09/05/2025
নিশ্চয়ই। নিচে চিত্রটির আদলে একটি সংক্ষিপ্ত গল্প লিখে দিচ্ছি, যেখানে ইতিহাস, অনুভূতি ও সময়ের অনিশ্চয়তা মিলেমিশে একটানা আবহ তৈরি করেছে।
---
গল্প: “শেষ আলো”
রোমের পশ্চিম প্রান্তে একটি রাজপ্রাসাদ। তার দীপ্তিশালী মার্বেল ফ্লোর, সোনার কাজ করা স্তম্ভ, দেয়ালে টাঙানো শাসকের প্রতিকৃতি—সবই যেন এই শহরের গৌরবগাথা বলে। প্রাসাদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন দুই পণ্ডিত: একজন রাজদার্শনিক লুসিয়াস, আর অন্যজন জ্যোতির্বিদ কাইয়াস।
আকাশটা সেদিন অন্য রকম। মেঘে ঢাকা, ধোঁয়ায় ভারী। হঠাৎই দূর আকাশ চিরে একটি আগুনের রেখা দেখা গেল—উজ্জ্বল, ভয়ংকর এবং কেমন যেন অচেনা।
"তুমি কি দেখলে?"—লুসিয়াস ফিসফিস করে।
কাইয়াস আঙুল তুলে দেখান, "ভিসুভিয়াস... সে ঘুম ভেঙেছে। বহু শতাব্দীর শান্তি আজ ভেঙে গেল।"
লুসিয়াস থেমে গেলেন। কয়েক মুহূর্ত নীরবতা। পেছনের প্রাসাদে তখনও নাচ-গান, উৎসবের ছন্দ চলমান।
“আমরা জ্ঞান অর্জন করেছি, সভ্যতা গড়েছি, আর আজ... এই অন্ধকার?”—লুসিয়াসের কণ্ঠে কাঁপন।
কাইয়াস ধীরে বললেন, “জ্ঞান সময়ের ছায়া বুঝতে পারে, কিন্তু তা সময়কে থামাতে পারে না।”
বাইরে হঠাৎ ঝাঁকুনি। দূর শহরে ভবনের ছাদে এক শিশু আর তার মা দাঁড়িয়ে। মা হাত তুলে আকাশের দিকে দোয়া করছেন। চারদিক থেকে ধ্বংস এগিয়ে আসছে।
লুসিয়াস হঠাৎই পেছনে ঘুরে বললেন, “চলো কাইয়াস, রাজাকে জানাও—এ শহর আর নিরাপদ নয়।”
কিন্তু কাইয়াস দাঁড়িয়ে থাকেন। “তুমি যাও। আমি এখানেই থাকি। এই আকাশের নিচে, এই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।”
লুসিয়াস একবার তাকালেন তার দিকে, তারপর ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে গেলেন মার্বেল প্রাসাদের সিঁড়িতে।
আর কাইয়াস?
সে দাঁড়িয়ে রইল, মাথা উঁচু করে, আগুনের সেই রেখার দিকে তাকিয়ে—শেষ আলোয় তার মুখে কোনো ভয় নেই, আছে শুধু সময়ের সামনে মাথা নত করার শান্তি।