14/10/2025
♦️Part :- 1771.
পরের জন্মে তুমি আমার হইও...🌺(Part10)
🌺নীলা :- 'বিয়ের আগে এভাবে মেলামেশা করা বোধহয় ঠিক না।
( কুনাল রেগে গেল এবং নীলা কে আচমকা নিজের সাথে চেপে ধরে বলল, )
🍁কুনাল :-'আমাদের বিয়ে তো হয়ে গেছে নীলা ।
নীলা ,চোখ তুলে তাকাল। ধীর কণ্ঠে বলল,
🌺নীলা :-'এভাবে শুধু সিঁদুর পরিয়ে বিয়ে হয় নাকি?
🍁কুনাল :-'তো আর কীভাবে বিয়ে করব? কালি মন্দিরে গিয়ে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বিয়ে করতে হবে?
🌺নীলা :-'আশ্চর্য। তুমি রেগে যাচ্ছ কেন?
🍁কুনাল :-'আমি রাগ করছি না। তুমি এখনো আমায় বিশ্বাস করো না। ভেবে খুব খারাপ লাগছে।
🌺 নীলা :-'বিশ্বাস না করলে, তোমার হাত ধরে এভাবে পালিয়ে আসতে পারতাম না। তোমার ভালোবাসার জোরেই তুমি আমাকে ঘরছাড়া করেছ।
( কুনাল হেসে ফেলল। নীলাকে গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে কানে কানে বলল, )
🍁কুনাল :- -'আমরা খুব শীঘ্রই বিয়ে করব।
( দুজনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে দুপুরের ভাত খেতে চলে গেল জনপ্রতি একশো টাকা করে খাওয়া যাবে এমন একটি রেস্টুরেন্টে।
ভরপেট ভাত খেয়ে খানিকক্ষণ গল্প করে, বিকেল চারটার দিকে চলে গেল শৈবাল বিচে। দ্রুত যেতে টমটমে চেপে বসল। ভাড়া পঞ্চাশ টাকা মতো।
শৈবাল বিচে গিয়ে দেখল অসম্ভব সুন্দর। সন্ধ্যাকালীন শৈবাল বিচে গেলে অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়। সন্ধ্যার পর ওরা সমুদ্রের পাড়ে হেঁটে হেঁটে সমুদ্রের মায়াবী রূপ দেখে দেখে সুগন্ধা বিচের দিকে গিয়ে নাস্তা করল। তারপর আবার হোটেলে গিয়ে বিশ্রাম নিল।
দশটা নাগাদ রাতের খাবার শেষ করে চলে গেল পয়েন্টের দিকে। দুজন বিচে চেয়ার নিয়ে বসে থাকল। শীতল হাওয়া লাগছে গায়ে, ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। কতই না অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য। তার মধ্যে কানে বাজছে সমুদ্রের গর্জন।
সমুদ্রের পাড়ে এভাবে কতক্ষণ কাটল কে জানে। হোটেল রুমে এসে নীলা ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ল। কুনাল ও পাশে শুলো। তবে বেশিক্ষণ নিজেকে সামলে রাখতে পারল না। নীলাকে নিজের কাছে জোর করে টেনে নিয়ে চুলে মুখ ডুবাল। মেয়েটা ছটফটিয়ে উঠল। সরে যেতে চাইল। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে, দুজন এক হয়েছে। একজনের তীব্র আকাঙ্খার কাছে আরেকজন ছটফট করতে করতে একসময় হার মেনে নিল। দেহের মিলন হলো ঠিকই। কেউ কারো মনটা গভীর ভাবে ছুঁতে পেরেছিল নাকি, কে জানে!
ভোরে কুনাল জোর করে নীলাকে ঘুম থেকে তুলে দিল। একজন কুমারী যুবতী অসহ্য ভালোবাসার নীল ব্যথার সাথে সদ্য পরিচিত হয়েছে। এত সকালে ঘুম ভাঙার কথা না। কুনালের ডাকে খুব বিরক্তবোধ করল নীলা । কুনাল যেন পণ করেছিল নীলাকে উঠাবেই। টেনে তুলে দুজন স্নান সেরে চলে গেল, সূর্য উদিত হওয়ার দৃশ্য দেখতে। মনে হচ্ছে, সমুদ্রের তলদেশ থেকে জলরাশির গা বেয়ে ধীরে ধীরে উঠছে সূর্য। এত বড় সূর্য এত কাছ থেকে দেখে, নীলা অবাক বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। এই অপরুপ দৃশ্য দেখার জন্য কতশত মানুষ ভিড় জমিয়েছে। এরপর আলোকিত হয়ে গেল চারপাশ। ওরা নাস্তা করে ঝাউ বাগানে চলে গেল।
ঝাউ বাগানের অপরুপ সৌন্দর্য দেখে যে কারো মন প্রশান্তিতে নিমিষেই ভরে যাবে। দুজনে মিলে বেশকিছু কাপল ছবি তুলল। সমুদ্রের চিরায়ত সৌন্দর্যের চেয়ে বালিময় পরিবেশে সবুজ গাছের সারির ছবি যে কাউকে মুগ্ধ করে। তবে এই মুহূর্তে অবন্তী খুব বিরক্ত হচ্ছে। কুনাল হেসে দিল। এক চোখ টিপে বলল, )
🍁কুনাল :- -'একরাতেই কাত হয়ে গেছো?
( নীলা কুনালের হাতে চিমটি কাটল। তার খুব লজ্জা লাগছে। আবার ভালোও লাগছে।
তিনদিন স্বপ্নের মতো কাটল। আজ হোটেল ছেড়ে দিতে হবে। ব্যাগপত্র হোটেলের রিসিপশনে রেখে, লাবণী পয়েন্টে গেল ঝিনুক মার্কেটে কেনা-কাটা করতে। বেশকিছু শৌখিন জিনিসপত্র কিনে বার্মিজ মার্কেটেও টু মারল। পাইকারি দামে আচার, চকলেট কেনার জন্য। কেনাকাটা করার পর ক্লান্ত হয়ে সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে চেয়ারে বসে পড়ল। যদিও চেয়ারগুলো ঘণ্টা প্রতি ত্রিশ করে ভাড়া নেয়।
কলাতলী মোড়ে গিয়ে টিকিট কাটল কুনাল। ছুটির দিন হওয়ায় যাত্রীর চাপ বেশি। বিকেল চারটার টিকিট পেল ওরা। মিনিট দশেক পর গাড়ি ছাড়ল।
এক নতুন অনুভূতি নিয়ে ওরা কক্সবাজার ছাড়ল। মানসিক প্রশান্তি ও বিনোদনের জন্য কক্সবাজার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। সৌন্দর্যের পসরা নিয়ে মোহনীয় আকর্ষণে কেড়ে নেয় এই সমুদ্র সৈকতটি।
দীর্ঘ বারো ঘণ্টা বাস জার্নি করে ওরা গাবতলী বাস টার্মিনালে নামল। সেখান থেকে কুনাল নীলাকে নিয়ে গেল ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। নীলা মন্দিরের মেঝেতে চুপটি করে বসে আছে। কুনাল একটু আসছি বলে, যেন কোথায় চলে গেল! ফিরতে ফিরতে আধঘন্টা মতো লেগে গেল। নীলা কুণালকে দেখে, মিষ্টি করে একটুখানি হাসল। কুনাল শপিংব্যাগ নীলার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, )
🍁কুনাল :- -'যাও রেডি হয়ে নাও।
আমার দুজন বন্ধু আসবে!
( একটা রুমে গিয়ে নীলা ব্যাগ খুলে দেখল, শাড়ি, রেডিমেড ব্লাউজ, লাল টিপ, বউ ওড়নাসহ মেয়েদের সাজের সামগ্রী। নীলা খুব যত্ন করে শাড়িটা পরল। চোখে মোটা করে কাজল টানল, কপালে লাল টিপ পরে, মাথার চুলগুলো বেঁধে বউ ওড়না পরে নিল। নীলাই মনে হয় প্রথম মেয়ে। যে কিনা নিজের বিয়ের সাজ নিজেই খুব আগ্রহ নিয়ে সাজল। ধীর পায়ে কুনালের সামনে এসে দাঁড়াল। 'এ যেন সাক্ষাৎ মা দূর্গা। বধূবেশে নীলাকে দেখে, কুনালের বুকের ভেতর কাঁপন ধরে গেল! এতো সুন্দরী মেয়েটা কুনালের বউ হবে, ভাবতেই মনটা পুলকিত হলো। বুকটা গর্বে ভরে গেল। কুনাল মাথা চুলকে, লাজুক হেসে নীলার গা ঘেঁষে দাঁড়াল। কুনাল ও এক ফাঁকে চট করে ধুতি, পাঞ্জাবি পরে নিয়েছে। মাথায় টোপর পরে, গলায় ফুলের মালা পরে নিল। তারপর মা কালিকে সাক্ষী মেনে, পুরোহিত মশাই মন্ত্র পাঠ করে, সাতপাঁক ঘুরে, মালা বদল করে, কুনালের দেওয়া সিঁথি ভর্তি সিঁদুর পরে একদম সাদামাটা ভাবে বিয়ে হয়ে গেল। কুনালের বন্ধু নীল আর রাহুল এসেছে। নীল বলল,
🍁নীল :-'দুটিতে একসাথে দাঁড়া? কাপল ছবি তুলে দেই।
( বন্ধুদের আগ্রহে বেশকিছু বিয়ের ছবি তুলা হলো। কুনাল ইচ্ছে করেই কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিল। কুনাল নিচু কণ্ঠে নীলাকে ফিসফিস করে বলল,)
🍁কুনাল:-'আজকের পর থেকে আমি তোমার খুব কাছে গেলে, তুমি আর অস্বস্তিবোধ করো না প্রিয়।
( নীলা লাজুক হেসে মাথা নাড়ল। বিয়ের পর্ব সেরে বন্ধুরা একটু তাড়া আছে বলে, বিদায় নিয়ে চলে গেল।
'নবদম্পতি' একটা বিরিয়ানির হোটেলে গিয়ে বসল। ঝটপট দুই প্লেট কাচ্চি বিরিয়ানি ও বোরহানি অর্ডার দিল। রুদ্র অবন্তীর সাথে কর্ণারের বেঞ্চে বসে খুনসুটিতে মেতে উঠল। ভরপেট বিরিয়ানি খেয়ে কুনাল তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে, এক চোখ টিপে বলল, )
🌺কুনাল :- -'কেমন খেলে কুনাল নীলার বিয়ে?'
( উত্তরে নীলা লাজুক হাসল। কুনাল চারপাশে এক ঝলক সর্তক দৃষ্টি বুলিয়ে, চট করে নীলার ঠোঁটে চুমু খেলো। নীলা বড় বড় চোখ করে তাকাতেই কুনাল এককানে চিমটি কেটে, মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, 'স্যরি সুখপাখি।'
দুটো মুক্তপাখি মনের সুখে হাত ধরাধরি করে অনেকক্ষণ ইট, পাথরের ব্যস্ত শহরে, রিকশা করে ঘুরে বেড়াল। তারপর একটা লোকাল বাসে চেপে বসল। উদ্দেশ্যে কুনালের বাড়ি।
ঠনঠন করে বেল বেজে উঠতেই কুনাল বুকচিরে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। দুপুরে কয়েদিদের খাওয়ার সময় হয়ে গেছে। একজন কনস্টেবল বড় ট্রেতে করে ভাত, সবজি, ডাল নিয়ে এলো। প্রথম প্রথম কুনালের খেতে খুব কষ্ট হতো৷ কতশত দিন-রাত না খেয়ে থেকেছে তার কোনো হিসেব নেই। তবে ইদানীং খিদে বেড়েছে। প্রচুর খেতে ইচ্ছে করে। এরা যতটুকু ভাত খেতে দেয়। পেট তো ভরেই না উল্টো খিদের জ্বালা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। কুনাল গপাগপ ভাত গিলতে লাগল। জলের মতো পাতলা ডাল দিয়ে ভাত মেখে খেতেও অমৃত মনে হচ্ছে। ভাত খাওয়ার পর একটা সিগারেট খেতে দিল। প্রথম প্রথম প্রচুর নেশা করতো কুনাল । নিয়মিত ড্রাগ এনে না দিলেই ভাংচুর করতো। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতো। নিজেই নিজেকে আঁচড়াতো, কামড়াতো। এরজন্যও পুলিশ ইচ্ছেমতো পিটিয়েছে কুনাল কে। ভাতের পর নেশাও করতে দিতো। তবে পরিমাণে কম। আস্তে আস্তে নেশা করাও ভুলে গেল কুনাল। এখন শুধু তিনবেলা তিনটে সিগারেট হলেই চলে।
কুনালের সাথে যে দুজন কয়েদি থাকে। এক জনের নাম নীল। আরেকজনের নাম রাহুল। দুজনের ৪৫/৪৯ বয়স। একজন জঙ্গি দলে ছিল। আরেকজন সন্ত্রাসী ছিল। নীল কৌতূহল দমিয়ে রাখতে পারল না। কুনালের দিকে তাকিয়ে আঞ্চলিক ভাষায় বলল,
🍁নীল -'তারপর কী হইছিল? মেয়েটারে কী আপনাগো বাড়িতে নিয়া গেছিলেন?
💙🌺❤️
Kunal chanda rjk 🎙️ Dipa Biswas.
Gobhir Rate Jonakir Sathe RJK 📻
Rater Jonaki Kunal RJK 📻
Jonaki The Band RJK 📻