16/02/2024
ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ার বাসা থেকে মাসে টাকা নিতাম ৪০০০- এর মাঝে থাকা, খাওয়া, যাতায়াত, হাতখরচ সব কাভার করতাম। ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারে নিজেকে আমি দুই বছর সময় বেধে দিয়েছিলাম স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর জন্য। কোন জায়গায় স্কলারশিপে কি শেখায় খোঁজ রাখতাম। ভার্সিটির ট্যুর, হ্যাং আউট এমনকি মাঝে মাঝে ক্লাস গ্যাপ দিয়ে আমি কাজ শিখতাম।
ক্লায়েন্ট কমিউনিকেশন এর জন্য স্পোকেন, লিসেনিং ইংলিশ ইম্প্রুভ করার পেছনে যথেষ্ট সময় দিতাম। ইংলিশ স্পোকেন কম্যুনিটি গুলোতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটাতাম। ৮০% স্কিল ডেভেলপমেন্ট আমার ইন্টারনেট থেকে, নিজে নিজেই।
নিজেকে দেয়া ডেডলাইনের অনেক আগেই লক্ষ্য ধরেছি নিজের সাথেই প্রতিযোগিতা করে।
সেকেন্ড ইয়ার থেকে আর বাসা থেকে টাকা নিইনাই। থার্ড ইয়ার থেকে আমি বাসায় টাকা দেয়া শুরু করি। ২০২২ সালে আমি মালয়েশিয়া মুভ করি নিজের খরচেই।
লক্ষ্য ঠিক রেখে নির্দিষ্ট সময় কঠিন পরিশ্রম করে এগুতে পারলে একটা সময় জীবন মোটামুটি সহজ হয়ে আসতে বাধ্য। তখন হাল্কা পরিশ্রম করলেও সব ঠিকঠাক চলে যায়। এই "কঠিন" সময়টা কতটুকু সেটা নির্ভর করবে লক্ষ্য কোথায় তার উপর।
আমার পরিশ্রমের পেছনে অনুপ্রেরণা ছিল দুইটা।
প্রথম, দায়িত্ববোধ। পরিবারের দায়িত্ব কাধে নেয়ার বোধ। আমার আব্বা আর্মির সৈনিক হিসাবে চাকরি করতেন। মাস শেষে যা পেতেন আম্মার কাছে পাঠিয়ে দিতেন আর আম্মা আমাদের ৩ ভাই এর স্কুলের বেতন, বাসা ভাড়া পরিশোধ করতেন। সারা জীবন বিসর্জন দিয়ে আমাদের এত দূর টেনে আনার পর এখন ওদের আরামের ব্যবস্থা করা আমার দায়িত্ব।
দ্দ্বিতীয়ত, ঘোরাঘুরির নেশা। আল্লাহর দুনিয়া আল্লাহ এত নিখুত সুন্দর করে বানিয়েছেন সেইটা যৌবন থাকতেই দেখা। এই বয়স চলে গেলে হয়ত অনেক টাকা থাকবে, কিন্তু এখনকার এনার্জি, জৌলুস টা আর থাকবেনা। নিজের রোজগারে ভ্রমণ করার তৃপ্তিটা আসলে বলে বোঝানোর মতন কোনো বিষয় না। আমার ২০২২ সালে মালয়েশিয়া মুভ করাটা এই ঘোরাঘুরির নেশা থেকেই।
---
লক্ষস্থির রেখে পরিশ্রম শুরু করেন, সফলতা এক সময় ধরা দিবেই ইন শা আল্লাহ। মার্কেটপ্লেসে কাজের অভাব নাই, দক্ষ লোকের অভাব আছে। নিজেকে দক্ষ করার পেছনে সময় ব্যয় করুন, ৫ বছর পরের আপনি আজকের আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। শুরুটা না করলে কাল আপনার জায়গা অন্য কেউ নেবে, আর আপনি পিছিয়ে থাকবেন।
একটা উদাহরণ দিয়ে শেষ করি। আমি ২০১৩ সালে কম্পিউটার শিখি আমার একটা বন্ধুর কাছে। আমি ওর কাছে কৃতজ্ঞ, আমাকে ডিজিটাল দুনিয়ার ক-খ শেখানোর জন্য।
মজার বিষয় হল আমার সেই বন্ধু এখনও ১৫ হাজার টাকার একটা চাকরি করে, আমাকে মাঝে মাঝে কল করে ফাইনান্সিয়াল প্রবলেমের কথা শেয়ার করে। আর আমি ওর হাতে কম্পিউটার শিখে আরো স্কিল ডেভেলপ করে নিজেকে আজ নিজের রোজগারে একটা স্বাধীন জীবন উপহার দিয়েছি।
📍কর্ণফুলী নদী, কাপ্তাই রাঙামাটি (২০২০)