
07/08/2025
🤔বর্তমান সামাজিক মাধ্যম এবং সম্মান🤔
বর্তমানে সামাজিক মাধ্যম খুললেই একটি নতুন ধরনের প্রবণতা চোখে পড়ে। অনেকেই, বিশেষ করে নারীরা, নানা ধরনের পোস্টের মাধ্যমে অন্যদের কাছে ফলো, স্টার বা লাইকের জন্য অনুরোধ করছেন। যেমন, "আমার পরিবারে আসুন (বিয়ে করে নয়, ফলো দিয়ে)", "একটু ভালোবাসা দিয়ে যান (জড়িয়ে ধরে নয়, স্টার দিয়ে)" ইত্যাদি। এই ধরনের অনুরোধগুলো অনেক সময় রুচিহীন মনে হয়। নিজেকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য অনেকে এমন পোশাক পরছেন যা সমাজের চোখে আপত্তিকর।
এই ধরনের আচরণ দেখে মনে হয় যেন সম্মানবোধ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এমন নির্লজ্জভাবে সম্মান বা মনোযোগের জন্য আবেদন করাটা সমাজের সুস্থ সংস্কৃতির পরিপন্থী। একজন সম্মানিত পরিবারের সদস্যের পক্ষে এমন আচরণ করাটা কতটা স্বাভাবিক, তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে। এর চেয়ে তো বরং কোনো কাজ করে সম্মান অর্জন করা অনেক বেশি মর্যাদাপূর্ণ।
একটা সময় ছিল যখন সমাজের কিছু নিয়মকানুন ছিল। এখন মনে হয় সেই নিয়মগুলো ভেঙে যাচ্ছে। রাজা যেমন নগ্ন হয়েও নিজেকে পোশাক পরা বলে বিশ্বাস করত, এবং কেউ ভয়ে তাকে সত্য বলতে পারতো না, তেমনি এখন অনেকেই ভুলকে সঠিক ভেবে গ্রহণ করছে। এমন একটা সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে যেখানে যারা এই ধরনের আচরণ করে না, তারা হয়তো নিজেদেরই ভুল ভাবছে।
আপনি হয়তো আমার কথায় রেগে যাচ্ছেন। কিন্তু একটু ভেবে দেখুন, ফেসবুক থেকে আয়ের পদ্ধতিটা কি সত্যিই সম্মানজনক? কীভাবে একজন ইউজার টাকা উপার্জন করতে পারে? কতগুলো স্টার পেলে তা টাকায় রূপান্তরিত করা যায়?
বেশিরভাগ স্টার দেওয়া হয় কিছু অসৎ উদ্দেশ্যে, আবার অনেকে বন্ধু-বান্ধবদের সামনে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য বা নিজেকে আধুনিক প্রমাণ করতে স্টার দেয়। কিছু নারী অন্যদের আকর্ষণ করার জন্য এই স্টার ব্যবহার করে। অন্যের কমেন্ট বক্সে গিয়ে স্টার বা লাভ রিয়্যাক্ট দেওয়াটাও অনেক সময় উদ্দেশ্যমূলক হয়। এই স্টার হয়ে উঠেছে যেন এক অমৃত ভান্ডার, যা পাওয়ার জন্য সবাই ছুটছে।
মনে রাখবেন, দশ হাজার স্টার পেলে আপনি টাকা তুলতে পারবেন। যে সমাজে এক টাকা ভিক্ষা দিতেও মানুষ দ্বিধা করে, সেই সমাজে বিনামূল্যে কেউ আপনাকে এত স্টার দেবে বলে মনে করেন?
সাধারণত, আপনি যদি কাউকে স্টার দেন, তবেই আপনি তা ফেরত পাবেন। এর পেছনের কৌশলটা হলো, একটি স্টার কিনতে আপনার প্রায় তিন টাকা খরচ হবে, অথচ ভাঙালে আপনি পাবেন মাত্র আশি পয়সা। এটি ফেসবুকের একটি বাণিজ্যিক কৌশল মাত্র।
তাই এই ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। অবসর সময়ে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করুন, আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ নিন, আপনার পরিবারকে সময় দিন। অযথা এই চ্যালেঞ্জগুলোতে না ছুটে সন্তানের পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দিন।
আপনার যদি সত্যি কোনো গুণ থাকে, তাহলে তা এমনিতেই সবার সামনে আসবে। এর জন্য এই ধরনের পথ বেছে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
আশা করি ভালো থাকবেন। আমার কথাগুলো আপনার ভালো না লাগলে আপনি আমাকে আনফলো করতে পারেন, কিন্তু চারপাশে একটু তাকিয়ে দেখুন, যা বলেছি তার এক বর্ণও মিথ্যা নয়।