়াই খেলা শুরু হল আমাদের,
কেউ রইল না ঘরে রামাদের শ্যামাদের;
রাস্তার কোণে কোণে জড়ো হল সকলে,
তফাৎ রইল নাকো আসলে ও নকলে,
শুধু শুনি 'ধর' 'ধর' 'মার' 'মার' শব্দ
যেন খাঁটি যুদ্ধ এ মিলিটারী জব্দ।

বড়রা কাঁদুনে গ্যাসে কাঁদে, চোখ ছল ছল
হাসে ছিঁচকাঁদুনেরা বলে, 'সব ঢাল জল'।
ঐ বুঝি ওরা সব সঙ্গীন উঁচোলো,
ভয় নেই, যত হোক বেয়নেট ছুঁচোলো,
ইট-পাটকেল দেখি রাখে এরা তৈরি,
এইবার যাবে কোথা বাছাধন বৈরী!
ভাবো বুঝি ছোট ছেলে, একেবারে বাচ্চা!
এদের হাতেই পাবে শিক্ষাটা আচ্ছা;
ঢিল খাও, তাড়া খাও, পেট ভরে কলা খাও,
গালাগালি খাও আর খাও কানমলা খাও।
জালে ঢাকা গাড়ি চড়ে বীরত্ব কি যে এর
বুঝবে কে, হরদম সামলায় নিজেদের।
বার্মা-পালানো সব বীর এরা বঙ্গে
যুদ্ধ করছে ছোট ছেলেদের সঙ্গে;
ঢিলের ভয়েতে ওরা চালায় মেশিনগান,
"বিশ্ববিজয়ী” তাই রাখে জান, বাঁচে মান।
খালি হাত ছেলেদের তেড়ে গিয়ে করে খুন;
সাবাস! সাবাস! ওরা খেয়েছে রাজার নুন।

ডাংগুলি খেলা নয়, গুলির সঙ্গে খেলা,
রক্ত-রাঙানো পথে দু'পাশে ছেলের মেলা;
দুর্দম খেলা চলে, নিষেধে কে কান দেয়?
ও-বাড়ি ও ও-পাড়ার কালো, ছোটু প্রাণ দেয়।
স্বচে দেখলাম বস্তির আলী জান,
'আংরেজ চলা যাও' বলে ভাই দিল প্রাণ।

এমন বিরাট খেলা শেষ হল চটপট
বড়দের বোকামিতে আজো প্রাণ ছটফট;
এইবারে আমি ভাই হেরে গেছি খেলাতে,
ফিরে গেছি দাদাদের বকুনির ঠেলাতে;
পরের বারেতে ভাই শুনব না কারো মানা,
দেবই, দেবই আমি নিজের জীবনখানা।

ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতার এক ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনা করেছেন কবি। বীরত্বপূর্ণ ছোট ছেলেদের সংগ্রামে ব্রিটিশ শাসকেরা ভীত হয়ে যায়। তাদের নিরস্ত্র লড়াইয়ের সামনে অস্ত্রধারী সেনারাও পরাজিত হয়। ছোট ছোট ছেলেরা দেশমাতৃকার জন্য প্রাণ দেয়, যা ভবিষ্যতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার সংগ্রামে শক্তি সঞ্চার করে।

সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি কমিউনিস্ট আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে কলম ধরেন। তার কবিতায় মানবতাবাদ, শ্রেণিসংগ্রাম এবং সমাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রতিফলন পাওয়া যায়। স্বল্পায়ু এই কবি "ছাড়পত্র," "পূর্বাভাস" এবং "অভিযান" সহ বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে চিরস্থায়ী হয়ে আছেন। তার সৃষ্টিতে শোষিত মানুষের স্বপ্ন এবং বিপ্লবের আহ্বান জীবন্ত হয়ে ওঠে।























ডিসেম্বর ১৯৮১           --নির্মলেন্দু গুণএই কবিতাটির ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।হোক না সে ছন্দ-নক্সা-পাড়হীন বিধবার পরিধেয়...
24/12/2024

ডিসেম্বর ১৯৮১
--নির্মলেন্দু গুণ

এই কবিতাটির ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।
হোক না সে ছন্দ-নক্সা-পাড়হীন বিধবার পরিধেয়
সাদা থান শাড়ি। না থাক এর অন্ত্যমিলের চাতুর্য,
কিম্বা অনুপ্রাসের সাঙ্গীতিক দোলা। না থাক এর বুকে
কোনো স্পর্শকাতর বিস্ফোরক বা বিষাক্ত স্প্লিন্টার বা সেই
আশ্চর্য ম্যাজিক যা কবিতার কাছে কাম্য ছিলো একদিন।
এই কবিতার মধ্যে নাগরিক জীবনের যন্ত্রণার কথা নেই,
নেই পরকীয়া প্রেমের নিষিদ্ধ আনন্দ, দ্বন্দ্ব, খাঁচার ভিতরের
অচিন পাখির আধ্যাত্মিকতা। নেই মরমী বাউল বা কোনো
আত্মমগ্ন কবির মনোবৈকল্যের বিশ্লেষণ। এখানে রোমাঞ্চ নেই
রহস্যোপন্যাসের অলৌকিক ঈশ্বরের প্রশস্তিগাথা বা সদ্যমৃত
কোন প্রিয় বন্ধুর নির্জন কবরে সাজানোর যোগ্য এপিটাফ
এটি নয়। কোনো প্রতীকী ব্যঞ্জনা নেই এখানে শব্দের,
নেই বাক্যের অন্তরালে সূক্ষ্ম কোনো লুক্কায়িত বোধ।

তবু যখন বঙ্গোপসাগরের বুকে ঘনীভূত নিম্নচাপের
প্রভাবে আকাশ সূর্যহীন, বন্দরে বন্দরে বিপদ সংকেত,
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির ওপর যখন নেমে আসছে
অন্তহীন অন্ধকার; আমাদের স্বপ্নের চিত্রিত হরিণের গা থেকে
যখন লাবণ্যময় চামড়া খুলে নিয়ে যাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী
বুট-ব্যবসায়ীর দল, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত দিয়ে লেখা সংবিধান
যখন যথেচ্ছ নখরাঘাতে হচ্ছে ক্ষতবিক্ষত,
স্বাধীনতা বিরোধী মন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় শকটে যখন আমাদের
প্রাণের পতাকা অনিচ্ছুক উড়ছে বাতাসে,
যখন সাড়ে পাঁচ কোটি ভূমিহীন কৃষক চুয়ান্ন হাজার বর্গমাইলের
মধ্যেও সাড়ে তিন হাত কবরের মাটি খুঁজে পাচ্ছে না।
নিবিড় পাটচাষের বদলে যখন অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে
নিবিড় কোটিপতির চাষ, আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো টিভির পর্দায়
যখন পাশ্চাত্যের হাঙর সংস্কৃতি এসে গিলে খাচ্ছে পদ্মার রূপালী ইলিশ
যখন আমাদের শত্রুরা সংঘবদ্ধ বন্ধুরা ঐক্যভ্রষ্ট-
তখন এই কবিতাটির ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।

নির্মলেন্দু প্রকাশ গুণ চৌধুরী (জন্ম ২১ জুন ১৯৪৫) যিনি নির্মলেন্দু গুণ নামে ব্যাপক পরিচিত, একজন বাংলাদেশি কবি। কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য এবং ভ্রমণকাহিনী লিখেছেন ও ছবি এঁকেছেন। তার কবিতায় মূলত নারীপ্রেম,শ্রেণী-সংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধিতা, এ-বিষয়সমূহ প্রকাশ পেয়েছে।

প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রেমাংশুর রক্ত চাই

#ডিসেম্বর #নিমলেন্দুগুন
#কবিতা #আবৃত্তি
#এলোকিউশন
#কোলকাতা

*Christmas Bells*           -- Henry Wadsworth LongfellowI heard the bells on Christmas DayTheir old, familiar carols pl...
24/12/2024

*Christmas Bells*
-- Henry Wadsworth Longfellow

I heard the bells on Christmas Day
Their old, familiar carols play,
And wild and sweet
The words repeat
Of peace on earth, good-will to men!

And thought how, as the day had come,
The belfries of all Christendom
Had rolled along
The unbroken song
Of peace on earth, good-will to men!

Till ringing, singing on its way,
The world revolved from night to day,
A voice, a chime,
A chant sublime
Of peace on earth, good-will to men!

Then from each black, accursed mouth
The cannon thundered in the South,
And with the sound
The carols drowned
Of peace on earth, good-will to men!

It was as if an earthquake rent
The hearth-stones of a continent,
And made forlorn
The households born
Of peace on earth, good-will to men!

And in despair I bowed my head;
"There is no peace on earth," I said;
"For hate is strong,
And mocks the song
Of peace on earth, good-will to men!"

Then pealed the bells more loud and deep:
"God is not dead, nor doth He sleep;
The Wrong shall fail,
The Right prevail,
With peace on earth, good-will to men."

Henry Wadsworth Longfellow was born in Portland, Maine—then still part of Massachusetts—on February 27, 1807, the second son in a family of eight children. His mother, Zilpah Wadsworth, was the daughter of a Revolutionary War hero. His father, Stephen Longfellow, was a prominent Portland lawyer and later a member of Congress
হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ লংফেলোর কবিতা "ক্রিসমাস বেলস" আমেরিকান গৃহযুদ্ধের সময় ক্রিসমাস ডেতে গির্জার ঘণ্টা বাজানোর শব্দ সম্পর্কে, যা যুদ্ধের অশান্তি এবং হতাশার মধ্যে পৃথিবীতে শান্তির জন্য গভীর আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে, ঘন্টাগুলি শেষ পর্যন্ত আশা এবং বিশ্বাসের প্রতীক। বর্তমান সংঘাত সত্ত্বেও "ভুল ব্যর্থ হবে, সঠিকের জয় হবে"
এই কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি খুব জনপ্রিয় গান আছে "peace on earth" album er
নাম *I Heard the Bells on Christmas Day*



#কবিতা
#ইংরেজিকবিতা #ইংরেজি #ডিসেম্বর
#ইংরেজকবিরকবিতা

Tomake sesh chithi   তোমাকে শেষ চিঠি কবিতা                        ---শ্রীজাতঘুমে ঝগড়ায় ঘুমে ঝগড়ায় ঘুমেছেড়ে তো এলাম বর...
23/12/2024

Tomake sesh chithi
তোমাকে শেষ চিঠি কবিতা
---শ্রীজাত

ঘুমে ঝগড়ায় ঘুমে ঝগড়ায় ঘুমে

ছেড়ে তো এলাম বরফের মরশুমে



এখনো তোমার ওভারকোটের কাছে

আদরের মতো কী একটা লেগে আছে …



ও নিয়ে ভেবো না। উইকেণ্ড-এর রাতে

আমাকে যদি বা না-ও মনে পড়ে, তাতে


বিস্ময় নেই। হাইওয়ে আছে শুধু

ছেড়ে আসা যত, তার চে’ওবেশী ধূ-ধূ …



মাঝে টিম টিম দেকোনপাটের বাকি

ছেড়ে তো এলাম বয়েসের বরসাতি



এখনো ওখানে সামান্য বিনিময়ে

দু’জনের ঠোঁট রাখা যায়, একই স্ট্র-এ ?



একা যদি যাও ড্রাইভে, কিনো

হাইওয়ে থেকে, মাঝরাতে, ক্যাপুচিনো

#শ্রীজাত
#আধুনিকবিতা

Address

C R Road
Raniganj

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কবিতাবাড়ি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to কবিতাবাড়ি:

Share