25/02/2025
আজ বাধ্য হয়ে প্রান্তজ্যোতি দৈনিক নিয়ে প্রথম বার মুখ খুললাম, এতদিন একতরফা আঘাত হেনে চলছিল এই হাউসের'ই তিন জন প্রথম সারির কর্মী। শুধু তাই নয়, আমার নামে বদনাম, আমাকে ও সেই সঙ্গে আমাদের গোটা পরিবারকে নিয়ে কথা বলতে থাকলো, এমনকি শুধু আমার প্রতিষ্ঠান নয় দাদার প্রতিষ্ঠানকে ছেড়ে কথা বলেন নি, সেই বন্ধ ঘোষণার পর থেকেই ক্রমাগত প্রমাণ ছাড়াই দোষারোপের বিরুদ্ধে আজ প্রথম 'প্রতিবাদী' সাংবাদিক বৈঠক করতে বাধ্য হলাম, নয়তো সব একপেশে হয়ে যাচ্ছিল.... মিথ্যাচার চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে...
বিস্তারিত পড়ার অনুরোধ রইল।
ধন্যবাদান্তে---- নিলয় পাল: শিলচর
🔸------------🔸------------🔸-------------🔸------------🔸
,✍️ প্রেস বিজ্ঞপ্তি ✍️
২৫' ফেব্রুয়ারি, শিলচর:
____ ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রান্তজ্যোতি দৈনিকের প্রধান সম্পাদক নিলয় পাল এই পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যাওয়া ও তার পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ নিয়ে প্রথম বার মুখ খুললেন। নিলয় পাল সাংবাদিকদের বলেন,
"বন্ধ হয়ে গেছে এই প্রান্তিক উপত্যকার পুরনো সংবাদপত্র প্রান্তজ্যোতি দৈনিক, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও আবেগের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কেন কি পরিস্থিতিতে এত বছরের ঐতিহ্যবাহী সংবাদপত্রটি বন্ধ হয়ে গেল। এই নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই অনেক ধরনের কথাবার্তা লিখছেন। কিন্তু আমাদের স্টাফদের যারা প্রথম সারির ও খুব কাছের লোক ছিলেন তারাই আমাকে পিছন থেকে ছুরি চালাচ্ছেন, একতরফাভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন, যেন আমি বিশাল অন্যায় করেছি, ভুল করেছি।
📌 নিলয় পাল আরও জানান, "৭০ শতাংশ বেতন দিয়ে দিয়েছি, তিনজনকে ডেকে-বলে-কয়ে বেতন হাতে তুলে দিতে পারছিনা। কারন এই তিনজন বেতন নিতে রাজি নয়।"
তার বক্তব্য, "তিনজন স্টাফের এই ধরনের মিথ্যাচারের বোঝা বহন করতে হচ্ছে এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে, কারন গত ডিসেম্বর মাসেই প্রান্তজ্যোতি পত্রিকাটি পুনরায় চালু করার জন্য কয়েকজন সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু ওদের মিথ্যা অপবাদ পরিস্থিতিকে এমন জায়গায় নিয়ে গেল যে সমস্ত পরিকল্পনা মাঠে মারা যায়।"
📌 মিথ্যাচার শব্দটিকে শক্ত পোক্ত করতে নিলয় অনেক প্রমাণ দেখান।
যেমন, অক্টোবরের ২৫ তারিখ শাটডাউন ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই 'শাটডাউন নোটিশ' ও কবে কিভাবে পাওনা চুকিয়ে দেওয়া হবে, এই দুটো স্বাক্ষরিত নোটিশ একই সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু, বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নোটিশটি তারা কাউকে দেখাইনি বা ফেইসবুকের দেওয়ালে চিপকানো হয়নি!
এমনকি একটুও সময় না দিয়েই, অপেক্ষা না করেই এই বিক্ষুব্ধ তিনজন স্টাফের নেতৃত্বে লেবার অফিস এবং ডিসি অফিসকে প্রতিবাদ দরখাস্ত দেওয়া হলো। এবারো এই প্রতিবাদ দরখাস্তের সঙ্গে বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নোটিশটি দিলেন না, শুধু শাটডাউন নোটিশটি জমা দিলেন।
📌 নিলয় পালের মতে, "কাল বিলম্ব না করেই শাটডাউন নোটিশটি তারা তিনজন যখন ছড়িয়ে দিতে পারলো তখন 'পাওনা চুকিয়ে দেওয়ার' নোটিশটি কীভাবে ভাইরাল হলো না !!
যাই করা হয়েছে বা ঝামেলা পাকানো হচ্ছে তা কিন্তু বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়! প্রমাণ হয়, সুপরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে! এর পিছনে 'মাষ্টার মাইন্ড' আমাদের হাউসের তিন প্রধানের! তাদের কাজ ছাড়া আর কারই বা হতে পারে?"
প্রান্তজ্যোতির Proprietor নিলয় পাল আরও যোগ করেন,
"পরে জানতে পারি ২৫ অক্টোবরের রাত ৯টার মধ্যেই শুধু শাটডাউন -এর নোটিশটি whatsapp এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা কিনা বিভিন্ন লোকের ফেইসবুকে সেদিন রাত ১০টার মধ্যেই ভাইরাল করে দেওয়া হয়। অনাহুত যারাই এই "মহান কাজে" জড়িত ছিলেন, তাদেরকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, তারা আমার এবং আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ। তারা আবার একই মতাদর্শের বিশ্বাসী বা বলতে পারেন দিশাহীন নৌকার যাত্রী। সেই মহামানবরা আবার আমাদের হাউসের দুজন প্রথম সারির কর্মীর খুব খুব ঘনিষ্ঠ।"
📌 "বুঝতে পারা কঠিন নয়, পত্রিকাটি বন্ধ নিয়ে রাত ৯:৩০ অবধি ইন হাউস আলোচনা চলছিল। এছাড়াও শাট ডাউন ও বকেয়া বেতন কী ভাবে দেওয়া হবে, এই দুটো নোটিশ রাত ৮:৫০-এ সইসাবুদ করি এবং দুই পক্ষের মধ্যে হস্তান্তর হয়। যখন নোটিশ দুটির রাত ৮:৫০ এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় তখন তা ৯:৩০এর মধ্যে কিভাবে অন্যলোকের হাতে চলে যায়?
বাতাসে ভেসে যায় নি তো !!!!
অন্যদিকে মিটিং দীর্ঘায়িত হয়ে রাত ৯:৩০ বেজে যায়, তখন কীভাবে বা কারা এই নোটিশটি চুরি করে বাজারজাত করলো !!!!"
তার মতে, ''এটি তাকে নাস্তানাবুদ করার গভীর ষড়যন্ত্র। সামাজিক মাধ্যমে বা ডিসি অফিসের নজরে যদি বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নোটিশটি চলে আসতো, তখন একতরফা হতো না, সত্য ঘটনা প্রকাশ পেতো, সব জল ঘোলা শেষ হয়ে যেতো।
🔸পত্রিকাটির প্রথম সারির তিন 'পরম - রতন' এর চুলকানির ফলস্বরূপ অন্যদের এহেন চরম ভোগান্তি।"
📌 প্রান্তজ্যোতির একজন সিনিয়র স্টাফকে হুমকি দেওয়ার ঘটনাটিকে নিলয় পাল সম্পুর্ন মিথ্যাচার বলে উড়িয়ে দিলেন।
তার কথায়, ''এই ভদ্রলোকটিকে আমি যথেষ্ট সম্মান করি, তাছাড়া হুমকি দিলেই কি আমার সমস্যার সমাধান হবে? হুমকি দিলেই কি পত্রিকাটি অক্সিজেন পাবে? আমি কি এতই বোকা!
কে কী বলছে তাতে কান না দিয়ে তার উচিত ছিল আমাকে ফোন করার।"
📌 নিলয়ের মতে,'পরম প্রিয়' সম্মানীয় এই ব্যক্তিটি এখন আবেগপূর্ণ কথা বার্তার মাধ্যমে আমজনতার ভাবাবেগর সাহায্য চাইছেন। ইমোশনাল ইন্টিলিজেন্স এন্ড ফেইক ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল, অর্থাৎ নকল আবেগপূর্ণ প্রভাব সৃষ্টি করে ব্ল্যাকমেল করা, আম জনতার ভাবাবেগে সুরসুরি দিয়ে সহমর্মিতা আদায় করার ও কর্ম সাধনের বহু পুরানো কৌশল।
📌 অনেক কিছু খোলাসা করার সঙ্গে সঙ্গে নিলয় পাল আরও বলেন, "আপনারা কখনো শুনেছেন কি, ষ্টাফরা ঘোষণা করছে যে, বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি কল- কারখানা, ছাপাখানা কিংবা প্রতিষ্ঠানটি আবার চালু হবে? তাও এক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই! প্রতিষ্ঠান বন্ধ কিংবা পুনরায় খোলা কতৃপক্ষের দায়িত্ব, সেই ঘোষণা বা বিবৃতিও মালিকপক্ষই দিয়ে থাকে। আর প্রান্তজ্যোতি দৈনিকটি একক মালিকানাধীন তাই সিদ্ধান্তের সমস্ত দায় দায়িত্ব সেই একজনেরই।
📌 "ওরা প্রায়শঃ বলছেন, এক চুক্তি পত্রের কথা, কিন্তু আমিতো কোনোও চুক্তিতে স্বাক্ষর করিনি, কিন্তু সে যাই হোক, আমি সেই চুক্তি পত্রকে সম্মান করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি এবং করে যাচ্ছি, কিছুটা ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতেই পারে, এমন বিপদের দিনে যা অস্বাভাবিক কিছু নয় বলেই মনে করি ! অন্যদিকে, কথা মতো সবাই আমাদের অফিসে এসে বকেয়া টাকার ৭০ শতাংশ 'পে স্লিপে' স্বাক্ষর করে নিয়ে গেছেন, আসেননি তিনজন আন্দোলনজীবী।"
📌 পালের মতে, "যা স্পষ্টতই প্রমাণ করে, এই ধরনের ঋণাত্মক চিন্তা ধারা পোষনের পিছনের অভিসন্ধি কি?
-- আমাকে আঘাত করা, আমার জীবনকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলা, আমাদের পরিবারের মানসম্মানে যতটুকু পারা যায় আঘাত করা।"
📌 পত্রিকাটির কর্নধার নিলয় পাল চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশের পূর্বাভাস দিয়ে রাখলেন,
"তবে আমি এখনও ওনাদের নির্লজ্জ নৈশ কেচ্ছা কাহিনী সর্বসম্মুখে তুলে ধরতে চাই না! এতে ওদের চরিত্রে কালির দাগ লাগবে বৈকি!
আমার চরিত্র হনন করেছেন আমার ভাতৃসুলভ 'পরম প্রিয় শ্রদ্ধার জ্ঞানী পরমেশ্বর'! যাকে আমি প্রান্তজ্যোতিতে সম্মানের সঙ্গে আগলে রাখতাম, সেই ব্যক্তিটি কীভাবে আমাকে এমন দূর্বিসহ জ্বালাতন দিতে পারলেন, তাও এমন দুঃসহ সময়ে!
ওর বিবেক বিবেচনা কীভাবে উধাও হলো!
ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, এই ত্রিমূর্তি'র সুবুদ্ধি'র উদয় হোক!"
"তবে সময়ের চাহিদা মেটাতে দরকার হলে তাদের কেচ্ছা কাহিনী যা প্রান্তজ্যোতি পত্রিকাটিকে ধীরে ধীরে বিষাক্ত করে (slow poisoning) ধংসের পথে নিয়ে গিয়েছিল, তা আপনাদেরকে জানাবো!"
আমি অন্তত আগবাড়িয়ে ওদের মানসম্মানে আঘাত করতে যাব না।"
📌 "সবচাইতে আশ্চর্য্যের বিষয়টি হলো, যে তিনচার জন ঝামেলা পাকাচ্ছে তাদের মধ্যে তিনজনই পত্রিকাটির বন্ধ ঘোষনার একমাসের মাথায় অন্য হাউসে কাজে যোগ দিয়েছে। সে ভালো কথা। কিন্তু অন্য পত্রিকায় থেকে অরেকটি পত্রিকা এবং তার কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরাসরি হাঙ্গামার সলতে পাকাচ্ছে! তাও একদম প্রথম সারিতে থেকে টুকরো বিগ্রেডের বিগ্রেডিয়ার হয়ে!
এতো পত্রিকা হাউসের সম্পূর্ণ এথিক্স ও নিয়ম শৃঙ্খলার বিরুদ্ধাচারণ করা। এদের মতো সিনিয়র লোকরা কী ভাবে এতো বড় ভুল করতে পারে!!"
📌 নিলয় পাল প্রকাশ্যেই বিদ্বেষ করা জনাতিনেক কর্মচারীদের দোষারোপ ছেড়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
তার মতে, "সেই সিনিয়র স্টাফরাই জিদ ধরেছেন, তাদের কাছে কথা বলার, সমাধান সূত্র বের করার অনেক রাস্তা ছিল, কিন্তু তারা জেদ ও ক্রোধ মিটোতে গিয়ে শুধু আমাকেই নয়, আমাদের পরিবারকেও কালিমালিপ্ত করলেন।
তাদেরকে সম্মান দিয়ে বলছি, এই সময় দরকার পারস্পারিক সৌহার্দ্য বজায় রেখে সহযোগিতা করার। আরও একবার আলোচনায় বসতে পারি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সবাই চাইলে অবশ্যই সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে।"