Adity’s Clipboard

Adity’s Clipboard Chasing dreams and making them real🎀

19/09/2025

#পর্ব ৩২
#চেরি ফুল
#অদিতি

কেটে যায় ১ সপ্তাহ.....

এই এক সপ্তাহে নুজু অসংখ্য বার নাজওয়ান কে ফোন দিলে ও প্রতিবারের মতোই রিং বাজতে বাজতে কেটে গিয়েছে। মেয়ের ছটফটানি দেখে লিমা কিছুটা আঁচ করতে পারলে ও তেমন কিছু বলছে না কারণ সে তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। নুজু কে কোনোভাবেই আর ওসাকা পড়তে যেতে দিবেন না।

এইদিকে এই এক সপ্তাহ নাজওয়ানের উপর দিয়ে রীতিমতো ঝড় গিয়েছে। সাধারণত জাপানে পড়তে আসা বিদেশি ছাত্র যেকোনো দুর্ঘটনায় মৃ*ত্যু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে জাপানি পুলিশ আসে। তারা ঘটনাস্থল ঘিরে তদন্ত করে, তারপর অফিসিয়াল মৃত্যুসনদ ইস্যু করে।এরপর স্থানীয় সিটি অফিসে মৃত্যু নিবন্ধন সম্পন্ন হয়। এখান থেকেই শুরু হয় ভিন্নধর্মী এক যাত্রা—নিজ দেশে ফেরার শেষ যাত্রা।

পরিবারের স্বাভাবিক ইচ্ছা থাকে, প্রিয়জনের দেহ যেন দেশের মাটিতে ফেরে। কিন্তু এর জন্য খরচ হয় প্রচুর। যদি কফিনে পুরো দেহ পাঠাতে হয়, তবে কফিন, এয়ারটাইট বক্স, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও এয়ারলাইন্সের কার্গো চার্জ মিলে খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১৫ থেকে ২৫ লাখ ইয়েন (বাংলাদেশি টাকায় ১০ থেকে ১৫ লাখের মতো)।অনেক পরিবার এত বড় খরচ বহন করতে পারে না।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—কে এই খরচ বহন করবে? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের ওপরই এই দায়িত্ব পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত সরাসরি খরচ দেয় না, যদিও কিছু বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি তহবিল থেকে সামান্য সহায়তা করা হয়। দূতাবাস ও কনস্যুলেট প্রক্রিয়াগত সাহায্য করে যেমন কাগজপত্র, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ কিন্তু আর্থিক সহায়তা দেয় না।

আসল ভরসা হলো বীমা। যদি ছাত্রটির লাইফ ইনস্যুরেন্স বা ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স থাকে, তবে প্রায় পুরো খরচই বীমা কোম্পানি বহন করে। আর যদি না থাকে, তখন পরিবার, বন্ধু এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীদের অনুদানের ওপর ভরসা করতে হয়। কিন্তু সবে মাত্র মাস ছয়েক ধরে জাপানে আসার কারণে জীবন বিমার ফান্ডে ও তেমন কোনো টাকা জমা ছিলো না রাহাতের। দেশ থেকে টাকা পয়সা দেয়ার কথা জনি ও কিছু বলছে না। মসজিদ থেকে কিছু টাকা দিয়েছে তবে সেটা ও খুব সামান্য।

রাহাতের বডি আজ ৩ দিন ধরে সংরক্ষিত অবস্থায় আছে। কিন্তু দেশে পাঠানোর মতো টাকা এখনো হয় নি।ওইদিকে প্রতিদিন জনির বাবা ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে। উনি চাচ্ছে উনার শেষ একটা জমি বিক্রি করে হলে ও রাহাতের লাশ দেশে নিতে । কিন্তু বিপত্তি ঘটে যখন জনি এইটার দ্বিমত করে বসে।

নাহিদ জনির রুমের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলো কল যেহুতু লাউড স্পিকারে ছিলো তাই নাহিদ সবটাই শুনে ফেলে তবে অবাক হয় জনির কথা শুনে। জনির কথা ছিল কিছুটা এমন" আব্বা একটা লাশ নেয়ার জন্য আপনি জমি বেচার কথা বলতেছেন? আমার কি কোনো ভবিষ্যৎ নাই ?যে চলে গেছে তারে নিয়া পইরা থাকলে চলবে? এইখানে দাফন কইরা ৩/৪ লাখে মামলা ডিসমিস কইরা লাইলেই তো হয়।আপনি জমি বেচার কথা চিন্তা ও কইরেন না।

ঠিক এতটুকু শুনেই নাহিদ নাজওয়ানের রূমে যায় সবটা বলতে সব শুনে নাজওয়ানের কেমন যেনো সন্দেহ হয় জনির উপর। কিন্তু এখন সেইসব ভাবনা এক সাইটে রেখে চলে যায় মসজিদে। সেইখানে কমিটির সাথে কথা বলে তাঁদের অনুমতি নিয়ে শুক্রবার জুমহার নামাজের পর মসজিদের বাহিরে চাদা তুলার কথা চিন্তা করে। যতটুকু হয় হবে আর বাকি টুকু নিজ থেকে দেয়ার কথা চিন্তা করে।

যেইভাবা সেই কাজ তবে এইভাবে টাকা উঠানোর পর ও সব মিলিয়ে আরো লাখ ৬ এর মতো প্রয়োজন। আর পুরো টাকা টা নাজওয়ান নিজ থেকে দেয়ার কথা ভাবে।সব কিছু প্রস্তুতি নিয়ে বাসায় এসে দেখে জনি বসে আছে। নাজওয়ান কে আসতে দেখেই জনি জিজ্ঞেষ করে কিরে কিছু ব্যবস্থা করতে পারলি? জনির এমন কথায় নাহিদ কিছুটা রেগে গিয়ে বলে হ্যাঁ ভাইটা তো নাজওয়ানের তাই নাজওয়ান ই ব্যবস্থা করছে সব, তুই তোর বাপের জমি নিয়ে ভবিষ্যৎ কর।

আহা নাহিদ চুপ কর তো... কথার মাঝেই নাহিদ কে থামিয়ে দেয় নাজওয়ান আর জনির উদ্দেশ্য বলতে থাকে রাহাতের লাশ নিয়ে তুই যাবি দেশে নাকি কফিনে ভরে একাই পাঠায় দিবি ওঁকে?

আ... আমি কিভাবে? ভার্সিটি থেকে আমাকে ছুটি দিবে? আর টিকিট খরচ ও তো আছে। সত্যি বলতে আমার কাছে সেই টাকা টাও নেই।

নাহিদ রাগে কটমট করতে থাকে কারণ কিছুদিন আগেই ও জনির কাছে লাখ দুয়েক টাকা দেখেছে অথচ এখন বলতেছে টিকিটের টাকা ও নেই?

সেটা ও দিলাম... দেশ থেকে ঘুরে আয় তোর বাবার সাথে কথা বলেছি আমি, মানুষিক ভাবে যথেষ্ট ভেঙ্গে পড়ছেন উনি।এখন তোর তাঁদের পাশে থাকা টা অনেক জরুরী। বলেই নাজওয়ান নিজের রূমে চলে যায়।
দীর্ঘ ৫ দিনের সফর শেষ প্লেনে করে বুক ভরা সপ্ন নিয়ে জাপানে এসে এখন কফিনে করে জাপান থেকে শেষ যাত্রায় রওনা হয় রাহাত।লাশ এয়ারপোর্টের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হওয়ার পর পর ই নাজওয়ান আর নাহিদ বাড়িতে চলে আসে।

টানা সপ্তাহ খানিকের মতো নির্ঘুম রাত, দুশ্চিন্তা, আর ভিতরে এক সূক্ষ্ম যন্ত্রণা নিয়ে পার করেছে নাজওয়ান। বিছানায় গা এলাতেই চোখে লেগে যায়।

চোখ কিছুটা লাগতেই চোখে ভাসতে থাকে রাহাতের সেই র*ক্তাত্ব মুখ টা। নাজওয়ান হাত দিয়ে রাহাতের মুখ টা ছুঁতে গেলেই সাথে সাথে মুখ টা হাওয়ায় মিলিয়ে যায় আর সেই জায়গায় নুজুর মুখ টা দেখা যায়।

সপ্নের মধ্যেই নাজওয়ান চিৎকার করে বলতে থাকে তোমার কিচ্ছু হয় নি চেরি ফুল,আমি তোমাকে কোনোভাবেই নিজের থেকে দুরে যেতে দিবো না। চোখ খুল সোনা, আই প্রমিজ আর বকা দিবো না, রুড হয়ে কথা ও বলবো না। প্লিজ চোখ খুল একটা বার কথা বল আমার সাথে। নুজু কে কারা যেনো নিয়ে যাচ্ছে আর নাহিদ নাজওয়ান কে ধরে রাখছে আর বলতেছে " ঐখান থেকে আর কেউ ফিরে আসে না নাজওয়ান, তোকে এখন নুজু কে ছাড়াই সারা জীবন থাকতে হবে।"

নোজোমি................. চিৎকার দিয়ে ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে নাজওয়ান। শরীর কাপছে অনবরত। নাজওয়ানের চিৎকার শুনে নাহিদ ঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে আসে রুমে ঢুকতেই দেখে মাথায় হাত দিয়ে এলোমেলো ভাবে বিছানার উপর বসে আছে নাজওয়ান।

" কিরে কি হয়েছে?"
"কিছু না"পানি দে
"খারাপ স্বপ্ন ছিলো"?
"হুম....

এর মাঝেই কলিং বেল বেজে উঠে নাহিদ উঠে গিয়ে দরজার কাছে যেতেই লুকিং গ্লাসে দেখে আছিয়া খাতুন দাঁড়িয়ে আছে সাথে হাতে একটা ব্যাগ। সাথে সাথে দরজা খুলতেই উনি বলতে থাকে বিরক্ত করলাম তোমাদের?

না না দিদুন কি বলছেন আসুন ভীতরে আসুন। ভিতরে নিয়ে বসাতেই নাজওয়ান কে রূমে গিয়ে তাঁর আসার খবর টা দেয়।

এলোমেলো অবস্থায়ই নাজওয়ান বাইরে চলে আসে।
আসসালামুয়ালাইকুম দিদুন।
ওয়ালাইকুম আসসালাম। ঘুমাচ্ছিলে?
হ্যাঁ ভেঙ্গে গেছে।
দুপুরে তো কিছু খাও নি তোমরা দেখেই মনে হচ্ছে। যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। খেয়ে নাও।

কিছুক্ষন আগের স্বপ্ন আর এখন দিদুন কে এইখানে দেখে নাজওয়ান কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পরে আর আছিয়া খাতুনের পায়ের কাছে মাথা দিয়ে বসে পড়ে।

আছিয়া খাতুন বুঝতে পারে নাজওয়ানের মনের অবস্থা। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলতে থাকে "ভাইজান ভালো আছে?
নাজওয়ান চুপ...
একটু থেমে আছিয়া খাতুন আবার বলতে থাকে থাক সেইসব কথা এই কয়দিন নুজু টার উপর দিয়ে ও বেশ ঝড় গেছে।আমি আমার মেয়ে কে চিনি। লিমা নানুপু কে হয়তো এইখানে আর আসতে দিবে না। যাওয়ার সময় তো এই ও বলে গেছিলো যে ওকে কানাডা ওর দাদা দাদীর কাছে পাঠায় দিবে।এইবার তুমিই দেখো তুমি কি করবে... এতোদিনে লিমার সামনে কথা বলার মতো একমাত্র তোমাকেই আমি দেখেছি।তুমি চাইলে অনেক কিছুই করতে পারো।এতোদিনে এইটা বুঝে গেছি নানুপু তুমি বলতে পাগল। নাজওয়ান মাথা উঠিয়ে আছিয়া খাতুনের দিকে তাকায়। নাকের ডগা লাল হয়ে আছে। চুল গুলি এলোমেলো।
"দিদুন নুজু আমাকে ভুল কেনো বুঝলো?"
" ওর বয়স কম ওর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে ও হয়তো একটু আকটু প্রশ্ন মনে আসতই।"
" ও কি একটু ও ভরসা করতে পারলো না আমাকে?"
" ভরসা করে বলেই সেইদিন আসছিলো তোমার কাছে যাওয়ার আগে" তুমি নাকি ওকে চলে যেতে বলছো?"

নাজওয়ান এইবার দ্রুত উঠে দাড়ায় এইদিক সেইদিক কি যেনো একটা খুঁজতে থাকে। দ্রুত পায়ে হেঁটে নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় পড়ে থাকা ফোন টা নিয়ে নুজু কে কল দেয়। কিন্তু এইবার ওই দিক থেকে নুজু আর কল উঠায় না কয়েকবার দেয়ার পর ও কল উঠায় না দেখে নাজওয়ান আবার ফিরে এসে আছিয়া খাতুনের কাছে তাঁর ফোন টা চেয়ে নিয়ে নুজু কে কল দেয়।

নানুপুর কল পেয়ে সাথে সাথে কল উঠায় নুজু। নুজু কে কথা
না বলতে দিয়ে নাজওয়ান বলতে থাকে" এই মেয়ে তোমাকে আমি কখন থেকে কল দিচ্ছি ধরছো না কেন? নানুপুর কল পেয়ে সাথে সাথে রিসিভ করে ফেলেছ তাই না?সমস্যা কি?

নাজওয়ানের ভয়েস শুনে সাথে সাথে নুজু কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে বসে থাকে।
বিড়বিড় করে বলতে থাকে " এতদিন যখন আমি কল দিয়েছি তখন তো ধরেন নি এইবার দিতে থাকেন আপনিও আমি ও ধরবো না।"

আছিয়া খাতুন নাজওয়ানের এমন পায়চারি দেখে মিটিমিটি হাসছে। আছিয়া খাতুনের কাছে ফোন দিতে এসে নাজওয়ান অসহায় দৃষ্টিতে তাকায় তার দিকে। বসা থেকে উঠে উনি বলে উঠে" আমার নাতনি টা একটু অভিমানী, তোমাকেই সামলাতে হবে।" আজ কে আসি তোমাদের জামেলা জলদি মিটিয়ে ফেলো।অন্য আরও অনেক বিষয়ে কথা বলার আছে তোমার সাথে আমার, যেহুতু মন মেজাজ ভালো না এখন তাই সেইসব কথা উঠাতে চাচ্ছি না।"

নাজওয়ান শুধু মাথা নাড়ে।সত্যি বলতে তার ও এখন সেইসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।এমনেতেই মাঝ দিয়ে অনেক কিছু হয়ে যাচ্ছে। তার উপর নোজোমির এমন হঠাৎ করে ইগনোর টাও কোনোভাবে মেনে নিতে পারছে না সে।কিছু না ভেবেই দ্রুত ল্যাপটপ টা অন করে অনলাইনে টোকিও যাওয়ার একটা টিকিট বুক করে ফেলে আগামী কাল কের।

যেই ভাবা সেই কাজ সকালের প্রথম বুলেট ট্রেনে করে চলে রওনা হয় টোকিওর উদ্দ্যেশ্য। যেহেতু নুজুর বাসায় এর আগে ও আসা হয়েছে তাই সোজা বাসার নিচে গিয়ে দাঁড়ায়। কাঠ ফাটা রোদ এর মধ্যে ও ফুল হাতার ব্ল্যাক হুডি, মাস্ক চোঁখে কালো সানগ্লাস পরে ঠিক নুজুর বাসার অপজিতে দাঁড়ায়।সময় তখন সকাল ১০ টা অপেক্ষা করতে থাকে কখন লিমা আর ওয়াতানাবে বাসার থেকে বের হবে।কিন্তু নাজওয়ান কে অবাক করে দিয়ে কিছুক্ষন পড়ে নুজু ই বের হয়। তার হাতে একটা "পার্সিয়ান ক্যাট"।

এই গরমে ও নাজওয়ান নিজে কে এইভাবে ঢেকে রাখছে যে কেউ দেখলেই চিনতে অসুবিধা হবে। নাজওয়ান কে চিনতে না পেরে পাশ কেটে নুজু চলে যায়।তবে যাওয়ার সময় নাকে একটা পরিচিত পারফিউমের গন্ধ পায়। পিছনে ঘুরে তাকাতে যাবে ঠিক সেই সময়ে নাজওয়ান নুজুর হাতে থাকে বিড়াল টাকে ছো মেরে নিজের কাছে নিয়ে নেয় আর বিড়াল টাও নাজওয়ানের কোলে গিয়ে ঝুপটি মেরে বসে থাকে। খুব মনোযোগ দিয়ে বিড়াল টা কে দেখে নাজওয়ান। পার্সিয়ান ক্যাট বরাবরই কিউট হয় অনেক ।কিন্তু এই বিড়াল টা একটু বেশিই কিউট। ধবধবে সাদা গুলুমুলু একটা বিড়াল যার গলায় আবার গোলাপী ঘন্টা। আকষ্মিক এমন ঘটনায় নুজু কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
আর জাপানিজে বলতে থাকে( やめろ!それは俺の猫だ?)

" থামো! এটা আমার বিড়াল!"

মাস্কের ভিতর থেকে নাজওয়ান বিড়বিড় করে বলতে থাকে কিছু হইলেই জাপানীজ ছাড়বে।এই একটা জিনিস দিয়েই আমাকে দাবায় রাখতে চায় সবসময়।
নুজু আবারও বলতে থাকে(聞こえないですか?)
"শুনতে পাচ্ছ না"?

মাস্ক টা খুলে হুডির টুপি টা খুলে নুজুর দিকে না তাকিয়েই নাজওয়ান বলে উঠে" শুনতে পাচ্ছি বলো".....

চোখ বড় বড় করে নুজু বলে উঠে " আপনিইইইইইই......

চলবে.....

(কপি করা নিষেধ)

কোনো এক শীতের সকালে সূর্য আর আমি এক ফ্রেমে 🌤️
18/09/2025

কোনো এক শীতের সকালে সূর্য আর আমি এক ফ্রেমে 🌤️

18/09/2025

সারাক্ষন এইগুলি ই চলে ক্লাসে🙂

☘️☘️
17/09/2025

☘️☘️

🌆🌆
16/09/2025

🌆🌆

ভাত-তরকারী রান্না করতে ইচ্ছে না করার দিনগুলিতে Pran এর এই পরোটা টাই ভরসা🙂।আব্বু কে একবার এই পরোটা দেখাইয়া বলছিলাম দেখো ...
16/09/2025

ভাত-তরকারী রান্না করতে ইচ্ছে না করার দিনগুলিতে Pran এর এই পরোটা টাই ভরসা🙂।

আব্বু কে একবার এই পরোটা দেখাইয়া বলছিলাম দেখো আমি বানাইসি আব্বু বলে দোকানের পরোটা থেকে ও সুন্দর হইছে এমন গোল হইলো কেমনে?

someone:আপনারে এই সাজে ভালো লাগতাছে নাMe:আপনারে জিগাইছে কে?🙂
16/09/2025

someone:আপনারে এই সাজে ভালো লাগতাছে না

Me:আপনারে জিগাইছে কে?🙂

14/09/2025

আমার থেকে একটু মাংস নিয়ে যান 🙂।

10/09/2025

#পর্ব ৩১
#চেরি ফুল 🌸
#অদিতি

শেষ দুপুরে সূর্যের আলো যখন পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসছে, তখন সেই আলো সরাসরি ঝরনার পানির ফোঁটার ভেতর দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। মনে হচ্ছিল, সোনালি আলোয় ভেজা এক রূপালী পর্দা নেমে এসেছে আকাশ থেকে।

ঝরনার গর্জন ছিলো, সাথে অনবরত প্রবাহিত হওয়া ঝর্ণার পানি।তবে মনে হচ্ছিল সময় থেমে গেছে। শুধু ঝরনার শব্দ, চারপাশের নির্জনতা, আর শেষ বিকেলের আলো—সবকিছু মিলে ছমছমে পরিবেশ। একটু আগে ও এইখানে মানুষের হাসির শব্দ ছিলো, কিন্তু এখন থমথমে পরিবেশ মুহূর্তের মধ্যেই সবার মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। অনেকেই ফিরে গিয়েছে। কেউ কেউ ফিরার জন্য সাথে করে নিয়ে আসা সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে। অবশিষ্ট রয়েছে শুধু নাজওয়ান,নাহিদ, জনি আর রেসকিউ টিমের কয়েকজন। জনি থেমে থেমে চিৎকার বিলাপ পেরে কান্না করছে।

"নাজওয়ান, লাশ নিয়ে এখনই বের হতে হবে আমাদের"
"লাশ"!!!! একটু আগে ও ওকে আমরা "রাহাত" বলতাম নাহিদ লাশ বলতে বুক কাপতেছে না তোর?
নাহিদের মুখ টা চুপসে যায়।
সব কিছু গুছিয়ে ওরা ও রওনা হয় ওসাকার উদ্দ্যেশ্য। ইতিমধ্যেই রাহাতের বাড়ি তে জানানো হয়েছে সব কিছু। নাজওয়ান ফোনে কয়েকজনের সাথে কথা বলে রেখেছে। তারা ওইখানের মসজিদ কমিটির লোক। বিদেশ থেকে দেশে লাশ পাঠানোর অনেক প্রসিডিওর থাকে।সেটা ওদের কারোর ই জানা নয়। ভার্সিটি তে ও মেইল করে দিয়েছে নাজওয়ান নিজেই।

ভ্যাকেশনে সমস্ত ক্লান্তি প্রকৃতির কোলে ঢালতে এসেছিলো ওরা। প্রকৃতি কত নিষ্ঠুর ক্লান্তি নিয়ে বুক ভরা কষ্ট আর হাহাকার দিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে ওদের।

এসেছিলো ট্রেনে সুন্দর প্রকৃতি দেখতে দেখতে অথচ ফিরতে হচ্ছে লাশ-বাহি এম্বুলেন্স করে।গাড়ির সিটে মাথা হেলান দিয়ে কথা গুলি ভাবছিলো নাজওয়ান। নীরবতা ভেঙ্গে জনি কে জিজ্ঞেস করে উঠে" রাহাত যে তোর ভাই সেটা আমাদের থেকে লুকিয়েছিলি কেন?"

" আব্বা কইছিলো এইখানে কত রকমের মানুষ থাকে একসাথে দুইভাই জাপান থাকি জানলে বুঝবো অনেক টাকা পয়সা কামাই তখন শত্রুর অভাব হইবো না তাই"।

"হাস্যকর!!! আমাকে আর নাহিদ কে এমন মনে হয় তোর?"

"বাদ দে নাজওয়ান"!! যে যাওয়ার সে তো চলেই গেছে রাহাতের এমন একটা অকাল মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারতাছি না।সারাদিন ওর সাথে খুনশুটি করেই সময় কাটতো আমার।ছেলে টা এইভাবে চলে যাবে ঘুণাক্ষরেও টের পাই নি আমি" তাহলে হয়তো ওর পিছে সবসময় লাগতাম না আমি"। রাহাত কি আমার সাথে রাগ করে চলে গেলো রে?

গুনমা স্টেশনে আসার আগেই নুজু জানতে পারে যে পুলিশ ওদের নিয়ে ওসাকার উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিয়েছে। তাই সেইখান থেকে দেরি না করে আবার ওসাকার উদ্দ্যেশে রওনা দেয় সে।

অনবরত আছিয়া খাতুনের নাম্বারে কল দিয়ে যাচ্ছে লিমা। বাসায় ফোন রেখে কিমুরা সানের সাথে হাঁটতে গেছে সে।বাড়ি তে এসেই দেখে ফোন বাজছে তার, রিসিভ করতেই ঐ পাশ থেকে মেয়ের কর্কশ গলা শুনতে পায়" আমার মেয়ে কই আম্মু"? জেনে শুনে এতো টা এগোতে কিভাবে দিলে তুমি ওঁকে? তুমি জানতে না সব কিছু? তোমার ঐখানে গিয়েই তো সবকিছু হয়েছে। আমার ভুল হয়েছে ক্যানাডা যাওয়ার সময় নুজু কে তোমার কাছে রেখে যাওয়া, আমি ভাবছিলাম আমার অবর্তমানে আমার মেয়ে কে তুমি আমার মত করেই খেয়াল রাখবে।এই তোমার খেয়াল রাখার নমুনা!!এইবার নিজের ভাইয়ের নাতি কে আমার মেয়ের পিছনে লেলিয়া দিসো?"

" লিমার বলা শেষ কথা গুলি আছিয়া খাতুনের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।তবে কোন প্রসঙ্গে লিমা কথা বলছে সেটা সে ভালো করেই বুঝতে পারছে" তবে সে আগে সম্পুর্ণ টা শুনতে চায় মেয়ের থেকেই তাই জিজ্ঞেষ করে "কি বলতে চাচ্ছো"? কোন বিষয়ে কথা বলছো তুমি?

" বুঝতে পারছো না আম্মু? নাজওয়ান যে নাসির ভাইয়ের ছেলে সেটা তুমি জানতে না"?

আকাশ থেকে পরে আছিয়া খাতুন। কারণ সে এইসবের কিছুই জানতো না।

বিপদের রাস্তা শেষ হতে ও টাইম লাগে।মনে হয় সময় থেমে আছে এক পা এগোচ্ছে তো দু পা পিছাচ্ছে। পুরোটা রাস্তা নুজু নিঃশব্দে কেঁদে গেছে।মনের ভিতরে অজানা ভয়। টোকিও টু গুনমা ফের গুনমা টু ওসাকা দীর্ঘ একটা পথ। শরির আর চলছে না যেনো তাঁর।

নাজওয়ান ভার্সিটি তে মেইল করার সময়ই ফোন হাতে নিয়ে দেখেছিলো নোজোমির কল। প্রায় ৪৭০ টা কল নুজু তাঁকে দিয়েছে। নাজওয়ান বুঝতে পারে নুজু হয়তো কোনোভাবে এক্সিডেন্ট এর কথা জানতে পেরেছে।সাথে সাথে ফোন উঠিয়ে ব্যাক করতেই ফোন সুইসড অফ দেখাচ্ছে হয়তো চার্জ শেষ হয়ে গেছে।ভেবেই আবার আগের জায়গায় রেখে দেয় ফোন টা।

রাহাতের বডি নাজওয়ান দের বাসায় দরজার পাশের বারান্দায় রেখেছে।একটু পরেই মসজিদ কমিটির সদস্য রা আসবে। জনি এক দৃষ্টি তে রাহাতের লাশ বক্সের দিকে তাকিয়ে আছে। নাহিদ কাকে কাকে যেন কল দিচ্ছে। এর মাঝেই নুজু এসে উপস্থিত হয় নাজওয়ান সবার আগে নুজু কে দেখে কিন্তু মসজিদের লোকদের সাথে কথা বলতে থাকার কারণে সামনে যেতে পারে না। অগোছালো চুল, চোখ মূখ ফোলা। পাগলের মতো ছুটোছুটি করছে নুজু।এক সময় নাহিদ কে দেখেই তাঁর কাছে দৌড়িয়ে যায় গিয়েই জিজ্ঞেষ করতে থাকে " নাজওয়ান কোথায়? নাজওয়ান... নাজওয়ান... নাহিদ ফোন টা কেটে নুজু কে শান্ত করার চেস্টা করে।নাহিদ কে ফেলে সামনে থাকা লাশ বক্স টার কাছে গিয়ে ধপ করে বসে পড়ে।কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল বলে দেখতে পারছে না তাঁর হাত কাপছে। নাহিদের দিকে জিজ্ঞাসা দৃষ্টি তে ছলছল দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে নুজু।নাহিদ কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক তখনি নাজওয়ান এসে উপস্থিত হয় সেইখানে।

নুজু কাপাকাপা হাতে লাশের মুখ থেকে কাপড় সরাতে যাওয়ার মুহূর্তেই নাজওয়ান আলতো করে নুজুর মাথায় হাত রাখে। হঠাৎ করে পিছন থেকে কারোর উপস্থিতিতে চমকে উঠে নুজু। নাজওয়ানের স্পর্শ বুঝতে পেরে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে নাজওয়ানের বুকে মুখ থেকে কোনো কথা বের হচ্ছে না নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে শুধু আর অনবরত কাপছে তার শরির। আষ্ঠে পিষ্ঠে জরিয়ে ধরে রাখে নাজ ওয়ানকে,মনে হচ্ছে ছেড়ে দিলেই হারিয়ে যাবে কোথাও। নাজওয়ান শান্ত গলায় কয়েকবার বলে " আমি ঠিক আছি"!! শান্ত হও! সেইসব কিছু নুজুর কান অব্দি যাচ্ছে কি না কে জানে কারণ সে অনবরত কেঁদেই যাচ্ছে। কিছুটা শান্ত করে নুজু কে ধরে সোফায় নিয়ে বসায় নাজওয়ান।আর সব কিছু খুলে বলে।এর মাঝেই মসজিদের কিছু লোক চলে আসে। বাহির থেকে নাহিদ ডাকলে নাজওয়ান নুজু কে রেখেই বাহিরে চলে যায়।

প্রায় রাত ১০ টা ছুঁই ছুঁই।এর মাঝেই আছিয়া খাতুন ও এসেছে। নুজু কে দেখে খুব একটা অবাক হয় নি সে হলে o প্রকাশ করে নি। নাজওয়ানের এমন বিপদের সময়ে নুজুর এইখানে আসা টা সঠিক সিদ্ধান্তই বলে সে মনে করে। এসেই নুজুর পাশে বসে। নানুপু কে দেখে কিছুটা সংকোচ বোধ করে নুজু কিন্তু নানুপুর এমন স্বাভাবিক ভঙ্গিমা দেখে কিছুটা সস্থীর নিঃশ্বাস নেয়।নাহিদ নাজওয়ান এইটা সেইটা করছে জনি এক দৃষ্টিতে আগের ন্যায় ই বসে আছে লাশের দিকে তাকিয়ে। কাল সকালে জানাজার ব্যবস্হা করা হয়। আছিয়া খাতুন বার বার আড় চোঁখে নাজওয়ান কে দেখছে.... কিন্তু কিছু বলছে না তার ভাষ্যমতে এইসব নিয়ে কথা বলার সময় এইটা নয় ছেলে তিনটা এমনেতেই ভয় পেয়ে আছে,আর সাথে বন্ধু হারানোর শোক তো আছেই। তাই কোনোভাবেই উপযুক্ত সময় নয় অতীতের কথা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করার। আছিয়া খাতুন আসার আগে বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে এসেছিলো কিন্তু কোনোভাবেই আঁচ করতে পারে নি নুজু কে এইখানে এসে পাবে।
" কখন এসেছো"?
" ঘণ্টা খানিক আগে"
" মাম্মা জানে"?
" তার সামনে দিয়েই এসেছি নানুপু"।
" ভয় করছে না"?
নুজু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় আছিয়া খাতুনের দিকে যার অর্থ ঠিক সে নিজে ও জানে না। তাই প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে নুজু কে বলে ওদের জন্য একটু খাবার এনেছি নাজওয়ান কে ডেকে একটু খাইয়ে নাও। নাজওয়ান নুজু কে ডাকতে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তেই হুড়মুড়িয়ে লিমা বাসায় প্রবেশ করে।

রক্ত চক্ষু নিয়ে নুজুর দিকে তাকায় একবার আর নাজওয়ানের দিকে তাকায় একবার। এমন একটা সময় লিমা কে এইখানে দেখে নাজওয়ান কিছু টা ভরকে যায়। কিন্তু নিজেকে স্বাভাবিক রেখেই প্রশ্নে করে " আপনি?"

"হ্যাঁ আমি কেনো এক্সপেক্ট করো নি"?
" না মানে...."
" আমার মেয়ে কে ভুলিয়ে বালিয়ে এইখানে নিয়ে এসেছো?"আমার বাচ্চা একটা মেয়ে কে ছাড়লে না তুমি? এতো অভাব পড়েছিলো দুনিয়া তে মেয়ের?অসভ্য ছেলে!! অবশ্য কার রক্ত বইছে তোমার শরীরে সেটা তো দেখতে হবে।"

" নাজওয়ানের বুঝার বাকি থাকে না যে লিমা ইতিমধ্যেই সব কিছু জানতে পেরেছে,তবে লিমার এমন কথা বার্তায় নাজওয়ানের গা ফেটে রাগ উঠলে ও সে নিজে কে শান্ত রেখে ঠাণ্ডা গলায় লিমা কে বলে " শান্ত হন! ফুপি এইসব ব্যাপারে পরে কথা বলছি,আমার বন্ধুর লাশ টা এখনও দাফনের ব্যবস্থা করতে পারি নি। প্লিজ নট নাও🙏।"

" নাজওয়ানের এমন কথা শুনে লিমার রাগ আরো বেড়ে যায় আর বলতে থাকে "বাপ বিয়ে করেছে টার্কিশ,আর এখন ছেলে কে লেলিয়ে দিয়েছে আমার মেয়ের দিকে? উদ্দ্যেশ্য কি তোমার বলো? যদি কোনো ভাবে চিন্তা করে থাকো আমার মেয়ের সাথে কিছু হবে তোমার তাহলে আমি বলবো তুমি বোকার রাজ্যে বাস করতেছ।কারণ মেয়ে কে কেটে কুকুরের খাদ্য বানাবো তাও তোমার হাতে তুলে দিবো না। আর যাই হোক বেঈমানের জায়গা আমার জীবনে নেই।"

" মুখ সামলিয়ে কথা বলেন ফুপি!! এটা সঠিক সময় না এইসব কথা বলার পর। সো প্লিজ বেটার হয় আপনি এখন আসুন!!

" নাজওয়ানের এহেম কথা শুনে লিমার গায়ে লাগে আর হিতাহিত জ্ঞান ভুলে চড় মেরে বসে নাজওয়ান কে"।

এখন পর্যন্ত নুজু পুরো ঘটনা শুধু দেখছিলো,সে ভাবছিলো মাম্মা হয়তো তার সম্পর্কের কথা জেনে রেগে এইখানে এসেছে কিন্তু তাই বলে নাজওয়ান কে চড় মারার মতো এমন কাজ মাম্মা করতে পারে সেটা সে কখনই ভাবে নি।নুজু লিমার কাছে আসতেই মেয়ের চোখের দিকে তাকায় লিমা" আগুন ফুঁসছে নুজুর চোঁখে। " এইটা কি করলে মাম্মা তুমি"? How Dare you to touch him?

নাজওয়ান নুজু কে থামতে বলে " নোজোমি প্লিজ এইসব থাক এখন ফুপি কে নিয়ে বাসায় যাও আমরা পরে কথা বলছি এই ব্যাপারে।

"First She have to answer me why she slap you"...

মেয়ের এমন অদ্ভুত আচরণে লিমা নাজওয়ান কে উদ্দ্যেশ্য করে বলে" আমার মেয়ের ব্রেন টা কে ওয়াশ করে দিয়েছো? অলরেডি? এই কয়েক মাসেই?প্রতিটা কথা লিমা অনেক চিৎকার করে বলছিলো। নুজু কে উদ্দ্যেশ্য করে লিমা বলতে থাকে " এই মেয়ে কার থেকে আনসর চাচ্ছো তুমি? কতটুকু জানো এই ছেলের ব্যাপারে তুমি? তোমাকে আমি জাপানে মানুষ করেছি।কোনো বাঙালির সংস্পর্শে আসতে দেই নি কোনোদিন। শেষে গিয়ে এই পঁচা শামুকে পা কাটলেতুমি? জানো এর পরিচয় ? কে এই নাজওয়ান? কি ওর ফ্যামেলি ব্যাকগ্রাউন্ড?
তাহলে শুনো ওর আসল পরিচয় হচ্ছে ও আর ওর পরিবার একটা বেঈমান।মেয়েদের ইমোশন নিয়ে খেলাই এদের নেশা আর পেশা দুটায়। বেঈমানের রক্ত বইছে ওর শরীরে।

এইবার নাজওয়ান আর নিজে কে সামলাতে পারে না লিমার কাছে গিয়ে বলে " রক্তের খোটা দিয়েন না ফুপি,আমার গায়ে কিন্তু আপনারই রক্তই বইছে এইটা মাথায় রেখে কথা বলবেন!! আর আপনার মেয়ে কে আমি ফুসলিয়ে ফাঁসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলি নি সে নিজে থেকেই আমার কাছে আসছিলো প্রথম দিন।She is 18+ And adult.

নুজুর সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তবে তার কাছে এইটা পরিষ্কার। নাজওয়ান কে তার মাম্মা অনেক ভালো করেই চিনে শুধু চিনে না নাজওয়ান তার মাম্মার পরিবারে কেউ।কিন্তু এতদিন এটা নাজওয়ান তার থেকে লুকিয়েছে কেনো? মাম্মা নাজওয়ান কে বার বার বেঈমান বেঈমান বলতেছে কেনো? কোন অতীতের কথা বলছে এরা? নুজু কেন এইসব জানে না কেনো তাকে জানানো হয় নি? সমস্ত প্রশ্ন ভীতরে গোল পাকাতে থাকে তার। পিছনে ঘুরে নাজওয়ান কে জিজ্ঞেষ করে " কি লুকিয়েছেন আপনি আমার থেকে"।

অসহায় দৃষ্টিতে নুজুর দিকে তাকায় নাজওয়ান আর বলে উঠে"নোজোমি আমি তোমাকে সব বলবো" আমাকে একটু সময় দাও বাসায় আমার বন্ধুর লাশ এখনো। ওর দাফনের ব্যবস্থা টা করে নেই। সব বলবো। শেষ কথা গুলি নাজওয়ান খুব আদুরে গলায় নুজুর গালে হাত বুলিয়ে বলে।কারণ নাজওয়ান নুজুর চোঁখে স্পষ্ট দেখতে পায় একটা ভয়, দুশ্চিন্তা,আর হাজারো প্রশ্ন।সে তার চেরি ফুল কে কোনোভাবেই এমন যন্ত্রণায় রাখতে চায় না কিন্তু এইটা সঠিক সময় নয় এইসব ব্যাপার নিয়ে কথা বলার।"কিন্তু নুজু নাজওয়ানের হাত ছিটকে ফেলে দেয় নিজের গাল থেকে।আর বলতে থাকে " Are You Trying to cheating me"?

এই কথা টা নাজওয়ান কোনোভাবেই নিতে পারে না। কিছু বলতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে লিমা আবার বলতে থাকে"আজ কেই তোমাকে প্রথম বার আর শেষ বারের মত বলছি আমার মেয়ের থেকে দূরে থাকবে আর সম্ভব হলে যেই নোংরা খেলা টায় মেতে আছো সেটা বন্ধ করবে কারণ আমি বেঁচে থাকতে তোমাদের ভোগের বস্তু আমার এই বাচ্চা মেয়ে টা কে হতে দিবো না।

লিমার এইসব কথা শুনে নাজওয়ানের গা ঘিন ঘিন করে উঠে একটা মানুষ নিজের মেয়ের সম্পর্কে এইসব কিভাবে বলতে পারে? এইবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লিমার উদ্দ্যেশ্যে নাজওয়ান বলে উঠে "পাপা বেস্ট ডিসিশন টা নিয়েছিল সেইদিন,কারণ আপনি কোনো ভাবেই আমার পাপার যোগ্য নন।"যে তার মেয়ে কে নিয়ে ও এইসব বলতে পারে তার সাথে কোনো কথা বলার ইচ্ছা আমি রাখি না। এইবার আসতে পারেন আপনি!!

এতক্ষণ নীরব দর্শক হিসেবে নাহিদ, জনি আর আছিয়া খাতুন সব টা দেখছিলো। আছিয়া খাতুন এতক্ষণ কিছু না বললে ও এইবার মেয়ের কাছে এসে বলে উঠে" তোমাকে আমার কিছু বলার নেই, নিজে কে যতটা ছোট করার করে ফেলেছ। এবার আসো এইখান থেকে!!

লজ্জায় অপমানে লিমা বাসায় থেকে বের হয়ে যেতে নেয় ঠিক সেই মুহূর্তেই নাজওয়ান বলে উঠে "ওয়েট"!! আপনার মেয়ে কে ও নিয়ে যান না হলে একটু পরে এসে এই ব্লেম দিতে ও আপনার বাঁধবে না যে বন্ধুর লাশ বাড়িতে রেখে আপনার মেয়ের সাথে আমি.....

"থাক দাদু ভাই আর কিছু বলতে হবে না।আমি দুঃখিত এমন একটা পরিস্থিতির জন্য। নাজওয়ান কে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে আছিয়া খাতুন বলে উঠে।"

" আমাকে মাফ করবেন দিদুন সব কিছুর জন্য"🙏।

এইভাবে চলে যেতে বলায় ছোট নুজুর মনে ও প্রচন্ড আঘাত পড়ে। একে তো ভিতরে এতো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তার যার কোনোটার উওর ই মিলছে না, সবকিছু ধোঁয়াশা লাগছে তাঁর কাছে তার উপর নাজওয়ানের এমন কঠোর ভাবে চলে যেতে বলায় বেশ কষ্ট পায় নুজু।

যাওয়ার সময় একবার পিছন ফিরে নাজওয়ানের দিকে তাকাতেই দেখে নাজওয়ান তার দিকেই তাঁকিয়ে আছে সে হয়তো ভাবছিলো নাজওয়ান তাকে আটকাবে।যেতে দিবে না মাম্মার সাথে কিন্তু তাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে নাজওয়ান ঠাঁই দাঁড়িয়ে ছিল আগের জায়গায় ই।

এইদিকে নুজুর এইভাবে নিজের মায়ের সাথে চলে যাওয়া তে নাজওয়ান ও ভিতর ভিতর কষ্ট পাচ্ছে" আমি জানি তোমার মনে এখন অনেক কিছু চলছে চেরি ফুল, একটু কি আমার ওপর ভরসা করতে পারলেনা? এই সময় টায় একটু কি আমার পাশে থাকতে পারতে না তুমি?এতদিন আমি ভাবতাম "তোমাকে আমি নিয়তির উপর ছেড়ে দিতে পারবো না তোমাকে আমার যে করেই হোক লাগবে"। কিন্তু আমাকে আজ কে ভুল প্রমাণ করে দিলে তুমি। ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাকে আর আমি নিজের করবো না যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি আমার জন্য ডেসপারেট হও"!!

পুরো রাস্তা কেউ কারোর সাথে কথা বলে নি। বাসায় ঢুকতেই নুজু উপরে নিজের রুমের দিকে যেতে নেয় ঠিক তখনি লিমা বলে উঠে" কাল সকাল ৮ টায় তৈরি হয়ে থেকো আমরা টোকিওর উদ্দেশ্য রওনা হবো।"

নুজু আর কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে যায়.....

রাতের দিকে রাহাতের লাশ মসজিদ কমিটির সদস্য রা নিয়ে যায় নিজেদের সংরক্ষণে রাখতে।জনি যেনো কথা বলা ভুলে গেছে। আছিয়া খাতুনের আনা খাবার সাথে মসজিদ কমিটি থেকে দেয়া কিছু খাবার জোর করে জনি কে খাওয়ানো হয়েছে। গোটা একটা রাত নাজওয়ান নির্ঘুমেই কাটিয়ে দেয়। কি হলো কি হচ্ছে ভাবতে ভাবতেই ভোর হয়ে যায়।

জনি এসে বলতেই নাহিদ আর নাজওয়ান ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে যায় মশজিদের উদ্দ্যেশ্যে।

জড়সড় হয়ে বসে আছে নুজু। দেখে মনে হচ্ছে সারারাত এইভাবেই বসে বসে কেঁদেছে মেয়ে টা। আছিয়া খাতুন ঘরে ঢুকতেই তার পানে তাকায় নুজু। নাতনি কে এই অবস্থায় দেখেই কিছু একটা বলতে যাবে তাঁর আগেই লিমা ঘরে ঢুকে বলে এই মেয়ে তোমাকে না বলে রাখছি ৮ টার মধ্যে তৈরি হয়ে থাকবে? তোমার জন্য অর্ধেক বেলা অফিস কামাই দিয়েছি আমি দুপুরের মধ্যে টোকিও পৌছতে হবে আমাকে। যা ক্ষতি করার তো করেছোই আমার।এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও বের হতে হবে।

" মাম্মা তুমি উনার গায়ে হাত কেনো তুললে?"আমি জানি না তোমাদের মধ্যে কি নিয়ে সমস্যা। তোমরা কেউ আমাকে কিছু জানাও নি। হয়তো প্রয়োজন ই মনে করো নি।কিন্তু এই সময়ে উনার সাথে তোমার এমন একটা ব্যবহার করা একদম ই ঠিক হয় নি।"

"আমি তোমার মা, আশা করি আমাকে তুমি বুঝাতে আসবে না কি ঠিক হয়েছে আর কি ঠিক হয় নি।"ফ্রেশ হয়ে জলদি নিচে আসো।

আগের ন্যায়ই বসে আছে নুজু। আছিয়া খাতুন নাতনির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে" তুমি যেইখানে আমি ও সেখানেই। যতটুক তুমি জানতে ততটুক আমি ও জানতাম। আশা করি নানুপু কে কোনো ভাবে ভুল বুঝবে না তুমি। দাদু ভাইয়ের এই সময় তোমাকে অনেক প্রয়োজন। যদি মাম্মার সাথে যেতে চাও তাহলে একবার না হয় তার সাথে দেখা করে এসো।

মনে মনে এটাই চাচ্ছিলো নুজু।ছলছল চোঁখে নানুপুর দিকে তাকায় । নানুপু তার মনের কথা বুঝতে পেরেছে ভাবতেই চোঁখে থাকা কয়েকফোটা পানি গাল বেয়ে নিচে পড়ে যায়।নাতনির চোঁখের পানি মুছে দিতে দিতেই আছিয়া খাতুন বলে উঠে "আমি এইদিক টা দেখছি তুমি দেখা করে আসো"।

তড়িঘড়ি করে খাট থেকে নেমেই সোজা নিচে চলে যায় আর লিমার চোঁখের আড়ালেই বের হয়ে পরে নাজওয়ানের বাসার উদ্দ্যেশ্যে কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখে কেউ নেই। উপায় না পেয়ে ফিরে আসার সময়ই নাজওয়ানের সাথে দেখা হয়ে যায়। নুজু কে দেখেই পাশ কেটে চলে যেতে নেয় নাজওয়ান।

" চলে যাচ্ছেন কেন নাজওয়ান"?
নাজওয়ান থেমে গিয়ে নুজুর সামনে এসে দাঁড়ায়।
নাজওয়ান কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নুজু বলতে থাকতে" আমি চলে যাচ্ছি মাম্মার সাথে। হয়তো আর কোনোদিন আসবো না ওসাকা। ভালো থাকবেন।
নুজু আসলে নাজওয়ান কে এইসব বলতে আসে নি কিন্তু প্রথমেই নাজওয়ানের এমন পাশ কেটে চলে যাওয়া টা নুজু নিতে পারে নি।

খুব শান্ত গলায়" আল্লাহ্ হাফেজ" বলে নাজওয়ান চলে যায়।
নুজু এক পানে চেয়ে থাকে নাজওয়ানের যাওয়ার দিকে। কিছুটা রাগ আর চাপা অভিমান নিয়েই বাড়ি ফিরে আসে।বাড়ি ফিরেই দেখে লিমা দাঁড়িয়ে আছে দরজার কাছেই। কিন্তু নুজু কে আর কিছু বলে না। উপরে গিয়ে কাপড় পাল্টিয়ে তৈরি হয়ে আসে। আর বের হয়ে পরে টোকিওর উদ্দ্যেশ্য। গাড়ি তে উঠার সময় নাজওয়ান বারান্দা থেকে এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকে নুজুর যাওয়ার পানে। পিছন থেকে নাহিদ এসে কাঁধে হাত রাখতেই চমকে উঠে নাজওয়ান।

"মাঝে মাঝে আমাদের লাইফে এমন অনেক খারাপ সময় হয় আসে, ঠিক হয়ে যাবে সব, টেনশন করিস না।"

দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস নিয়ে রুমের ভিতর চলে যায় নাজওয়ান।

চলবে....

(কপি করা নিষেধ)

住所

Chiba-shi, Chiba

ウェブサイト

アラート

Adity’s Clipboardがニュースとプロモを投稿した時に最初に知って当社にメールを送信する最初の人になりましょう。あなたのメールアドレスはその他の目的には使用されず、いつでもサブスクリプションを解除することができます。

共有する

カテゴリー