26/08/2025
বই: তেতুল বনে জোছনা
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
“ডাক্তার সাহেব, তুমি আমার জন্য দু'ফোঁটা চোখের জল ফেলছ, তার প্রতিদানে আমি তোমার জন্য 'জনম জনম ধরে কাঁদিব’।”
বইয়ের শেষের দিকের এই লাইন যেন আমাকেও দু'ফোঁটা চোখের জল ফেলতে বাধ্য করলো।
গ্রামীণ প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা 'তেতুল বনে জোছনা'। গ্রাম্য রাজনীতি ও ক্ষমতার রূপ ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে।
মূল চরিত্র ডাক্তার আনিস ও নবনী। ডাক্তার হিসেবে সে অনেক সুনাম অর্জন করলেও ব্যক্তিগত জীবন একটু ভিন্ন। তার স্ত্রী নবনীকে সে বুঝে উঠতে পারছে না। তাদের সংসার টিকবে কিনা তা পুরো উপন্যাস জুড়ে বুঝা মুসকিল হলেও নবনীর শেষের চিঠি আমাকে দু'ফোঁটা চোখের পানি ফেলতে বাধ্য করেছে। আমার মনে হচ্ছিল , চোখের সামনে যেন ডাক্তার শ্বেতপাথরের উপর লম্বা হয়ে শুয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে!
তাদের প্রেম কি অদ্ভুত! একবারও কেউ কাউকে বললো না "ভালবাসি"! অথচ তাদের মধ্যে কি অদ্ভুত ভালবাসা , টান।
এই উপন্যাসের আরেকটি চরিত্র মতি চোর। খারাপ মানুষের মনেও যে মায়া থাকতে পারে মতি তার উদাহরণ।
মতি তার পছন্দের মানুষ মর্জিনার জন্য একটি মরা পাখি নিয়ে যায়। তাতে মর্জিনা রেগে তুই তোকারি শুরু করে। তখন মতি বলে , "হারামজাদি মরা পাখি শুধু দেখল।মরা পাখির পিছনের ভালবাসাটা দেখল না।"😁
হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ে শেষে আমি একটাই কথা বলতাম , এরপর কি? স্যার শেষটা ছেড়ে দিতেন পাঠকের উপর। তবে এই বইয়ের সমাপ্তিটা অতি সুখকর।