Tanisha Tasnim

Tanisha Tasnim I� am imprisoned in the power ..! You noticed captive ..! � Language is stuck, on the wall of silence .. !! �
(1)

 #আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে #লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী (০৪) ( scsalma90)শ্বা*স ঝেঁ*ড়ে, নিজের মাথায় গা*ট্টা মে*রে মেঘ বলে, 'ছিঃ মে...
04/07/2025

#আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে
#লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী
(০৪) ( scsalma90)

শ্বা*স ঝেঁ*ড়ে, নিজের মাথায় গা*ট্টা মে*রে মেঘ বলে, 'ছিঃ মেঘ ছিঃ, কি সব ভাবছিস তুই, কেউ কি তার চাচাতো ভাইয়ের উপর ক্রাশ খায়? ভালো, ভদ্র হলেও মানা যেতো, এমন গু*রুগ*ম্ভীর, ব*দমে*জা*জি আর হি*ট*লা*র স্বভাবের কেউ কি কারো ক্রা*শ হয়..!! যে ছেলে ১০ বছরের মেয়ের গা*য়ে হা*ত তু*লতে পারে সে আর যায় হোক আমার ক্রাশ হতে পারে না। এটা ভাবতেই মেঘের বু*ক ভে*সে আসে ক*ষ্টে।

নিজেকে স্বাভাবিক করতে মোবাইল হাতে নিয়ে কল করে মেঘের সবচেয়ে কাছের বান্ধবী বন্যাকে। প্রথম কল দিতেই রিসিভ হয় কল..

বন্যা- আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছো বেবি?

মেঘ- ওয়ালাইকুম আসসালাম, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?

বন্যা- হঠাৎ আমায় স্বরণ করার কোনো স্পেশাল কারণ আছে? তোর তো আবার ভাঙা ফোন ঠাসঠুস বন্ধ হয়ে যাবে।

মেঘ রা*গান্বিত স্ব*রে একপ্রকার হুং*কার দিয়ে বলে... "তুই আজ কোচিং এ আসিস নি কেন? কি যে একটা জিনিস মিস করছিস..."

বন্যা- কি মিস করেছি বলে ফেলো বান্ধবী

মেঘ- এখন বললে কি আর সেই ফিল টা পাবি নাকি আজব

বন্যা- আরে বেবি বলো তুমি। কাল শুক্রবার কোচিং বন্ধ, আবার দেখা হবে রবিবারে ততদিন সহ্য হবে না। বলে ফেল প্লিজ।

মেঘ- আমার হাতে এখন iPhone 13 pro max

মেঘের কথা বন্যা এক বিন্দুও বিশ্বাস করে নি, হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলছে, এখন বল

'একটু পর 14 pro max কিনতে যাচ্ছিস,যাকে তার ভাই একটা আধা ভা*ঙা ফোন দিয়েছে ব্যবহারের জন্য, দিনে ১০০ বার বন্ধ হয়ে যায়, তার হাতে নাকি iPhone. তুই কি ঘুম থেকে স্বপ্ন দেখে উঠলি নাকি?'

মেঘের উৎফুল্ল মে*জাজ আচমকাই বি*গড়ে গেলো, অভিমানী স্বরে বললো,
'কাল আবির ভাই আসছেন বিদেশ থেকে ওনিই নিয়ে আসছেন আমার জন্য।'

বন্যা- তাই বল, নাহয় তোর যে ভাই সে তোকে এই জীবনে ফোন কিনে দিতো না, তোর বাবা দিতে চাইলেও সে আ*ছাড় মে*রে ভে*ঙে ফেলতো। ওয়েট ওয়েট, এই আবির ভাইটা কে রে? যে তোকে ছোট বেলা মে*রেছিল, সে?

মেঘ মুখ কালো করে উত্তর দিলো,
'হ্যাঁ আমার চাচাতো ভাই।'

বন্যা- তা তোর প্রতি এত মায়া হলো কিভাবে ওনার?

মেঘ- জানিনা। শুন তোকে কি বলি

বন্যা- হ্যাঁ বল

মেঘ- আসলে আজকে বিকালে আবির ভাইয়াকে দেখে ছোটখাটো একটা শ*ক খেয়েছি৷

বন্যা- মানে?

মেঘ- কি সুদ*র্শন চেহারা,দাঁড়ানোর স্টাইল,লুক আর অগোছালো চুলদেখে আমার মনটায় এলোমেলো হয়ে গেছে, আমি মনে হয় ওনার উপর ক্রাশ খেয়েছি.

মুখ ফুলিয়ে শ্বাস ছেড়ে একটু ধাতস্থ হয়ে গুরুগম্ভীর স্বরে বন্যা বললো,
'তোর মাথা ঠিক আছে মেঘ?তুই এতবছর যাবৎ বলছিস এই মানুষটা তোর শৈশব নষ্ট করে দিয়েছে, আজ কৈশোরে পা দিতেই এই মানুষটার উপর ক্রা-শ খেয়ে ফেলছিস? মানুষ রঙ বদলায়, কারণে অকারণে বদলায় কথাটা এতদিন শুনেছি কিন্তু আজ তোকে দেখে মনে হচ্ছে এই কথাটা ১০০% সত্যি। না হয় যাকে এত বছর শ*ত্রু ভেবে এসেছিস আজকে তার কথা অবলীলায় বলে যাচ্ছিস, বাহ মেঘ বাহ। '

মেঘের নিরবতা বুঝতে পেরে বন্যা আবার বলা শুরু করলো,
' এসব কোনো বিষয় না বেবি, হঠাৎ করে দেখেছিস তো তাই আহামরি সুদর্শন লেগেছে, বিষয়টা মাথা থেকে ঝে*ড়ে ফেল দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে, আমরা না দুজন দুজনকে কথা দিয়েছিলাম, একজন বিপথে গেলে আরেকজন সামলাবো । ভুলে গেলি?'

স্পষ্ট বুঝা গেলো মেঘের বদলে যাওয়া অভিব্যক্তি। সহসা নিজেকে সামলে আচমকা প্রশ্ন করে বসলো,

'আমি কি দেখতে সুন্দর না? আমি কি কারো ক্রাশ হওয়ার যোগ্য না?'

মেঘের আকস্মিক প্রশ্নে বন্যা কিছুটা হতভম্ব হলো এরপর
কয়েকমিনিট শুধু হেসেই গেলো.,স্বাভাবিক স্বরে বললো.. 'অবশ্যই তুই সুন্দর, ক্রাশ খাওয়ার ও যোগ্য কিন্তু তুই ছেলেদের ক্রাশ হতে পারবি কি না সন্দেহ আছে৷ হতে পারিস রাস্তাঘাটের,গাছগাছালির, রঙচটা দেয়ালের, গরুছাগলের ও হতে পারিস।'

রা*গে ফুঁ*সতে ফুঁ*সতে কল কেটে দিয়েছে মেঘ আর ভাবছে,
'আজকাল সান্ত্বনা নিতে চাইলেও মানুষ মজা নেয়'

যদিও বন্যার হাসির কারণ টা খুবই স্বাভাবিক । মেঘকে বরাবর ই চোখে চোখে রেখেছে তানভির সহ বাড়ির সকলে, 6-10 পর্যন্ত পড়েছে গার্লস স্কুলে, তারপর গার্লস কলেজ। আহারে জীবন ধূ ধূ মরুভূমির মতো কোথাও কেউ নেই। স্কুল কলেজের সামনেই বাসার গাড়ি থাকতো,বাসা টু স্কুল,স্কুল টু বাসা। কোনো ছেলে না দেখলে ক্রা*শ কিভাবে খাবে! বো*ধশক্তি হওয়ার পর মেঘ মনে হয় ২-৩ টা বিয়ে খেয়েছে কাজিনদের।৷ যাকে বলে নামের বিয়ে খাওয়া। তানভিরের ভয়ে বিয়ে বাড়ির এক কোণে বসে থাকতো মেঘ৷ ভাইয়ের ক*ড়া শাসন ছিল ঘর থেকে বের হতে পারবি না, বরযাত্রী আসলে তো আরও না। ঘরের ভিতরেই তারজন্য খাবার পাঠানো হতো, তানভির নিজেই বোনকে খাওয়াতো ইচ্ছে মতো। তারপর বিয়ে শেষ হলে মা বোনকে নিয়ে চলে আসতো। গায়ে হলুদে নাচা,গান গাওয়া এমনকি মেহেদীও দিতে পারে নি কখনো।। এই কষ্টে এখন আর মেঘ কারো বিয়েতেই যায় না। এতে তানভির মনে হয় হাফ ছেড়ে বেঁচেছে।৷ মেঘের এই সাদাকালো জীবনের কথা শুনলে বন্যা কেনো পৃথিবীর সব মানুষ ই হাসবে। জীবনটা তার তেজপাতা হয়ে গেছে । মাঝে মাঝে ভাবে এই বাড়িতে জন্মানো টা কি খুব দরকার ছিল...!!!

কয়েকবার বন্যা কল ব্যাক করেছে, নিজের জীবনের হতাশার জন্য মেঘ আর কল রিসিভ ই করে নি, বান্ধবীকে রাগ দেখিয়ে কি হবে...! জীবন যেখানে যেমন তা মানতেই হবে।

মেঘের বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার খেসারত দিতে হচ্ছে বন্যাকেও। মেঘের সাথে সাথে বন্যাকেও চোখে চোখে রাখে তানভির। কথায় আছে সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে, সঙ্গ খারাপ হলে মেঘও খারাপ হবে তাই সব সময় বন্যার পিছনে লোক লাগিয়ে রাখে। শুধু বন্যাই না আরও ২ জন বান্ধবী আছে মেঘের, একজন পাখি আরেকজন মায়া। ওদেরকেও নজরে রাখে তানভির। বোনকে সব দিক থেকে প্র*টেক্ট করাই যেন তার প্রথম এবং প্রধান কাজ৷

পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

আবির বিকাল থেকে ঘুমাচ্ছে। সন্ধ্যা ৭ টায় ঘুম ভাঙে আদির ডাকে। নিচে আবিরের আব্বু আর মেঘের আব্বু বসে আছেন, আবিরের বাইক কেনার কথা শুনেই তাড়াতাড়ি চলে এসেছেন অফিস থেকে৷ আবির ঘুম থেকে উঠে চোখেমুখে পানি দিয়ে টাওয়েল দিয়ে কোনোরকমে মুখ টা মুছে তৎক্ষনাৎ রুম থেকে বের হয় ৷ সে তার বাবাকে খুব ভালো করে চিনে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত না হলে বাড়িতে তা*ন্ডব শুরু করে দিবেন। আবিরের চোখে মুখে ঘুমের প্রভাব স্পষ্ট । ব্যস্তপায়ে হাঁটছে সে, আচমকা এলেমেলো পায়ে ছুটে রুম থেকে বের হয় মেঘ চুলগুলো অগোছালো। আকস্মিক ধা*ক্কা এড়াতে চটজলদি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে অ*গ্নিদৃ*ষ্টিতে তাকায় আবির, তৎক্ষনাৎ মোটা ভ্রু*যূগল শিথিল হয়ে যায়,অ*মত্ত চেয়ে রইলো সে

একমুহূর্তের জন্য মস্তিষ্ক থমকে গেছে আবিরের, দৃষ্টি তার প্র*খর, আচ*মকা হাঁটা থামাতে শ্বাস ভা*রি হয় আবিরের, কালো জামা প*রিহিতা এক ললনার দিকে দৃষ্টি পরে, আ*পাদমস্তক দেখলো একবার, কালো জামাতে যাকে অ*প্সরার ন্যায় লাগছে, এলোমেলো চুলগুলো তার কোমড় ছাড়িয়েছে চুল দেখে মনে হয় জীবনানন্দ দাশের বনলতাকে উদ্দেশ্য করে লেখা,

"চুল তার কবেকার অন্ধ*কার বিদিশার নিশা।"

দ্রুতগতি থামাতে গিয়ে মেঘের ছোট দেহ কম্পিত হয়,দৃষ্টি পরে ৬ ফুট লম্বা মানুষটার বু*কে, মেঘ মুখ তুলে তাকায় সেই মানুষটার চেহারার পানে, আবিরের চোখের দিকে বি*স্ময়াভিভূত নয়নে তাকিয়ে আছে মেঘ, পলক ও পরছে না একটিবার, আবিরের চোখে মুখে ছিটানো পানির ঝাপটায় এলোমেলো চুলগুলো থেকে চুইয়ে চুইয়ে পানি পরছে যা তার পরনের সাদা টিশার্ট অল্পস্বল্প ভিজিয়ে দিচ্ছে সেদিকে খেয়াল নেই আবিরের,

আবির কয়েক সেকেন্ড স্ত*ব্ধ থেকে হঠাৎ চোখ সরিয়ে পুনরায় রু*দ্রমূর্তি ধারণ করে স*বেগে হাঁ*টা দেয় সিঁড়ির দিকে, পিছন থেকে অষ্টাদশীর কোমল কন্ঠে ডাক শুনে থমকে দাঁড়ায় আবির তবে পিছনে তাকানোর প্রয়োজন মনে করে নি সে,

মেঘ ভ*য়ার্ত কন্ঠে বলে, 'Thank you Abir Vai'

আবির শুনলো কি না কে জানে, এক মুহুর্ত দাঁড়িয়ে যথারীতি ব্য*স্ত ভঙ্গিতে নিচে নেমে যায়।

মেঘ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে,থরথর করে কাঁপছে মেঘের হাত পা, মেঘের মনে হচ্ছে ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছে সমগ্র পৃথিবী। কেনো জানি দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি পাচ্ছে না মেয়েটা, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে তাড়াতাড়ি দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়েছে। এতগুলো বছর পর আবিরের চোখে চোখ রাখলো মেঘ, ভেতর টা ভ*য়ে আঁ*তকে উঠছে বার বার, অন্তরা*ত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে মেঘের৷
পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

সোফায় বসে আছেন ২ ভাই,বাড়ির মহিলা রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত থাকলেও নজর তাদের এদিকে, কি হবে কে জানে

আলী আহমদ খান নিজের গা*ম্ভীর্যতা বজার রেখে একপ্রকার হুংকার দিয়ে প্রশ্ন করলেন,
"তুমি নাকি বাইক কিনেছো?"

এই কথায় হুঁশ ফিরে অষ্টাদশীর, কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে ২ পা সামনে এগিয়ে বারান্দার সাইডে দাঁড়িয়ে নিচে তাকায় মেঘ, নিচে সোফায় বসা আব্বু আর বড় আব্বু, তাদের থেকে কিছুটা দূরে দুহাত ভাজ করে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আবির৷

জ্বী', ভাবলেশহীন ভাবে উত্তর দেয় আবির।

'কিন্তু কেন?' পুনরায় হুংকার দেন তার আব্বু।

'আমার বাইক কেনার ইচ্ছে ছিল তাই কিনেছি,'

'তুমি জানো না এই বাড়িতে বাইক কেনা বা চালানো নিষেধ?' এবার প্রশ্ন টা চাচ্চু মোজাম্মেল খান করেছেন।

'হ্যাঁ জানি, ২০/৩০ বছর আগে কি ঘটে গেছে তা নিয়ে আতঙ্কে থাকার কোনো মানে হয় না, যদি কপালে খারাপ কিছু লিখা থাকে তাহলে সেটা ৭ সমুদ্র পারি দিয়ে হলেও আসবেই। সেটা আমি ঘরে বসে থাকলেও হবে আর গাড়িতে চলাচল করলেও হবে৷ '

'তোমরা ২ ভাই কি নিজেদের মর্জি মতোই চলবে?' আলী আকবর খান রা*গান্বিত স্বরে প্রশ্ন করলেন।

'বাইক কিনা যদি নিজের ইচ্ছে মতো চলা হয় তাহলে আমি দুঃখিত আব্বু৷ এই ব্যাপারে আমি নিজের মনের কথায় শুনবো।'

'আমাদের নিজস্ব ৩ টা গাড়ি আছে, এত গাড়ি কেনো কিনলাম তোমাদের জন্যই তো' মোজাম্মেল খান কোমল স্বরে বললেন।

'গাড়িতে চলাচল আপনাদের ইচ্ছে তাই আপনারা গাড়ি কিনেছেন, আমার গাড়িতে চলাচল করতে ভালো লাগে না তাই আমি বাইক কিনেছি এটা নিয়ে এত কথা বাড়ানোর কি আছে চাচ্চু । তোমাদের বাইক সম্পর্কিত জে*রা শেষ হলে আমার তোমাদের কে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলা আছে। ' আবির আব্বুর দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো।

এতক্ষণ বাড়ির মহিলা রান্নাঘরে থাকলেও এবার আর থাকতে পারলেন না, এক ছুটে সবাই ড্রয়িংরুমে চলে এসেছেন । মেঘ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে। এই বাড়িতে এত বছরে কাউকে গলা উঁচু করে মুখের উপর কথা বলতে শুনেনি সে। তানভির ভাইয়া যত মেজাজ দেখিয়েছে সব মেঘের উপর, বড় আব্বু বা নিজের আব্বুর মুখের উপর কথা বলার সাহস হয় নি তার। আবির ভাই ২দিন হলো এসছে,আজই বাবার মুখের উপর নিজের ম*র্জি শুনাচ্ছে, এখন মেঘের মনে হচ্ছে ওনি হি*ট*লা*রের থেকেও বড়মাপের কিছু । মনোযোগ দিয়ে বাকি কথা শুনার চেষ্টা করছে মেঘ.

আবির: আব্বু,চাচ্চু আমি অনেকদিন যাবৎ চিন্তা ভাবনা করেছি নিজে একটা কোম্পানি শুরু করার। তোমরা অনুমতি দিলে কাজ শুরু করবো

মোজাম্মেল খান ও আলী আকবর খান দুজনের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরেছে। এতবছর ছেলেকে বাহিরে রেখে পড়াশোনা করিয়েছেন, দেশে এসে নিজের ব্য*বসার হাল ধরবে, দেশে পা দিতেই নিজে কোম্পানি খোলার চিন্তা ভাবনা করছে ছেলে৷

মোজাম্মেল খান চিন্তিত কন্ঠে বললেন, আমরা তো ভেবেছিলাম তুমি পারিবারিক ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আবির কিছু বলার আগেই আলী আকবর খান বলে উঠলেন,
'ঠিক আছে, তুমি পড়াশোনা করে এসেছো, তোমার নিজস্ব মতামতের গুরুত্ব আমরা অবশ্যই দিবো,তোমার নতুন কোম্পানি নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই তবে আমার একটা শর্ত আছে, তুমি আমাদের কোম্পানির CEO হবে, আগামীকাল শুক্রবার অফিস ছুটি তাই তুমি শনিবারে অফিসে যাবে,তোমাকে অফিসিয়াললি CEO পদ দেওয়া হবে। তারপর তুমি আমাদের অফিস সামলে যদি নতুন কোম্পানি শুরু করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারো তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। Best of luck my boy.

আবির যেনো আগে থেকেই জানতো এরকম কিছু হবে তাই তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন দেখা গেলো না'

এতটুকু বলে সোফা থেকে উঠে রুমের দিকে হাঁটা শুরু করলেন আবিরের আব্বু, কয়েক কদম এগিয়ে আবার দাঁড়িয়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে রু*দ্ধ কন্ঠে বললেন,

'আমরা কোম্পানি সামলানোর জন্য সারাজীবন থাকবো না তোমাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে, তুমি না পারলে তোমার প্রাণপ্রিয় ভাই তানভিরকে বলো রা*জ*নী*তি ছেড়ে ব্যবসায় আসতে তারপর তুমি তোমার মতো নিজে কোম্পানি খুলতে থাকো।'

আবির চোয়াল শক্ত করে বাবার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

'তানভির রা*জনী*তিই করবে ওর মাথায় ব্যবসা ঢুকানোর কোনো দরকার নেই, শনিবারেই অফিসে আসবো আমি। আমি একায় সবদিক সামলাতে পারবো। তোমরা দয়া করে তানভিরকে মুক্তি দাও, নিজের মতো করে রাজনীতি টা করতে দাও ওকে। তোমার শ*র্ত যেমন আমি মেনে নিয়েছি তোমাদেরকেও আমার একটা শর্ত মানতে হবে সেটা হলো, আমি আমার মন মতো কাজ করবো, আমার যখন যেখানে প্রয়োজন হবে নিজের কাজ গুছিয়ে আমি চলে যাব তখন আমাকে কোনো প্রকার বাঁ*ধা দিতে পারবে না কেউ। দরকার হলে ২ অফিসের কাজ শেষ করে আমি রাত ১২ টায় বা ২ টায় বাসায় ফিরবো এমনকি নাও ফিরতে পারি এতে তোমাদের যেনো মা*থা*ব্যথা না হয়।'

একদমে কথাগুলো বলে কোনোদিকে না তাকিয়ে দ্রুতপায়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায় আবির

আলী আহমদ খান কয়েক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে কোনো কথা না বলে রুমের দিকে হাঁটা দেন।

পিনপতন নীরবতা বাড়িতে৷ সোফায় বসে আছেন মোজাম্মেল খান, কাছেই তিন ঝা একজন আরেকজনের দিকে তাকাচ্ছে বারবার, তাদের আবিরের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস আছে কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাহিরের দুনিয়া সামলাতে গিয়ে নিজের প্রতি না যত্নহীন হয়ে পরে ছেলেটা এটায় তাদের চিন্তার বিষয়।

নিচে উপস্থিত মানুষগুলোর মধ্যে চিন্তার ছাপ দেখা গেলেও উপরে দাঁড়িয়ে একপ্রকার বিনোদন উপভোগ করছিল মেঘ৷ যেই বড় আব্বুর কথার উপর কারো কথা চলে না আজ ওনার সাথে টক্কর দেয়ার মানুষ এসেছে৷ বাবা ছেলে কি শ*র্তটায় না দিচ্ছে৷ যেমন বাবা তেমন ছেলে এসব ভেবেই হাসি পাচ্ছে মেঘের। হঠাৎ করেই হাসিটা গা*য়েব হয়ে মুখটা ভা*রি হয়ে গেলো মেয়েটার, আর ফিসফিসিয়ে বলতে শুরু করলো,
" নিজে তো হি*ট*লা*র সাথে আমার ভাইটাকে বড় গু*ন্ডা বানাতে কি সুন্দর উৎসাহ দিচ্ছে । এতবছর ভাইয়ের জ্বা*লায় জীবন তেজপাতা এখন আবার আরেকজনের আবির্ভাব হলো। কপালটায় খারাপ আমার। "

এখন নিচে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই তাই বিড়বিড় করতে করতে রুমে ঢুকতে যাবে হঠাৎ চোখ পরে আবির ভাইয়ার রুমের দিকে এক রাশ হতাশা নিয়ে রুমে ঢুকে যায় মেঘ।

বাবা মা কে ছেড়ে আলাদা রুমে থাকলে খুব স্বাধীনতা পাবে ভেবে নিচতলা থেকে উপর তলায় চলে এসেছিল মেঘ, আবির ভাই বিদেশ যাওয়াতে কোনো চিন্তায় ছিল না। কিন্তু মেঘ আসার ১৫ দিনের মাথায় তানভির ও মেঘের পাশের রুমে চলে আসে জিনিসপত্র নিয়ে। সিঁড়ি দিয়ে সোজা উঠতেই তানভিরের রুম। বোনকে পাহারা দিতেই মূলত এই রুমে আসা। তানভির যতক্ষণ রুমে থাকে ততক্ষণ নিজের রুমের দরজা টা খুলে রাখে, মেঘ সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে উঠতে গেলেও ভাইয়ের কথা ভেবে আস্তেধীরে উঠানামা করে৷ বর্তমানে মেঘের অবস্থা না*জে*হাল কারণ তার একপাশে আবির ভাই এর রুম,আরেকপাশে তানভির ভাইয়ের৷ তানভির ভাইয়ের পরের রুমটা মীমের জন্য ঠিকঠাক করা হচ্ছে কিছুদিন পর থেকে মীমও উপরে থাকবে কিন্তু তাতে কি! ভাইয়ের ঘর ডিঙিয়ে মীমের রুম পর্যন্ত যেতে পারবে কি না স*ন্দেহ আছে৷
পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

রাত ১০ টার উপরে বাজে সবাই খাওয়াদাওয়া শেষ করে যার যার রুমে চলে গেছে। আবির এখনও বাড়ি ফিরে নি। মালিহা খান সোফায় বসে অপেক্ষা করছেন ছেলের জন্য । ১০-১৫ মিনিট পর বাড়িতে ঢুকলেন আবির আর তানভির, মাকে বসে থাকতে দেখে কিছুটা রা*গান্বিত হলো ছেলে।

'আম্মু তুমি আমার জন্য এভাবে রাত জেগে বসে থেকো না প্লিজ, আমি নিজের মতো করে খেয়ে নিবো।'

'তোর বউ আসলে আমি আর অপেক্ষা করবো না তোর জন্য,' সহসা উত্তর দিলেন মালিহা খান।

বড় আম্মুর কথা শুনে স্ব শব্দে হেসে উঠে তানভির । আবির ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় তানভিরের দিকে সঙ্গে সঙ্গে তানভির হাসি থামিয়ে ফেলে, নিঃশব্দে হাসছে সে।

তানভির বরাবর ই ভী*তু প্রকৃতির, বাহিরে যতই শ*ক্তপো*ক্ত থাকুক না কেন বাবা, চাচা আর ভাইয়ের সামনে সে যেনো ভে*জা বিড়াল। এতদিন যত কাজ ই থাকতো ছেলেটা ৮-৯ টার মধ্যে বাড়ি এসে সবার সাথে খেতে বসতো৷ কিন্তু আবির ফেরাতে টাইম সিডিউলে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে ছেলেটার।

চলবে......

 #আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে #লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী (০৩) কোন এক আশঙ্কায় আবিরের মাথায় চিনচিন ব্য*থা অনুভব হয়, ভী*তিতে রু*দ্ধ হয়...
02/07/2025

#আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে
#লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী
(০৩)

কোন এক আশঙ্কায় আবিরের মাথায় চিনচিন ব্য*থা অনুভব হয়, ভী*তিতে রু*দ্ধ হয় তার শ্বাস। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আনমনে কি যেনো ভেবে যাচ্ছে আবির। দূরে ঐ চাঁদটার দিকে তাকিয়ে আছে চ*ক্ষুযূ*গল এক মুহুর্তের জন্যও সরছে না, পল্লব ও পড়ছে না একটিবার, তার দুর্বো*ধ্য দৃষ্টি।

হঠাৎ কারো অস্তি*ত্ব বুঝতে পেরে সাবলীল ভঙ্গিতে নড়েচড়ে দাঁড়ায় দৃষ্টি সরিয়ে নেয় চাঁদ থেকে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নেয় মানুষটাকে তারপর, ধীরস্থির কন্ঠে জানতে চাই,

'কিছু হয়েছে?'

তানভির সরলমনে বলে,
'বড় আব্বু বুঝতে পেরে গেছে তুমি মা*রপি*ট করেছো, তাই তোমাকে সাব*ধান করতে বলেছে যেনো মা*রপি*ট আর রা*জনী*তিতে না জরাও।'

'আরকিছু?' অবহেলায় প্রশ্ন টা করলো আবির

'না, তেমন কিছু না ব্যবসার হাল ধরতে বললো৷ ' তানভির উত্তর দিলো।

আবির: আচ্ছা ঠিক আছে৷ আর কিছু বলবি?

তানভির: ভাইয়া, মাথা ঠা*ন্ডা করো তুমি। বাদ দাও প্লিজ৷ আমি তোমাকে শুধু জানিয়েছিলাম বিষয়টা। তুমি যে এভাবে দেশে চলে আসবে আর এইভাবে ঝামেলা হবে এটা আমি ভাবতে পারি নি৷ বু*ঝতে পারলে আমি আ*গেই ব্যা*পার টা স*লভ করে ফেলতাম৷

আবির: তুই আমায় বাদ দিতে বলছিস? বাহ।

তানভির: আমি ঐভাবে কিছু বলি নি ভাইয়া। যা হবার তো হয়েছে৷৷ তুমি যা করেছো এরপর আশা করি আর কিছু হবে না। তাই বলছিলাম ঐসব চি*ন্তা বাদ দিয়ে একটু রেস্ট নাও। অনেকটা জা*র্নি করে এসেছো।

আবির: আচ্ছা তুই এখন যা, এরপর থেকে আমার ব্যাপারে তোকে যেনো কেউ কিছু না বলে, এটা সবাইকে বলে দিস। এতবছর বাহিরে ছিলাম। এখন তো আমি বাড়িতে আছি, যার যা কথা সব যেনো আমায় বলে সরাসরি। আর আগামীকাল ১২ টার আগে কেউ যেনো ডাকতে না আসে আমায়।

তানভির: আচ্ছা৷ আসছি আমি৷

এতক্ষণে মেঘে ঢেকে গেছে চাঁদ। অসীম দূরত্বে তাকিয়ে কি যেনো ভাবছে ছেলেটা৷ তারপর রুমে ঢুকে দরজা আটকে ব্যাগ থেকে একটা সিগারেট বের করে, বারান্দায় বসে সি*গা*রেট জ্বা*লিয়ে ঠোঁ*টে ধরে...

দৃষ্টি পরে দূরে গাছের পাতার ফাঁকে ল্যামপোস্টের ক্ষুদ্র আলোর দিকে, তারনিচে ২-৩ টা কুকুর আপন মনে চিল্লাচিল্লি করছে।

সি*গারে*ট খাওয়াটা আবিরের নি*ত্যদিনের অভ্যাস না, যখন সে খুব রা*গান্বি*ত বা চি*ন্তিত থাকে, বা যখন নিজেকে ক*ন্ট্রোল করার সব শ*ক্তি হারিয়ে ফেলে তখন সিগারেটের ধোঁ*য়ার মধ্যে নিজের ক*ষ্ট, রা*গ,চি*ন্তা আর অ*ভিমান গুলোকে উড়িয়ে দেয়।

সি*গারে*টে কয়েকটা টান দিয়ে সি*গা*রেট টা ফেলে দেয়। তারপর টানটান হয়ে শুয়ে পরলো নিজের বিছানায়। মাথার নিচে দুহাত রেখে চোখ বুজলো।

পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

মেঘ খাবার খেয়ে রুমে এসে ২-৩ ঘন্টা টানা পড়াশোনা করলো।। HSC পরীক্ষা শেষ হলো এক মাস ও হয় নি কিন্তু পড়াশোনা যেনো ৩ গুণ বেড়ে গেছে। এডমিশন একটা মস্তবড় যুদ্ধ যার একমাত্র অস্ত্র হলো পড়াশোনা তার সাথে অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জরিয়ে আছে ভাগ্য। HSC র রেজাল্ট কবে দিবে ঠিক নেই, পাশ করবে কিনা তাও জানা নেই৷ কিন্তু অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি আগেভাগেই নিতে হচ্ছে। বয়সের তুলনায় মেয়েটা পড়াশোনায় একটু বেশিই এগিয়ে গেছে। ১৮ বছর বয়সে পা দিলো সবেমাত্র ২ মাস হয়েছে। তারমধ্যে HSC পরীক্ষা শেষ । কয়েকমাস পরে সে স্নাতক শিক্ষার্থী হতে চলেছে ভাবতেই কেমন যেনো নিজেকে বড় বড় মনে হয় মেঘের।

পড়াশোনা শেষ করে নিজের বিছানায় শুয়েছে হাতে তার নতুন মোবাইল। কিন্তু করবে কি সে, না আছে ফেসবুক আর না আছে অন্য কোনো একাউন্ট। ইউ*টিউবে ঢুকে কয়েকটা ভিডিও দেখে মোবাইল রেখে দেয়।

শুয়ে ভাবতে লাগে আবির ভাইয়াকে ধন্যবাদ জানানো দরকার কিন্তু সে তো ভ*য়ে দাঁড়াতেই পারবে না আবিরের সামনে.. পু*রোনো স্মৃতিগুলো ভাবতে থাকে...

মেঘ সবেমাত্র ৫ম শ্রেণিতে উঠেছিল । বয়সের গন্ডি ৯-১০ এর মাঝামাঝি । তখন মেঘের একটা বন্ধু হয়েছিল নাম জয়৷ ছেলেটা স্কুলে নতুন এসেই বন্ধত্ব করেছিল মেঘের সাথে। ছোটবেলা পিচ্চিদের বন্ধুত্ব যেমন ছিল, চকলেট শেয়ার করা,টিফিন শেয়ার করা,একসাথে খেলাধুলা করা। ১ টা সপ্তাহ ও হয়নি তাদের বন্ধুত্বের। ৭ দিনের মাথায় আবির স্কুলে গিয়ে মেঘকে আর জয়কে একসাথে খেলতে দেখে। স্কুলের সবার মাঝখানে মেঘের গালে কয়েকটা থা*প্প*ড় বসিয়ে দিয়েছিল আর রা*গা*ন্বিত স্বরে বলেছিল, "তোকে যদি আর কোনোদিন কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে বা খেলতে দেখি তাহলে তোর খবর আছে। "

তারপর বোনকে টানতে টানতে বাড়িতে নিয়ে আসে, একটাবার বোনের দিকে তাকিয়েও দেখে নি। দুগালে আবিরের ৫ আঙুলের দাগ বসে গেছিলো।

সেইযে থা*প্পড় দিয়েছিল মেঘ এক সপ্তাহ জ্ব*রে পরে ছিল। মেঘ ছোট বেলা থেকেই খুব অ*ভিমা*নী ছিল। ছোট্ট মেয়েটা এই থা*প্পড়ের ভ*য়ে আর আ*তঙ্কে আর কখনো আবিরের দিকে চো*খ তুলে তাকায় নি, কথা বলা তো দূরের বিষয়, আবির বাসায় থাকাকালীন রুম থেকে বের ই হয় নি মেঘবালিকা । আবির ও কখনো খোঁজ নেয় নি মেয়েটার। ছোট্ট মেঘের মনে তখনই জন্ম নেয় আবির ভাই এর প্রতি অ*ভিমা*ন, সীমাহীন অভি*যোগ, কষ্ট আর বি*তৃষ্ণা। ২ বছর পর দেশ ছাড়ে আবির। এই সময়ের মাঝে মেঘ আবিরের সাথে এক টেবিলে খেতেও বসতো না। আবিরকে দেখলেই যেনো ছুটে পালাতো মেঘ৷ আবির বিদেশ চলে যাওয়ার পর মেঘ আবিরের ভয় থেকে নিজেকে সাবলীল করে আপন মনে রাজত্ব করতে থাকে খান বাড়িতে৷ আবিরের পাশের রুমটায় তার দখলে চলে আসে আবির থাকলে হয়তো কখনোই সে এই রুমে আসতো না।

বিদেশ যাওয়ার পর আবির সবার সাথে ভিডিও কলে কথা বলেছে কিন্তু কথা হয় নি মেঘের সাথে, ২-১ বার মেঘের কথা জিজ্ঞেস করেছিল ঠিকই কিন্তু মেঘ আত*ঙ্কে কথা বলতে চাই নি। এর পর থেকে আবিরও কখনো মেঘের কথা জিজ্ঞেস করে নি।।

এতবছর পর ভাই বাড়ি এসেছেন, এখনও দেখা হয় নি তারসাথে। এরিমধ্যে মা*রপি*ট করে ফেলেছেন৷ ছোটবেলায় অনুভূতি প্রকাশ না করতে পারলেও আজ আবিরের ক*র্মকা*ণ্ডের কথা শুনে মেঘের মনে একটা নাম ই ঘুরপাক খাচ্ছে সেটা হলো 'হি*ট*লা*র'। হি*ট*লা*রে*র সাথে আবিরের কতটা মিল বা বেমিল তা বিবেচনা করার বিন্দুপরিমাণ ইচ্ছে নেই তার ।। মাথায় একটা চিন্তায় ঘুরছে ধন্যবাদ জানানো উচিত কিন্তু সে কি আদোঃ কথা বলতে পারবে হি*ট*লা*রে*র সাথে..??

এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলো সে

পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

ভোর বেলা থেকেই বাড়িতে রান্নার ধুম পরে যায়। তিনভাই সকাল সকাল খেয়ে অফিসে চলে যায়। মীম আর আদিও স্কুলে চলে যায়। মেঘ ঘুম থেকে উঠে ৮ টায়, রাত জাগার কারণে সকালে উঠতে পারে না সে। মাঝে মাঝে গোসল করে খেয়ে বের হয় মাঝে মাঝে এমনিতেই চলে যায়।। ১০-২টা পর্যন্ত বাহিরে কোচিং,তারপর টিউশন শেষ করে বাড়ি ফিরে, ফ্রেশ হয়ে খেয়ে একটু ঘুমাই। বিকালে একটু হৈ-হুল্লোড় করে তারপর পড়াশোনা করে। এই তার বর্তমান জীবন। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না।। খেয়ে কোচিং এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরেছে, বাসার গাড়িই তাকে দিয়ে আসে আবার কল দিলে গিয়ে নিয়ে আসে।

ঠিকঠিক ১২ টায় ঘর থেকে বের হয় আবির ধীরগতিতে নিচে আসে , চি*ন্তিত মুখ দেখে মা মালিহা খান ভীতস্বরে ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন,
'কিছু হয়েছে তোর বাবা.?'

আবির মুখের ভা*রিভা*ব বজায় রেখে উত্তর দিলেন...
'কিছু হয় নি, খেতে দাও'

ছোটবেলার চঞ্চলতার ছি*টেফোঁ*টাও নেই ছেলেটার মধ্যে এটা ভেবেই বারবার হতাশ হচ্ছেন মালিহা খান। হঠাৎ চোখ পরে ছেলের হাতে ব্যা*ন্ডে*জের দিকে, হাতটাও ফুলে গেছে অনেকটা।৷

আবির খাবার খাচ্ছে আর তার মা শা*ন্তস্বরে ছেলেকে বুঝাচ্ছেন, এটা করো না, সেটা করো না, মনে হচ্ছে ৫ বছরের শিশু সে, আ*গুন- পানি চিনে না।। যদিও বাবা মায়ের কাছে সন্তানরা সারাজীবন শিশুই থাকে। খাওয়া শেষে মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যায় আবির৷

পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

মেঘ বাড়ি ফিরেছে ১ ঘন্টা হবে, শাওয়ার নিয়ে নিচে এসেছে খেতে। খাওয়া শেষ।

তানভির রুম থেকে ছুটে এসে জিজ্ঞেস করে,
'বড় আম্মু, ভাইয়া কোথায়?'

আঁতকে উঠেন মালিহা খান,
'ও তো ২-৩ ঘন্টা আগেই খেয়ে বের হয়েছে, কেন?'

'ইশ,মিস করে ফেললাম'

মালিহা খানঃ কি হয়েছে বাবা?

মেঘ নিরবে তাকিয়ে, ভাই আর বড় আম্মুর কথোপকথন শুনছে আর বুঝার চেষ্টা করছে ঘটনা টা কি৷

তানভির ভাইকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে,
'কোথায় আছো?'

আবির কি যেনো বললো শুনা যায় নি... তানভিরের চোখে মুখে উ*ত্তে*জনা স্প*ষ্ট।

বড় আম্মু,আম্মু, কাকিমনি বাহিরে চলো

কেউ প্রশ্ন করার আগেই তানভির ছোটে গেলো বাহিরে, তার পিছন পিছন মীম,আদি,মা কাকিরা সবাই দরজা পর্যন্ত গেলো,সবার পিছনে মেঘও গেলো সেখানে৷

এরিমধ্যে বাইকে বাড়ি ঢুকলো আবির, নীল রঙের চকচকে একটা সুন্দর বাইক,হেলমেট টাও নীল।
হেলমেট খুলতে খুলতে তাকায় বাড়ির মানুষের দিকে.... মেঘ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
সেই কবে দেখেছিলো আবিরকে সেই আবিরের সাথে এই আবিরের চেহারার কোনো মিল নেই। হেলমেট খুলাতে চুল গুলো এলোমেলো হয়ে গেছে আবিরের, চোখে সানগ্লাস, নেভিব্লু রঙের শার্ট কালো প্যান্টের সাথে ইন করে পরেছে, হাতে কালো ফিতার একটা ঘড়ি, পায়ে শো জুতা। আপাদমস্তক দেখলো আবিরের, হৃ*দপি*ণ্ডের চা*রপ্রকো*ষ্ঠ ছটপট করতে লাগলো মেঘের। আবিরের দিকে বি*ভোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে৷

আবির বাড়ির সকলের উদ্দেশ্যে বললো,
'বাইক টা কিনেছি,কেমন হয়েছে?'

আবিরের কন্ঠ মেঘের মনের গহীনে ধাক্কা খায় এতে হুঁশ ফিরে তার। দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না সে। একদৌড়ে নিজের রুমে ঢুকে দরজা আটকে শুয়ে পরে মেঘ ।।

মীম আর আদি হৈ-হুল্লোড় করছে, আবির ভাইয়ার কাছে আবদার করছে ওদের বাইকে নিয়ে ঘুরার জন্য ।

মালিহা খান ছেলের পানে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন, 'বাসায় ২-৩ টা গাড়ি থাকার পরও বাইক কেনো কিনলে?'

'আমার গাড়িতে চলাচল ভালো লাগে না',অবলীলায় উত্তর দিলো আবির।

পিচ্চিরা খুশি হলেও খুশি হতে পারেন নি মালিহা খান, হালিমা খান আর আকলিমা খান। কারণ এই বাড়িতে বাইক ব্যবহার নিষেধ করেছিলেন স্বয়ং আলী আহমদ খান নিজেই। তিনি কোনো এক বয়সে বাইকে এক্সি*ডেন্ট করেছিলেন সেই থেকে বাইক কিনা বা বাইকে চলাচল নি*ষিদ্ধ করেছেন। ইকবাল খানের খুব ইচ্ছে ছিল বাইক কেনার কিন্তু বড় ভাইয়ের নিষেধ অমান্য করার সাধ্য নেই তাই কিনতে পারেন নি। তানভির খুব করে চাইছিল বাইক কিনতে, রা*জনীতি*র সুবাদে অনেক জায়গায় চলাচল করতে হয় বাইক থাকলে সুবিধা হয়। বাবা মোজাম্মেল খানকে বলেও ছিল সে, কিন্তু বাবার এক কথা , তোর বড় আব্বু বাইক পছন্দ করে না তোর দরকার পড়লে তুই একটা গাড়ি সবসময় ব্যবহার করিস তারপরও বাইক কিনার নাম মুখে নিস না।

আবির বাড়ি ফিরেছে ২৪ ঘন্টা হবে হয়তো, এরমধ্যে ই বাইক কিনে ফেলছে, এর পরি*ণাম কি হবে তা ভেবেই ভয়ে আঁ*তকে যাচ্ছেন বাড়ির তিন বউ।।

পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90

★★★★

অষ্টাদশীর হৃদয় কাঁ*পছে, কেমন জানি অস্থির লাগছে সবকিছু। পরিচ্ছন্ন নয়নে তাকিয়ে আছে রুমের জানালার দিকে, দৃষ্টি তার অসীম দূরত্বে। কি জানি কি ভাবলো কতক্ষণ হঠাৎ ঝলমলিয়ে উঠলো মেঘ সঙ্গে সঙ্গে চোয়াল শক্ত করে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলো,

' বাই এনি চান্স আমি কি হি*ট*লা*রটা*র উপর ক্রাশ খেয়েছি......???'

চলবে......

#বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন,গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

ফ্লোড়ে ছিপছিপে রক্তের দাগ। ব্যাথায় কোমড়ে হাত দিয়ে বসে আছে বৃষ্টি। রক্তের দাগ গুলো স্পষ্ট দেখা যাওয়ায় ওড়নাটা খুলে কোমড়ে ব...
02/07/2025

ফ্লোড়ে ছিপছিপে রক্তের দাগ। ব্যাথায় কোমড়ে হাত দিয়ে বসে আছে বৃষ্টি। রক্তের দাগ গুলো স্পষ্ট দেখা যাওয়ায় ওড়নাটা খুলে কোমড়ে বেধে নিয়েছে সে। একটা ছাউনির নিচে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলো, আর তখনি এমনটা শুরু হয়েছে বৃষ্টির। প্রায় অন্ধকার নেমে এসেছে। দুরে বসে থাকা কয়েকজন ছেলে বার বার আড় চোখে তাকাচ্ছে তার দিকে। একে অপরকে কি বলছে তা স্পষ্ট বুঝতে পারছেনা বৃষ্টি। প্রচুর ভয়ও করছে তার। ওড়নাটা কোমরে বেধে রাখায় চুলগুলো সামনে এনে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে সে। এবার ছেলেগুলোও এসে তার পাশে দাড়ালো। একজনের হাতে সিগারেট আর বাকি দু,জনের মুখে বাকা হাসি।
- আপু মনে হয় বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন তাইনা? আমাদের গাড়ি আছে চলুন আমরাই দিয়ে আসবো আপনাকে।
কথাটা বলেই মুখে থাকা সিগারেট টা ছুরে ফেলে ছেলেটি। খিক খিক করে হেসে উঠলো পাশের ছেলে দুটি।
কোনো উত্তর না দিয়ে ভয়ার্ত চেহারায় ওখান থেকে হাটা ধরলো বৃষ্টি। পেছন থেকে ছেলেটা হাতটা চেপে ধরলেই এক ঝাটকায় হাতটা ছারিয়ে দ্রুত পায়ে হাটা ধরে সে। বৃষ্টি পেছনে তাকাতেই দেখে ছেলেগুলোও তার পিছু নিয়েছে। এবার ভয় যেনো পুরুপুরি ভাবে গ্রাস করে নিয়েছে তাকে। আশেপাশেও কাওকে চোখে পরছেনা যে হেল্প চাইবে। ধিরে ধিরে দৌড়াতে শুরু করে সে।
দৌড়াতে দৌড়াতে হটাৎ রাস্তার বাম পাশ থেকে একটা গাড়ি এসে ব্রেক চাপে তার সামনে। তবুও তাল সামলাতে না পেরে গাড়িটার সাথে হালকা ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় পরে যায় বৃষ্টি।
ডান হাতটা কিছুটা ছিলে গিয়েছে তার। মাথায়ও হালকা লেগেছে। হাত থেকেও রক্ত বের হয়ে আসছে কিছুটা।
গাড়ি থেকে নেমে আসে একটা ছেলে। ফর্সা গায়ের রং, জামার হাতা গুলো কুনুই পর্যন্ত পোল্ড করা। গালে হলকা খোচা খোচা কালো রংয়ের দাড়ি। ফর্সা মুখে কালো রঙের দাড়িগুলোও যেনো ভালোভাবেই ম্যাচিং করে নিয়েছে। বৃষ্টিকে কিছু বলতে চেয়েও তেড়ে আসা ছেলেগুলো দেখে কিছু বললোনা সে।
বৃষ্টির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো ছেলেটা। আরেক হাত পকেটে গুজা। মোটামুটি এটিটিউট বিধ্যমান। ছেলেটার হাত ধরে উঠে দাড়িয়ে ভয়ার্ত চেহারায় ছেলেটার পেছনে গিয়ে দাড়ালো বৃষ্টি।
তেড়ে আসা ছেলেগুলো বৃষ্টির কাছে আসতেই রাতকে দেখে থমকে গেলো তারা।
- র. রাত ভাই আপনি?
পকেট থেকে হাতটা বের করে রাত সজোরে একটা চর বসিয়ে দেয় ছেলেটার গালে। রাত ছেলেটার কলার চেপে ধরে, বৃষ্টিকে বলে উঠে,
- সামনে আসো।
বাধ্য মেয়ের মতো সামনে এসে দাড়ালো বৃষ্টি। রাত ছেলেটাকে বলে উঠে,
- মা ডাক তাকে।
- ভাইয়া ও তো আমার বয়সে ছোট হয়ে আ.....
তার আগেই আরেকটা চর পরে ছেলেটার গালে।
- মা ডাক। (হুঙ্কার দিয়ে)
ছেলেটা গালে হাত দিয়ে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বলে।
- মা।
- আবার ডাক,,,
- মা।
- আবার ডাক,,,
- মা।
রাত ছেলেটার কলার ধরা অবস্থায় আরেক হাতে চুল ঠিক করে দিতে দিতে বলে উঠে,
- মেয়েরা হলো মায়ের জাত। মা কে যেমন সম্মান দিস, তেমনই সম্মান করতে শিখ পুরু মেয়ে জাতিকে। আর মেয়েদের দুর্বলতার সুজুগ নেওয়াটা কোনো সু-পুরুষের কাজ হতে পারেনা।
- সরি ভাইয়া।
- এই রাস্তা ধরে সোজা এক দৌর দিয়ে চলে যাবি, পেছন ফিরবিনা একধম।

ছারা পেয়েই দৌড়ে চলে যায় ছেলেটি। রাত ঘুরে দাড়ায় বৃষ্টির দিকে।
- এভাবে রাস্তায় একা চলাচল না করলে কি হয়না? তাও আবার এমন অবস্থায়? যদি কিছু হয়ে যেতো আজ?
ভয়ে চুপ করে আছে বৃষ্টি। কিছু নোটস আনতে গিয়েছিলো বান্ধবির বাসায়। ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধা হয়ে গেলো। আর ফিরতি পথেই এমনটা হতে হলো তার সাথে। মাথায় চোট পাওয়ায় ধিরে ধিরে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে তার।

চোখ খুলে তাকাতেই নিজেকে একটা হসপিটালে আবিস্কার করলো বৃষ্টি। বুঝতে পারছেনা এখানে এলো কি করে? হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে, ছিলে যাওয়া জায়গায় বেন্ডেজ করা। পাশে তাকাতেই সেই রাত নামের ছেলেটাকে দেখতে পায় সে। ফোনে কার সাথে যেনো কথা বলছে।

বৃষ্টিকে বাড়ি পৌছ দিচ্ছে রাত। পিট পিট করে লুকুচুরি দৃষ্টিতে রাতের দিকে বার বার তাকাচ্ছে বৃষ্টি। স্নিদ্ধ চুল, মায়াবি চোখ, গালে খোচা খোচা কালো দাড়ি। সাদা জামার হাতা গুলো কুনুই পর্যন্ত পোল্ড করা। ফর্সা হাতে কালো রঙের একটা ব্রন্ডের এ্যাপেল ওয়াচ। সব মিলিয়ে যেনো পুরুই একটা ক্রাশ বয়। এতোক্ষন ভালো করে খেয়াল না করলেও এবার বৃষ্টির দৃষ্টি আটকে আছে রাতের দিকে। বিষয়টা লক্ষ করে রাত বলে উঠে,
- কোন দিকে?
রাতের কথায় ধ্যান ভাঙলো বৃষ্টির। মাথা নিচু করে উত্তর দিলো,
- একটু সামনে গিয়ে বামে।

বাসার সামনে গিয়ে রাত একবার বৃষ্টির দিকে তাকাচ্ছে আবার বাড়ির দিকে তাকাচ্ছে। বৃষ্টি গাড়ি থেকে নেমে রাতকে একটা থ্যাংস দিয়ে হাটা ধরলো বাড়ির দিকে। পেছন থেকে রাত ডেকে উঠে,
- এই যে শুনুন।
পেছন ফিরে তাকায় বৃষ্টি,
- এটা কি আপনাদের বাসা?
- হ্যা, কেনো?
- তুমি কি বর্ষার ছোট বোন বৃষ্টি?
- হ্যা, কিন্তু আপনি আপুকে চিনেন কিভাবে?
একটা হাসি দিয়ে গাড়ি নিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো রাত। বৃষ্টি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাতের চলে যাওয়ার দিকে। হিসেব মিলাতে পারছেনা সে। হটাৎ তুমি করে বললো, আবার আপুর কথা জিঙ্গেস করলো। আর লোকটা আমাকে আর আপুকেই বা চিনে কি করে? আর চিনেতো পরিচয় না দিয়ে হুট করে কেনো চলে গেলো? আজব!

কিছুটা দুরে গিয়েই বর্ষাকে ফোন দিলো রাত। দু,বার বাজতেই রিসিভ করলো বর্ষা। ফোন কানে নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালো সে। হাতে কফির মগ। কফিতে চমুক দিয়ে বলে উঠে,
- হ্যালো,,,,
- কেমন আছো?
- ভালো।
- সারাদিন তো একবার ফোনও দিলেনা।
- একটু ব্যাস্ত ছিলাম তাই। তো কি করছো, খেয়েছো ঠিক মতো?
- হুম,,,
- দেশে ফিরছো কবে?
একটা হাসি দেয় রাত,
- একটু নিচে আসতে পারবে?
- কেনো?
- আগে আসোনা, সারপ্রাইজ আছে।
- পারবোনা, কি সারপ্রাইজ আগে বলো। তাছারা আমি এই অসময় নিচে যেতে পারবোনা।
- আমি এখন তোমার বাসার সামনে।
কথাটা শুনতেই বিষম খেলো বর্ষা। নিচে তাকাতেই দেখে একটা কালো গাড়ি দাড়িয়ে আছে। আর তার পাশে দাড়িয়ে আছে রাত। হাত পা যেনো মুহুর্তেই অবস হয়ে আসছে বর্ষার।
নিরবতা ভেঙে রাত বলে উঠে,
- কি হলো? মনে হচ্ছে আমাকে দেখেই তুমি আতঙ্কিত হয়ে আছো?
আর কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছেনা বর্ষা। ফোনটা কেটে এক দৌড়ে ভেতরে চলে গেলো সে।

ভিতরে গিয়েই তিহানকে ফোন দিলো বৃষ্টি।
- হ্যালো তিহান।
- হুম।
- সর্বনাস হয়ে গেছে।
- কেনো কি হয়েছে?
- রাত ফিরে এসেছে দেশে।
- রিলেক্স, মাই ডিয়ার।

ওদিকে রাত বর্ষার নাম্বারে ফোন দিয়ে দেখে নাম্বার বিজি। রাতের ধারনা হয়তো বর্ষাকে না বলে এভাবে চলে আসায় রাগ করেছে সে। ছয় বছরের সম্পর্ক তাদের। পারিবারিক ভাবে সব ঠিকঠাকও হয়ে আছে তাদের। রাত পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফিরলেই তাদের বিয়ের ব্যাপারে আগাবে পরিবারের লোকজন। কিন্তু এর ফাকে বর্ষা অন্য একজনের সাথে জড়িয়ে গিয়েছে। তার মনে হচ্ছে তিহানই রাতের থেকে ব্যাটার। বিদেশে স্যাটেল সে। তার দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্নটা তিহানই পুরণ করতে পারবে। রাতকেও তিহানের ব্যাপারে কিছু বুঝতে দেওয়া যাবেনা। হয়তো সব উলোট পালট করে ফেলবে রাত। আর ওদিকে বিয়ের জন্য আগাবে পরিবার। এখন যা করার সব ঠান্ডা মথায়ই করতে হবে।

রাতকে এক মেসেজ পাঠায় বর্ষা।
"এখন আসতে পারবোনা রাত। কাল দেখা করবো তোমার সাথে। আর হ্যা, তুমি আসার আগে আমায় একটিবার জানালেও পারতে।""

বর্ষার এমন আচরণে অবাক হলো রাত। যেই বর্ষা আগে মধ্য রাতে তাকে ফোন করে নিয়ে আসতো তাকে বাসার সামনে। আর আজ সেই বর্ষাই তাকে এ্যাবোএট করছে? নাকি এটা তার অভিমান? সাত পাঁচ ভেবে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো রাত।

ওদিকে কিছুক্ষন ওখানে দাড়িয়ে থেকে ঘরের দিকে হাটা ধরলো বৃষ্টি। তার এতোক্ষনে মনে হলো, আপুর সাথে রাত নামের একটা ছেলের সম্পর্ক আছে। কিন্তু তাকে কখনো দেখেনি বৃষ্টি। তাহলে এই সেই রাত। ছি ছি শালিকা হয়ে হবু দুলাভাইর উপরই ক্রাশ খাওয়া। কি লজ্জা।

ঘরে প্রবেশ করতেই কোমর থেকে ওড়নাটা খুলে নিলো বৃষ্টি। পাজামাতে রক্তের দাগ গুলো প্রায় শুকিয়ে গেছে। কিন্তু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দাগ গুলো। দ্রুত পায়ে ঘরে ঢুকে নিজের রুমের দিকে হাটা ধরলো সে। তখনই পেছন থেকে ডাক দিলো তার মা।

To be continue........

#বৃষ্টি_ভেজা_রাত💖
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ💖

#পর্বঃ__১

 #আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে  #লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী (০২) (scsalma90)এতবছর পর নিজের রুমটা  আশ্চর্যান্বিত নয়নে দেখছে আবির। সেই ...
01/07/2025

#আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে
#লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী
(০২) (scsalma90)

এতবছর পর নিজের রুমটা আশ্চর্যান্বিত নয়নে দেখছে আবির। সেই পরিচিত ঘ্রাণ যেখানে সে নিজের জীবনের ১২ টা বছর কাটিয়েছিলো। যেই রুমটা ছিল তার একান্ত ব্যক্তিগত, আজও তাই আছে। একটা জিনিসও এদিক সেদিক হতে দেন নি আবিরের মা 'মালিহা খান'। এমনকি রুমে বছরের পর বছর তালা দিয়ে রেখেছেন তিনি৷ যখন ই ছেলের কথা মনে হতো ছেলের রুমে এসে নিরবে কেঁদে যেতেন যেনো কেউ বুঝতে না পারে৷

আবির রুমে ঢুকে লাগেজ খুলে নিজের পরনের টিশার্ট হাতে শাওয়ার নিতে চলে যায়। শাওয়ার শেষে বের হলেন একটা কফি কালার টিশার্ট আর একটা টাওজার পরে হাতে টাওয়েল নিয়ে মাথার চুল মুছতে মুছতে। খাটে বসে আছে তানভির। লাগেজ নিয়ে এসে রুমেই বসে আছে সে৷

তানভির কে দেখে আবির জিজ্ঞেস করছে,
'কি হলো, কিছু বলবি?'

তানভির মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করছে
'আচ্ছা ভাইয়া ঐ লাগেজটা ধরতে দিলে না কেন? কি আছে ঐটাতে?'

আবিরের চক্ষুদ্বয়ে উদ্বেগ স্পষ্ট, চোয়াল শক্ত করে উত্তর দিলো
'ঐটাতে আমার পার্সোনাল কিছু জিনিস আছে৷'

তানভির হাসতে হাসতে উত্তর দেই,
' সেই পার্সোনাল জিনিস গুলো দেখতে চাচ্ছে আমার অবুঝ মন, কি করবো বলো?'

স্বভাবসুলভ গম্ভীর কন্ঠে উত্তর দিলো আবির
'কাউকে দেখানোর জিনিস আশা করি পার্সোনাল হবে না?'

তানভির ভাইয়ের আপত্তিস্বর বুঝতে পেরে এই বিষয়ে আর কিছু বলে নি৷
শুধু জিজ্ঞেস করে,
"বিকালে কি বের হবে?"

আবির উপর নিচ মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক সম্মতি জানায়৷

তানভির কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বিদায় নেয় রুম থেকে৷

আবির খাটের এক কোণায় বসে মোবাইল হাতে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু চেক করতে ব্যস্ত হয়ে পরে।

★★★

মেঘ নিজের রুমে ঢুকে শপিং ব্যাগ খুলে ৩ টা ড্রেস বের করলো। ৩ টা জামা ই অসাধারণ সুন্দর। ২ টা গাউন ড্রেস আর একটা গর্জিয়াছ কাজের থ্রিপিস। ল্যাপটপ টাও খুলে দেখে, তার প্রয়োজনীয় সকল এপ ব্রাউজার অলরেডি ল্যাপটপে সেট করা আছে।

মেঘের দৃষ্টি যায় রেপিং পেপারে মোড়ানো বক্সের দিকে। রেপিং পেপার খুলতেই চোখে পরে ৩ টা উপন্যাসের বই যেগুলোর উপরে ছোট একটা চিরকুটে লিখা 'এডমিশনের পরে পড়বি'৷ তারসাথে একটা ছোট বক্স যেখানে একবক্স রঙিন পাথর। মেঘের এই পাথর গুলো ছোটবেলায় খুব পছন্দ ছিল। তার সাথে একটা iPhone 13 pro max মোবাইলের বক্স। ফোন দেখে মেঘের চক্ষু চরখগাছ। অনেকদিন যাবৎ মনের কোণে সুপ্ত ইচ্ছে ছিল একটা আইফোন কেনার৷ কিন্তু কাউকে বলার মতো সাহস হয় নি তার। এগুলো দেখে খুশিতে গদগদ হয়ে পরেছে মেঘ৷

ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়াকালীন মেঘের যখন কলেজ, প্রাইভেট, কোচিং সব মিলিয়ে ব্যস্ততায় দিন কাটছিলো, তখন তানভির তার পুরোনো একটা ফোন দিয়েছিল মেঘকে। সীমটাও ছিল তানভিরের, বাসার মানুষের বাহিরে শুধু ৩-৪ জন বান্ধবীর নাম্বার ছিল সেই ফোনে। এমনকি স্যারদের কেও নাম্বার দিতে নি*ষেধ করেছিল ক*ড়া ভাষায়।। তানভির বরাবর ই বোনের ব্যাপারে খুব সিরিয়াস৷ ভাইরা বোনকে শা*সন করে ঠিক আছে কিন্তু তানভীর মেঘকে একটু বেশিই শা*সনে রেখেছে এত বছর৷

HSC পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে নিজের মায়ের পেটের ভাই তানভিরকে খুব সা*হস করে বলেছিলো,

'ভাইয়া পরীক্ষা শেষ করে আমায় একটা নতুন ফোন কিনে দিবা?'

অ*গ্নিদৃ*ষ্টিতে তাকিয়ে ছিল তানভির, যেনো মস্ত বড়ো অ*ন্যায় করে ফেলছে।

তারপর মেঘ নতুন ফোনের আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছিল।

আজ সে না চাইতেই আইফোন পেয়ে গেছে, ল্যাপটপ পেয়ে গেছে৷ এ যেনো মেঘ না চাইতেই জল৷ আনমনে ভাবছে, মনে হয় তানভির ভাইয়া বলেছে ফোন আনতে আর ল্যাপটপ আনতে নাহলে ওনি কিভাবে জানবে আমার ফোন নেই।

★★★

এদিকে ১ ঘন্টা যাবৎ ফোনে মনোযোগ দিয়ে কি যেনো কাজ করছে আবির। হঠাৎ আদি দৌড়ে এসে দাঁড়ায় দরজায়,

আদিঃ ভাইয়া তোমায় খেতে ডাকছে।
আবিরঃ যা আসছি।

১০ মিনিটের মধ্যে সাদা শার্ট পরে রেডি হয়ে নিচে নামলো আবির।
অসময়ে তেমন কেউ নেই নিচে৷ বিকাল ৪ টা বাজে৷ সবার খাওয়া শেষ অনেক আগেই। মালিহা খান বসে ছিলেন ছেলের জন্য।

ছেলের ফিটফাট হয়ে রেডি হওয়া দেখে মালিহা খান জিজ্ঞেস করছেন, 'কোথাও যাবি?'

আবির,' হ্যাঁ,একটু কাজ আছে!'

আবির চুপচাপ খাবার খাচ্ছে। ছোটবেলা যা যা সে পছন্দ করতো সব রান্না হয়েছে আজ। সব খেতে পারে নি যতটুকু সম্ভব খেয়ে উঠে পরেছে।

এরিমধ্যে তানভির হাজির হয়েছে...
'ভাইয়া রেডি আমি, এখন যাবে নাকি লেইট হবে?'

আবির, 'এখনই বের হবো'

মালিহা খান রান্নাঘর থেকে ডেকে বলছেন, 'গাড়ি নিয়ে বের হবি না? চাবি নিয়ে যাহ...'

আবিরঃ গাড়ি লাগবে না আম্মু

দুই ভাই বের হয়ে গেলো......

পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

যৌথ পরিবারগুলোর সবচেয়ে আনন্দময় সময় হলো সন্ধ্যাবেলা। বাড়ির সকলে মিলে হৈচৈ করে বিকালের নাস্তা খাওয়া,একটু টিভি দেখা, খেলাধুলা করা,আড্ডা দেয়া৷

সমস্যা শুধু বড় ভাই, তানভির সবসময় মেঘকে চোখে চোখে রাখে৷ কি করছে,কি না করছে, কখন খাচ্ছে, পড়াশোনা করছে কি না এসবকিছু দেখায় যেনো তার একমাত্র কাজ। কিন্তু মীম আর আদিকে কোনোদিন একটা ধ*মক পর্যন্ত দেয় নি তানভির। এ কেমন দুমুখো ব্যবহার। তানভির যতক্ষণ বাসার বাহিরে থাকে মেঘ ততক্ষণ মুক্ত,স্বাধীন ।

তানভির বাসায় না থাকায় তিনভাই বোন মিলে ছোটাছুটি করছে। মেঘ যা বলে ছোট ২ টা তাই করে। মেঘ আর আবিরের এখনও দেখা হয় নি। মেঘ কোচিং থেকে এসে রুমে যে ঢুকেছিল। তার গিফট নিয়ে ব্যস্ততার কারণে সবে মাত্র রুম থেকে নিচে এসেছে। অন্যদিকে আবির বাসা থেকে চলে গেছে আরও ২ ঘন্টা আগে৷

মেঘ,মীম আর আদির ছোটাছুটি শেষ হয় বড় আব্বু 'জনাব আলী আহমদ খানের' বাসায় প্রবেশ দেখে৷ আলী আহমদ খান বাসায় ঢুকতে ঢুকতে নিজের স্ত্রী মালিহা খানকে জিজ্ঞেস করলেন,
'আবির কোথায়?'

মালিহা খান উত্তরে বললেন,
'ও তো তানভিরকে নিয়ে বের হলো বললো কি কাজ আছে'

আলী আহমদ খান সোফায় বসতে বসতে মেঘের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন,
'পড়াশোনার কি অবস্থা আম্মু?'

মেঘ শান্তস্বরে উত্তর করলো,
"আলহামদুলিল্লাহ ভালো বড় আব্বু। তবে "

'তবে কি?' প্রশ্ন করলেন আলী আহমদ খান

আমার ফিজিক্স আর ম্যাথে একটু সমস্যা, কোচিং এর সাথে কুলাতে পারছি না। প্রাইভেটগুলোতেও অনেকটা এগিয়ে গেছে।

আলী আহমদ খান, ' ঠিক আছে তোমার জন্য প্রাইভেট টিউটর নিয়ে আসবো। কাল বা পরশুর মধ্যেই ম্যানেজ করতেছি , তুমি চিন্তা করো না মন দিয়ে পড়াশোনা করো আম্মু৷ তোমার ভাই তানভির তো আমার কোনো কথা শুনে না আর না শুনে তোমার আব্বুর কথা, কোথা থেকে মাথায় ভূত চেপেছে রাজনীতি করবে৷ পড়াশোনায় গুরুত্ব না দিয়ে রাজনীতিতে গুরুত্ব দিচ্ছে। তুমি পড়াশোনা করো ভালো করে, মেডিকেলে অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেনো চান্স টা হয়ে যায়।"'

'জ্বি বড়আব্বু, চেষ্টা করবো।'

'খেয়েছো কিছু তোমরা?' আলী আহমদ খান জিজ্ঞেস করলেন

এবার উত্তর টা মীম দিলো, 'হ্যাঁ বড় আব্বু খেয়েছি আমরা'

ঠিক আছে এখন রুমে গিয়ে পড়তে বসো।

৩ ভাই বোন কোনো কথা না বলে তিনদিকে যার যার রুমে চলে যায়।

পেইজঃ Salma Chowdhury - সালমা চৌধুরী (scsalma90)

★★★★

রাত ৯ টায় বাড়িতে ঢুকে আবির আর তানভির। খাবার টেবিলে খেতে বসেছেন ৩ ভাই আর আদি। মীম, মেঘ কেউ নেই। রান্নাঘরে তিন ঝা খাবার রেডি করছেন।

বিকেলে আবির সাদা শার্ট পরে বেরিয়েছিল। সাদা শার্টের ২-৩ জায়গায় একটু একটু রক্ত লেগে আছে আর আবিরের হাতে ৩ টা ওয়ানটাইম ব্যান্ডেজ লাগানো, নজরে পরে ইকবাল খানের।

'কিরে আবির,তোর হাতে কি হয়েছে? শার্টেই বা দাগ কিসের?'

এই কথা শুনে ছুটে আসেন মালিহা খান, কি হয়েছে আবির?
বুকের ভেতর ছ্যাত করে উঠেছে, একমাত্র ছেলের শরীরে একটা আচড় ও মা সহ্য করতে পারেন না।

আবিরঃ তেমন কিছু না, হাতে একটু লেগেছিল । ঠিক হয়ে যাবে, চিন্তা করো না।

আর কথা না বাড়িয়ে সিঁড়ির কাছে চলে যায় আবির।

আলী আহমদ খান ছেলের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করেন, 'খাবে না?'

'না আব্বু। বিকেলে খেয়েছি খিদে নেই। '
এই বলে রুমের দিকে চলে যায় আবির।

আবিরের কন্ঠ শুনে মেঘ রুম থেকে বের হয় তাড়াতাড়ি, এতগুলো গিফট দিলো অবশ্যই ধন্যবাদ জানানো উচিত, ৭ বছরে ভাইয়ের মুখটাও দেখে নি সে৷ কিন্তু মেঘ রুম থেকে বের হতে হতে আবির রুমে ঢুকে পরেছে।

মেঘের চোখ মুখে নিরবতা, নিচে গিয়ে সবার সাথে খেতে বসে, তানভির ও খেতে বসেছে হাতমুখ ধৌয়ে।

ইকবাল খান তানভিরের উদ্দেশ্যে বলে,
'তুই তো ছিলি আবিরের সাথে, কি হয়েছে বল?'

তানভির: চাচ্চু আমি তো ভাইয়ার সাথে বের হয়েছিলাম কিন্তু পরে আমি পার্টি অফিসে চলে গিয়েছিলাম৷ তাই সঠিক জানি না৷

মেঘ যেনো কিছুই বুঝতে পারছে না। বাড়িতে এসেছে ৭-৮ ঘন্টা হয়ে গেছে মানুষটার, অথচ সে এখনও দেখেই নি তাকে তারমধ্যে আবার কি অঘটন ঘটিয়েও ফেলেছে। সে শুধু চাচ্চু আর ভাইয়ার মুখের দিকে তাকাচ্ছে বার বার৷

আহমদ আলী খান গম্ভীর স্বরে তানভিরকে বললেন, 'সে তো তোমার ভাই কম বন্ধু বেশি৷ তাকে বলে দিও কোনো প্রকার মা*রপি*ট আর রা*জ নী*তিতে যেনো না জরায়। আর এটাও বলে দিও তাকে, তার বয়সটা কিন্তু আমি পার করে এসেছি৷ তাকে দেশে এনেছি মা*রপি*ট করার জন্য না, আমাদের ব্যবসার হাল ধরার জন্য । '

তানভির: আসলে বড় আব্বু সামান্য হাত কেটেছে ভাইয়ার৷

আলী আহমদ খান: থাক আমায় কিছু বুঝাতে হবে না। কোনটা মা*রপি*টের কা*টা আর কোনটা কেটে যাওয়া আমি তা বুঝি৷ তুমি তো নিজের রাস্তা বেছেই নিয়েছো অন্তত তাকে বুঝাও এসবে যেনো না জরায়

তানভিরঃ জ্বি বড় আব্বু৷

মেঘ আচমকা প্রশ্ন করে বসে,
'কি হয়েছে? '

তানভির মেঘের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বলে,
'তুই চুপচাপ খা'

ইকবাল খান বড় ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
'আবির কেনো মা*রামা*রি করবে,এতবছর বাহিরে ছিল ছেলেটা, এখানে ওর কে এমন শ*ত্রু আছে?'

বাড়ির সবার মধ্যে নিরবতা কেউ কোনো কথা বলছে না।

মেঘ মনে মনে ভাবছে,
''আবির ভাইয়া মা*র*পি*ট করেছে? কিন্তু কেনো? এত বছর ভাবতাম আমার ভাই ই পঁ*চা, রা*জনী*তি করে, আমায় শা*সন করে।৷ কিন্তু আবির ভাই তো দেখা যাচ্ছে পুরাই হি**ট*লা*র'।

চলবে.......

Address

Kurigram
Rongpuria

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Tanisha Tasnim posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Tanisha Tasnim:

Share