21/07/2025
একদিন এক বিশাল নাট্যশালায় চার্লি চ্যাপলিনের উপস্থিতিতে আয়োজন করা হয়েছিল এক বিশেষ অনুষ্ঠানের। হাজার হাজার দর্শক জড়ো হয়েছিলেন, চোখে মুখে আনন্দের প্রতীক্ষা।
চ্যাপলিন মঞ্চে উঠে এলেন, তাঁর পরিচিত ভঙ্গিতে।
তিনি বললেন একটি কৌতুক।
হল কেঁপে উঠল হাসির রোল-এ।
মানুষ হেসে কুটিকুটি, কেউ চোখ মুছছে, কেউ পেটে হাত রেখেছে—এ যেন আনন্দের বন্যা।
কিছুক্ষণ পরে তিনি আবার বললেন ঠিক একই কৌতুক।
এইবার কিছু হাসি, কিছু মুখে মৃদু হাসির রেখা, কেউ কেউ কেবল তাকিয়ে রইল।
আরও একটু পর, তিনি তৃতীয়বার একই কৌতুক বললেন—একেবারে হুবহু।
এইবার গোটা হল নিস্তব্ধ। কারও মুখে হাসি নেই।
সবাই যেন এক অদ্ভুত প্রশ্নে আচ্ছন্ন।
তখন চ্যাপলিন মঞ্চের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, এক অনন্য শান্ত কণ্ঠে বললেন—
**"যখন একটি কৌতুকে তুমি বারবার হাসতে পারো না, তখন একই কষ্টে তুমি কেন বারবার কাঁদো?"**
হল আবার নিস্তব্ধ। তবে এবার সেই নীরবতা ছিল ভাবনার, আত্মবিশ্লেষণের।
চ্যাপলিন চলে গেলেন, কিন্তু রেখে গেলেন জীবনের এক গভীর শিক্ষা।
আমরা অনেক সময় একটা দুঃখ, একটা আঘাত, একটা অতীত কষ্টকে এতবার মনে করি, এতবার হৃদয়ে টেনে আনি — যেন তা ছাড়া আর কিছুই নেই। অথচ ঠিক সেই রকম কৌতুক বা সুখকে তো বারবার মনে করে তেমন করে আর উপভোগ করতে পারি না।
জীবন আমাদের হাসার সুযোগ দেয় অল্প সময়ের জন্য, কিন্তু আমরা দুঃখের পালক ধরে রাখি বছরের পর বছর।
চ্যাপলিনের সেই দিনের মঞ্চভাষণ ছিল শুধুমাত্র একটি কৌতুক নয়—
**একটি আয়নার মতো, যেখানে প্রতিটি মানুষ দেখতে পারে নিজের আবেগের সত্য প্রতিচ্ছবি।**
এটাই জীবনের এক অপূর্ব পাঠ — **“কষ্টকে চিরকাল ধরে রাখলে জীবন থেমে যায়, আর আনন্দকে হারাতে দিলে জীবন শুকিয়ে যায়।”**