08/09/2023
ইচ্ছে থাকলে সব হয়, প্রমাণ করলেন নন্দকুমারের ' নাপিতের' ছেলে!
নন্দকুমার: ইচ্ছে থাকলে সব হয় আবারও প্রমাণ করলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমারের এক নাপিত পরিবারের ছেলে। বাবার ছোট্ট সেলুন দোকান। রোজকার কম। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তবুও অসম্ভব জেদ আর মেধাকে কাজে লাগিয়ে ওই পরিবারের ছেলে ডাব্লু বি সি এস পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে রেভিনিউ অফিসার হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছেন। পড়াশোনার শুরু গ্রামের স্কুলে, নন্দকুমারের কল্যাণচক জগন্নাথ ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। হলদিয়া গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে বিএসসি পাস করার পরেই ডাব্লু বি সি এস পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেয়, অবশেষে সফল তিনি।
নন্দকুমার ব্লকের কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সোদলপুর গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ মান্না। বাবা ভোলানাথ মান্না। পেশায় ক্ষৌরকার, নন্দকুমার বাজারে একটি ছোট্ট সেলুন দোকান। তা থেকে কোনরকম সংসার চলে। সেই টাকাতেই নিজেরা না খেয়ে ছেলের পড়াশোনার টাকা যুগিয়েছেন। বিকাশ মান্নাও উচ্চশিক্ষার জন্য নিজের পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে অর্থ উপার্জনের জন্য টিউশন করেছেন। কিন্তু কলেজ পাশের পর তার লক্ষ্য ছিল ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় সফল হওয়া। পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র বিকাশ মান্না, তাই বাবা মা ছেলের পড়াশোনার জন্য আধপেট খেয়েও ছেলের মুখ চেয়ে খুশি থেকেছেন। সেই গরিব বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করল বিকাশ!
বিকাশ মান্না প্রথম দু'বার ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। কিন্তু তৃতীয়বার প্রতিটি স্তরের সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি হাওড়া জেলার পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দফতর কর্মরত। বিকাশের এই সাফল্যে খুশি তার বাবা-মা সহ প্রতিবেশীরা। মা নমিতা মান্না বলেন, 'পড়াশোনা ছেলের স্বপ্ন ছিল তাই সব সময় পড়াশোনা নিয়েই থাকত আমরা কোনদিন তাকে বাধা দিইনি। আমরা আজ আনন্দিত ও খুশি।'
কথায় আছে ইচ্ছে থাকলে সবই সম্ভব। আর তাই করে দেখালেন নন্দকুমারের দিন আনি দিন খায় পরিবার থেকে উঠে আসা বিকাশ মান্না। বিকাশ মান্না'রা সমাজের কাছে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত! তাঁর এই সফলতার কাহিনী প্রেরণা যোগাবে অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের।