22/08/2025
রেস্টুরেন্ট তো অনেকেই করেন, কিন্তু এমন সবুজ গাছগাছালি, রঙিন ফুলের সমারোহ কটা রেস্টুরেন্টে থাকে? কজন এমন সুন্দর পরিবেশ রচনা করতে পারেন যেখানে মানুষ আসলেই এক অন্যরকম অনুভূতি হৃদয়ে নিতে পারে! আসলে আমরা হয়তো ভুলে যাই শুধু একটু খাওয়া আর গল্প করার বাইরেও মানুষের অন্যরকম ভালোলাগা, ভালোবাসা থাকতে পারে। দিগনগরের কোজি কুটিরে গেলে উদর পুরনের পাশাপাশি হৃদয় পূরণও হয়ে যায়। সঙ্গে অতিরিক্ত পাওনা কোজি কুটিরের মালিকের হাতে দেওয়া ফুলের গাছ উপহার। চার বছর ধরে শুরু থেকেই নিজের এই ইচ্ছা কে লালন করে আসছেন সঞ্জয় প্রামাণিক। আবার দেখুন, রক্তদান শিবিরও অনেকেই করি আমরা। কিন্তু একটা রেস্টুরেন্টের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর এই রক্তদান শিবির একটা অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে। অসাধারণ সুন্দর পরিবেশ রচনা, তার পাশে সঞ্জয় প্রামাণিকের গোটা পরিবারের আন্তরিক আতিথেয়তা সকলকে মুগ্ধ করে। আর সোনায় সোহাগার মতো এই অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিলেন পূজা প্রামানিক আর সৌমিলি বাগচী। একদিকে উৎসবের মেজাজে রক্তদান আর অন্যদিকে পূজা সৌমিলির গান, অনিন্দ্যর অসামান্য সঞ্চালনা আর উপস্থিত অতিথিদের ভাষণ সব মিলিয়ে গোটা পরিবেশটায় একটা অন্যরকম ভালো লাগা তৈরি হয়। যেখানে গ্রহিতা ব্লাড ব্যাংক কর্মীরা বলেন আমরা বহু জায়গায় রক্ত দান শিবির করতে গিয়েছি কিন্তু এত সুন্দর পরিবেশ আর কোথাও পায়নি, তাই আমাদের তালিকার প্রথম দিকে কোজি কুটির এর নাম লেখা থাকে। সঞ্জয় ও তার পরিবারের আন্তরিকতার গুনেই এখানে রক্তদান করলেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষরা। যেমন ছিলেন ক্রীড়া জগতের মানুষ, সঙ্গীত জগতের মানুষ তেমনি বিভিন্ন পেশার মানুষরা এসেছেন কেউ শান্তিপুর কেউ রানাঘাট কেউ কৃষ্ণনগর কেউবা শহর কলকাতা থেকেও। আবার দেখা গেল সদ্য পিতৃহারা এক ব্যক্তিও গুরুদশা নিয়ে রক্তদান করলেন কোন এক মুমূর্ষ প্রাণকে বাঁচিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে। এভাবেই রক্তদান যেন এক ভালোবাসার উৎসবে পরিণত হলো। উল্লেখ করতেই হয় কোজি কুটিরের কর্ণধার সঞ্জয় প্রামাণিক নিজে তার স্ত্রী কন্যা সহ শুরুতেই রক্তদান করেছেন। তার আপত্তিতে তার ছবি এখানে আমরা সংযুক্ত করতে পারলাম না। রক্ত যে শুধু প্রাণ বাঁচায় না, রক্ত যে শুধু কয়েকটা কম্পনেন্ট উপহার দেয় না, রক্ত সমাজের মধ্যে এক অন্যরকম ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি করে এই ধরনের অনুষ্ঠান দেখেই তা উপলব্ধি করা যায়।