আল-কোরআন

আল-কোরআন السلام عليكم ورحمة الله وبركاته ۔

**🌿 আল্লাহর রহমত ও বরকতের পোষ্ট 🌿**  **📖 কোরআন থেকে নেয়াঃ**  > **"وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ"**  >...
12/04/2025

**🌿 আল্লাহর রহমত ও বরকতের পোষ্ট 🌿**

**📖 কোরআন থেকে নেয়াঃ**
> **"وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ"**
> *"একে অপরকে সত্যের উপদেশ দাও এবং ধৈর্যের উপদেশ দাও।"*
> **(সূরা আল-আসর, ১০৩:৩)**

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সত্য ও ধৈর্যের পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমীন।

**💫 হাদিস থেকে নেয়াঃ**
> **رَحِمَ اللَّهُ امْرَأً سَمْحًا إِذَا بَاعَ ، وَسَمْحًا إِذَا اشْتَرَى ، وَسَمْحًا إِذَا اقْتَضَى**
> *"আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রতি রহম করুন যে বিক্রির সময় সহজ হয়, ক্রয়ের সময় সহজ হয় এবং ঋণ আদায়ের সময় সহজ হয়।"*
> **(সহীহ বুখারী, ২০৭৬)**

সহনশীলতা ও উত্তম আচরণ ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। আমাদের আচরণে নম্রতা ও উদারতা প্রকাশ পাক।

**✨ দোয়াঃ**
*"اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ"*
*"হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের মধ্যে শামিল করুন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের মধ্যে গণ্য করুন।"* **(সুনান তিরমিযী, ৩৪০১)**

**🕌 ইসলাম হলো শান্তি, ক্ষমা ও ভালোবাসার ধর্ম।**
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলার তাওফিক দান করুন।

بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِہُوَ اللّٰہُ  الَّذِیۡ  لَاۤ  اِلٰہَ  اِلَّا ہُوَ ۚ عٰلِمُ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَ...
29/06/2024

بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ

ہُوَ اللّٰہُ الَّذِیۡ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ عٰلِمُ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ ۚ ہُوَ الرَّحۡمٰنُ الرَّحِیۡمُ ﴿۲۲﴾

ہُوَ اللّٰہُ الَّذِیۡ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ اَلۡمَلِکُ الۡقُدُّوۡسُ السَّلٰمُ الۡمُؤۡمِنُ الۡمُہَیۡمِنُ الۡعَزِیۡزُ الۡجَبَّارُ الۡمُتَکَبِّرُ ؕ سُبۡحٰنَ اللّٰہِ عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۲۳﴾

ہُوَ اللّٰہُ الۡخَالِقُ الۡبَارِئُ الۡمُصَوِّرُ لَہُ الۡاَسۡمَآءُ الۡحُسۡنٰی ؕ یُسَبِّحُ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۲۴﴾
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

২২। হুওয়াল্লাহুললাজি লা ইলাহা ইল্লাহু- আলিমুল গাইবি ওয়াশশাহাদাতি হুওয়ার রাহমানুর রাহিম।

২৩। হুওয়াল্লাহুল লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু- আল মালিকুল কুদ্দুসুসসালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। সুবহানাল্লাহি আম্মা ইউশরিকুন।

২৪। হুওয়াল্লাহুল খালিকুল বারিউল মুছাওয়্যিরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউসাব্বিহু লাহু মা ফিচ্ছামাওয়াতি ওল আরদি ওহুয়াল আজিজুল হাকিম।
বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

২২। তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই, তিনি অদৃশ্য এবং দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা; তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু।

২৩। তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত; যারা তাঁর শরীক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র ও মহান।

২৪। তিনিই আল্লাহ, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, সকল উত্তম নাম তাঁরই। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
ফজিলতঃ

(১) যে ব্যক্তি সকালে তিনবার ‘আউজু বিল্লাহিচ্ছামিয়িল আলিমিমিনাশ শাইত্বানির রাজিম, পাঠ করার পর সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করবে তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা রহমতের দোয়া করবে। আবার সন্ধ্যায় পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত ঐ মর্তবা লাভ করবে এবং সে মারা গেলে শহীদের মৃত্যু হাসিল হবে।

(২) হাদিসে আছে, “যে ব্যক্তি সকালে তিনবার ‘আউ-যুবিল্লা-হি চ্ছামি-য়িলয়ালী-মিমিনাশশাইত-ন রিরজী-ম’ পাঠ করার পর সূরা হাশরে শেষের তিন আয়াত পাঠ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য সত্তর হাজার রহমতের ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন। তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত রহমতের জন্য দোয়া করবে। সেদিন সে মারা গেলে শহিদের মৃত্যু হাসিল হবে । যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এভাবে পাঠ করবে, সে-ও সকাল পর্যন্ত এই মর্তবা লাভ করবে”। (সুবহানআল্লাহ)

(৩) সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত
তিরমিযি শরীফে হযরত মা’কাল ইবনে ইয়াসার (রাঃ) এর বর্ণিত রেওয়ায়েত ।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : যে ব্যক্তি সকালে ৩ বার “আউযুবিল্লাহিস্সামিউল আলিমি মিনাশ শাইতোয়ানির রাজিম” পাঠ করার পর

هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ

“হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু। আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাতী হুয়ার রাহমানুর রাহীম।

هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ

হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু। আল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল ম্যু মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুব হানাল্লাহী আম্মা ইউশরিকুন।

هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

হু আল্লাহুল খালেকুল বারিয়্যুল মুছাওরেলাহুল আছমা(আ)উল হুছনা। ইউ ছাব্বিহু লাহু মা ফিছ ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্ ওয়া হুয়াল আজীজুল হাকীম।

“সুরা হাশরের সর্বশেষ তিন আয়াত পাঠ করিবে । আল্লাহ তায়ালা তাহার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন,তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঠকারীর জন্য রহমতের দোয়া করবে। যেদিন এই আয়াত তিনটি পাঠ করিবে সেদিন পাঠকারী মারাগেলে শহীদের মউত হাসিল করিবে। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এভাবে পাঠ করিবে সেও একই মর্তবা লাভ করিবে। (সুবহানআল্লাহ)

আলিফ-লাম-মীম-রা; এগুলো কিতাবের আয়াত। যা কিছু আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এত...
28/06/2024

আলিফ-লাম-মীম-রা; এগুলো কিতাবের আয়াত। যা কিছু আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এতে বিশ্বাস করে না। আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।

____(সূরা রা’দ: ১ , ২)________

তাফসীর ইবনে কাসীর_________
الٓـمّٓرٰ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ ؕ وَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ الۡحَقُّ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱﴾
আলিফ-লাম-মীম-র, এগুলো কিতাবের আয়াতসমূহ, আর তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রকৃত সত্য, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই ঈমান আনে না। সূরার শুরুতে যে (আরবি) এসে থাকে সেগুলির পূর্ণ ব্যাখ্যা সুরায়ে বাকারার তাফসীরের শুরুতে লিখিত হয়েছে এবং সেখানে এ কথাও বলা হয়েছে যে, যে সূরাগুলির প্রথমে এই অক্ষরগুলি এসেছে সেখানে সাধারণভাবে এই বর্ণনাই হয়েছে যে, কুরআন আল্লাহর কালাম। এতে সন্দেহ ও সংশয়ের লেশ মাত্র নেই। এগুলি হচ্ছে কিতাব অর্থাৎ কুরআনের আয়াতসমূহ। এই নীতি অনুসারে এখানেও এই অক্ষরগুলির পরে আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ এগুলি হলো কিতাব অর্থাৎ কুরআনের আয়াতসমূহ। কেউ কেউ বলেছেন যে, কিতাব দ্বারা তাওরাত ও ইঞ্জিলকে বুঝানো হয়েছে। কিন্তু এটা সঠিক কথা নয়। এরপর এর উপরই সংযোগ স্থাপন করে এই কিতাবের অন্যান্য বিশেষণ বর্ণনা করা হয়েছে যে, এটা সম্পূর্ণরূপে সত্য এবং আল্লাহ তাআ’লার পক্ষ হতে হযরত মুহাম্মদের (সঃ) উপর এটা অবতীর্ণ করা হয়েছে। (আরবি) হচ্ছে (আরবি) বা বিধেয়। এর (আরবি) বা উদ্দেশ্য পূর্বে বর্ণিত হয়েছে অর্থাৎ (আরবি) এই অংশটুকু। কিন্তু ইমাম ইবনু জারীরের (রঃ) পছন্দনীয় উক্তি এটাই যে, (আরবি) অক্ষরটি (আরবি) (অতিরিক্ত) অথবা (আরবি) (সংযোগ স্থাপনকারী) এবং এখানে (আরবি) এর সংযোগ (আরবি) এর উপর হয়েছে, যেমন আমরা ইতিপূর্বে বর্ণনা করেছি। ইমাম ইবনু জারীর (রঃ) তাঁর উক্তির সমর্থনে কোন এক কবির কবিতাংশকে প্রমাণ হিসেবে আনয়ন করেছেন। কবিতাংশটি নিম্নরূপঃ (আরবি) অর্থাৎ কওমের বাদশাহ, ইবনুল হাম্মামও জনতার মধ্যে কুতাইবার সিংহের নিকট। এখানে কওমের বাদশাহ, ইবনুল হাম্মাম এবং কুতাইবার সিংহ একই ব্যক্তি। সুতরাং এখানে (আরবি) টি অতিরিক্ত বা (আরবি) এর উপর (আরবি) এর (আরবি) বা সংযোগ হয়েছে। এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ এটা সত্য হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ লোক এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে না। অর্থাৎ এর সত্যতা স্পষ্ট ও সমুজ্জল। কিন্তু মানুষের অবাধ্যতা, হঠকারিতা এবং একগুঁয়েমী তাদেরকে ঈমানের দিকে মুখ করতে দেয় না।
#কোরআন #ইসলামিক

وَ اِذۡ اَخَذۡنَا مِنَ النَّبِیّٖنَ مِیۡثَاقَہُمۡ وَ مِنۡکَ وَ مِنۡ نُّوۡحٍ وَّ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسَی ابۡنِ...
23/04/2024

وَ اِذۡ اَخَذۡنَا مِنَ النَّبِیّٖنَ مِیۡثَاقَہُمۡ وَ مِنۡکَ وَ مِنۡ نُّوۡحٍ وَّ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسَی ابۡنِ مَرۡیَمَ ۪ وَ اَخَذۡنَا مِنۡہُمۡ مِّیۡثَاقًا غَلِیۡظًا ۙ﴿۷﴾
স্মরণ কর, আমি যখন নবীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম আর তোমার কাছ থেকেও; আর নূহ্, ইব্রাহীম, মূসা আর মারইয়াম পুত্র ‘ঈসা থেকেও। আমি তাদের কাছ থেকে নিয়েছিলাম দৃঢ় অঙ্গীকার ।

৭-৮ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আমি এই পাঁচজন স্থিরপ্রতিজ্ঞ নবীর নিকট হতে এবং সাধারণ সমস্ত নবীর নিকট হতে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তারা আমার দ্বীনের প্রচার করবেন ও তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবেন। তারা পরস্পরে একে অপরকে সাহায্য করবেন এবং একে অপরকে সমর্থন করবেন। তারা পরস্পরের মধ্যে ইত্তেহাদ ও ইত্তেফাক কায়েম রাখবেন। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “স্মরণ কর, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেনঃ তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি তার শপথ! যখন একজন রাসূল আসবে তখন নিশ্চয়ই তোমরা তাকে বিশ্বাস করবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বললেনঃ তোমরা কি স্বীকার করলে? এবং এই সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্রহণ করলে? তারা বললো: আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেনঃ তবে তোমরা সাক্ষী থাকো এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী থাকলাম।” (৩:৮১) এখানে সাধারণ নবীদের বর্ণনা দেয়ার পর বিশিষ্ট মর্যাদা সম্পন্ন নবীদের নামও উল্লেখ করেছেন। অনুরূপভাবে তাদের নাম নিম্নের আয়াতেও রয়েছেঃ (আরবি) এখানে হযরত নূহ (আঃ)-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে যিনি ভূ-পৃষ্ঠে আল্লাহ তাআলার সর্বপ্রথম নবী ছিলেন। হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর বর্ণনা রয়েছে যিনি ছিলেন সর্বশেষ নবী এবং হযরত ইবরাহীম (আঃ), হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত ঈসা (আঃ)-এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে যারা ছিলেন মধ্যবর্তী নবী। এতে সূক্ষ্মদর্শিতা এই রয়েছে যে, প্রথম নবী হযরত আদম (আঃ)-এর পরবর্তী নবী হযরত নূহ (আঃ)-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর পূর্ববর্তী নবী হযরত ঈসা (আঃ)-এর নাম উল্লেখ রয়েছে। আর মধ্যবর্তী নবীদের মধ্যে হযরত ইবরাহীম (আঃ) ও হযরত মূসা (আঃ)-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এখানেও তো এই ক্রমপর্যায় রয়েছে যে, প্রথম ও শেষের নাম উল্লেখ করার পর মধ্যবর্তী নবীদের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। আর এ আয়াতে সর্বপ্রথম সর্বশেষ নবী (সঃ)-এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে। কারণ তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাপেক্ষা অধিক মর্যাদা সম্পন্ন নবী। অতঃপর একের পর এক ক্রমানুযায়ী অন্যান্য নবীদের উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা তাঁর সমস্ত নবীর উপর দরূদ ও সালাম নাযিল করুন! এই আয়াতের তাফসীরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি সমস্ত নবীর পূর্বে সৃষ্ট হয়েছি এবং দুনিয়ায় সর্বশেষে আগমন করেছি। তাই আমা হতেই শুরু করা হয়েছে।” (এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন) কিন্তু এর একজন বর্ণনাকারী সাঈদ ইবনে বাশীর দুর্বল এবং সনদ হিসেবে এটা মুরসাল রূপে বর্ণিত হয়েছে। এটাই বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ। কেউ কেউ এটাকে মাওকুফ রূপে বর্ণনা করেছেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন যে, হযরত আদম (আঃ)-এর সন্তানদের মধ্যে পাঁচজন নবী আল্লাহ তা'আলার নিকট খুইব পছন্দনীয়। তাঁরা হলেনঃ হযরত নূহ (আঃ), হযরত ইবরাহীম (আঃ), হযরত মূসা (আঃ), হযরত ঈসা (আঃ) এবং হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা (সঃ)। এর একজন বর্ণনাকারী হামযাহ দুর্বল। এও বলা হয়েছে যে, এই আয়াতে যে অঙ্গীকারের বর্ণনা রয়েছে তা হলো ওটাই যা আল্লাহ তা'আলা রোযে আযলে হযরত আদম (আঃ)-এর পিঠ হতে সমস্ত মানুষকে বের করে গ্রহণ করেছিলেন। হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আদম (আঃ)-কে উচ্চে তুলে ধরা হয়। তিনি তাঁর সন্তানদের দেখেন। তাদের মধ্যে তিনি ধনী, নির্ধন, সুন্দর, কুৎসিত সর্বপ্রকারের লোককেই দেখতে পান। তিনি বলেনঃ “হে আল্লাহ! যদি আপনি এদের সবাইকে সমান করতেন তবে কতই না ভাল হতো!” মহামহিমান্বিত আল্লাহ জবাবে বলেনঃ “এটা এজন্যেই করা হয়েছে যে, যেন আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। তাদের মধ্যে যারা নবী ছিলেন। তিনি তাদেরকেও দেখেন। তাঁরা জ্যোতির্ময় রূপে প্রকাশিত ছিলেন। তাঁদের উপর নূর বর্ষিত হচ্ছিল। তাদের নিকট হতেও নবুওয়াত ও রিসালাতের একটি বিশেষ অঙ্গীকার নেয়া হয়েছিল। যার বর্ণনা এই আয়াতে রয়েছে। ঘোষিত হচ্ছেঃ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদীতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করবার জন্যে, অর্থাৎ তাদেরকে রাসূল (সঃ)-এর হাদীসগুলো পৌঁছিয়ে দিতো। আর আল্লাহ তা'আলা অমান্যকারীদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন বেদনাদায়ক শাস্তি। সুতরাং হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করছি যে, আপনার রাসূলগণ আপনার বান্দাদের কাছে আপনার বাণী কমবেশী ছাড়াই পৌছিয়ে দিয়েছেন। তারা পূর্ণভাবে মঙ্গল কামনা করেছে এবং সত্যকে পরিষ্কারভাবে উজ্জ্বল পন্থায় জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন। যাতে সন্দেহের লেশ মাত্র নেই, যদিও হতভাগ্য ও হঠকারীরা তাদেরকে মানেনি। আমাদের বিশ্বাস আছে যে, আপনার রাসূলদের সমস্ত কথা ন্যায় ও সত্য। যারা তাঁদের পথ অনুসরণ করেনি তারা বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট। তারা বাতিলের উপর রয়েছে।।

আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।____(সূরা ইউসূফ:২)___ মানুষের হিসাব-কিতাবের সময় নিকট...
22/04/2024

আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।
____(সূরা ইউসূফ:২)___

মানুষের হিসাব-কিতাবের সময় নিকটবর্তী; অথচ তারা বেখবর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
_____(সূরা আম্বিয়া:১)________

তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে যখনই কোন নতুন উপদেশ আসে, তারা তা খেলার ছলে শ্রবণ করে।
____(সূরা আম্বিয়া:২)_______

#কোরআন #ইসলামিক

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, সাধারণ দরিদ্র ব্যক্তিকে সদকা দিলে কেবল সদকার সওয়াব পাওয়া যাবে। কিন্তু রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়কে ...
03/02/2024

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, সাধারণ দরিদ্র ব্যক্তিকে সদকা দিলে কেবল সদকার সওয়াব পাওয়া যাবে। কিন্তু রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়কে সদকা করলে সদকাহও হবে এবং আত্মীয় রক্ষা হবে।
(তিরমিযী হা/ ৬৫৮)

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আল্লাহ তোমাদের শরীর আকৃতিও বেশভূষার দিকে দৃষ্টি দেবেন না। বরং তিনি দৃষ্টি দেন তোমাদের অন্তরের প্রতি।
(সহীহ মুসলিম হা/ ৬৭০৭)

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, সৎকাজের পথ প্রদর্শক উক্ত কাজের সম্পাদনকারী সমোতুল্য।
(তিরমিযী হা/ ২৬৭০)

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যে সকালে দশবার ও সন্ধ্যায় দশবার আমার উপর দুরুদ পাঠ করবে সে কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে। (সহীহ জামিউস সাগীর হা/ ৮৮১১)

#কোরআন #হাদিস #ইসলামিক #ইসলামেরআলো #ইসলামেরকথা

27/12/2023

নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।

(সূরা হা-মীম সেজদাহ: ৮)

25/12/2023

শয়তান তোমাদের অনেক দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা বুঝনি? এই সে জাহান্নাম, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হতো।
(সূরা ইয়াসীন:৬২,৬৩

23/12/2023
10/12/2023

এটি একটি গ্রন্থ, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে করে আপনি এর মাধ্যমে ভীতি-প্রদর্শন করেন। অতএব, এটি পৌছে দিতে আপনার মনে কোনরূপ সংকীর্ণতা থাকা উচিত নয়। আর এটিই বিশ্বাসীদের জন্যে উপদেশ। তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না। আর তোমরা অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। অনেক জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের কাছে আমার আযাব রাত্রি বেলায় পৌছেছে অথবা দ্বিপ্রহরে বিশ্রামরত অবস্থায়।

_____(সূরা আল আ’রাফ:2,3,4)________
کِتٰبٌ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ فَلَا یَکُنۡ فِیۡ صَدۡرِکَ حَرَجٌ مِّنۡہُ لِتُنۡذِرَ بِہٖ وَ ذِکۡرٰی لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲﴾
এটি একটি কিতাব যা তোমার উপর নাযিল করা হয়েছে, এ ব্যাপারে তোমার অন্তরে যেন কোন প্রকার কুণ্ঠাবোধ না হয়, (এটা নাযিল করা হয়েছে অমান্যকারীদেরকে) এর দ্বারা ভয় প্রদর্শনের জন্য এবং মু’মিনদেরকে উপদেশ প্রদানের জন্য। ১-৩ নং আয়াতের তাফসীর: (আরবী) এবং এগুলোর অর্থ ও এগুলো সম্পর্কে যেসব মতবিরোধ রয়েছে এ সবকিছু সূরায়ে বাকারায় আলোচিত হয়েছে। (আরবী) অর্থাৎ (আরবী)-এর অর্থ হচ্ছে আমি আল্লাহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে থাকি। (হে নবী সঃ!) এই কিতাব (কুরআন) তোমার প্রতি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছে। এখন এর প্রচার এবং এর দ্বারা মানুষকে ভয় প্রদর্শনের ব্যাপারে তোমার মনে যেন কোন সংকীর্ণতা না আসে এবং এমন ধৈর্য অবলম্বন কর যেমন দুঃসাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নবীরা অবলম্বন করেছিল। এটা অবতরণের উদ্দেশ্য এই যে, তুমি এর মাধ্যমে কাফিরদেরকে ভয় প্রদর্শন করবে। আর মুমিনদের জন্যে তো এ কুরআন উপদেশবাণী। এই মুমিনরা তো কুরআনে অবতীর্ণ বিষয়ের অনুসরণ করেছে এবং উম্মী নবী (সঃ) যে কিতাব তাদের সামনে পেশ করেছেন তার তারা পদাংক অনুসরণ করেছে। এখন একে ছেড়ে অন্যের পিছনে পড়ো না এবং আল্লাহর হুকুমের সীমা ছাড়িয়ে অপরের হুকুমের উপর চলো না। কিন্তু উপদেশ ও শিক্ষা গ্রহণকারীর সংখ্যা খুবই কম হয়ে থাকে। হে নবী (সঃ)! তুমি যতই বাসনা, কামনা, লোভ ও চেষ্টা কর না কেন এদের সকলকে উপদেশ ও শিক্ষা লাভ করাতে পারবে না। আল্লাহ পাক বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি যদি সকলকেই সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা কর তবে এই লোকেরা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে সরিয়ে দেবে এবং তুমি বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে। অধিকাংশ লোকই ঈমান আনয়ন করে না, বরং মুশরিকই থেকে যায়।
#কোরআন #ইসলামিক

09/12/2023

وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّقُوۡلُ اٰمَنَّا بِاللّٰہِ وَ بِالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ مَا ہُمۡ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ۘ﴿۸﴾
মানুষের মধ্যে এমন লোক আছে যারা বলে, আমরা মহান আল্লাহর প্রতি এবং আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান এনেছি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা মু’মিন নয়।

‘নিফাক’ অর্থ কী ‘নিফাক’ এর প্রকৃত অর্থ হচ্ছে ভালো গুণাবলী প্রকাশ করা ও মন্দ গুণাবলী গোপন করা। ‘নিফাক’ দু’ প্রকারঃ (১) বিশ্বাস জনিত ও (২) কাজ জনিত। প্রথম প্রকারের মুনাফিক তো চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং দ্বিতীয় প্রকারের মুনাফিক জঘন্যতম পাপী। ইনশা’আল্লাহ সঠিক স্থানে এর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হবে। ইবনু জুরাইজ (রহঃ) বলেন যে, মুনাফিকের কথা তার কাজের উল্টা, তার গোপনীয়তা তার প্রকাশ্যের বিপরীত। তার আগমন তার প্রস্থানের উল্টা এবং উপস্থিতি অনুপস্থিতির বিপরীত হয়ে থাকে। (তাফসীর তাবারী ১/২৭০) মুনাফিকীর গোড়াপত্তন নিফাক ও কপটতা মাক্কায় তো ছিলোই নেই, বরং সেখানে ছিলো তার বিপরীত। কিছু লোক এমন ছিলেন যাঁরা বাহ্যত ও আপাত দৃষ্টিতে কাফিরদের সাথে থাকতেন, কিন্তু অন্তরে ছিলেন মুসলিম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাক্কা ছেড়ে মাদীনায় হিজরত করেন তখন এখানকার আউস ও খাযরাজ গোত্রদ্বয় আনসার উপাধি লাভ করে তাঁর সাথী হলেন ও অন্ধকার যুগের মূর্তিপূজা পরিত্যাগ করে মুসলিম হলেন। কিন্তু ইয়াহূদীরা তখনও যেই তিমিরের সেই তিমিরেই থেকে মহান আল্লাহর এ দান হতে সম্পূর্ণ রূপে বঞ্চিত থাকলো। তাদের মধ্যে শুধু ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম এই সত্য ধর্মের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। তখন পর্যন্ত মুনাফিকদের জঘন্যতম দল সৃষ্টি হয়নি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসব ইয়াহূদী ও ‘আরবের অন্যান্য কতকগুলো গোত্রের সাথে সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন। এই দল সৃষ্টির সূচনা এভাবে হয় যে, মাদীনায় ইয়াহূদীদের ছিলো তিনটি গোত্রঃ (১) বানূ কাইনুকা, (২) বানূ নাযীর এবং (৩) বানূ কুরাইযাহ। বানু কাইনুকা ছিলো খাযরাজের মিত্র এবং বাকী দু’টি গোত্র ছিলো আউসের মিত্র। অল্প কিছু ইয়াহূদী ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে মাদীনায় কোন মুনাফিকের উপস্থিতি ছিলো না। কারণ তখন মুসলিমগণ এতোখানি শক্তিশালী ছিলো না যে, কাফিরদের মনে কোন ভয়-ভীতি সৃষ্টি হতে পারে। বদরের যুদ্ধে মহান আল্লাহ যখন ইসলাম ও এর অনুসারীদের বিজয় দান করেন তখন মাদীনার এক নেতা ছিলো ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূল। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উবাই ইবনু সালূল খাযরাজ গোত্রের লোক হলেও আউস ও খাযরাজ উভয় দলের লোকই তাকে খুব সম্মান করতো। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বাদশাহ বলে ঘোষণা দেয়ার পূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিলো। এমতাবস্থায় আকস্মিকভাবে এই গোত্রের মন ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হলো। ফলে তার বাদশাহ হওয়ার আশার গুড়ে বালি পড়লো। এই দুঃখ, পরিতাপ তো তার অন্তরে ছিলোই, এদিকে ইসলামের অপ্রত্যাশিত ক্রমোন্নতি, আর ওদিকে যুদ্ধের উপর্যুপরি বিজয় দূরভিসন্ধি তাকে একেবারে পাগল প্রায় করে তুললো। এখন সে চিন্তা করলো যে, এমনিতে কাজ হবে না। অতএব সে ঝট করে প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণ করে নিলো এবং অন্তরে কাফির থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো। দলের যে কিছু লোক তার অধীনে ছিলো তাদেরকেও সে এই গোপন পন্থা বলে দিলো এবং এভাবেই মাদীনা ও তার আশেপাশে কপটাচারীদের একটি দল রাতারাতি কায়িম হয়ে গেলো। মহান আল্লাহর ফযলে এই কপটদের মধ্যে মাক্কার মুহাজিরদের একজনও ছিলেন না। আর থাকবেনই বা কেন? এই সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ তো নিজেদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও ধন-সম্পদ সবকিছু মহান আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে এসেছিলেন। মহান আল্লাহ তাঁদের সবার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন। সূরাহ্ বাক্বারার ৮ নং আয়াতের তাফসীর মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এই কপটচারীদের আউস ও খাযরাজ গোত্রভুক্ত ছিলো এবং কতক ইয়াহূদীও তাদের দলে ছিলো। এই আয়াতে আউস ও খাযরাজ গোত্রদ্বয়ের কপটতার বর্ণনা রয়েছে। (তাফসীর তাবারী ১/২৬৯) আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) হাসান বাসরী (রহঃ), কাতাদাহ (রহঃ) এবং সুদ্দী (রহঃ) এটাই বর্ণনা করেছেন। বিশ্বনিয়ন্তা মহান আল্লাহ এখানে কপটাচারীদের অনেকগুলো বদ অভ্যাসের বর্ণনা দিয়েছেন, যাতে মুসলিমগণ তাদের বাহ্যিক অবস্থা দেখে প্রতারিত না হয় এবং তাদেরকে মুসলিম মনে করে অসতর্ক না থাকে, নচেৎ একটা বিরাট হাঙ্গামা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। এটা স্মরণ রাখা উচিত যে, অসৎকে সৎ মনে করার পরিণাম খুবই খারাপ ও ভয়াবহ। যেমন এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, তারা মুখে তো অবশ্যই স্বীকার করছে, কিন্তু অন্তরে ঈমান নেই। এভাবেই সূরাহ্ মুনাফিকূনেও বলা হয়েছেঃ ﴿اِذَا جَآءَكَ الْمُنٰفِقُوْنَ قَالُوْا نَشْهَدُ اِنَّكَ لَرَسُوْلُ اللّٰهِ١ۘ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ اِنَّكَ لَرَسُوْلُه﴾ ‘মুনাফিকরা যখন তোমার নিকট আসে তখন তারা বলে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি মহান আল্লাহর রাসূল। আর মহান আল্লাহ জানেন যে, তুমি নিশ্চয়ই তাঁর রাসূল।’ (৬৩ নং সূরাহ্ মুনাফিকূন, আয়াত নং ১) কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুনাফিকদের কথা তাদের বিশ্বাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিলো না বলেই তাদের জোরালো সাক্ষ্য দান স্বত্ত্বেও মহান আল্লাহ তাদেরকে স্পষ্টভাবে মিথ্যাবাদী বলে আখ্যায়িত করলেন। যেমন মহান আল্লাহ অন্যত্র ইরশাদ করেনঃ ﴿وَ اللّٰهُ یَشْهَدُ اِنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ لَكٰذِبُوْنَ﴾ ‘আর মহান আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।’ (৬৩ নং সূরাহ্ মুনাফিকূন, আয়াত নং ১) তিনি আরো বললেনঃ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِیْنَ ‘তারা ঈমানদার নয়।’ (২ নং সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্, আয়াত নং ৮) তারা ঈমানকে প্রকাশ করে ও কুফরীকে গোপন রেখে নিজেদের বোকামীর দ্বারা মহান আল্লাহকে ধোকা দিচ্ছে এবং মনে করছে যে, এটা তাদেরকে মহান আল্লাহর কাছে উপকার ও সুযোগ সুবিধা দিবে এবং কতকগুলো মু’মিন তাদের প্রতারণার জালে আবদ্ধ হবে। কুর’আন মাজীদের অন্য স্থানে আছেঃ ﴿یَوْمَ یَبْعَثُهُمُ اللّٰهُ جَمِیْعًا فَیَحْلِفُوْنَ لَه كَمَا یَحْلِفُوْنَ لَكُمْ وَ یَحْسَبُوْنَ اَنَّهُمْ عَلٰى شَیْءٍ اَلَاۤ اِنَّهُمْ هُمُ الْكٰذِبُوْنَ﴾ ‘যেদিন মহান আল্লাহ পুনরুত্থিত করবেন তাদের সকলকে, তখন তারা মহান আল্লাহর নিকট সেরূপ শপথ করবে যেরূপ শপথ তোমাদের নিকট করে এবং তারা মনে করে যে, এতে তারা উপকৃত হবে। সাবধান! তারাই তো মিথ্যাবাদী।’ (৫৮ নং সূরাহ্ মুজাদালাহ, আয়াত নং ১৮) এখানেও তাদের ভুল বিশ্বাসের পক্ষে তিনি বলেন যে, প্রকৃতপক্ষে তারা তাদের কাজের মন্দ পরিণতি সম্পর্কে অবহিতই নয়। এ ধোঁকা তো তারা নিজেদেরকেই দিচ্ছে। যেমন কুর’আনের অন্য জায়গায় ইরশাদ হচ্ছেঃ ﴿ اِنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ یُخٰدِعُوْنَ اللّٰهَ وَ هُوَ خَادِعُهُمْ﴾ ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা মহান আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে আর তিনি তাদেরকে ঐ প্রতারণার শাস্তি দেন।’ (৪ নং সূরাহ্ নিসা, আয়াত নং ১৪২) অর্থাৎ ফলাফল দান করেন। এখন যদি কেউ প্রশ্ন করে যে, মুনাফিকরা মহান আল্লাহকে এবং মু’মিনদেরকে কিভাবে ধোঁকা দিবে তারা তো মনের বিপক্ষে যা কিছু প্রকাশ করে থাকে তা তো শুধু তাদের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে করে থাকে। এর জবাব হলো, যে ব্যক্তি কোন বিপদ থেকে রক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে এ রকম কথা বলে, ‘আরবী ভাষায় তাকে مخادع বলে। মুনাফিকরাও হত্যা, বন্দী হওয়া এবং ইহলৌকিক শাস্তি হতে নিরাপত্তা লাভের উদ্দেশ্যে এই চালাকি করতো এবং মনের বিপরীত কথা বাইরে প্রকাশ করতো, এজন্য তাদেরকে প্রতারক বলা হয়েছে। তাদের এ কাজ দুনিয়ার লোককে কিছু ধোঁকা দিলেও প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেকেই ধোঁকা দিচ্ছে। কারণ তার মধ্যে মঙ্গল ও সফলতা রয়েছে বলে তারা মনে করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা শাস্তি ও মহান আল্লাহর ক্রোধের কারণ হবে। ফলে তাদেরকে এমন শাস্তি দেয়া হবে যা তাদের সহ্য করার ক্ষমতা হবে না। সুতরাং এই প্রতারণা তাদের অশান্তির কারণ হবে। যে কাজের পরিণাম তারা নিজেদের জন্য ভালো মনে করছে তা তাদের অত্যন্ত খারাপ হবে। তাদের কুফরী, সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কারণে তাদের প্রতিপালক তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন। কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় যে, তাদের বোধ শক্তি নেই। ইবনু জুরাইজ (রহঃ)-এর তাফসীর করতে গিয়ে বলেন যে, ‘লা-ইলাহ ইল্লাল্লাহু’ কালিমা মুখে প্রকাশ করে তারা জীবনের নিরাপত্তা কামনা করে। এই কালিমাটি তাদের অন্তরে স্থান পায় না। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/৪৬) কাতাদাহ (রহঃ) বলেন যে, মুনাফিকদের অবস্থা এই-ইঃ তাদের মুখ পৃথক, অন্তর পৃথক, কাজ পৃথক, বিশ্বাস পৃথক, সকাল পৃথক, সন্ধ্যা পৃথক, তারা নৌকার মতো, যা বাতাসে কখনো এদিকে ঘুরে কখনো ওদিকে ঘুরে। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/৪৭)
#ইসলামিক #কোরআন

Address

Silchar
788009

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আল-কোরআন posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to আল-কোরআন:

Share