তারেই খুঁজে বেড়াই,Tarei khuje berai

  • Home
  • India
  • Srirampur
  • তারেই খুঁজে বেড়াই,Tarei khuje berai

তারেই খুঁজে বেড়াই,Tarei khuje berai চৈতন্য অনুরাগী সকল মানুষকে পারুল আশ্রমের এই বিভাগের পক্ষ থেকে সাদর আমন্ত্রণ জানাই। 🙏🙏

ভগবান শ্রী শ্রী নীলমাধব জিউ-এর শুভ প্রতিষ্ঠা উৎসবস্থান: শ্রী রামকৃষ্ণ চৈতন্য সেবা প্রতিষ্ঠান (পারুল আশ্রম ও মুকুন্দপুর আ...
03/06/2025

ভগবান শ্রী শ্রী নীলমাধব জিউ-এর শুভ প্রতিষ্ঠা উৎসব
স্থান: শ্রী রামকৃষ্ণ চৈতন্য সেবা প্রতিষ্ঠান (পারুল আশ্রম ও মুকুন্দপুর আশ্রম)
তারিখ: ১১ ও ১২ই জুন, ২০২৫

পারুল আশ্রম এবং আশ্রম কেন্দ্রিক “এক পরিবার”-এর সকল সদস্য, শুভানুধ্যায়ী, ভক্তবৃন্দ ও ভারতবর্ষের জ্যোতির্ময় সাধু-সমাজের আন্তরিক ও সক্রিয় সহযোগিতায় মুকুন্দপুর আশ্রমে স্থাপিত হতে চলেছে ভগবান শ্রী শ্রী নীলমাধব জিউ-এর পবিত্র শ্রীমন্দির ও বিগ্রহ।

এই মহৎ ও অনন্য আধ্যাত্মিক উপলক্ষে, সকল ভক্তবৃন্দকে সপরিবারে উপস্থিত থেকে এই উৎসবকে প্রকৃত অর্থে এক মহান প্রেমোৎসবে পরিণত করার আন্তরিক আহ্বান জানানো হচ্ছে।

📅 ১১ই জুন, ২০২৫ (বুধবার)

শুভ হোম যজ্ঞ

মহাসংকীর্তন

ভগবান শ্রী শ্রী নীলমাধব জিউ-এর পবিত্র প্রতিষ্ঠা

মহাভোগ বিতরণ

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

📅 ১২ই জুন, ২০২৫ (বৃহস্পতিবার)

ভারতবর্ষের খ্যাতনামা সাধু-মহাত্মাদের শুভাগমন

আন্তরিক অভ্যর্থনা

আধ্যাত্মিক সম্মেলন

সাধু ভাণ্ডারা

ভগবান শ্রী শ্রী নীলমাধব জিউ-এর কৃষ্ণপ্রেমময় আবির্ভাব উৎসব উপলক্ষে আপনার সপরিবারে উপস্থিতি এই পুণ্য তিথিকে করবে আরো মহিমান্বিত ও সার্থক।

আশীর্বাদপুষ্ট হোন – প্রেম ও ভক্তিতে বিভোর হোন – শ্রী শ্রী নীলমাধব জিউ-এর চরণে আত্মনিবেদন করুন।
– পারুল আশ্রম পরিবার

#মুকুন্দপুর_আশ্রম #পারুল_আশ্রম

শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের আবির্ভাব:অভিরাম মন্ডল শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুর ১৪২৯ শকাব্দে বৈশাখী কৃষ্ণাদ্বাদশী তিথিতে হালিশহর...
25/05/2025

শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের আবির্ভাব:
অভিরাম মন্ডল

শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুর ১৪২৯ শকাব্দে বৈশাখী কৃষ্ণাদ্বাদশী তিথিতে হালিশহর নতিগ্রামে আবির্ভূত হন। তাঁর পিতৃদেব ছিলেন নতিগ্রাম নিবাসী শ্রীবৈকুণ্ঠনাথ বিপ্র। মাতা ছিলেন শ্রীবাস পণ্ডিতের জ্যেষ্ঠভ্রাতা নলিন পণ্ডিতের কন্যা শ্রীমতী নারায়ণী দেবী। বর্দ্ধমান জেলার দেনুড় গ্রামে শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুরের শ্রীপাট।
‘শ্রীপাট পর্য্যটন” গ্রন্থে বলা হয়েছে-

হালিশহর নতি গ্রামে নারায়ণী সুত।
ঠাকুর বৃন্দাবন নাম ভুবন বিদিত।।
নতিগ্রামে জন্ম স্থান স্থিতি দেন্দুড়াতে।
শ্রীচৈতন্য ভাগবত কৈল প্রচারিতে।।

শ্রীগৌর-গণোদ্দেশ দীপিকায় (১০৯) বলা হয়েছে-

বেদব্যাসে য এবাসীদ্দাসো বৃন্দাবনোহধুনা।
সখা যঃ কুসুমাপীড়ঃ কার্য্যতস্তং সমাবিশৎ।।

“পূর্বে যিনি বেদব্যাস ছিলেন, তিনিই এক্ষণে শ্রীবৃন্দাবন দাস। ব্রজের কুসুমাপীড়-নামক সখা কার্যবশতঃ শ্রীবৃন্দাবন দাসে প্রবেশ করেছেন।

শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুর শ্রীবাস পণ্ডিতের ভ্রাতৃকন্যা নারায়ণীদেবীর গর্ভে আবির্ভূত হন। প্রেম বিলাসের মতে তাঁর পিতার নাম বিপ্র বৈকুণ্ঠ দাস। শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুর যখন তাঁর মাতৃগর্ভে তখন তার পিতার মৃত্যু হয়। পতি বিয়োগের পরে নারায়ণীদেবী মামগাছি গ্রামে বাসুদেব দত্তের প্রতিষ্ঠিত শ্রীবিগ্রহ সেবার ভার প্রাপ্ত হয়েছিলেন। বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের শৈশবকাল মামগাছিতেই অতিবাহিত হয়েছিল। তিনি বহু শাস্ত্রে পণ্ডিত্য লাভ করেছিলেন, তাঁর রচিত শ্রীচৈতন্যভাগবতই তার প্রমাণ। তিনি শ্রীপাদ নিত্যানন্দ প্রভুর সর্বশেষ শিষ্য ছিলেন। শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর নির্দেশে শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুর দেনুরে অবস্থান করে শ্রীচৈতন্য ভাগবত গ্রন্থ রচনা করেন। এখানে তিনি মন্দির প্রতিষ্ঠা করে শ্রীগৌর-নিত্যানন্দের সেবা প্রকাশ করেন। বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের রচিত গীতিপদও পদকল্পতরু আদি পদসংগ্রহ গ্রন্থে দৃষ্ট হয়। শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুরের শ্রীচৈতন্য ভাগবত যেন শ্রীশ্রীগৌর-নিত্যানন্দের লীলা রসের এক অপূর্ব অমৃত ভাণ্ডার।
তিনি গৌর-নিত্যানন্দের লীলারস স্রোতে উন্মর্জিত-নিমজ্জিত হয়ে যা আস্বাদন করেছেন, তা-ই যেন ভক্তগণের জন্য এই গ্রন্থে পরিবেশন করেছেন।
শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুর সবিনয়ে স্বীকার করেছেন, যে সমস্ত বিবরণ তিনি তার গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন সেগুলি গুরুদেব শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন। তিনি আরো তথ্য নিয়েছেন। শ্রীমুরারি গুপ্তের কড়চা থেকে। শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুরের এই মহাগ্রন্থ তিনটি খণ্ডে বিভক্ত – আদিখণ্ড, মধ্যখণ্ড ও অন্ত্যখণ্ড। পূর্ণ বিবরণ সহ শ্রীমন্মহাপ্রভুর সমগ্র নবদ্বীপ লীলা এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং এই বর্ণনা এতই প্রাঞ্জল যে কেহ পাঠ করলে ভক্তির ভাবাবেগে নয়নাশ্রু প্রবাহিত হয়। এই গ্রন্থের প্রতিপত্রে প্রতিছত্রে অলৌকিক মহাশক্তি বিরাজ করছে। যাঁরা শ্রদ্ধা বিনম্র অন্তঃকরণে এই মহাগ্রন্থের অনুশীলন করেছেনÑতারাই একথার যথার্থতা অনুভব করতে পেরেছেন। মহাপ্রভু মুখরিত এই মহাগ্রন্থের অক্ষরে অক্ষরে প্রেমেরই ভাষা ব্যক্ত হয়েছে। বস্তুতঃ প্রেমের নিগূঢ় মহিমা, ভক্তিতত্ত্বের সৎসিদ্ধান্ত এই মহাগ্রন্থে সরল ও সুন্দরভাবে আলোচিত হয়েছে। বাংলার তৎকালীন সমাজের বিচিত্র চিত্র এই গ্রন্থে বিচিত্র বর্ণেই চিত্রিত হয়েছে। এই গ্রন্থের নাম প্রথমে শ্রীচৈতন্য মঙ্গল ছিল, কিন্তু বৃন্দাবনবাসী বৈষ্ণবগণ এই মহাগ্রন্থকে “শ্রীচৈতন্য ভাগবত” আখ্যা প্রদান করেছেন। শ্রীমদ্ভাগবতের ন্যায় শ্রীবৃন্দাবনে রীতি মতো এই গ্রন্থ পঠন-পাঠন হতো। শ্রীগোবিন্দের সেবাধিকারী শ্রীহরিদাস পণ্ডিত বহু ভক্ত সমক্ষে এই মহাগ্রন্থ নিয়মিত পাঠ করতেন। ব্যাসাবতার বৃন্দাবন দাস ঠাকুর মহাশয় তাঁর গ্রন্থের পদে পদে যে অপূর্ব কবিত্ব ও সর্বতঃ প্রসারিণী প্রতিভার পরিচয় দান করেছেনÑতা বাস্তবিকই মানবীয় আলোচনার অতীত।

শ্রীচৈতন্য ভাগবতে বেদানুগ শাস্ত্র সমূহে কথিত ভক্তি সিদ্ধান্ত, বিশেষতঃ লীলা বর্ণন প্রসঙ্গে অতি সুন্দরভাবে বিন্যস্ত হয়েছে। শ্রীমন্মহাপ্রভুর প্রচারিত ধর্মের রহস্য এবং শ্রীশ্রীগৌর-নিত্যানন্দের তত্ত্বও লীলা বর্ণনের ব্যপদেশে অতি সুন্দর ভাবে প্রকটিত হয়েছে। শ্রীগৌড়ীয় বৈষ্ণবাচার্যগণের মধ্যে শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুরই তাঁর গ্রন্থে সর্বপ্রথম জানিয়েছেন। শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীগৌরাঙ্গ উভয়ই সম্বন্ধ তত্ত্ব, উভয়েই উপাস্য, উভয়ের ধাম ও সেবা প্রাপ্তিই জীবের কাম্য। সেই সেবা প্রাপ্তির নিমিত্ত প্রেমই হলো একান্ত প্রয়োজনীয় বস্তু। আর এই প্রেম লাভের জন্যই গৌর-কৃষ্ণের সুখের নিমিত্ত রাগমার্গের সাধন ভক্তির অনুষ্ঠান কর্তব্য। প্রেমই হলো পরম পুরুষার্থ। বৃন্দাবন দাস ঠাকুরই সর্বপ্রথম এ সংবাদ জানিয়েছেন। অতএব শ্রীগৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনে, ভাবে, ভাষায়, ভক্তিসাধনের ক্ষেত্রে বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের অবদান অতি উচ্চস্থানীয়।

ভক্তগোষ্ঠী-সহিত গৌরাঙ্গ জয় জয়।
শুনিলে চৈতন্য-কথা ভক্তি লভ্য হয় ॥
ধনে, কুলে, পান্ডিত্যে চৈতন্য নাহি পাই।
কেবল ভক্তির বশ চৈতন্য গোসাঞি ॥

ঠাকুর বৃন্দাবন দাস সম্বন্ধে আমাদের পূর্বতন আচার্য্যরা বলেছেন “ঠাকুর বৃন্দাবন দাস কেবল বৈষ্ণব জগতের রত্ন নন, তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য সমাজের একটি অলংকার স্বরূপ। প্রকৃত প্রস্তাবে ঠাকুর বৃন্দাবনের পূর্বে আর কেহ শুদ্ধ ভক্তির পদ্য গ্রন্থ রচনা করেন নাই। বৃন্দাবন দাস ঠাকুর যে ব্যাসদেবের অবতার তাহাতে কিছু মাত্র সন্দেহ নাই। তাঁহার সাধ্বী জননী সমস্ত বৈষ্ণবেরই পূজনীয়া।” শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর শ্রীচৈতন্যভাগবত ছাড়াও শ্রীনিত্যানন্দ অষ্টকম্ এবং মহাপ্রভু ও নিত্যানন্দ প্রভুর গুণ, রূপ ও মহিমাসূচক বিভিন্ন পদও রচনা করেছেন। তিনি জাহ্নবা মাতার সঙ্গে খেতুরী গ্রামে মহোৎসবে গিয়েছিলেন। তিনি চৈত্র কৃষ্ণা দশমী তিথিতে তিরোধান লীলা করেন। কেউ কেউ বলেন ১৫১১ শকাব্দে। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যদেবের পরম পবিত্র লীলাকথায় মুখরিত এই মহাগ্রন্থের অক্ষরে অক্ষরে প্রেমেরই ভাষা ব্যক্ত হয়েছে।

যুগে যুগে যেমন পরব্রহ্ম এর জ্ঞানময় প্রকাশ ব্যাস এর আবির্ভাব ঘটে। দ্বাপর এ যেমন কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস এর আবির্ভাব হয়েছিল লীলা পুরুষোত্তম ব্রজেন্দ্রনন্দন এর লীলা গাঁথা প্রকাশের জন্য।

তেমনি প্রেমা পুরুষোত্তমের "শ্রী গৌরাঙ্গ" এর লীলাকথা প্রেমগাঁথা লেখার জন্য কলিযুগের ব্যাস এর আবির্ভাব।

জয় গৌর নরহরি
জয় গুরু মহারাজ
🙏🙏🙏🙇🙇🙇🙏🙏🙏

উড়িয়া সাহিত্যে শ্রী চৈতন্যের ভগবত্বা :ঈশ্বরদাস তাঁর চৈতন্যভাগবতের প্রতি অধ্যায়ের শেষে 'ইতি শ্রীচৈতন্যভাগবতে বৌদ্ধাবতার...
24/05/2025

উড়িয়া সাহিত্যে শ্রী চৈতন্যের ভগবত্বা :

ঈশ্বরদাস তাঁর চৈতন্যভাগবতের প্রতি অধ্যায়ের শেষে 'ইতি শ্রীচৈতন্যভাগবতে বৌদ্ধাবতারে শ্রীচৈতন্যচন্দ্র' লিখেছেন সত্য, কিন্তু শ্রীচৈতন্যকে তিনি বিষ্ণু-জগন্নাথ বা হরির অবতারও বলেছেন—

অনাদি দেব বিষ্ণুনাথ। যাহার নাহি আদি অন্ত।
জগত নিস্তারিবা পাই। মঞ্চে মানব দেহ বহি।
নিস্তার জগত নিমন্তে। অনাদি নাথ শূন্য পথে।
ভক্তবৎসল জগন্নাথ। অব্যয় অনাদি অচ্যুত।
মর্ত্যে মনুষ্যদেহ ধরি। অনাদি নাথ দেব হরি।
নদিআ নগ্রে অবতার। পশুজন্মরু কলে পার॥

[চৈতন্যভাগবত, প্রথম অধ্যায়]

পঞ্চসখার অন্যতম সখা অচ্যুতানন্দ লিখেছেন, কলিযুগে মানুষ স্বল্পায়ু, তাই যোগসাধনায় সিদ্ধিলাভ তার পক্ষে অতি দুরূহ। একথা উপলব্ধি করে নিত্যকৃষ্ণ চৈতন্যরূপে জন্মগ্রহণ করলেন এবং খোল করতাল সমেত নাম প্রচার করলেন।—

'নিত্যকৃষ্ণে সেহি কলিরে যাই, তেণু চইতন্য জনম হোই।...
নদীআ নগরে জন্ম তাঙ্কর, চইতন্য বোলি সে অবতার।'

[তত্ত্ববোধিনী, সপ্তম অধ্যায়]

জগন্নাথ দাসের শাখার অন্তর্গত দিবাকর দাস চৈতন্যকে 'কিশোরী কিশোর' বা রাধাকৃষ্ণের যুগল অবতার রূপে প্রণাম করেছেন—

'কিশোরী প্রেমরক্তায় ভাব সলগ্ন-মূর্তয়ে।
গুপ্তায় রসরূপায় চৈতন্যায় নমো নমঃ॥

কিশোরী কিশোর যুগল। প্রেমালিঙ্গনে হোই ঠুল॥
গুপ্তভাব রসমূর্তি। রূপে প্রকাশ হোইছন্তি॥
শ্রীচইতন্য নাম যার। করুছি তাঙ্কু নমস্কার॥'

[জগন্নাথ চরিতামৃত, ১ম অধ্যায়]

সূত্র: 'ওড়িআ সাহিত্যে শ্রীচৈতন্য'

শ্রীরামকৃষ্ণের নবদ্বীপধামে গৌরাঙ্গ দর্শন —" ভাবতুম পুরাণ ভাগবত কোথাও কোন নামগন্ধ নেই — চৈতন্য আবার অবতার ! ন্যাড়া-নেড়ী...
28/04/2025

শ্রীরামকৃষ্ণের নবদ্বীপধামে গৌরাঙ্গ দর্শন —

" ভাবতুম পুরাণ ভাগবত কোথাও কোন নামগন্ধ নেই — চৈতন্য আবার অবতার ! ন্যাড়া-নেড়ীরা টেনে বুনে একটা বানিয়েছে আর কি !

কিছুতেই ও কথা বিশ্বাস হতো না। মথুরের সঙ্গে নবদ্বীপ গেলুম। ভাবলুম, যদি অবতারই হয় তো সেখানে কিছু না কিছু প্রকাশ থাকবে, দেখলে বুঝতে পারব। একটু প্রকাশ (দেবভাবের) দেখবার জন্য এখানে ওখানে বড় গোঁসাইয়ের বাড়ি, ছোট গোঁসাইয়ের বাড়ি, ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখে বেড়ালুম — কোথাও কিছু দেখতে পেলুম না !

সব জায়গাতেই এক এক কাঠের মুরদ হাত তুলে খাড়া হয়ে রয়েছে দেখলুম ! দেখে প্রাণটা খারাপ হয়ে গেল; ভাবলুম, কেনই বা এখানে এলুম।

তারপর ফিরে আসব বলে নৌকায় উঠছি এমন সময়ে দেখতে পেলুম অদ্ভুত দর্শন !

দুটি সুন্দর ছেলে — এমন রূপ কখনো দেখিনি, তপ্ত কাঞ্চনের মতো রং, কিশোর বয়স, মাথায় একটা করে জ্যোতির মণ্ডল, হাত তুলে আমার দিকে চেয়ে হাসতে হাসতে আকাশপথ দিয়ে ছুটে আসছে ! অমনি ‘ঐ এলোরে, এলোরে' বলে চেঁচিয়ে উঠলুম।

ঐ কথাগুলি বলতে না বলতে তারা নিকটে এসে (নিজের শরীর দেখাইয়া) এর ভেতর ঢুকে গেল, আর বাহ্যজ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলুম !

জলেই পড়তুম, হৃদে নিকটে ছিল, ধরে ফেললে। এই রকম এই রকম ঢের সব দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলে — বাস্তবিকই অবতার, ঐশ্বরিক শক্তির বিকাশ ! ”..

ঠাকুরের শ্রীনবদ্বীপধাম দর্শন করিতে অভিলাষ হওয়ায় মথুরবাবু তাঁহাকে সঙ্গে লইয়া কালনা, নবদ্বীপ প্রভৃতি স্থানে গমন করিয়াছিলেন।..

সম্ভবতঃ সন ১২৭৭ সালে ঠাকুর ঐসকল পুণ্যস্থানদর্শনে গমন করিয়াছিলেন। নবদ্বীপের সন্নিকট গঙ্গার চড়াসকলের নিকট দিয়া গমন করিবার কালে ঠাকুরের যেরূপ গভীর ভাবাবেশ উপস্থিত হইয়াছিল, নবদ্বীপে যাইয়া তদ্রূপ হয় নাই। মথুরবাবু প্রভৃতি ঐ বিষয়ের কারণ জিজ্ঞাসা করিলে ঠাকুর বলিয়াছিলেন, শ্রীশ্রীচৈতন্যদেবের লীলাস্থল পুরাতন নবদ্বীপ গঙ্গাগর্ভে লীন হইয়াছে; ঐসকল চড়ার স্থলেই সেইসকল বিদ্যমান ছিল, সেইজন্যই ঐ স্থানে উপস্থিত হইলে তাঁহার গভীর ভাবাবেশ উপস্থিত হইয়াছিল।

— শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণলীলাপ্রসঙ্গ — স্বামী সারদানন্দ।


জয় ঠাকুর


(সংগৃহীত)

https://youtu.be/Azt1qa1zMBM?si=xPFbc0AjWgWluWuVতীর্থের গুরুত্ব: সব্যসাচী          #মুকুন্দপুর_আশ্রম  #পারুল_আশ্রম
22/04/2025

https://youtu.be/Azt1qa1zMBM?si=xPFbc0AjWgWluWuV

তীর্থের গুরুত্ব: সব্যসাচী

#মুকুন্দপুর_আশ্রম #পারুল_আশ্রম

তীর্থস্থানের মাহাত্ম্য সম্পর্কে শ্রদ্ধেয় সব্যসাচী মহারাজ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখলেন। #তীর্থস্থান #তীর্...

শ্রীকৃষ্ণের আলোকে শ্রীচৈতন্য:সব্যসাচী শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীচৈতন্য দুজনেই এক অনন্য ব্যক্তিত্ব।  এই অনন্যতার প্রথম বৈশিষ্ট্য হল...
14/03/2025

শ্রীকৃষ্ণের আলোকে শ্রীচৈতন্য:
সব্যসাচী

শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীচৈতন্য দুজনেই এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। এই অনন্যতার প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো এরা দুজনেই এসেছিলেন অতীতে। কিন্তু আসলে এরা ভবিষ্যতের। এখনো কোন সময়কাল আসেনি, যা এদের সমসাময়িক হতে পারে। এরা দুজনেই সব সময় 'নতুন মানুষ"। এদের জীবনবোধ, সত্যবোধ জীবনযাত্রা সবসময় out of the box. দুজনেই জীবনে প্রত্যেক পর্যায়ে convention ভেঙে দিয়েছেন। দুজনেই সমাজের সংস্কারবদ্ধতা, বিভেদ ভাবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। কোথাও নিষ্প্রাণ ধার্মিকতার বিরুদ্ধে মানুষের জয় গান গেয়েছেন। কখনো মানুষের সাংসারিক সামাজিক সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে ধর্মের সত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীচৈতন্য। দুজনেই সব সময় নতুন মানুষ। প্রতিটি যুগেই তারা নতুন।

যুগের পর যুগ ধরে, অনাদিকাল ধরে সভ্যতা দুটি ( পরস্পর বিরোধী) আইডিয়া নিয়ে চলেছে।
হয়, আত্মা ( ব্রহ্ম, ঈশ্বর) সত্য। শরীর এবং বস্তু জগত মায়া বা মিথ্যা।
অথবা, শরীর এবং বস্তু জগত একমাত্র বাস্তব। আত্মা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। ভ্রম।
প্রায় সব যুগেই, সমগ্র পৃথিবীতে অধিকাংশ ধর্মীয় আচার্য, দার্শনিক, চিন্তাবিদরা শারীরিক মানুষকে স্বীকার করতে পারেননি। আবার যখনই জড়বাদ, বস্তুবাদ (অ?)ধর্মের সংস্কার এবং শোষণকে কে পরাজিত করে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে তখনই মানুষের আত্মা কে চূড়ান্ত অস্বীকার করা হয়েছে।। শুধুমাত্র মানুষের শারীরিক অস্তিত্বকেই বাস্তব ধরা হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই যখন শুধুমাত্র আত্মা কে স্বীকার করে, শরীরকে বা এই সংসারিক জগতকে অস্বীকার করা হয়েছে তখনই আত্মিক উন্নতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই সঙ্গে সভ্যতাকে গ্রাস করেছে দারিদ্র, ক্ষুধা, রোগ, ব্যাধি, মহামারী, দুর্ভিক্ষ, অসচেতনতা, .... যা শেষ পর্যন্ত মানুষের আত্মাকেও কলুষিত করে।
আবার যখনই আত্মা কে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে মানুষের শারীরিক অস্তিত্বকে ই বাস্তব ধরা হয়েছে তখন পৃথিবীতে বিরাট নগরায়ন হয়েছে। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সুবিধায় ভরে গেছে। জীবনে গতি এসেছে। রোগ ব্যাধি মহামারী থেকে মুক্ত হয়ে মানুষের আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের ব্যবহারিক জীবন সুখ, অর্থ, সমৃদ্ধিতে ভরে উঠেছে ঠিকই কিন্তু সেই সঙ্গে তৈরি হয়েছে পুঁজিবাদী শ্রেণী। অর্থনৈতিক শোষণ, সাম্রাজ্যবাদ। মানুষের হৃদয় আবেগ, সমবেদনা, সহমর্মিতা, নৈতিকতা হারিয়ে গেছে। নগরায়নের ফলে প্রকৃতির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। মানুষ হয়ে উঠেছে শরীর সর্বস্ব, অথচ প্রেমহীন!!! আত্মবিস্মৃত!!!
শরীরকে, বস্তুজগতকে মায়াবোধে তুচ্ছ করে শুধুমাত্র আত্মিক সত্যের রাস্তা নিয়ে ছিল প্রাচ্য।। যার ফলে সৃষ্টি হয়েছিল বুদ্ধ, পতঞ্জলি, শংকরাচার্য, মহাবীর, তুলসী দাস, বল্লভ আচার্য, কবির এদের মত সত্যের মহাসাধক। যারা তুরীয় চেতনায় অধিষ্ঠান করেছেন এবং অসংখ্য মানুষকে তার দিশা দেখিয়েছেন। তেমনই একইসঙ্গে সৃষ্টি হয়েছিল সীমাহীন দারিদ্র্য। খাদ্যের হাহাকার। মহামারী। অসংখ্য মানুষের অনাহারে পশুর মত মৃত্যু।
পাশ্চাত্য বস্তুবাদের পথ ধরেছিল। আত্মার অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল। ফলে সৃষ্টি হয়েছে অত্যাধুনিক নগর। কারিগরি। বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষ। মানুষের পার্থিব জীবনের পরম সমৃদ্ধি। এবং যথারীতি সেই সঙ্গে পুঁজিবাদী শ্রেণীর ক্ষমতার দম্ভ, বলগা হীন সাম্রাজ্যবাদ সেই সঙ্গে হিরোশিমা নাগাসাকি ও। মানুষেরই রক্ত মাংসের উপর মানুষেরই সৌধ অট্টালিকা।

এক আশ্চর্য দ্বন্দ্ব!!! হাজার হাজার বছর ধরে মানব সভ্যতা এইরকম বিকারগ্রস্তভাবেই চলেছে। মানুষকে পূর্ণভাবে ( totally) কেউ গ্রহণ করেনি। এই দ্বন্দ্বের একমাত্র উত্তর শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রী চৈতন্য।
শ্রীকৃষ্ণ তার জীবন দিয়ে দেখিয়েছেন মানুষ আত্মা এবং দেহ উভয়ই। মানুষ কদাপি শুধুমাত্র আত্মা নয়। আবার শুধুমাত্র দেহও নয়। মানুষ দেহ এবং আত্মার এক আশ্চর্য ছন্দ। আত্মা বা চৈতন্য সত্বার বাহ্যিক প্রকাশ হয় দেহের মাধ্যমে। দেহেরই অন্তর কেন্দ্র চৈতন্য বা আত্মা। দৈহিক সুখ ভোগ, লীলা-বিলাস, চাহিদা, সাংসারিকতা রাজনীতি যুদ্ধ এসব কোনো কিছুকেই শ্রীকৃষ্ণ অস্বীকার করেননি। অথচ এসবের মধ্যে সত্যের মহিমা কোথায় সেই দিকে সদা সর্বদা দিক নির্দেশ করেছেন।। কামনাকে ( sexuality) শর্তহীন, সংস্কারহীন ভাবে গ্রহণ করে নিষ্কাম প্রেমের চরম উৎকর্ষ দেখিয়েছেন।। তেমনি সাংসারিকতা, ক্ষমতালোভ, রাজনীতি, যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে সবকিছুর ঊর্ধ্বে যুগের কাছে সত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন।
শ্রীকৃষ্ণ এমন একজন মানুষ যিনি কাউকে প্রেমের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করতে বলেছেন , আবার কাউকে হিমালয় কঠোর তপস্যা করতে বলেছেন আবার কাউকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর যুদ্ধ করতে বলেছেন। সেখানে স্বজন এবং পরিবারের লোকজনকেও ক্ষমা করেন নি। তথাকথিত সাংসারিক রাজনৈতিক পারিবারিক জীবন কাটিয়েও তিনি মহাযোগী। ভারতের পরমাত্মা।

শ্রীচৈতন্যের সাধনাই ছিল দেহের মধ্যে দিয়ে দেহাতীত কে স্পর্শ করা। ত্যাগী বৈদান্তিক সন্ন্যাসীর রূপকল্প তার ছিল না। তিনি শুধু অন্তরে রাধা ভাব নিয়ে তপস্যা করেননি। বহিরাঙ্গেও তিনি রাধা হয়ে কৃষ্ণের দিকে ধেয়ে চলেছেন। কৃষ্ণের প্রতি এই কেন্দ্রাতিগ আকর্ষণ শুধু চেতনা দিয়ে নয়, সমগ্র শরীর দিয়ে গ্রহণ করেছেন ও প্রকাশ করেছেন। কায়ীক প্রেমের রূপকল্প আশ্রয় করে শর্তহীন সংস্কারমুক্ত সর্বগ্রাসী প্রেমের চরম সোপানে পৌঁছেছেন এবং সমগ্র যুগকেই সেই দিকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়ে সমাজ পরিবর্তন করেছেন।। ধর্ম শাস্ত্র মতামত জাতি কুল সবকিছু ঊর্ধ্বে প্রেমকে স্থাপন করেছেন। গোটা উপমহাদেশে বহুমুখী প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে ঘটিয়েছেন। দক্ষিণ ভারতে রাজন্যবর্গের মাধ্যমে সভ্যতা সংস্কৃতির, ক্ষত্রিয় শক্তি, মানুষের জীবনের সাংসারিক উন্নতির চরম উৎকর্ষ ঘটিয়েছেন। আরেক দিকে গুরু নানকের মাধ্যমে শিখ অভ্যুত্থান ঘটিয়েছেন। আবার কখনো শ্রীচৈতন্যের প্রভাব সন্ত তুকারামের মধ্যে দিয়ে শিবাজীর উত্থান ঘটিয়েছে। আরেক দিকে ইসলামী উদার সাধকদের মধ্যে দিয়ে মুঘল বাদশাহ আকবরের চিন্তা পরিবর্তন ঘটিয়ে ভারতবর্ষের রাজনৈতিক তথা ধর্মীয় বাতাবরণে বিরাট পরিবর্তন আনেন।। এমন এক প্রেম সাধনার ধারা নিয়ে আসেন যেখানে হিন্দু মুসলমান সহ অসংখ্য সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে চেতনার উত্তরণ ঘটাতে পারে।

শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রী চৈতন্য দুজনেই তাদের সমগ্র জীবন দিয়ে দেখিয়ে গেলেন আত্মা ও দেহের অপূর্ব এক ছন্দ ই হলো সত্য। পরমাত্মা এবং বস্তু জগত উভয়ের ছন্দবদ্ধতাই হল ঈশ্বরত্ব। সম্পূর্ণতা। সত্য।
প্রাচ্য গৃহস্বামী তৈরি করেছে কিন্তু গৃহ তৈরি করতে পারেনি। পাশ্চাত্য আকাশছোঁয়া অট্টালিকা বানাতে পেরেছে। কিন্তু সেখানে কোন মানুষ বাস করে না।
অভুক্ত হয়ে ধ্যান করা যায় না, আবার ধ্যানহীন মানুষ নিষ্প্রাণ। তাই খাদ্য এবং ধ্যান দুই প্রয়োজন। আমরা একই সঙ্গে আত্মা এবং শরীর। এই নিয়েই আমাদের অস্তিত্ব। কিন্তু মানুষের সমগ্র অস্তিত্বকে আজও গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রী চৈতন্য তাই আজও আমাদের কাছে অধরা। দুজনেই আমাদের সময়কালের থেকে অনেক এগিয়ে আছেন। হয়তো ভবিষ্যতে শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীচৈতন্য কে আরো বেশি করে ছোঁয়া যাবে।। হয়তো। অথবা কত যুগ লাগবে কে জানে.....

কিন্তু ঘরে ঘরে শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রীচৈতন্যের পূজা সমগ্র দেশে হয়ে চলেছে।। কত চর্চা আলোচনা বক্তৃতা হয়ে চলেছে। সম্প্রদায় মঠ মন্দির গড়ে উঠেছে। কিন্তু এই শ্রীকৃষ্ণ এবং এই শ্রীচৈতন্য যে মন্দিরের দেবতা। আমাদের তৈরি করা।। আমাদের মতই। আমরা যেমন বুঝতে চাই, তেমনি।

#শ্রী_চৈতন্য #শ্রীকৃষ্ণ #মুকুন্দপুর_আশ্রম #পারুল_আশ্রম

কৃষ্ণনগরের রাজবংশ পুরুষানুক্রমে বৈষ্ণব বিদ্বেষী বলিয়া কথিত। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ভয়ে শ্রীগৌরমূর্তিকে ছয় মাস যাবত মৃত্তি...
01/03/2025

কৃষ্ণনগরের রাজবংশ পুরুষানুক্রমে বৈষ্ণব বিদ্বেষী বলিয়া কথিত। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ভয়ে শ্রীগৌরমূর্তিকে ছয় মাস যাবত মৃত্তিকা অভ্যন্তরে লুক্কায়িত রাখা হয়েছিল। সিদ্ধ চৈতন্যদাস বাবার সময়ে রাজা গিরিশচন্দ্র শ্রীগৌরকে অবতার বলিয়া বিশ্বাস করিতেন না। তিনি নবদ্বীপে পণ্ডিতগণের এক বিরাট সভা আহ্বান করতঃ বিচারার্থী হইলেন। পোড়ামাতলায় এই অধিবেশন হয়।
ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন অবতারের সপক্ষে ও ভুবনমোহন বিদ্যারত্ন বিপক্ষে দণ্ডায়মান হন। দুই দিন ধরিয়া বিচার চলিল -- রাশি রাশি গ্রন্থ সভাস্থলে আনিত হইল। কিন্তু পন্ডিত পন্ডিত ঘোরতর কলহ লাগিল, অথচ মূল কথার মীমাংসা হইল না দেখিয়া ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন গিরিশচন্দ্রের অনুমতিক্রমে সিদ্ধ চৈতন্যদাস বাবাকে সভাস্থলে আনয়ন করেন। রাজা গিরিশচন্দ্র তাঁহার অদৃষ্টপূর্ব তেজোময় বপু, সহাস্য বদন ও বৈষ্ণবজনোচিত বেশভূষাদি দেখিয়া সগণে দণ্ডায়মান হইয়া অভ্যর্থনা করিলেন।
রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন -- শ্রীগৌরাঙ্গের অবতার সম্বন্ধে প্রমাণ কি?
সিদ্ধ বাবা শ্রীগৌরাঙ্গ স্মরণ করত বলিলেন -- "শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর অবতার সম্বন্ধে আমারও পূর্বে আপনার মত সন্দেহ ছিল। তিনি ঈশ্বর কি ভক্ত, পূর্ণ কি অংশ -- এ বিষয়ে ঘোর সন্দেহ ছিল। আজি আমার সকল সন্দেহ দূর হইয়াছে। শ্রীগৌরাঙ্গ যে অবতার, তাহা আজই আমার বিশ্বাস হইল এবং এই বিশ্বাসের মূলও আপনিই। প্রাচীন শাস্ত্রে আছে -- শ্রীভগবান্ ভূতলে অবতার গ্রহণ করিলে তৎকালীয় এবং তদ্দেশীয় নৃপতি তাঁহার বিদ্বেষী হন। ত্রেতাযুগে শ্রীরামচন্দ্রের বিদ্বেষী ছিলেন রাবণরাজা আর দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের বিদ্বেষ্টা ছিলেন কংসরাজা। কলিযুগে শ্রীভগবান্ শ্রীগৌরাঙ্গ রূপে এই নবদ্বীপে অবতার গ্রহণ করেন, নবদ্বীপাধিপতি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও তদ্বংশীয় আপনি শ্রীগৌরবিদ্বেষী হইয়া তাঁহার অবতারের পূর্ণ ও প্রকৃষ্ট পরিচয় ও প্রমাণ দিতেছেন। আপনি আজ আমাকে বড়ই আনন্দ দান করিলেন, অতএব আপনাকে এবং সভাস্থ সকলকে আমি ভক্তিভরে প্রণাম করিতেছি।"
রাজা হাস্যমুখে সিদ্ধ বাবার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করত সভাভঙ্গ করিলেন এবং পণ্ডিতগণ ও সভাস্থল সকল লোক বাবাজী মহাশয়ের জয়ধ্বনি করত স্বস্বগৃহে প্রস্থান করিলেন।

দেবানিক
- হরিদাস দাস বাবাজী - গৌড়ীয় বৈষ্ণব জীবন

প্রতাপরুদ্র যেভাবে মাহপ্রভুর কৃপা পেলো...দেবানিক : যখন মহাপ্রভু নীলাচলে আসেন, তখন রাজা প্রতাপরুদ্র কটকে ছিলেন । যখন পুরী...
24/02/2025

প্রতাপরুদ্র যেভাবে মাহপ্রভুর কৃপা পেলো...
দেবানিক :

যখন মহাপ্রভু নীলাচলে আসেন, তখন রাজা প্রতাপরুদ্র কটকে ছিলেন । যখন পুরীতে ফিরিয়া আসেন তখন প্রভু দক্ষিণে চলিয়া গিয়াছিলেন। রাজা সার্বভৌমকে বলিলেন-“এমন রত্ন পাইয়া ছািড়িলেন কেন ?” সার্বভৌম বলিলেন-“তিনি স্বতন্ত্র ঈশ্বর । তবে আবার আসিবেন বলিয় গিয়াছিলেন।” প্রতাপ রুদ্র প্রভুকে দর্শনের জন্য প্রবল আগ্রহ জানাইলেন । প্রভু ফিরিয়া আসিলে, সার্বভৌম তাহার কাছে প্রতাপরুদ্রের দর্শন বাঞ্ছা জানাইলেন। প্রভু কঠোরভাবে অস্বীকার করিলেন । বলিলেন--“ সন্ন‍্যাসীর রাজদর্শন নিষেধ । এইরূপ অনুরোধ আমাকে আবার করিলে আমি শ্রীক্ষেত্র ছাঁড়িয়া চলিয়া যাইব” পণ্ডিত সার্বভৌম রাজাকে এই কথা জানাইলে, তিনি অতি বেদনার্ত্ত হইলেন । অতি দুঃখে বলিলেন, “প্রতাপরুদ্রকে বাদ দিয়া জগৎ উদ্ধার করিতে কি তিনি আর্বিভূত হইয়াছেন? প্রভু প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন- রাঁজ-দর্শন করিবেন নাঁ। আমারও প্রতিজ্ঞা প্রভু বিনে প্রাণ ত্যাগ করিব |”

রাজা যখন প্রভু-দর্শনের জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল, তখন ভক্তগণ প্রভুর নিকট যাঞা করিয়া। তাহার প্রসাদী একখানি বহিধাস লইয়া রাজাকে দিলেন । রাজা প্রসাদীবস্ত্র পাইয়া সাক্ষাৎ প্রভু-জ্ঞানে তাহা বক্ষে চাপিয়া ধরিলেন। কিন্ত দর্শন উৎকন্ঠা কমিল না, আরও বাডিল। তারপর বহু অনুনয়ে প্রতাপরুদ্রের পুত্রের সহিত মিলিত এইতে স্বীকৃত হইলেন । রাজপুত্র প্রভু সান্নিধ্যে আসিলেন। তাহার কিশোর বয়স, শ্যামল বর্ণ দেখিয়আ। প্রভুর কৃষ্ণস্ফুর্তি হইল ও পুনঃপুনঃ তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন ।

প্রভুর স্পর্শে রাজপুজের দেহে স্বাত্বিক বিকার দেখা দিল। প্রতাপরুদ্র সেই পুত্রকে আলিঙ্গন করিয়া যেন মহাপ্রভুর সাক্ষাৎ স্পর্শ পাইলেন এইরূপ অনুভব করিলেন । কিন্ত দর্শন উৎকন্ঠা কমিল না অনন্তর বাদ্ধিত হইতে লাগিল । রথযাত্রার দিন রথে যখন জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্র আরোহণ করিয়াছেন তখন প্রতাপরুদ্র ঝাড়ু লইয়া পথ মাজ্জ্ন করিতে লাগিলেন । রাজ" স্বহস্তে তুচ্ছ সেবা করিতেছেন দেখিয়া প্রভুর কৃপার উদয় হইল।
রথ যখন চলিতে লাগিল তখন রথা অগ্ৰে প্রভু উদ্দন্ড নৃত্য করিতে লাগিলেন । বলগণ্ডি নামক স্থানে যখন রথ থাঁমিল, তখন পথ ক্লান্ত হইয়া পাশ্ববর্তী উপবনে গিয়া বিশ্রাম করিতে লাগিলেন । মৃদুমন্দ বাতাস বহিয়া প্রভুর শ্রীঅঙ্গের ঘর্ম অপনোদন করিতে লাগিল ।
প্রেমের আবেশে প্রভু পড়িয়া আছেন । তখন প্রতাপরুদ্র রাজবেশ ছাডিয়" বৈষ্ণবের বেশে একাকী তপোবনে প্রবেশ করিলেন । প্রভু নয়ন মুদিত করিয়া ভূমিতে শয়নে আছেন । প্রতাপরুদ্র অতি ধীরে সন্তর্পণে শ্রীচরণ সংবাহন করিতে লাগিলেন ।

পাদসংবাহন করিতে করিতে রাজা ভাগবতের গোগী-গীতের শ্লোক আবৃত্তি করিতে লাগিলেন । যখন “তব কথামৃতং তপ্তজীবনং” এই শ্লোক পড়িলেন, তখন প্রভু “ভূরিদা-ভূরিদা” বলিয়া প্রেমাবেশে প্রতাপরুদ্রকে, আলিঙ্গন করিলেন । তিনি প্রভুর কপার প্লাবনে ভাসিয়া গেলেন ।

#শ্রী_চৈতন্য

শ্রীচৈতন্যের পার্ষদ বৃন্দাবনের ষড়গোস্বামী তাঁদের যাবতীয় পুথিপত্র সংস্কৃতে রচনা করলেও শ্রীচৈতন্য নিজে কিন্তু আসাম ওড়িষ্যা...
22/02/2025

শ্রীচৈতন্যের পার্ষদ বৃন্দাবনের ষড়গোস্বামী তাঁদের যাবতীয় পুথিপত্র সংস্কৃতে রচনা করলেও শ্রীচৈতন্য নিজে কিন্তু আসাম ওড়িষ্যা যেখানে গেছেন, সেখানেই মাতৃভাষায় পুরাণগ্রন্থের উপর জোর দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগরের রঘুপণ্ডিতকে, আসামের রত্নেশ্বর বিপ্র এবং ওড়িষ্যার জগন্নাথ দাসকে নিজ নিজ মাতৃভাষায় ভাগবত পাঠে ও অনুবাদে উৎসাহিত করেন। রত্নেশ্বর বিপ্রকে তিনি 'রত্নপাঠক' উপাধি দেন, রঘুপণ্ডিত ও জগন্নাথ দাসকে উপাধি দেন যথাক্রমে 'ভাগবতাচার্য' ও 'অতিবড়ী'। সেকালের মানুষ যাঁরা নিরক্ষর ছিলেন, মাতৃভাষায় শাস্ত্রগ্রন্থ পাঠ করার সুযোগ পেয়ে তাঁরা নিজেদের নিরক্ষরতা দূর করতে উঠে পড়ে লাগেন। এ প্রসঙ্গে মনীষী বিপিনচন্দ্র পাল লিখেছেন—'মাতৃভাষায় ধর্মশাস্ত্রপাঠের উৎসাহ বঙ্গদেশে জনশিক্ষার প্রসারে অত্যন্ত সহায়ক হল। বর্তমান শতকের প্রথম দিকেও হিন্দুদের মধ্যে বৈষ্ণবরাই ছিলেন বেশিমাত্রায় সাক্ষর। বৈষ্ণব পুরুষেরাই নন, স্ত্রীলোকেরাও নিজ নিজ মাতৃভাষায় অল্পবিস্তর শিক্ষালাভ করেছিলেন' [Bengal Vaisnavism]। মনীষী ভূদেব মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'মাতৃভাষায় ভাগবতের অনুবাদ পাঠ করার আগ্রহ ওড়িষ্যার জনগণের সাক্ষরতার হার প্রভূত পরিমাণে বাড়িয়ে দিয়েছিল।'

(নির্মলনারায়ণ গুপ্ত, 'ভারতীয় সাহিত্যে শ্রীচৈতন্য')

বঙ্গদেশে ব্রাহ্মণ্য প্রভুত্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হতে না পারলেও বাংলার বৈষ্ণবেরা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনবেদ 'শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত'কে গ্রহণ করল নিজেদের শাস্ত্ররূপে। বাংলা ভাষায় রচিত 'শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত' কাব্যে ভাগবত, ভগবদ্গীতা, এবং উপনিষদ থেকে প্রচুব উদ্ধৃতি দিয়ে চৈতন্য প্রচারিত নতুন তত্ত্বের প্রাচীন শাস্ত্রানুসারিতা দেখানো হয়েছে। এছাড়া বাংলায় আরো অনেক বৈষ্ণব গ্রন্থ রচিত হল—যেমন 'চৈতন্যমঙ্গল', 'চৈতন্যভাগবত' ইত্যাদি। প্রকৃত পক্ষে 'চৈতন্যমঙ্গল, 'চৈতন্যভাগবত' ও 'চৈতন্যচরিতামৃত' এই তিনখানি গ্রন্থ মিলেই বাংলার বৈষ্ণব শাস্ত্র গড়ে উঠেছে।

ফলতঃ বাংলার বৈষ্ণবদের মধ্যে এল এক বিরাট ও ব্যাপক উন্মাদনা ও উদ্দীপনা। দৈনন্দিন পূজার্চনার অঙ্গ হল বৈষ্ণব গ্রন্থপাঠ। মাতৃভাষায় ধর্মশাস্ত্রপাঠের উৎসাহ এদেশে জনশিক্ষার প্রসারে অত্যন্ত সহায়ক হল।

(বিপিনচন্দ্র পাল, 'বাংলার বৈষ্ণবধর্মে সমাজসংস্কার ও গণআন্দোলন')

সংগৃহীত

নরোত্তম দাস ঠাকুর :Showrav Kumar DeySavarDhaka, Bangladesh প্রেম এবং ভক্তির মিশ্রণেই যাঁহার বপু নির্মিত তিনিই নরোত্তম দা...
12/02/2025

নরোত্তম দাস ঠাকুর :

Showrav Kumar Dey
Savar
Dhaka, Bangladesh

প্রেম এবং ভক্তির মিশ্রণেই যাঁহার বপু নির্মিত তিনিই নরোত্তম দাস ঠাকুর মহাশয়। শ্রীপাদ বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর তাঁহার সম্বন্ধে লিখিয়াছেন-

"কারুণ্যদৃষ্টি শমিতাশ্রিত মন্তুকোটি রম্যাধরদ্যদতি সুন্দর দন্তকান্তি।
শ্রীমন্নোরত্তম মুখাম্বুজ মন্দহাস্যম্ লাস্যম্ তনোতু হৃদি মে বিতরৎ স্বদাস্যম্।।"

অর্থাৎ, শ্রীমন্ নরোত্তমের একবার কৃপাললিত নেত্রপাতেই উচ্ছৃসিত ক্রোধাদি সর্বরিপু দমিত হয়। তাঁর সর্ব সৌন্দর্য্যপূর্ণ তনু, দন্তকান্তি, শ্রীমুখাম্বুজ এবং তৎশোভিত মন্দহাস্য, নর্তন কৌতুক আমার হৃদয়পদ্মে উদ্ভাসিত হোক। আমি তাঁরই অনুধ্যান করি।

ঠাকুর মহাশয়ের প্রেম,ভক্তি,জ্ঞান,বিজ্ঞান,বৈরাগ্য, শিল্প গৌড়ীয় বৈষ্ণব জগতের মণিকোঠায় শীর্ষ স্থানীয়। ঠাকুর মহাশয় কৃত রচিত পদ-পদাবলী-শাস্ত্র সাহিত্য জগতে যেমন অবিচ্ছেদ্যাংশ তদ্রুপ অনন্য নিষ্ঠ ভাবুক বৈষ্ণব সাধক বর্গের নিকট সাধনার রসদ সরুপ৷ জদ্বিখ্যাত খেতুরী মহোৎসবে ঠাকুর মহাশয়ের সৃষ্ট গড়ানহাটি কীর্তন ঘরণা উচ্চাঙ্গসংগীত এর অসামান্য এক ধারা। অদ্যাবধি কীর্তনের যতগুলি ঘরণা আমরা দেখিতে পাই সে সকল ঘরণারই মূল উৎস গরানহাটি ঘরণা। ভাব গম্ভীর বিলম্বিত লয়ের এই কীর্তন সঙ্গীত ঘরণা পূর্ব বঙ্গের বর্তমান রাজশাহী জেলান্তর্গত তৎকালীন গরানহাটি পরগনার খেতুরী গ্রামে ঠাকুর মহাশয় সৃজন করেন।ঠাকুর মহাশয়ের তন্ময়তা, ভাবুকতা,প্রেমের প্রগাঢ়তা কোনো ব্যাখ্যার মধ্যে সীমাবধ্য না, ইহা ব্যাখ্যাতীত। শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভু পূর্ব বঙ্গে আসেন নাই ঠিকই কিন্ত সাক্ষাৎ নরোত্তম রূপেই আবির্ভূত হইয়াছেন।পূর্ব বঙ্গের ভূমিকে ধন্যাতিধন্য করিয়াছেন।

যাঁর ভক্তির বৈভবে পূর্ব বঙ্গ প্লাবিত হয়ে প্রেম বর্ষণের সূত্র উদঘাটিত হয় সেই অভিন্ন নিত্যানন্দ কলেবর প্রেমভক্তির মহাজন, মহারাজ কৃষ্ণানন্দাত্মজ নিকুঞ্জের চম্পকমঞ্জরী, মহামহিম, মহামহোপাধ্যায় শ্রীপাদ নরোত্তম দাস ঠাকুর মহাশয়ের আবির্ভাব তিথিতে তদীয় অতুল রাতুল চরণপদ্মসহস্রদলে মাদৃশ জীবাধমের প্রেমভক্তিকুসুমরঞ্জিত প্রণাম নিবেদন করি।

সৌরভ কুমার দে:

#শ্রী_চৈতন্য #

আজ মাঘের শুক্লা ত্রয়োদশী; অবধূতশ্রেষ্ঠ নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর ৫৫০তম আবির্ভাব তিথি। বিপুল-পুরট-ধামা কঞ্জদৃকপাদপাণিঃশুভদসুখ...
10/02/2025

আজ মাঘের শুক্লা ত্রয়োদশী; অবধূতশ্রেষ্ঠ নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর ৫৫০তম আবির্ভাব তিথি।

বিপুল-পুরট-ধামা কঞ্জদৃকপাদপাণিঃ
শুভদসুখদনামা কর্ণহৃদ্ধারিবাণিঃ
জলধরমদমোষে ডম্বর দিব্যবেশ
কুমল-হৃদয়কোষে ভাতু মে জাহ্নবেশঃ।।

পদ্মের মতো হস্তপদ, বিশাল কলেবর, পুণ্যনাম, "কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিয়া" হৃদয়কে ধন্য করে দেয় এমন বাণী, বর্ষার মেঘের মতো বা রুদ্রের ডম্বরুর মতো গম্ভীর হুঙ্কার, লীলাবশে ধরেছেন দিব্যবেশ। জাহ্নবা দেবীর সেই হৃদয়বল্লভ মলিন হৃদয়কোষে প্রকাশিত হোন।

মঙ্গলাচরণের এই শ্লোকটি পেয়েছি হরিদাস দাস মহাশয়ের গৌড়ীয় বৈষ্ণব অভিধান থেকে।

আজ বাঙালির প্রেমের হাটের রাজা নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর আবির্ভাব তিথি। তিনি অবধূতশ্রেষ্ঠ; তন্ত্রের মহাসাধক। মস্তকে ধারণ করেছেন মা ত্রিপুরাসুন্দরীর তত্ত্ব। তাঁর হরিনামের হুঙ্কারে কম্পিত হয়েছে মধ্যযুগের অত্যাচারী শাসক আর পথভ্রষ্ট সমাজপতিদের কুচক্র। তিনি পরম মমতায় সমাজে স্থান দিয়েছেন পাল-সেনযুগের তন্ত্রধারার উত্তরাধিকারী বাউল, সহজিয়াদের। জগাই মাধাইয়ের কলসির কানার আঘাতকে হেলায় অগ্রাহ্য করে হয়ে উঠেছেন সেই মহাকরুণার অবতার; যে মহাকরুণার পথেই একদিন বাঙালি সিদ্ধাচার্য তারা, লোকনাথ, প্রজ্ঞাপারমিতার সাধনা করেছিল।
তিনি চৈতন্যদেবের অভিন্নহৃদয় সহচর। তিনি গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের কর্ণধার। তাঁর তত্ত্ব বোঝা বড়ো দায়। শ্রীবাস অঙ্গনের রুদ্ধদ্বার কীর্তনকে তিনিই নবদ্বীপের পথে নিয়ে এসেছিলেন। গৃহী সাধকের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সন্ন্যাসের পথ ত্যাগ করে বসুধা ও জাহ্নবা দেবীর সাথে বিবাহ করেছিলেন। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মে নারীদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী। চৈতন্যজীবনী কাব্যসমূহের গ্রন্থনায় সূত্রধর রূপে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। যদিও আমাদের চরম দুর্ভাগ্য যে বাংলার বৈষ্ণব সাহিত্যের বিপুল ভাণ্ডারে কোনো বৈষ্ণব সাধক তাঁর একটিও জীবনীগ্রন্থ রচনা করেন নি।

তাঁর ধর্ম কঠোরতায় মলিন নয়; আনন্দের সমস্ত বর্ণে বর্ণময়। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর প্রধান সহচর দ্বাদশ গোপালের মাধ্যমে মধ্যযুগের বিধ্বস্ত বাঙালির কাছে তিনি সার্বভৌম রাজার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। বাঙালি মহাজাতির পুনরুত্থানে তাঁর ভূমিকা সহস্র মুখেও বলে শেষ করা যায় না। তিনি ছিলেন বলেই আঘাতে আঘাতে দীর্ণ বাঙালি অত্যাচারী শাসককে বলতে পেরেছিল: ঝাট কৃষ্ণ বোল নইলে ছিণ্ড এই মাথা। খড়দহের শ্রীপাটে তিনি শারদীয়া কাত্যায়নী দুর্গার পূজা প্রচলন করেছিলেন। বুঝিয়েছিলেন বাঙালির শাক্ত আর বাঙালির বৈষ্ণব দুই ধারাই তন্ত্রের সূত্রে বাঁধা। পানিহাটির মহোৎসবে ছত্রিশ জাতির সমন্বয় ঘটিয়ে বাঙালির আদি সমাজভাবনার পুনরুদ্ধার করেছিলেন।
তাঁর নাম নিতে উদ্ধারণ দত্ত, রঘুনন্দনের মতো বিত্তবান থেকে বৃন্দাবনদাস, কৃষ্ণদাস কবিরাজের মতো নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব সাধক, শাক্ত, বাউল, ফকির, সহজিয়া সবাই একাকার হয়ে যান। আজও সহজিয়া বাউল পদ ধরেন:
হরিনাম দিয়ে জগত মাতালে আমার একলা নিতাই

রক্তিম মুখার্জ্জী
ছবিতে নিত্যানন্দ মহাপ্রভু, তাঁর পূজিত ত্রিপুরাসুন্দরী যন্ত্র এবং খড়দহ শ্রীপাটে পূজিত মা কাত্যায়নীর বিগ্রহ।

সংগৃহীত:

Address

Parul Ashram , Dhaniakhali, Hooghly
Srirampur
712302

Telephone

+917679049095

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when তারেই খুঁজে বেড়াই,Tarei khuje berai posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to তারেই খুঁজে বেড়াই,Tarei khuje berai:

Share