Bangla Alo News

Bangla Alo News Bangla Alo has always come to you with true and safe news. Truth is never suppressed so we are by you

দুবাই, 'স্পেন, কাতার, সৌদি আরব , মালয়েশিয়া, ইতালি, রোমানিয়া, প্রবাসী সব দেশের খবরা খবর জানতে বাংলা আলো সাথে থাকুন www.bangla-alo.com. সকল খবর নিয়ে আমরা আছি আপনার সাথে।। Bangla alo News, Bangla alo news portal, Bangla news

16/07/2025
16/07/2025
আমাদের দল ৩০০ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।। রাশেদ খান" #রাজনীতি  #বাংলাদেশ
14/06/2025

আমাদের দল ৩০০ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।। রাশেদ খান"
#রাজনীতি #বাংলাদেশ

নতুন একটা বড় সান্ডা সেল হবে।।  চাইলে কমেন্ট এ নিতে পারেন।।  😂😂😂  #সানডা
25/05/2025

নতুন একটা বড় সান্ডা সেল হবে।। চাইলে কমেন্ট এ নিতে পারেন।। 😂😂😂 #সানডা

সান্ডা লাগবে কারো আমার কাছে আছে.......
18/05/2025

সান্ডা লাগবে কারো আমার কাছে আছে.......

এ নাকি জুলাই এর বীর মুক্তিযোদ্ধা??
17/05/2025

এ নাকি জুলাই এর বীর মুক্তিযোদ্ধা??

11/05/2025

সুদ কি ইসলামের জন্য ভালো কিছু? সব হুজুররা যেন সুদ নিয়ে কথা বলতে ভুলে গেছে

11/05/2025

অবৈধ সরকারের সব
সিদ্ধান্তই অবৈধ।

বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ সকল অন্যায়ের জবাব দেবে।

আছি।।  ছিলাম।। থাকবো। ইনশাআল্লাহ।।
11/05/2025

আছি।। ছিলাম।। থাকবো। ইনশাআল্লাহ।।

শুভ জন্মদিন- বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জার্মান দার্শনিক জর্জ উলিয়াম ফ্রেডরিখ...
17/03/2025

শুভ জন্মদিন- বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

জার্মান দার্শনিক জর্জ উলিয়াম ফ্রেডরিখ হেগেলের ভাষায়: "মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ হচ্ছে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা"
বাঙ্গালী জাতিব জন্য এই কাজটি করেছিলেন ইতিহাসের মহানায়ক বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

দেখতে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরেকটি জন্মদিন চলে এল। ১০৫ বছর আগে ১৯২০ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দ্রষ্টা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হয়েছিলো গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। গত বছরের এই দিনেও কি আমরা জানতাম যে বাংলাদেশকে আবারো হায়েনাদের হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য ফিরে যেতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, উজ্জীবিত হবার জন্য বার বার শুনতে হবে তাঁর বক্তৃতা!

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-ই-ইসলামী ও হিজবুত তাহরীর-এর মত জঙ্গীগোষ্ঠির সমর্থনপুষ্ট ইউনুস সরকার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বর্তমান অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকার নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দেবেনা। নতুন প্রজন্মের জানা প্রয়োজন যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমাদের দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের চেতনাকে জাগ্রত করে। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে হয় এবং দেশের স্বার্থকে সবার ঊর্ধ্বে রাখতে হয়।
বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি অবিচল ছিলেন। তাঁর কাছ থেকেই আমরা শিখেছি যে কীভাবে জনগণের অধিকার রক্ষা করতে হয় এবং একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলতে হয়। জনগনের অধিকার রক্ষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সর্বমোট ৪,৬৮২ দিন কারাভোগ করেন। এর মধ্যে: স্কুলের ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশ আমলে সাত দিন কারাভোগ করেন এবং বাকি ৪,৬৭৫ দিন তিনি কারাভোগ করেন পাকিস্তান সরকারের আমলে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক আন্দোলন, ভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার পর গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। জাতির পিতার এই ইতিহাস আমাদের জানা না থাকলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আমাদের মনে রাখতে হবে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে কারাবরণ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। তিনি জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু মানুষকে ভালোবাসতেন। তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির প্রথমেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত নোট বইয়ের একটি উদ্ধৃতি রয়েছে, যা তিনি ১৯৭৩ সালের ৩০ মে লিখেছিলেন। নোট বইতে তিনি লিখেছিলেন –
“‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।”
এই উদ্ধৃতিটি থেকেই বোঝা যায় কেন তিনি বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা হতে পেরেছিলেন। প্রখ্যাত গবেষক অধ্যাপিকা রওনক জাহান বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা বিশ্লেষণ করে বলেছেন, “পৃথিবীর অন্য নেতাদের ভাষণ আমি যখন পড়ি এবং তাদের ভাষণের সঙ্গে যখন বঙ্গবন্ধুর ভাষণের তুলনা করি তখন আমার কাছে তার এই অভিব্যক্তিটি ‘জনগণের প্রতি ভালোবাসা’ তা অনন্য বলে মনে হয়।”
বঙ্গবন্ধু সামাজিক ন্যায়বিচার ও সমতার জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূর্ত প্রতীক। তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর স্বাধীনতা বিরোধিদের উত্থানের ফলে বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা ও মানবাধিকার পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয়েছে যে, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতায় বলতে হয় - “জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন”। গত ছয় মাসে প্রায় ২ লক্ষ লোককে মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছে, ‘মব’ নাটক সাজিয়ে হাজারো মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে, এবং লক্ষাধিক লোকের বাড়িঘর - দোকানপাট ভাংচুর করা হয়েছে। আইন ও শালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনঅনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসে ৮৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা ৩৪টি। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যে দাম আজ আকাশ-ছোঁয়া। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনঅনুযায়ী সংখ্যালঘু নির্যাতন ও তাদের উপসনালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করার ঘটনা ঘটেছে প্রায় ২৩০০টি। বাংলাদেশের মানুষ আজ কোন দেশে বসবাস করছে?
পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে অবদমিত করার এবং তাঁর কন্ঠকে অবরুদ্ধ করার কোনো প্রচেষ্টাই বাদ রাখেনি। তারপরেও কি পাকিস্তানের সামরিক জান্তা পেরেছে? ইতিহাস সাক্ষী আছে - তারা পারেনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার মাধ্যমে খুনী - ষড়যন্ত্রকারীরা চেয়েছিলো বাঙ্গালীদের চেতনা থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মুছে ফেলবে। তারাও পারেনি। জাতির পিতার ভালোবাসা, স্নেহ ও তাঁর আদর্শ ছড়িয়ে রয়েছে আমাদের শিরায় উপ-শিরায়, রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তাঁকে মুছে ফেলা সহজ নয়।
পাকিস্তান সমর্থক রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসের প্রেতাত্মারা আবার ফিরে এসেছে বাংলাদেশে। বর্তমান সরকার প্রধান ইউনুস তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। মিথ্যা মামলার ভয়ে অনেকেই আজ দেশছাড়া, নিজের ঘর ও পরিবার ছেড়ে অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছেন। এই সংকটকালীণ সময়ে আমাদের সবার বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে - আমাদের মনে রাখতে হবে - “এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম”, বাংলাদেশকে রাজকার-জঙ্গী মুক্ত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেদের উজ্জীবিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে কারাগারে থেকেও বঙ্গবন্ধু কখনো হতাশ হননি। নিজের জীবনের হুমকি উপেক্ষা করেও তিনি বাংলার মানুষের জন্য কাজ করে গিয়েছেন, প্রতিহিংসা নয় ভালোবাসা বিলিয়ে গিয়েছেন। তাই আসুন আজকের এই দিনে দ্বিধাহীন চিত্তে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ‘ভয়শূন্য’ ভাবে রুখে দাঁড়াই স্বাধীনতাবিরোধী সেই ‘পুরানো শকুনের’ বিরুদ্ধে।

লেখক:
মিজানুর হক খান
সভাপতি জার্মান আওয়ামী লীগ
(কপি)

৭ মার্চের ভাষণ : পটভূমি ও তাৎপর্য - মোহম্মদ শাহজাহান----------  ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ ভ...
07/03/2025

৭ মার্চের ভাষণ : পটভূমি ও তাৎপর্য
- মোহম্মদ শাহজাহান
----------
ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ ভাষণটি দিয়েছিলেন। ১০ লক্ষাধিক লোকের সামনে পাকিস্তানি দস্যুদের কামান-বন্দুক-মেশিনগানের হুমকির মুখে বঙ্গশার্দুল শেখ মুজিব ওই দিন বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’



কী পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সেই ইতিহাস বিখ্যাত ভাষণ দিয়েছিলেন। ১৯৭০-এর ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ১৩টি মহিলা আসনসহ জাতীয় পরিষদে আসন সংখ্যা ছিল ৩১৩টি (৩০০+১৩=৩১৩)। এর মধ্যে অবিভক্ত পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল- পূর্ব পাকিস্তানের আসন সংখ্যা ছিল ১৬৯টি (১৬২+৭=১৬৯)। ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ আসনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পায় ১৬৭টি আসন। ওই নির্বাচনে বহু রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। সামরিক আইনের অধীনে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসন পাওয়ার পর বাকি ২টি আসন পায় পিডিপি। ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর তৎকালীন সামরিক প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ’৭১-এর ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি নেতা জেড এ ভুট্টো এবং পাকিস্তান সামরিক চক্র সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে অর্থাৎ আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ষড়যন্ত্রকারীদের হাতের পুতুলে পরিণত হলেন সামরিক প্রেসিডেন্ট জে. ইয়াহিয়া খান। ’৭১-এর পহেলা মার্চ ১টা ৫ মিনিটে আকস্মিক এক বেতার ঘোষণায় ৩ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত হওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে বাংলাদেশ (পূর্ব পাকিস্তান)।



৩ মার্চ পল্টনে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের সভায় প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধু আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি থাকি আর না থাকি, বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন যেন থেমে না থাকে। বাঙালির রক্ত যেন বৃথা না যায়। আমি না থাকলে- আমার সহকর্মীরা নেতৃত্ব দিবেন। তাদেরও যদি হত্যা করা হয়, যিনি জীবিত থাকবেন, তিনিই নেতৃত্ব দিবেন। যে কোনো মূল্যে আন্দোলন চালাইয়া যেতে হবে- অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” বঙ্গবন্ধু আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ৭ মার্চ রোববার রেসকোর্স ময়দানে তিনি পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করবেন। ৪ মার্চ থেকে ৬ মার্চ সকাল ৬টা থেকে ২টা পর্যন্ত সারা দেশে হরতাল পালনের আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে আন্দোলন এগিয়ে চলল। সারা দেশে তখন একজন মাত্র নেতা। তিনি হচ্ছেন দেশের শতকরা ৯৮ জন মানুষের ভোটে নির্বাচিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের সামরিক শাসন চালু থাকলেও সামরিক সরকারের কথা তখন কেউ শুনছে না। শেখ মুজিবের কথাই তখন আইন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সমগ্র বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে।



সেই আন্দোলনমুখর পরিস্থিতিতে ঘনিয়ে এল ৭ মার্চ। সবার দৃষ্টি ৭ মার্চের দিকে। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে কী বলবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভাবিয়ে তুলল পাকিস্তান সামরিক চক্রকেও। কারণ তারা বুঝে গেছে, বাংলাদেশের মানুষের ওপর তাদের আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। দেশ পরিচালিত হচ্ছে বিরোধী দলের নেতা শেখ মুজিবের কথায়। এই অবস্থায় ৭ মার্চ শেখ মুজিব যদি রেসকোর্সের জনসভায় স্বাধীনতা ঘোষণা করে বসেন। চিন্তিত পাকিস্তান সামরিক চক্র কৌশলের আশ্রয় নিল। ৭ মার্চের একদিন আগে অর্থাৎ ৬ মার্চ জে. ইয়াহিয়া খান টেলিফোনে কথা বলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা, আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে। পূর্ব পাকিস্তান সামরিক সরকারের তৎকালীন তথ্য কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিকের ‘ Witness to Surrender’ গ্রন্থে এসব তথ্য রয়েছে। ৬ মার্চ জে. ইয়াহিয়া তার দীর্ঘ টেলিফোন আলাপে আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলার চেষ্টা করেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) যেন এমন কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করেন, যেখান থেকে ফিরে আসার উপায় আর না থাকে।’



৭ মার্চের পূর্ব রাতে জে. ইয়াহিয়া টেলিপ্রিন্টারে শেখ মুজিবের কাছে একটি বার্তাও প্রেরণ করেন। সালিকের গ্রন্থে রয়েছে- একজন ব্রিগেডিয়ার জে. ইয়াহিয়ার সেই বার্তা ৭ মার্চের আগের রাতে শেখ মুজিবের ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসেন। মেজর সালিক ওই বার্তাটি সংক্ষিপ্ত আকারে তার ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলেন। বার্তায় জে. ইয়াহিয়া শেখ মুজিবকে অনুরোধ করেন, “অনুগ্রহ করে কোনো দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন না। আমি সহসাই ঢাকা আসছি এবং আপনার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমি আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি আপনার আকাক্সক্ষা এবং জনগণের প্রতি দেয়া আপনার প্রতিশ্রুতির পুরোপুরি মর্যাদা দেব। আমার কাছে একটি পরিকল্পনা আছে- যা আপনাকে আপনার ছয়দফা থেকেও বেশি খুশি করবে। আমি সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি, কোনো দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন না।” (সূত্র : Witness to Surrender) ৬ মার্চ টেলিফোনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা, টেলিপ্রিন্টারে বঙ্গবন্ধুর কাছে বার্তা প্রেরণ করেও পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছিলেন না জে. ইয়াহিয়া। ৬ মার্চ এও ঘোষণা করা হলো যে, ২৫ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।



৭ মার্চ রেসকোর্সে জনসভার বক্তব্য কী হবে- এ নিয়ে ৬ মার্চ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক হয়। জনসভায় বঙ্গবন্ধু কী বলবেন- এ নিয়ে বিভিন্নজন বক্তব্য রাখেন। একপক্ষের মত, বঙ্গবন্ধু যেন জনসভায় সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। অন্যপক্ষ স্বাধীনতার সরাসরি ঘোষণা পরিহার করে আলোচনার পথ খোলা রাখার পক্ষে মত প্রদান করেন। সভা ৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত মুলতবি রইলো। ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের চরমপন্থীরা বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধুকে ৭ মার্চের জনসভায় স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য। যদ্দুর জানা যায়, ৭ মার্চ ভাষণ দেয়ার আগে চিন্তিত বঙ্গবন্ধুকে বেগম মুজিব বলেছিলেন, ‘আল্লার নাম নিয়ে তোমার মন-দিল-অন্তর থেকে যা আসে- তাই বলে দিও।’



পরিস্থিতির চাপে ভীতসন্ত্রস্ত পূর্ব পাকিস্তান সামরিক সদর দপ্তর থেকে বিভিন্নভাবে শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগকে এই মেসেজ দেয়া হয় যে, ৭ মার্চ যেন কোনোভাবেই স্বাধীনতা ঘোষণা না করা হয়। ৭ মার্চ জনসভাকে কেন্দ্র করে কামান বসানো হয়। এমনকি আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রস্তুত রাখা হয়। মেজর সিদ্দিক সালিক তার গ্রন্থে লিখেছেন, পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি ৭ মার্চের জনসভার প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ নেতাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “পাকিস্তানের সংহতির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হলে তা শক্তভাবে মোকাবেলা করা হবে। বিশ্বাসঘাতকদের (বাঙালি) হত্যার জন্য ট্যাংক, কামান, মেশিনগান সবই প্রস্তুত রাখা হবে। প্রয়োজন হলে ঢাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে। শাসন করার জন্য কেউ থাকবে না কিংবা শাসিত হওয়ার জন্যও কিছু থাকবে না।”



এমন এক কঠিন সংকটময় পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৭ মার্চ রেসকোর্সে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে চারটি শর্ত দিয়ে ভাষণের শেষাংশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।” বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কিছু অংশ ব্যাখ্যা করলে দেখা যায়, তিনি সেদিন যুদ্ধের ঘোষণা যেমন পরোক্ষভাবে প্রদান করেন- আবার যুদ্ধে কিভাবে জয়ী হতে হবে সে ব্যাপারেও বক্তব্য রাখেন। স্বাধীন রাষ্ট্রের বৈধ সরকারপ্রধানের মতো এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, “২৮ তারিখে কর্মচারীরা গিয়ে বেতন নিয়ে আসবেন। এরপর যদি বেতন দেয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের ওপর আমার অনুরোধ রইলো প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।”



প্রকৃতপক্ষে ’৭১-এর পহেলা মার্চ থেকেই পূর্ব পাকিস্তানে মুজিবের শাসন কায়েম হয়। যে জন্য তিনি বলতে পেরেছেন, ২৮ তারিখ কর্মচারীরা বেতন নিয়ে আসবেন। তিনি পাকিস্তানি শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলারও আহ্বান জানান। অনেকেরই আশঙ্কা ছিল বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলা হতে পারে। যে জন্য তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা রাস্তাঘাট সবকিছু বন্ধ করে দেবে।’ অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলেও শত্রু পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকে- ৭ মার্চের ভাষণে তাই তিনি বলেছেন। তা ছাড়া ভাতে মারবো, পানিতে মারবো- এ কথার মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীকে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে পর্যুদস্ত করার কথাই বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু।



বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সে সময় এমন ছিল যে, কোনো কোনো বিদেশি পত্রিকাও তখন জানিয়েছিল- ৭ মার্চ শেখ মুজিব হয়তো পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন। ’৭১-এর ৫ মার্চ লন্ডনের গার্ডিয়ান, সানডে টাইমস, দি অবজারভার এবং ৬ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ৭ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার পূর্বাভাস দেয়া হয়। ৬ মার্চ ’৭১ লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ছাপা হয়“শেখ মুজিবুর রহমান আগামীকাল (৭ মার্চ) পূর্ব পাকিস্তানের একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারেন।”



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ’৭১-এর ৭ মার্চ সরাসরি কেন স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি, তার ব্যাখ্যা পরবর্তীকালে তিনি নিজেই দিয়েছেন। ১৯৭২ এর ১৮ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে এনডব্লিউ টিভির জন্য দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ৭ মার্চের ওই ঘটনা বর্ণনা করেন। ফ্রস্ট শেখ মুজিবের কাছে জানতে চান, ‘আপনার কি ইচ্ছা ছিল যে, তখন ৭ মার্চ রেসকোর্সে আপনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঘোষণা দেবেন?’ জবাবে শেখ মুজিব বলেন, ‘আমি জানতাম এর পরিণতি কী হবে এবং সভায় আমি ঘোষণা করি যে এবারের সংগ্রাম মুক্তির, শৃঙ্খল মোচন এবং স্বাধীনতার।’ ফ্রস্ট প্রশ্ন করেন, ‘আপনি যদি বলতেন, আজ আমি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঘোষণা করছি, তো কী ঘটত?’ শেখ মুজিব উত্তর দেন, ‘বিশেষ করে ওই দিনটিতে আমি এটা করতে চাইনি। কেননা বিশ্বকে তাদের আমি এটা বলার সুযোগ দিতে চাইনি যে, মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং আঘাত হানা ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প ছিল না। আমি চাইছিলাম তারাই আগে আঘাত হানুক এবং জনগণ তা প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত ছিল।’



ইতিহাস প্রমাণ করে- ৭ মার্চ সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা না করে বঙ্গবন্ধু শতভাগ সঠিক কাজটিই করেছেন। ২০০৬ সালের ৩১ মার্চ আইয়ুব খান নামের একজন কলাম লেখক দৈনিক ভোরের কাগজে যথার্থই লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের একটি শব্দ বা দাড়ি-কমাতেও বাহুল্য ছিল না। প্রতিটি শব্দ বা বাক্য বাস্তবতার গভীর থেকে উৎসারিত। এ যেন কোনো দেবদূত, সমবেত জনতাকে তাদের সংকটকালে অমোঘ নিয়তির দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।’



উল্লেখ্য, ওই ভাষণের ১৮ দিন পর ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা শহরে গণহত্যার মাধ্যমে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন পাকি প্রেসিডেন্ট জে. ইয়াহিয়া খান। মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত বাঙালি জাতি ৯ মাসের যুদ্ধে বিজয় এনেছিল।

#বঙ্গবন্ধু #শেখমুজিব #অগ্নিঝরামার্চ

07/03/2025

Address

Ipoh

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Bangla Alo News posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Bangla Alo News:

Share

Bangla Alo

Bangla Alo is a leading Bangla Newspaper published from Bangladesh. It covers news from Bangladesh, ( Specially from Bengali speaking areas) and also from rest of the world. We always bring new news for truth and for true news. our specialty is that we have all the news of expatriates. We always think of something new about expatriates. stay with us to read news all the time. www.Bangla-alo.com