28/07/2025
সেই সন্ধ্যে থেকে একনাগাড়ে বিসমিল্লা খানের বিয়ের সানাইটা বেজেই চলেছে। কয়েকজন মহিলা মিলে
মিষ্টিকে রুপের ঘরে নিয়ে এসে ফুল দিয়ে সাজানো খাটের ওপর বসিয়ে দিলো। তারপর নিজেদের মধ্যেই একটু হাসি ঠাট্টা করেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো এদিকে মিষ্টি মুখ ঘুরিয়ে রুমের ভেতরটা ভালো করে দেখতে লাগলো। রুমটা বেশ পরিপাটি করেই সাজানো হয়েছে। এর আগেও মিষ্টি বহুবার এই রুমে এসেছে। কিন্তু রুপের এই রুমটা কখনোই এখনকার মতো এতো ভালো করে সাজানো গোছানো ছিলো না।
ফুলের তরতাজা গন্ধটা বার,বার মিষ্টির নাকে এসে লাগছে। মিষ্টি একরকম বিরক্ত হয়েই...
"উফফ এই বেনারসি শাড়িটা কেমন যেনো আমার সাড়া গায়ের মধ্যে লেপ্টে গেছে। আর গয়না গুলোও মনে হচ্ছে আমার গলায় চেপে বসেছে। মাকে আমি কতো করে বুঝিয়ে বললাম যে এই গয়না গুলো আমি পড়বো না। তবুও মা জোর করেই এগুলো আমাকে পড়িয়ে দিলো। আমার এই গয়নাগাটি পড়তে একদম ভালো লাগে না। আমি আগাগোড়াই খুব সাদামাটা ছিমছাম হয়ে থাকতেই বেশি ভালোবাসি। বেশ ঠোঁটে হালকা করে একটু লিপস্টিক লাগিয়ে আর কপালে একটা ছোট্ট টিপ পরলে এতেই আমার সাজগোজ হয়ে যায়। একটা মেয়ে হয়ে এর থেকে বেশি সেজেই বা লাভ কি? সেই তো পুরুষ মানুষের চোখ গিয়ে পরবে আমার বুকের ভাঁজের ওপর আর না হলে আমার কোমরের ভাঁজের মধ্যে। তাহলে এতো কষ্ট করে শুধু,শুধু গলা ভর্তি গয়না আর মুখ ভর্তি মেকআপ লাগিয়ে কি হবে? এগুলো করতে তো আমার পুরো বেকার লাগে। আর আজকাল কার দিনে এইসব করে কে? কেমন ভাবে আমার দিকে চেয়ে চোখ বড়ো,বড়ো করে তাকিয়ে দেখবে সেটা ভেবেই তো আরো অস্বস্তি লাগে আমার। তবুও মা এক প্রকার জোর করেই আমায় এসব গয়না গুলো পড়িয়ে বিউটি পার্লার থেকে দুটো মেয়েকে ডেকে নিয়ে আসলো। আর সেই মেয়ে দুটোই আমার মুখের মধ্যে ভর্তি করে করে মেকআপ লাগিয়ে একগাদা টাকা নিয়ে চলে গেলো। আমার মনে হচ্ছে এক্ষুনি বাথরুমে গিয়ে ভালো করে সাবান মেখে মুখটা ধুয়ে আসি। মায়ের কথায়..
"বনমালী দা এই গয়না গুলো ভালোবেসে তার পুত্রবধূকে দিয়েছেন"
-ওনার একটামাত্র ছেলের বউ বলে কথা। মেয়ে মানুষ একটু সাজগোজ না করলে হয় নাকি? আর আমি যদি এইসব গয়না না পড়ি তাহলে নাকি বনমালী জেঠু খুব কষ্ট পাবেন। তাই একরকম জোড় করেই মা আমায় এই গয়না গুলো গলায় পড়িয়ে দিলো। আমার মা খুব ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে। মা জানে আমি তাতেই সব মেনে নেবো তাই আরো বেশি করেই এসব করে। আর আমিও মাকে কিছুই বলিনা বা বলতে পারিনা বললেও চলে। আমিও তো মায়ের সেই একটা মাত্রই মেয়ে। মায়ের নিজের যেটা সখ ছিলো সেটা আমাকে দিয়েই পূরণ করে নিচ্ছে। কিন্তু মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে আমার যে কি হাল হচ্ছে সেটা আমি ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবে না। আমি তো কিছুই বুঝি না বাপু ছেলেরা বিয়ের সময় যেমন খুশি তেমন সাজবে আর মেয়েদের এটা করতে নেই, ওটা পড়তে নেই, এটা খেয়ো না, ওটা করো না তাহলে নাকি বিয়ের অমঙ্গল হবে। মানে যাচ্ছেতাই নিয়ম একেবারে।
ওদিকে বৌভাত এর রিসেপশনের মণ্ডপের মধ্যে রুপ বাবাজি গো মেরে বসে আছেন। এতো রাতেও এখনো অনেকেই বাড়ি যায়নি।বিশেষ করে রুপের বন্ধু,বান্ধব আর রুপের বাবা বনমালীর কোম্পানির লোকেরা এখনো হৈ হুল্লোড় করেই চলেছে। রুপ একা চেয়ারে বসে সবার দিকেই হাসি, হাসি মুখ করে তাকিয়ে দেখছে। কিন্তু সবার মাঝে বসেই রুপ মনে,মনে অন্য কিছু ভাবছে।
"আজ তোমায় আমি ভালো করে বোঝাবো মিষ্টি। তুমি আমার ভালোবাসাকে বার,বার অস্বীকার করেছো? আজ তার সব বদলা নিয়ে নেবো আমি। আজ তুমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারবে তোমার রুপদার হিংস্রতা।"
রিসেপশনের মন্ডপে বসেই রুপ এইসব মনের মধ্যে ভেবে নিয়ে নিজের মনেই গজ গজ করতে লাগলো। বেডের ওপর বিছানার মধ্যিখানে চুপটি করে বসে আছে মিষ্টি। গোটা ঘরময় ফুলের গন্ধে মো মো করছে। যেনো এই ফুল গুলোর মধ্যে আলাদা করে কিছু স্প্রে করা হয়েছে। আগাগোড়াই ফুলের গন্ধ খুব ভালোবাসে মিষ্টি। তবে আজ যেনো এই ফুল গুলোর থেকে একটু বেশিই ঝাঁঝালো গন্ধ পাচ্ছে। ফুলগুলো দিয়ে একরকম মদের মতো গন্ধ বেরোচ্ছে। মিষ্টির নাকের মধ্যে সেই গন্ধটা যেতেই কেমন যেনো একটু নেশা হতে লাগলো। খুব ছোটোবেলা থেকেই মিষ্টি একটা স্বপ্ন দেখে আসছিলো যে একজন মনের মতো মানুষকে নিয়ে সুখে সংসার করবে। ওর সেই মনের মানুষটা সারাক্ষণ মিষ্টিকে নিজের বুকের মধ্যে আগলে,আগলে রাখবে। সব সময় শুধু দুষ্টুমি করবে মিষ্টির সাথে। মিষ্টি একটু রেগে গেলেই সেই মানুষটা ওকে নিজের বুকে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে আদর করে ওর কপালে একটা চুমু খাবে।
রুপকে সেই ছোটোবেলা থেকেই দেখে আসছে মিষ্টি। ছোটো থেকেই খুব হ্যান্ডসাম দেখতে রুপ। যেমন লম্বা তেমনি চওড়া বলবান শরীর রুপের। একটা মিষ্টি চেহারার খুব মিষ্টি ভাষী ছেলে এই রুপ। মিষ্টি তো পারলে সারাক্ষণ রুপের কোলের ওপরেই উঠে বসে থাকে। কিন্তু এখন রুপকে দেখলে মিষ্টির কেমন যেনো ভয়,ভয় করে। মিষ্টি ভাবছে..
"রুপদা কেমন যেনো একটু গম্ভীর টাইপ হয়ে গেছে। আগের মতো ঠিক করে আর কথাও বলে না। সব সময় মুখটা ভারি করে থাকে। আগের মতো ওর মুখে আর হাসির ঝলক দেখা যায় না।"
এতক্ষণ ধরে মিষ্টি নিজের মনে,মনেই কথাগুলো বলে যাচ্ছিলো। মিষ্টি নিজেই নিজের মনকে বোঝাচ্ছিলো যে...
"রুপদা ঠিক পারবে তার আদরের মিষ্টিকে ভালো বেসে বুকে আগলে রাখতে। কিন্তু এতো রাত হয়ে গেলো রুপদা এখনো রুমে আসলো না কেনো? রুপদা আবার অন্য কোনো রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলো নাতো?"
এদিকে মিষ্টির তো এখনি খুব ঘুম পাচ্ছে। সেই কোন সকালে ঘুম থেকে উঠেছে মিষ্টি। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত একটুকু সময়ের জন্যও চোখ বন্ধ করার সুযোগ পায়নি। এইবার মিষ্টির চোখটা আপনা,আপনি বুঝে আসতে লাগলো।
"রুপদা রুমে আসলেই আমি ওর বুকের মধ্যে মাথা রেখে চুপটি করে শুয়েই ঘুমিয়ে পড়বো।"
ওদিকে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠে ছাদে চলে এসেছে রুপ। ছাদে আসার সময় নিজের সঙ্গে করে পকেটের মধ্যে লুকিয়ে একটা রামের নিপ নিয়ে এসেছে। আজ মদ খাবে রুপ। মদ খেয়েই নেশা করবে রুপ। যেটা আগে রুপ কোনো দিনো ছুঁয়েও দেখেনি। সেই রুপ আজ মদ খাবে। এখন রুপের মাথাটা খুব গরম হয়ে আছে। রুপ ভাবছে..
"ঠিক ভাবে নেশাটা না হলে মিষ্টিকে আমি পানিস করতে পারবো না। তাই এই মদটা খেয়ে মাতাল হয়েই রুমের মধ্যে ঢুকবো আমি।"
আজ বৌভাতের দিনেও রুপ বুদ্ধি করে বন্ধুকে দিয়ে একটা রামের নিপ আনিয়ে রেখেছিলো। যদিও এর আগে রুপ কখনোই মদ ছুঁয়েও দেখেনি তবুও আজ ওর ইচ্ছা হলো মদ খাবে। নেশা না হলে মিষ্টিকে পানিস করাটা সহজ হবে না। যদিও রুপের বন্ধু বলেছে আজকের দিনে নেশা করতে নেই। নেশা হলে মিষ্টির সুন্দর মুখটা ভালো করে দেখতেও পাবে না। তবুও রুপ একপ্রকার জোর করেই মদটা খাবে বলে মনকে বুঝিয়েছে।
-ছাদে এসে রামের নিপের বোতলটা খোলা মাত্রই গন্ধে রুপের গাঁ গুলিয়ে উঠলো। ওর কেমন যেনো বমি,বমি আসতে লাগলো। তবুও রুপ মিষ্টির প্রতি রাগ দেখিয়েই বা হাত দিয়ে নিজের নাকটা টিপে রেখে ডান হাত দিয়ে রামের নিপের বোতলটা ধরে মুখের মধ্যে নিয়ে সবটুকু মদ একবারেই গলার মধ্যে ঢেলে দিলো রুপ।
মিষ্টি যে রুমের মধ্যে বসে ছিলো তার পাশের রুমেই কেউ দরজাটা খুলেছে। সেই দরজা খোলার ক্ষীণ শব্দে মিষ্টির ঘুমটা ভেঙে গেলো। বালিশের মধ্যে একটা হাতের ওপর ভর দিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলো মিষ্টি। ঘুমটা ভেঙে যেতেই চোখটা খুলেই আবার উঠে বসলো মিষ্টি। মিষ্টির হাতটা লেগে বালিশের ওয়ারটা একটু কুচকে গেছিলো। মিষ্টি হাত দিয়ে বালিশের ওয়ারটা ঠিক করে আবার ঠিক করে বালিশটা রেখে দিলো।
"ইসস আজ এই ফুলশয্যার রাতেই আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম?"
রুমের মধ্যেই টাঙানো দেওয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখলো মিষ্টি। ঘড়ির কাঁটা দুটো ছুঁই,ছুঁই করছে।
"রুপদার এতো দেরি হওয়ার তো কথা নয়? আমি কি একবার রুমের বাইরে বেরিয়ে দেখবো?"
তার পরর্মুহুতেই মিষ্টি ভাবলো...
"ইসস না আমি এখন বাইরে গেলে আর সবাই কি ভাববে? যে আমি আর ধৈর্য ধরে বসতে পারছি না। রুপদা রুমে আসেনি দেখে আমি নিজেই রুম থেকে বেড়িয়ে এসেছি।"
মিষ্টি নিজের বেনারসি শাড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখলো। শাড়িটা একটু ঘেঁটে গেছে। মিষ্টি নিজেই হাত দিয়ে শাড়িটা ঠিক করে নিলো। ঘুমের ঘোরে মিষ্টির মাথা থেকে ঘোমটাটা পুরোটাই খুলে গেছিলো। মিষ্টি আবার শাড়ির আঁচলটা দিয়ে ঘোমটার মতো করে নিয়ে মাথায় আঁচলটা দিয়ে মুখটা পুরো ঢেকে নিয়ে ঠিক করে বসলো। এদিকে ছাদের মধ্যে এক কোনায় কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলো রুপ। রামের নিপটা পুরোটা খেয়ে রুপের মাথাটা বনবন করে ঘুরছিলো। রুমে যাওয়ার জন্য রুপ সবেমাত্র পা টা একটু বাড়িয়ে ছিলো। আর তখনি সিঁড়ির সামনে এসে নিজের টাল সামলাতে না পেরে রেলিংটা কোনরকমে ধরে সিঁড়ির ওপরেই বসে পড়লো রুপ। ওখানেই চুপচাপ বসে থেকে রুপ ভেবেছিলো মদের নেশাটা একটু কাটলেই তারপর রুমে যাবে। কিন্তু নেশার চোটে কখন যে রুপ ঘুমিয়ে পড়েছে তার কোনো হুস নেই। ঘণ্টা দেড়েক বাদে মশার কামড়ে রুপের ঘুমটা একটু ভেঙে গেলো। চোখটা খোলা মাত্রই রেলিংটা ধরে কোনমতে সিড়ির ওপরেই উঠে দাঁড়ালো রুপ।
"মনে হচ্ছে অনেক রাত হয়ে গেছে। না এবার আমায় যে করেই হোক রুমে যেতে হবে। না হলে সারারাত এখানেই বসে মশার কামড় খেতে হবে।"
সিঁড়ির রেলিংটা ধরেই কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলো রুপ। একটু আগেই সিঁড়ির মধ্যে বসে ঘুমিয়ে থেকে মিষ্টিকে নিয়ে একটা খুব সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলো রুপ।
"মিষ্টি রুপের কোলের ওপরে বসে রুপের মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আর রুপ মিষ্টির ঘাড়ের ওপর নিজের মুখটা রেখে দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে।"
স্বপ্নে দেখা দৃশ্য গুলো মনে পড়তেই রুপের মুখে এক চিলতে হাসি খেলে গেলো। পরমুহুর্তেই মিষ্টির আগের করা ব্যবহার মনে পরতেই রুপের মাথাটা আবার গরম হয়ে গেলো। কোনোরকমে টলতে,টলতে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে আসলো রুপ। সিঁড়ি থেকে নেমেই ড্রইংরুমে এসে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে গেলো। এদিকে রুমের মধ্যে বেডের ওপরে অনেক্ষন ধরে বসে থেকে আর ফুলের সেই মদের মতো গন্ধতে মিষ্টির মনটা আনছান করতে লাগলো। তার মধ্যে এতো রাত হয়ে যাওয়ার পরেও রুপ রুমে না আসায় মিষ্টির চিন্তায় মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে।
"রুপদা এখনো কেনো আসছে না? আর কিছুক্ষন পরেই তো ভোর হয়ে যাবে। তখন কিভাবে আমাদের ফুলসজ্জা হবে? দূর ব্যাঙ আর ভালো লাগছে না আমার। আমি তো ভেবেছিলাম ফুলশয্যার রাতে রুপদার কোলের ওপর বসে রুপদা কে একটু আদর করবো। সেটা আর হবে বলে মনে হচ্ছে না আমার। উনি তো এবার রুমে এসেই ঘুমিয়ে পরবে।"
মিষ্টি এইসব ভাবতে,ভাবতেই রুমের দরজার দিকে তাকিয়ে ছিলো। এই বুঝি রুপ এলো। ঠিক সেই মুহুর্তেই দরজাটা খুলে গেলো দেখে মিষ্টি একটু লজ্জা পেয়ে গেলো। মুহুর্তের মধ্যেই চোখটা বন্ধ করে নিয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসলো মিষ্টি। রুমের ভেতরে ঢুকেই বেডের ওপরে মিষ্টিকে চুপটি করে বসে থাকতে দেখে রুপ একটু ভারী গলা করেই মিষ্টিকে জিজ্ঞেস করলো...
"মিষ্টি তুমি এখনো ঘুমাওনি কেনো?"
রুপের প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়েই মিষ্টি সেই একিভাবে চুপটি করে বসে রইলো।
"আজ আমাদের ফুলসজ্জা হবে। আর উনি বলছেন আমি নাকি এখনো ঘুমাইনি কেনো? রুপদার মাথাটা ঠিক আছে তো? রুপদা কি বলছে সেটা কি ও নিজেও বুঝতে পারছে?"
বেডের সামনে দাঁড়িয়েই রুপ আরো দুবার একি কথা জিজ্ঞেস করলো মিষ্টিকে। মিষ্টি এবার রুপকে জিজ্ঞেস করলো.....
"এতক্ষণ তুমি কোথায় ছিলে রুপদা? রাত তো প্রায় শেষের পথে। আর একটু পরেই যে ভোর হয়ে যাবে।"
মিষ্টির কথা শুনে..
"আমি যাহার নামে ছিলাম। তোর তাতে কি? আর আমি যেখানেই থাকি না কেনো সব কৈফিয়ত তোকে দিতে হবে নাকি? আমার বউ হয়েছিস তো বউয়ের মতোই থাকবি বুঝলি। এরপর থেকে আগবাড়িয়ে কোনো এক্সট্রা কথা বলবি না তুই।"
কথাগুলো মিষ্টিকে বলেই রুপ নিজের পাঞ্জাবিটা খুলে এক সাইড রেখে দিয়ে বেডের ওপরে উঠে মিষ্টির পাশে গিয়ে বসতেই রুপের মুখ থেকে মদের বিচ্ছিরি গন্ধটা বেড়িয়ে মিষ্টির নাকে এসে লাগলো।
"রুপদা আজকে মদ খেয়েছে? কই আগে তো রুপদা মদ খেতো না। তাহলে? আজ আমাদের ফুলশয্যা আর সেটা জেনেও রুপদা মদ খেলো। কিন্তু আজকেই বা মদ খেলো কেনো? তবে কি রুপদা আমাকে বিয়ে করে খুশি হয়নি?"
বিছানার ওপরে মিষ্টির পাশেই বসে আছে রুপ।
"কই আমার বউয়ের মুখটা একবার দেখি। ঘোমটা টা এবার তুলে ফেলো।"
রুপের কথা শুনে..
"ঘোমটা টা স্বামীকেই তুলতে হয় রুপ দা।"
মিষ্টির কথা শুনে....
"ও এই ব্যাপার? তাহলে দাড়াও আমিই তোমার ঘোমটা তুলে নিচ্ছি।"
ঘোমটা তুলে দিয়ে মিষ্টির মুখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টিকে দেখে রুপ আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না। সাথে,সাথেই দুহাত বাড়িয়ে মিষ্টিকে নিজের বুকের কাছে টেনে নিলো রুপ।