01/09/2025
হিজরা মারা গেলে নারী নাকি পুরুষ হিসাবে জানাজা হবে?
হিজড়াদের ক্ষেত্রে বিধান হল তাদের নারী বা
পুরুষের যে কোন একটি ক্যাটাগরিতে ফেলতে হবে।
রাসূল (সা) এ ব্যাপারে একটি মূলনীতি নির্ধারণ
করে দিয়েছেন। সেটা হল, দেখতে হবে হিজড়ার
প্রস্রাব করার অঙ্গটি কেমন? সে কি পুরুষদের
গোপনাঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে? না নারীদের মত
গোপনাঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে? গোপনাঙ্গ যাদের
মত হবে হুকুম তাদের মতই হবে। অর্থাৎ গোপনাঙ্গ
যদি পুরুষালী হয়, তাহলে পুরুষ। যদি নারীর মত হয়,
তাহলে নারী। আর যদি কোনটিই বুঝা না যায়।
তাহলে তাকে নারী হিসেবে গণ্য করা হবে।
সুতরাং দাফন করার সময় দেখতে হবে পুরুষের
ক্যাটাগরিতে অন্তুর্ভূক্ত না নারীর? যেটার
অন্তুর্ভূক্ত সে অনুযায়ী দাফন হবে। আর যদি কোন
ক্যাটাগড়িতেই না পরে, তাহলে নারীর মত কাফন
দাফন করা হবে। তবে এক্ষেত্রে ফুক্বাহায়ে কেরাম
একটি পার্থক্যের কথা বলেন যে, এরকম হিজড়াকে
গোসল দেয়া হবে না। বরং তায়াম্মুম করানো হবে,
যদি রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় থাকে, তাহলে সে
তাকে তায়াম্মুম করাবে। না থাকলে অন্যরা হাতে
পট্টি লাগিয়ে তায়াম্মুম করাবে।
হযরত আলী (রা) রাসূল (সা) কে প্রসূত বাচ্চা যে
পুরুষ না নারী তা জানা যায় না তার বিধান কি?
জিজ্ঞাসা করলেন। রাসূল (সা) জবাব দিলেন যে,
সে মিরাস পাবে যেভাবে প্রস্রাব করে। {সুনানে
বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১২৯৪, কানযুল উম্মাল,
হাদীস নং-৩০৪০৩, মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক,
হাদীস নং-১৯২০৪ )
হিজড়া মূলত ৪ প্রকার।
১. মূলত পুরুষ (তবে নারীর বেশে চলে)। এদের আকুয়া
বলা হয়। এরা মেয়েদের বিয়ে করতে পারবে।
২. নারী (বেশেও তাই, তবে দাড়ি মোচ আছে)।
জেনানা বলা হয়। পুরুষের কাছে বিয়ে বসতে
পারবে।
৩. উভলিঙ্গিক বা লিঙ্গহীন (বেশে যাই হোক)।
আরবিতে 'খুনসা মুশকিল 'বলা হয়। আদালত অভিজ্ঞ
চিকিৎসক ও উলামাদের পরামর্শে সমাধান দিবে।
যেমন হযরত আলী (রাঃ) দিয়েছেন।
৪. কৃত্তিমভাবে যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে বানানো
হিজড়া। খোঁজা বলা হয়। যৌন অক্ষমতার দরুন বিবাহ
করা বা বসা হারাম।
আকুয়া এবং জেনানাদের লিঙ্গ নির্ধারণ দৃশ্যত
সম্ভব হলেও এদের অনেকের লিঙ্গ কাজের বেলায়
অক্ষম কিংবা প্রজননে ব্যর্থ হয়। সেক্ষেত্রে এদের
জন্যও বিয়ে হারাম হবে। মোটকথা এধরনের যৌন
প্রতিবন্ধিদের বিয়ের আগে মেডিক্যাল
সার্টিফিকেট নেয়া জরুরী।
উভয় লিঙ্গ বিশীষ্ট হিজড়াদের লিঙ্গ নির্ধারণে
কিছু পদ্ধতি:
১. মূত্র যে লিঙ্গ দিয়ে বের হবে সে সেই লিঙ্গের ।
যদি মূত্র উভয় লিঙ্গ দিয়েই বের হয় তবে নিয়ম ভিন্ন
। যদি মূত্র এক সাথে উভয় লিঙ্গ হতে বের হওয়া বন্ধ
হয় তবে যেটা দিয়ে প্রথম বের হইছে সেই লিঙ্গ হবে
সে । যদি উভয় লিঙ্গ হতে এক সাথে বের হওয়া শুরু
হয় তবে যেটাতে অধিক সময় ধরে মূত্র বের হবে সে
সেই লিঙ্গের । যদি না বুঝা যায় তবে সে উভলিঙ্গই
থাকবে ।
২. বয়সন্ধির সময় যদি তার বীর্যপাত নিয়মিত হয়
তবে পুরুষ , ঋতুঃস্রাব নিয়মিত হলে মেয়ে ।
৩. যদি পুরুষের দিকে আকৃষ্ট হয় তবে নারী ধরা হবে
, যদি নারীর দিকে আকৃষ্ট হয় তবে পুরুষ ধরা হবে ।
কিন্তু উভয়ের দিকে আকর্ষণ বা কোন আকর্ষণ না
থাকলে সে উভলিঙ্গই থাকবে ।
৪. শারীরিক বৈশিষ্ট্য যেমন দাড়ি হওয়া , স্তন
হওয়া ইত্যাদি লিঙ্গ নির্ধারণে সহায়ক হবে ।
তথ্যসূত্র
হেদায়া-২/৭০১
ফাতাওয়া তাতারখানিয়া-২০/১৯৬
নসবুর রায়াহ-৪/৪১৭
ফাতাওয়া আলমগীরী-১/১৬০-১৬১}
তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-৫৭৩
ফাতহুল কাদীর-১০/৫৪৮-৫৪৯
ফাতাওয়া শামী-৩/৯৯
আল বাহরুর রায়েক-২/৩০৫
বাদায়েউস স