29/06/2025
সাইকেলে পৃথিবীর ১৪ টা দেশ ঘুরে রাশিয়া পৌঁছালাম 🇮🇳🚲🇷🇺
আমি পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে থাকা এক ছোট্ট গ্রামের ছেলে। নাম জানার দরকার নেই, কারণ এই গল্প আমার না, এই গল্প আমাদের মতো লক্ষ লক্ষ স্বপ্নবাজ মানুষের। আমি সেই ছেলে, যে ছোটবেলায় মাড় ভাত খেতে খেতে পাহাড়ের গায়ে সাইকেল চালিয়ে ঘুরত ,আর ভাবত— “একদিন গোটা দুনিয়া ঘুরব।” তখন জানতাম না বাইকাল লেক কোথায়, গোবি মরুভূমির ধুলো কেমন, বা চীনের প্রাচীর কত লম্বা। জানতাম শুধু, মন চাইছে দেখতে। আর মন চাইলে বেরিয়ে পড়া উচিত।
হাতে ছিল না তেমন কিছু—একটা সাইকেল, সামান্য কিছু জমানো টাকা, আর ব্যাংক থেকে দুটো লোন। পিঠে একটা ব্যাগ, তাতে জামাকাপড়, কয়েকটা যন্ত্রপাতি, আর একটা স্বপ্ন—বিশ্বভ্রমণ। একদিন সেই স্বপ্নের টানে বেরিয়ে পড়লাম, ঠিক যেন পাহাড়ের বুকে থেকে আসা বাতাস হঠাৎ উড়ে যায় অনেক দূরে। পুরুলিয়া ছেড়ে চললাম থাইল্যান্ড, সেখান থেকে কম্বোডিয়া, তারপর ভিয়েতনাম, লাওস, চীন, মঙ্গোলিয়া… সাত মাসের মাথায় এসে পৌঁছালাম রাশিয়া। সব মিলিয়ে ১৪টা দেশ।
পথটা রামধনুর মতো রঙিন ছিল না। সোজা ছিল না কিছুই। প্রচণ্ড গরমে সাইকেল টেনেছি, অনেক রাত খালি পেটে ঘুমিয়েছি, ভাষা না বুঝে পথ হারিয়েছি। কখনও মানুষের সাহায্য ছাড়া থাকলে চলত না, আবার কখনও নিজেকেই নিজের সাহস দিতে হয়েছে। তবুও, প্রতিটা নতুন দেশে একটা নতুন কিছু শিখেছি। যেমন—ভাষা ছাড়া হাসিও একটা ভাষা, বা ক্লান্তি যতই থাকুক, স্বপ্নের দিকে চলা থেমে গেলে চলবে না।
চীনের মহাপ্রাচীর আমি চোখে দেখেছি, গোবি মরুভূমির রুক্ষ বাতাস গায়ে লাগিয়েছি, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মন্দিরে মাথা ঠেকিয়ে চুপ করে বসে থেকেছি। আর আজ রাশিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে বাইকাল লেকের দিকে তাকিয়ে আছি—যেখানে ডুব দিতে চেয়েছিলাম বহু বছর আগে, সেই স্বপ্ন আজ হাতের নাগালে। এখনও ডুব দিইনি, তবে জানি, এবার দেরি নেই।
এটা আমার গল্প—পাহাড়ের কোলে বেড়ে ওঠা, অল্পতেই সন্তুষ্ট একটা ছেলের স্বপ্নপূরণের গল্প। তবে এই গল্প শুধু আমার না। এটা তাদেরও, যারা স্বপ্ন দেখে কিন্তু সাহস করতে ভয় পায়। আমি শুধু বলতে চাই—স্বপ্ন দেখো। স্বপ্ন বড় হোক, যেন তোমার শরীরের থেকেও বড় হয়। আর যদি সত্যিই কিছু চাও, তবে কোনও বাধা, কোনও কষ্ট, কোনও দারিদ্র্য তোমাকে থামাতে পারবে না।
আমি এখনও চলছি। এই বিশ্বভ্রমণ এখানেই শেষ না। সাইকেলের চাকা ঘুরছে, আর আমার স্বপ্ন আরও বড় হচ্ছে।
তোমার যদি এই গল্পটা মন ছুঁয়ে যায়, তাহলে একবার শেয়ার করো। কারণ হয়তো তোমার শেয়ারটা কাউকে তার স্বপ্নের পথে হাঁটতে সাহস দেবে। আর মেনশন করো সেই বন্ধুকে, যে হয়তো অনেকদিন ধরে ভাবছে, “আমি একদিন বেরিয়ে পড়ব…”
সাইকেলে পুরুলিয়া থেকে রাশিয়া 🇮🇳🚲🇷🇺
20 june 2025 এ পা রেখেছি!
゚
゚