
23/07/2025
বিএনপিকে ‘বেঁধে ফেলতে’ নতুন সংস্কার প্রস্তাব
নির্বাচনে যাদের ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তারা তো বিএনপি প্রধানের নেতৃত্ব মেনেই অংশ নেবেন। ফলে দলীয় প্রধানের প্রধানমন্ত্রী হতে না পারার মতো ‘অযৌক্তিক’ প্রস্তাব মানার প্রশ্নই ওঠে না।
প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং দলীয় প্রধান—এই তিনটি পদে একজন ব্যক্তি একযোগে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না—এই বিষয়টি বেশ কয়েকদিন ধরে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। বিএনপি, এলডিপি, লেবার পার্টি, এনডিএম, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং আম জনতার দল মনে করে, একজন ব্যক্তি একই সঙ্গে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা হতে পারেন।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি এবং আরও কিছু দল এতে আপত্তি জানিয়েছে। তারা মনে করে, দলের প্রধান ব্যক্তি যেন প্রধানমন্ত্রী না হন। এই ভিন্নমতের প্রেক্ষিতে গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংলাপের ১৭তম দিনে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ঘোষণা দেন—‘রাজনৈতিক দলের প্রধান ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।’ তবে, এতে যেসব দল একমত নন, তারা জাতীয় সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিতে পারবেন।
সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,
“প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং দলীয় প্রধান—একই ব্যক্তি হবেন কি না, সে বিষয়ে বেশিরভাগ দল একমত হলেও কিছু দল দ্বিমত পোষণ করেছে। আমরা আগেই বলেছি, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে যেমন ভিন্নমত রাখার সুযোগ রয়েছে, এখানেও তা রাখা যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন,
“গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এমন বিধান যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কোথাও নেই। এটি তার গণতান্ত্রিক অধিকার। পার্লামেন্ট সদস্যরা যাকে চাইবেন, তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রিত্ব পাবেন না—এমন বিধান গ্রহণযোগ্য নয়।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী-এর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও আলোচনা হয়। কমিটি মনে করে, সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারপ্রধানের হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। তবে রাষ্ট্রপতিরও নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ রাখা যেতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে যদি অতিরিক্ত ক্ষমতায়িত করা হয়, তাহলে সংসদীয় গণতন্ত্রের গুরুত্ব কমে যাবে।
এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, আলোচনার পরবর্তী পর্বে বিষয়টি আবার উঠবে।
এদিকে সোমবার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় বিএনপি গভীর শোক প্রকাশ করে। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নিহত ছাত্রছাত্রী, শিক্ষিকা ও পাইলটের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতিও প্রকাশ করে বিএনপি।