25/05/2025
শুধুমাত্র সৌন্দর্যতেই নারীর পরিচয় নয়। এর সঙ্গে আরো কিছু আছে যা ভারতীয় নারীর বিশিষ্টতা । ইউরোপ-আরব দুইখানেই নারীকে ভোগের সামগ্রী হিসেবে দেখা হয়েছে --- এই কারণেই কোথাও পোশাক তার অস্তিত্ব বাঁচাতেই সঙ্কটে আবার তার বিপরীতে কোথাও পোশাক যেন সেই নারীর অস্তিত্বকেই ঢেকে দিয়ে নারীর জন্য চিরন্তন রাত্রী বয়ে আনে।
ইউরোপে নারীর অধিকারের সঙ্গে 'দায়ভাগ' ও 'মিতাক্ষরা'য় নারীর অধিকারের তুলনা করলে অবাক হতে হয়, হিন্দু নিয়মে নারীর অধিকার কতটা সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল।
ভারতীয় দর্শন কে বিশ্বের সামনে নিয়ে যেতে কবিগুরুর ভূমিকা বলাই বাহুল্য। তিনি দেশে দেশে ভ্রমণ করে বিশ্বের যতটুকু ভালো তা ভারতে আনার আর ভারতের যা কিছু চিরন্তন, সনাতন তা বিশ্বকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।
বিশেষ করে নারীর প্রতি ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি আর সেই সময়ে তথাকথিত উন্নত ইউরোপের দৃষ্টিকোণ বিশ্বকবি তুলে ধরেছেন তাঁর 'পশ্চিম যাত্রীর ডায়ারি' তে ---
*নারীশক্তিতে আমরা মধুরের সঙ্গে মঙ্গলের মিলন অনুভব করি। প্রবাসে যাত্রায় বাপের চেয়ে মায়ের আশীর্বাদের জোর বেশি ব’লে জানি। মনে হয়, যেন ঘরের ভিতর থেকে মেয়েদের প্রার্থনা নিয়ত উঠছে দেবতার কাছে, ধূপপাত্র থেকে সুগন্ধি ধূপের ধোঁয়ার মতো। সে-প্রার্থনা তাদের সিঁদুরের ফোঁটায়, তাদের কঙ্কণে, তাদের উলুধ্বনি-শঙ্খধ্বনিতে, তাদের ব্যক্ত এবং অব্যক্ত ইচ্ছায়। ভাইয়ের কপালে মেয়েরাই দেয় ভাইফোঁটা। আমরা জানি, সাবিত্রীই মৃত্যুর হাত থেকে স্বামীকে ফিরিয়েছিল, নারীর প্রেমে পুরুষের কেবল যে আনন্দ তা নয়, তার কল্যাণ।*
পুরুষ - নারীর দ্বন্দ্ব কোনদিনই ভারতে আলোচ্য বিষয় ছিল না, এই দ্বন্দ্ব চিন্তাজগতে ইউরোপের অনুপ্রবেশ।
অহল্যা বাঈ হোলকার, রাণী রাসমণি, দুর্গাবতি, রাণী আবাক্বা, চিন্নাম্মা ভারতীয় সংস্কৃতি বাঁচাতেই লড়েছিলেন।
ধর্ম-সংস্কৃতি বাঁচাতেই রাজপুত নারীদের 'জওহর ব্রত' ।
সিঁদুর তাই ভারতীয় সংস্কৃতির পরিচয় আর ভারতীয় সংস্কৃতির রক্ষার্থে নারীশক্তির পরিচয়।
'অপারেশন সিঁদুর'-এর সাফল্য আর তার সাথে জড়িত ভারতীয় নারীর আবেগ কে বিশ্বমঞ্চে দেখালেন অভিনেত্রী ঐশ্বর্য রাই।
যারা একসময় 'ফ্যাশন' এর বিপরীতে সিঁদুর কে দেখাতে চেয়েছিল, আজ 'সিঁদুর' ই ভারতের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে বিশ্বের 'ফ্যাশন' এর মঞ্চে , যেন এই সিঁদুর ভারতীয় ঋষিদের সেই প্রতিজ্ঞাকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে ---
"কৃণ্বন্তু বিশ্বমার্যম"
সভ্যতার সূচনা লগ্ন থেকেই এটিই ভারতের পররাষ্ট্র নীতি।